ওয়েব সিরিজ রিভিউ: রুদ্রবীনার অভিশাপ- চাকতির হদিশ ( সিজন ১- নবম পর্ব )

in hive-129948 •  2 years ago 
হ্যালো বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।

আজকে আপনাদের সাথে রুদ্রবিনার অভিশাপ ওয়েব সিরিজটির প্রথম সিজনের নবম পর্ব রিভিউ দেব। আজকে প্রথম সিজনের শেষ পর্ব এটি। এই পর্বের নাম হলো "চাকতির হদিশ"। আগের পর্বে শেষ দেখেছিলাম দিতিপ্রিয়ার মাকে কবর দিয়ে তার শেষ কাজ সম্পন্ন করেছিল। আজকে দেখা যাক এই চাকতির হদিশ এ কি রহস্য বের হয়।


স্ক্রিনশর্ট: ইউটিউব


✠কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য:✠

সিরিজটির নাম
রুদ্রবিনার অভিশাপ
প্লাটফর্ম
hoichoi
সিজন
পর্ব
চাকতির হদিশ
পরিচালকের নাম
জয়দীপ মুখার্জি
অভিনয়
বিক্রম চ্যাটার্জি, রূপসা চ্যাটার্জি, সৌরভ দাস, দিতিপ্রিয়া রায়, উষশী রায় ইত্যাদি
মুক্তির তারিখ
২৪ ডিসেম্বর ২০২১( ইন্ডিয়া )
সময়
২০ মিনিট ( নবম পর্ব )
ভাষা
বাংলা
কান্ট্রি অফ অরিজিন
ইন্ডিয়া


☫মূল কাহিনী:☫


স্ক্রিনশর্ট: hoichoi

দিতিপ্রিয়ার মায়ের শেষ কাজ করার পরে সবাই বাড়ি চলে আসে এবং সবাই ভেঙে পড়ে, যেন বাড়িটা শূন্যতায় ভরা এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তাদের হাভেলিটা। দিতিপ্রিয়ার বাবা বাঁশি বাজিয়ে নিজের দুঃখটা কিছু কম করতে চায় কিন্তু তাও যেন কোথায় একটা আটকে যাচ্ছে, কারণ খুব কাছের মানুষ যদি হঠাৎ এইভাবে চলে যায় তাহলে শক লাগবেই। যাইহোক এর মধ্যে তাদের বাহাদুর লোকটা চলে আসে এবং বলে তোরা দ্রুত কলকাতা চলে যা এবং দিতিপ্রিয়া যে বিদেশে গিয়ে গান, সানাই বাজানো শিখবে সেটাই কর। দ্রুত ওকে দেশের বাইরে পাঠিয়ে দে। বাহাদুর বুঝতে পেরেছে যে যদি এরা এখনো এখানে থাকে তাহলে তাদের উপরেও হামলা হতে পারে। আর দিতিপ্রিয়ার মাকে খুন করা হয়েছে কিনা সেটাও দিতিপ্রিয়ার বাবার কাছে অজানা কারণ ডাক্তার বলেছে ব্রেইন হেমারেজ এর কারণে মৃত্যু হয়েছে। এদিকে বিক্রম আর শ্রুতি রাতে লুকিয়ে বাহাদুরের তাল এবং সুরের যে বাদ্যযন্ত্রের দোকান আছে সেখানে ডুব্লিকেট চাবি নিয়ে প্রবেশ করে এবং খুঁজতে খুঁজতে একটা বই এর মতো বড়ো ফাইল পায় যেটাতে সব সদস্যদের পত্রিকার পেজ সহ তাদের ছবি দিয়ে লাগানো আছে অর্থাৎ তারা যখন যেসব জায়গায় পারফর্মেন্স করেছিল সেখানকার সব ছবি পত্রিকায় বেরিয়েছিল এবং সেগুলো সংগ্রহ করে বাহাদুর এক জায়গায় রেখেছিলো এলবাম আকারে।


স্ক্রিনশর্ট: hoichoi

বিক্রম আর শ্রুতি সেই এলবামটা রাতে লুকিয়ে নিয়ে আসে। আসলে তাদের এই পদ্ধতিটা অবলম্বন করা ছাড়া আর কোনো পথ ছিল না, কারণ তাদের বাহাদুর মামা আসল সত্যিটা কোনোমতেই বলতে রাজি হচ্ছিলো না। এদিকে বিক্রমের মাকে যে রুদ্রপুরের শিব মন্দিরে আটকিয়ে রেখেছিলো সেখানে নাদ এর মা খাবার হিসেবে ফল নিয়ে গিয়েছিলো এবং তাদের মধ্যে অনেক কথপোকথন হয়ে থাকে। আর বিক্রমের মাকে রাতেই সেখান থেকে মুক্ত করতে একজন সাহায্য করবে সেটা পাহারাদারদের লুকিয়ে বলে যায়। এরপর দেখা যায় বিক্রম আর শ্রুতি তাদের বাহাদুর মামার পিছু নিতে থাকে, কারণ তাদের বাহাদুর মামা লুকিয়ে কোথায় একটা যাচ্ছিলো। কিন্তু এদিকে আবার গৌরাঙ্গ লোকটা তাদেরও পিছু নিয়েছে লুকিয়ে লুকিয়ে। দেখা গেলো তাদের বাহাদুর মামা অনেক পুরানো একটা কবরের কাছে যেতে আর কান্নাকাটি করতে। আসলে যে কবরের সামনে কাঁদছিলো সেটা ছিল বাহাদুরের বাবার কবর । আর আসল সত্যিটা বিক্রমের সামনে পরিষ্কার হয়ে যায় যে দিতিপ্রিয়ার মা আর সালামত খাঁ এই দুইজন ছিল বাহাদুরের ছেলে আর মেয়ে।


