ওয়েব সিরিজ রিভিউ: হোমস্টে মার্ডারস- চেক ইন ( পর্ব ১ )

in hive-129948 •  last year 
হ্যালো বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।

আজকে আপনাদের সাথে একটি নতুন ওয়েব সিরিজ রিভিউ শেয়ার করে নেবো। এই ওয়েব সিরিজটি রিসেন্টলি কিছুদিন আগে রিলিজ পেয়েছে, এটির কাহিনী একটি রহস্যময় মৃত্যুকে ঘিরে তৈরি। এই সিরিজটির নাম হলো 'হোমস্টে মার্ডারস'। আর এই সিরিজের প্রথম পর্বের নাম হলো "চেক ইন"। তাহলে এই পর্বের কাহিনী কিভাবে শুরু হয় সেটি দেখা যাক।


স্ক্রিনশর্ট: ইউটিউব


✠কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য:✠

সিরিজটির নাম
হোমস্টে মার্ডারস
প্লাটফর্ম
hoichoi
সিজন
পর্ব
চেক ইন
পরিচালকের নাম
সায়ন্তন ঘোষাল
অভিনয়
অর্জুন চক্রবর্তী, সোহিনী সরকার, সৌরভ দাস, পর্ণ মিত্র ইত্যাদি
মুক্তির তারিখ
১২ মে ২০২৩ ( ইন্ডিয়া )
সময়
২৭ মিনিট ( প্রথম পর্ব )
মূল ভাষা
বাংলা
কান্ট্রি অফ অরিজিন
ইন্ডিয়া


❂মূল কাহিনী:❂


স্ক্রিনশর্ট: hoichoi

কাহিনীটা শুরু হয় একটা মার্ডারস দিয়ে এবং সেটি মনীষা নামক একজনের স্বামীর। তবে তার স্বামীর খুন হওয়া নিয়ে তার কোনো মাথা ব্যাথা ছিল না, সে দিব্যি ডান্স বারে গিয়ে ড্রিংক করছে আর মাতলামো করছে। ড্রিঙ্কস করতে করতে তার নেশাটা এমন পর্যায়ে চলে গেছে যে সে চোখে পর্যন্ত ঝাপসা দেখা শুরু করেছে। সে ওয়াশরুমে গেলে তার ব্যাগে একটা কাগজ পায় আর সম্ভবত সেই কাগজে কিছু হুমকি ভরা লেখা ছিল, কিন্তু সে অত্যাধিক ড্রিঙ্কস করার কারণে আর লেখাগুলো না পড়তে পেরে ছুড়ে ফেলে দেয় আর কেউ সেটি আবার তৎক্ষণাৎ সেটি তুলেও নেয় অর্থাৎ ওখানে তাকে নিঃসন্দেহে একজন ফ্লো করছিলো আর হতেও পারে যে সে নিজেই এইগুলো করছে বা কারো কোথায় করছে। যাইহোক, এরপর ডাঞ্চ বারের থেকে বাইরে এসে বাড়ি যাওয়ার জন্য গাড়ি দেখতে লাগে আর তার পরিচিত কারো গাড়ি মনে করে ডাক দেয়, কিন্তু তার হুশ ছিল না যে গাড়িটি কে চালাচ্ছে। এরপর গাড়ি চালিয়ে বেশ কিছু পথ অতিক্রম করার পরে রাস্তার মাঝখানে গাড়িটি দাঁড় করিয়ে দেয়। আর এদিকে মনীষা তো গাড়ির মধ্যে বেহুশ অবস্থায় আছে অর্থাৎ সে কোথায় আছে না আছে কিছুই জানে না ওই অবস্থায়। এরপর জ্ঞান ফিরে আসলে সে চমকে যায় কারণ গাড়িতে এক তো কেউ নেই আর তারপর শুনশান রাস্তা অতো রাতে। কিছুক্ষন ডাকাডাকি করার পরে পিছন থেকে একজন রড এনে তাকে মেরে ক্ষতবিক্ষত করে ফেলে।


স্ক্রিনশর্ট: hoichoi

তাকে মারার পরে রাস্তার এক পাশে কন্সট্রাকশনের কাজ চলছিল আর তাকে ওখানে নিয়ে গিয়ে ছুরি দিয়ে নৃশংস ভাবে শুধু কোপাতে থাকে, যা দেখেই বোঝা যায় যে লোকটা মনীষাকে কতটা ঘৃণার চোখে দেখতো। যাইহোক তাকে মারার পরে গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলিয়ে রেখে দেয় সেখানে। আর এদিকে কলকাতা পুলিশ রাস্তার উপর গাড়ি দেখে খুঁজতে আসে আর খুঁজতে খুঁজতে ওই লাশ দেখতে পায় ঝুলানো অবস্থায়। এরপর কাহিনীটা অন্যরূপে দেখা যায়- পাহাড়ি এলাকায় মিতা আর তার স্বামী মিলে একটি অনন্যা হোমস্টে নামে হোটেল বা গেস্ট হাউস ওপেন করে যেখানে ঘুরতে আসা বিভিন্ন টুরিস্টরা বুকিং করে থাকতে পারবে। এইভাবে প্ল্যান করে এইরকম একটা ব্যবসা ওপেন করে। এখানে অনিমেষ এবং কিঞ্জল নামে দুই বন্ধু প্রথমে আসে যার মধ্যে একজন আইপিএস অফিসার এবং অন্যজন থ্রিলার বিষয়ক লেখক। তবে এখানে সাথে আরো একজন এন্ট্রি নেয় আর সে হলো কুহেলি নামক এক মেয়ে। এরপর তাদের বুকিং অনুযায়ী সেখানে থাকতে দেয়, তবে এই কুহেলি মেয়েকে কেমন যেন একটু সন্দেহজনক মনে হয় মিতার কাছে, কারণ তার চালচলন এবং কথাবার্তা অন্যদের থেকে একদম ভিন্ন।


