শৈশবের একটি ঘটনা

in hive-129948 •  4 months ago 
হ্যালো বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।


Copyright free image source: pixabay

আজকে আপনাদের সাথে একটি সাধারণ লেখা শেয়ার করবো। এটা আমার শৈশবের একটি ঘটনা। বয়স তখন অনেক কম, চতুর্থ শ্রেণীতে যখন পড়তাম তখনকার সময়ের ঘটনাটা। আমার আসলে তখন বলা যায় পড়াশুনায় একদমই মনোযোগ ছিল না, সবসময় খেলাধুলার দিকে মন পড়ে থাকতো। কিন্তু বাড়িতে তখন কড়াকর ছিল খুব, ইচ্ছা হলেও সহজে বেরোতে পারতাম না। তবে লুকিয়ে লুকিয়ে চলে যেতাম। যাইহোক, আসলে খেলাধুলা করে আসার পরে সন্ধ্যার সময়ে আসতো ঘুম, আর পড়াশুনা সব ঘুমের মধ্যে চলে যেত হা হা। আর সব থেকে সমস্যা ছিল অংকে, আর তাই ওই বিষয়টা নিয়েই একদিন গ্রামে আমাদের স্কুলের এক ম্যাডামের কাছে প্রাইভেট পড়ার জন্য ভর্তি হলাম, বলতে ম্যাডাম নিজেই পড়তে বলেছিলেন। আর তখন গ্রামের দিকে কোনো বিদ্যুতের ব্যবস্থা একপ্রকার ছিল না, হ্যারিকেন ধরিয়ে পড়তে হতো বা রাস্তায় চলাচল করতে হতো।

আর আমাদের স্কুলটা ছিল বাড়ির থেকে প্রায় আধাঘন্টার মতো পথ, একই এলাকায়। আর সন্ধ্যার সময় পড়াতো, তাই আমরা ৪-৫ জন বন্ধু মিলে একসাথে পড়তে যেতাম। একদিন যাওয়ার পরে ম্যাডাম আসতে অনেক লেটও করছে আর এদিকে আবহাওয়াও হঠাৎ করে খারাপ হয়ে যায়, যেমন মেঘ ডাকছে আবার তেমন বাজও পড়ছে। আমরা মোটামুটি সবাই আমাদের রুমের দরজা খুলে সেখানে বসে থাকি আর হ্যারিকেন তো হাওয়ায় সব নিভে গিয়েছে, ফলে অন্ধকার মতো এক খারাপ অবস্থা তখন। আর ওইসময় সবার ভয়ও করছে, আমারও বলতে গেলে মনে ভয় ভয় করছিলো যে বাজ এদিকে পড়ে কিনা, যেভাবে বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে। একটানা ওইরকম বেশ খানিক্ষন ঝড় আর বিদ্যুৎ চমকাতে থাকলো। এরপর দরজা, জানালা সব বন্ধ করে আমরা চুপ করে ওইভাবে ১ ঘন্টার মতো বসে ছিলাম।

তারপর যখন আবহাওয়া নরমাল হলো তখন কিছুক্ষন পরে ম্যাডাম আসলো আর পড়ানো তো হয়নি, তাই সবাইকে মোটামুটি যার যার বাড়ি পৌঁছিয়ে দিলো। আমার আর ম্যাডামের বাড়ি ছিল একজায়গায় আর বাকিদের বাড়ি ছিল একটু দূরে। তাই আগে তাদের বাড়িতে এগিয়ে দিয়ে আমরা বাড়ির দিক যাচ্ছিলাম, আর রাস্তার আশেপাশে তখন একপ্ৰকার জঙ্গল মতো একটা অবস্থা ছিল, বিশেষ করে বাঁশ ঝাড় মতো। তো হ্যারিকেন তো আর জ্বালানো যাচ্ছে না, তাই অন্ধকারেই সারা রাস্তা হেঁটে হেঁটে যাচ্ছিলাম, আর ওই সময়ে ঝাড়ের মধ্যে শব্দ শুনে তো আরো ভয় ভয় লাগলো, ম্যাডাম বলতে লাগে কিছুতে মাছ খাওয়ার মতো একটা শব্দ হচ্ছে। ম্যাডাম আরো ভয় লাগিয়ে দিচ্ছে, মনে হচ্ছে যেন ভূত এসে ধরবে হা হা।

আসলে তখন অতটাও বুঝ ছিল না, আর আমি তো একজন এইসবের ভূতের কাহিনী দেখায় ওস্তাদ ছিলাম, ফলে মনের মধ্যে যেন একটা ভয় ভয় কাজ করছিলো তখন। আসলে অন্ধকার শুনশান রাস্তায় যখন ওইরকম পরিস্থিতে যাওয়া হয়, তখন এমনিতেই মনের অজান্তে মনের মধ্যে একটা ভয় ভয় কাজ করতে লাগে আর তারপর গ্রামের দিকে। পরে খানিক্ষন এক জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকার পরে আস্তে আস্তে চলে গিয়েছিলাম, গলা তখন শুকিয়ে কাঠ হয়ে গিয়েছিলো আমার বলতে গেলে। যাইহোক, আসলে এই ঘটনাটা মনে পড়ছিলো, তাই আপনাদের সাথে শেয়ার করে নিলাম।


শুভেচ্ছান্তে, @winkles


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

দাদা,,আগে ভূতের ভয় পেতেন,এখন পান না।এখন ঐ রকম অন্ধকারে একা একা হাঁটতে পারবেন রাতের দিকে?যেদিকে ঘন জঙ্গল থাকবে।যাই হোক কিছু কিছু স্মৃতি কখনই ভুলা যায় না।ধন্যবাদ

এখন ঐ রকম অন্ধকারে একা একা হাঁটতে পারবেন রাতের দিকে?