স্ক্রিনশর্ট: hoichoi

বাহাদুর পরে ঘটনাগুলো তাদের বলতে রাজি হয়। আসলে অনেকদিন ধরে বুকে পাথর বেঁধে তার সত্যিগুলো লুকিয়ে রেখেছিলো। বাহাদুর ছিল নবাব বংশের লোক আর সেই সময় তারা রুদ্রপুরেই থাকতো। তারা যে গ্রামে ছিল সেই গ্রামটা একদিন বন্যায় ভেসে যায় আর তার স্ত্রীও মারা যায়, কিন্তু বাহাদুর অনেক কষ্টে তার দুই ছেলে এবং মেয়েকে ( সালামত & নূর ) বাঁচাতে পারে। আর একদিন রাস্তায় কেদার বাবু বলে একজনের দেখা হয় অর্থাৎ এই কেদার সেই শ্রুতির দাদু। তখন বাহাদুর এই কেদার বাবুকে বলেছিলো তার এই ছেলে এবং মেয়ে দুইজনকেই যেন তার থেকে বহু দূরে পাঠিয়ে দেওয়া হয় আর তার সাথে বাহাদুরের পরিচয় যেন কোনোদিন তারা না জানতে পারে। তাদের অনেক দূরে পাঠিয়ে দেওয়ার একটাই কারণ ছিল যেন রুদ্রপুরের ছায়া তাদের উপর কোনোদিন না পড়ে। আর নুরজাহান এবং সালামত খানও মৃত্যুর আগে আর তাদের আসল পরিচয়টাও জানতে পারেনি, এটা বহু বছরের লুকানো একটা চরম সত্যি ঘটনা ছিল। আর যে ভয়ে তাদের লুকিয়ে রেখেছিলো সেই ভয় আর পিছু ছাড়েনি সেই মরতেই হলো।


স্ক্রিনশর্ট: hoichoi

বাহাদুরের এই দুই ছেলে এবং মেয়েকে যখন কেদারনাথ বাবু একজন গুরুর কাছে দিয়েছিলেন তখন কেদারবাবুর গুরু তাদের দুইজনের জন্য দুটি চাকতি রেখে গিয়েছিলো যাতে রুদ্রপুরের রাগ সঞ্জীবনীর অনেক সূত্র রয়েছে। কিন্তু বাহাদুর সেই চাকতি তার ছেলে, মেয়েকে দিতে দেয়নি যদি কোনো বিপদ হয় এই ভেবে। তাই বাহাদুর এতগুলো বছর ধরে এই চাকতি দুটিও তার সাথে সাথে রাখতো। আর কেদারনাথ মদন্তীর বংশধর ছিল সেটাও বুঝতে পেরেছে বিক্রম বাহাদুরের বক্তব্য শুনে। এদিকে সেই গৌরাঙ্গ লোকটা আবার লুকিয়ে লুকিয়ে তাদের গোপন কথাগুলোও সব শুনে ফেলেছে। আর এখন যে দুটি চাকতি পেয়েছে তাতেও অনেক রহস্য লুকিয়ে আছে। এখন বিক্রমের টার্গেট এইসবের জট খোলার।


☫ব্যক্তিগত মতামত:☫

এই পর্বে আসলে অনেক রহস্য আর গোপনীয় অনেক বিষয় সামনে এসেছে। চাকতির হদিশ তো পেয়েছে বিক্রম আর শ্রুতি এবং সেই সাথে যে দুইজনের মৃত্যু হলো সেই দুইজনের গোপন রহস্যও উদ্ধার হলো যেটা বাহাদুর এতদিন লুকিয়ে লুকিয়ে চলছিল। আর এখন সেই হিসেবে দিতিপ্রিয়া বাহাদুরের নাতি তাই তাদের আরো বিপদ মুক্ত রাখার জন্য যত তাড়াতাড়ি পারে আনন্দগড় থেকে বের করার চেষ্টা করছে। বাহাদুরের সত্যিটা আপাতত বিক্রম শ্রুতি এবং একজন বাইরের গুপ্তচরের কাছে জানা। গৌরাঙ্গ লোকটিকেও সেখানে ধরতে পারবে কিনা সেটাও এখন দেখার বিষয়। এইবার যে দুই চাকতির হদিশ পেয়েছে তাতে রাগ সঞ্জীবনীর সূত্র লুকিয়ে রয়েছে যেটার মাধ্যমে আসল লক্ষ্যে বিক্রম পৌঁছাতে পারবে। পরের সিজনে বিষয়গুলো আস্তে আস্তে ক্লিয়ার বোঝা যাবে।


☫ব্যক্তিগত রেটিং:☫
৯/১০


☫ট্রেইলার লিঙ্ক:☫


শুভেচ্ছান্তে, @winkles


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

রুদ্রবীনার অভিশাপ ওয়েব সিরিজের এবারের পর্বটি পড়ে অনেক কিছু জানতে পারলাম দাদা। শেষ পর্যন্ত আরো কিছু চাকতির হদিস পাওয়া গেছে। আর আশা করছি বিক্রম নিজের লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবে। দিতিপ্রিয়া যে বাহাদুরের নাতি এটা জানতে পারলাম। হয়তো সেই তথ্যটা অনেকের কাছেই অজানা। বাহাদুর এবং দিতিপ্রিয়া এদের সবাইকে বিপদমুক্ত থাকতে হলে আরো সাবধানে থাকতে হবে এবং সেই আনন্দগড় থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করতে হবে। অন্যদিকে শ্রুতি এবং বিক্রম অনেক কিছুই জানতে পেরেছে। রাগ সঞ্জীবনীর সূত্র যেহেতু ওই চাকতির সাথে আছে আশা করছি বিক্রম আরো তথ্য উদঘাটন করতে পারবে। পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষায় রইলাম দাদা। আশা করছি খুব শীঘ্রই পরবর্তী পর্ব শেয়ার করবেন।

এই পর্বে অনেক রহস্য উন্মোচন হয়েছে। সব থেকে বড় বিষয় হলো চাকতি দুইটির হদিশ মিলেছে। এই দুইটি চাকতির জন্যই কত সব কাহিনী ঘটালো। এগুলোর সাথে আবার যোগ হলো সেই দুইজনের মৃত্যুর গোপন রহস্য। এখন দেখা যাক দুই চাকতির মধ্যে লুকিয়ে থাকা সূত্র ধরে বিক্রম তার লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারে কিনা। পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম। ধন্যবাদ দাদা।

এই পড়বে তাহলে অনেক রহস্য উন্মোচন হল বিক্রম আর শ্রুতি রাতে লুকিয়ে লুকিয়ে বাহাদুরের ডুপ্লিকেট চাবি নিয়ে পুরনো পত্রিকার সেই বই সংগ্রহ করেছে। তাছাড়া বিক্রম চাকতির মিলিয়েছে।দুজনের মৃত্যুর রহস্য উদঘাটন হলো আর বাহাদুরের নাতি যে দিতিপ্রিয়া সেই জানতে পেরেছি। দু'জন এর বিপদ মুক্ত থাকতে হলে আনন্দ নগর থেকে বের হতে হবে।দুই চাকতির হদিশ পেয়েছে তাতে রাগ সঞ্জীবনীর সূত্র লুকিয়ে রয়েছে যেটার মাধ্যমে আসল লক্ষ্যে বিক্রম পৌঁছাতে পারবে।

দিতিপ্রিয়ার মা মারা গেছে এটা তার বাবার কাছে অজানা কেন দাদা!আর ডাক্তার কেনই বা মিথ্যে বলেছে ?এটা বুঝতে পারলাম না।যাইহোক বাহাদুরের নাতি দিতিপ্রিয়া এটা জানা গেল এবং তাকে সে দ্রুত বিদেশ পাঠাতে চায় সেটাও দেখতে পেলাম।শেষমেশ বিক্রম ও শ্রুতি কিছুটা তথ্য খুঁজে পেয়েছে জেনে ভালো লাগলো।রুদ্রভৈরবের কাছে নাদের মা বন্দি অবস্থায় আছে এটা আগের পর্বে জানতে পারি তাহলে সে কিভাবে বিক্রমের মাকে রাতেই সেখান থেকে মুক্ত করতে সাহায্য করবে !যাইহোক দেখা যাক পরে কী হয়।সুন্দর রিভিউ দিয়েছেন, ধন্যবাদ দাদা।

যাক অবশেষে আমরা প্রথম সিজনের শেষ পর্বে এসে পৌঁছালাম। শেষ দুটো চাকতি এবং রাগ মন্ত্রের হদিস তাহলে বিক্রম পেয়েছে। অনেক রহস্যের জট খুলতে শুরু করেছে। সামনের সিজনে সব একদমই পরিষ্কার বোঝা যাবে। গৌরাঙ্গ লোকটা আবার সব শুনে নিয়েছে, সে হয়তো বিপদ বাড়াতে পারে। যাক এখন দেখার বিষয় সামনের সিজনে কি হয়।

দোয়া রইল পুরো পরিবারের জন্য 🥀