সাথে একজন থাকলে নিশ্চই পারবো😂।

আসলে আমাদের সবার এরকম ছোটবেলার কিছু স্মৃতি রয়েছে যেগুলো হঠাৎ করেই মনে পড়ে যায়। আপনি আজকে অনেক সুন্দর করে স্মৃতিময় একটা পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন দাদা, যেটা দেখে খুব ভালো লেগেছে। রাতের বেলায় বিদ্যুৎ চমকালে আর বজ্রপাত হলে অনেক বেশি ভয় লাগে। আপনারা সবাই তো অনেকক্ষণ পর্যন্ত দেখছি বসেছিলেন। তবে আপনি যখন ম্যাডামের কথা বলছিলেন তখন তো আমার নিজেরও ভয় লাগছিল। যখন মাছ খাওয়ার কথাটা বলছিলেন, তখন তো ভেবেছিলাম এটা হয়তো সত্যি হয়েছে। কিন্তু ম্যাডাম তো ভয় লাগাচ্ছিল। আসলে এরকম বয়সে ভয় তো পাওয়ারই কথা। আমি যদি হতাম তাহলে তো কি যে হতো তখন কি জানি। এরকম পরিস্থিতিতে ভয় তো সবাই পাবে। আমিতো পড়ার সময় ভয় পাচ্ছিলাম কিনা কি হয়েছিল ভেবে। কিন্তু দেখলাম তেমন কিছুই হলো না। যাই হোক দাদা আপনার পোস্টটা পড়ে সত্যি ভালো লেগেছে। মাঝেমধ্যে শৈশবের স্মৃতি মনে পড়লে এভাবেই শেয়ার করবেন আশা করছি।

দাদা আমি তো প্রথমে ভেবেছিলাম এটা হয়তো ভূতের একটা ঘটনা। তাই একটু ভয়ে ভয়ে পড়ছিলাম আপনাদের সাথে কি হয়েছিল এটা জানার জন্য। কিন্তু দেখলাম ওইরকম কিছুই ঘটেনি। রাতের অন্ধকারে এরকম সময় ভয় তো লাগবেই দাদা। বজ্রপাতের সময় এমনিতেই বাহিরের অবস্থা অনেক খারাপ হয়ে থাকে। আর সবকিছু বন্ধ হলেও রাতের বেলায় বাহিরটা একটু অন্যরকম ভয়ংকর হয়। সব বন্ধুদেরকে আপনি এবং আপনার ম্যাডাম বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে অন্ধকারেই দেখছি এসেছিলেন। আমি তো ঘটনাটা পড়ার সময় মনে হচ্ছিল আপনার জায়গায় হয়তো আমি ছিলাম। সত্যি দাদা আপনার শৈশবে আমি চলে গিয়েছিলাম। ম্যাডাম তো দেখছি আপনাকে আরো বেশি ভয় পাইয়ে দিয়েছিল মাছ খাওয়ার মত শব্দের কথাটা বলে। এই কথাটা পড়েই তো আমি ভয়ে একেবারে শেষ। ভয় পাওয়ার সময় কেউ বেশি করে ভয় দেখালে তো অবস্থায় একেবারেই শেষ। পুরোটা পড়ে ভালোই লেগেছে দাদা আমার কাছে।

ম্যাডাম মনে হয় আপনাকে বুঝাতে চেয়েছিল ভূত মাছ খাচ্ছে 😂। ম্যাডামও মনে হয় প্রচুর ভয় পেয়েছিল। যাইহোক ছোটবেলায় ভূতের গল্প অনেক শুনতাম এবং পরে তো রাতের বেলা রুম থেকে বের হতেই ভয় লাগতো। আর আলিফ লায়লা দেখার পর তো বাথরুমে যেতেও ভয় লাগতো। আসলে শৈশবের কিছু কিছু স্মৃতি কখনোই ভুলা যায় না। আপনার শৈশবের এই ঘটনাটি জেনে বেশ ভালো লাগলো দাদা। শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

দাদা আগে হ্যারিকেন ছিল।এটা খুব ভালো লাগে আসলে।এই হ্যারিকেন এখন আর দেখা যায় না।আপনি ভুতের কিছু দেখতেন বলেই আরো বেশী গা ছমছম করছিলো আপনার।এমনিতেই আপনারা ছোট বাচ্চা ছিলেন।আমিতো এখনও বাজের শব্দ শুনলে ভয় পাই।ঘটনাটি পড়ে মনে হচ্ছিল কখন যেনো ভুত ছুটে আসে।কিন্তু যাক বাঁচলাম।😂 আগের গ্রাম গুলো সত্যিই ভয়ের মতো ই ছিল।এখন তো সব গ্রামই শহর হয়ে গিয়েছে।তাই ভুতের ভয় এখন লাগে কম।আমার আবার ভুতের কিছু পড়লে বা দেখলে পরে ভীষণ জ্বালা দেয়।আপনি আপনার চমৎকার অনুভূতি গুলো লেখার মাধ্যমে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি।মাঝে মাঝে এ ধরনের লেখা গুলো দিবেন।খুব ভালো লাগে পড়তে আর জানতে।ভালো থাকবেন দাদা সব সময়।