স্ক্রিনশর্ট: hoichoi

তাদের রিসোর্টে মূলত টুরিস্টদের জন্য খাবার নিজেরাই তৈরি করে থাকে। আর কুহেলি নামক মেয়েটি আসার পরের থেকেই মিতার উপর সবসময় নজর রাখতে থাকে লুকিয়ে লুকিয়ে আর সেটি মিতাও টের পায় কিন্তু কোনো কিছু না বোঝার ভান করে চলে আর ব্যাগ ভর্তি টাকা পয়সা সবসময় হাতের কাছে নিয়ে ঘুরতে থাকে অর্থাৎ খেতে বসেও ব্যাগটা হাতছাড়া করতে চায় না, এর মানে একটাই দাঁড়ায় যে মেয়েটির বিষয় কিছুটা রহস্যজনক। তাদের মতো কলকাতা থেকে পরপর আরো কয়েকজন সেখানে চলে আসে যেমন দামিনী, টনি এবং জেও নামক কয়েকজন। যাইহোক, এরপর তারা সবাই যেহেতু একই রিসোর্টে উঠেছে তাই একে অন্যের সাথে আলাপ সেরে নেয় আর রাতে আগুন জ্বেলে গানের আসর বসায়, কারণ ওখানে প্রচন্ড ঠান্ডা। সবাই গান, আড্ডা, গল্প ইত্যাদি বিভিন্ন তালে মেতে থাকে, কিন্তু কুহেলি একপ্রকার অস্বস্তি বোধ করতে লাগে সেখানে, যেন তার এইসব একপ্রকার বিরক্ত লাগছে। অনিমেষ সেখানে আবার তার লেখা একটা থ্রিলার এর কাহিনী বলতে বসে যায়।


স্ক্রিনশর্ট: hoichoi

সবাই যার যার মতো আড্ডাটা জমিয়ে রাখার চেষ্টা করে। তবে কিঞ্জল যখন কলকাতার হাইওয়েতে মনীষার খুনের বিষয়ে বলতে থাকে তখন কুহেলি আরো অস্বস্তিবোধ করতে থাকে আর সেখান থেকে রিসোর্টে চলে যায় আর কিছু না শুনে। তার মানে কুহেলি এই খুনের বিষয়ে কিছুটা নিশ্চিত জানতো। এরপর হঠাৎ করে বিদ্যুৎ চলে যায় কিন্তু বিদ্যুৎটা আসলে ইচ্ছাকৃত ভাবে কেউ বন্ধ করে দিয়েছিলো। এরপর মিতার স্বামী যখন রিসোর্টে গিয়ে মোমবাতি এইসব জ্বালাতে যায় তখন অন্ধকারে রিসোর্টের মধ্যে অন্য কেউ একজন ঢুকে যায় অর্থাৎ সেইই ইচ্ছা করে লাইট অফ করে দিয়েছিলো। সে রিসোর্টে ঢুকে কুহেলীকে প্রথমে আঘাত করে অজ্ঞান করে ফেলে এবং পরে তার উপর একইভাবে অর্থাৎ মনীষাকে যেভাবে খুন করা হয়েছিল ঠিক সেইরকমই নৃশংসভাবে ছুরি দিয়ে অসংখ্যবার কুপিয়ে মেরে ফেলে।


❂ব্যক্তিগত মতামত:❂

এই কাহিনীটা এই অব্দি দেখে যেটা মনে হলো সেটি হলো একটা সাইকো কিলার সবাইকে খুন করে বেড়াচ্ছে। কারণ তার খুন করার যে ধরণ তাতে মনে হলো যে সে একজন সাইকো কিলার বা যাদের খুন করছে বা এখনো করবে তাদের উপর বহু দিনের পুষে রাখা কোনো রাগ এর বদলা নিচ্ছে। বিষয়টা এইরকম হতেও পারে। এখানে কাহিনীটা আসলে পাহাড়ের এই রহস্যময় একটা জঙ্গল যার চারিপাশটা একদম শুনশান, আশেপাশে নেই কোনো জনবসতি। আর এখানে মিতা এবং কুনাল টুরিস্টদের জন্য রিসোর্ট খোলে। আর সেখানে মুহূর্তে কিছু অপরিচিত মুখ একসাথে হাজির হয়ে যায় অর্থাৎ রিসোর্ট বুকিং করে সেখানে ওঠে। এখন এই রিসোর্টে তাদের মধ্যে একজনের খুন অলরেডি হয়ে গেছে আর সেটা জানার পরে নিশ্চই সবার মনে একটা আতঙ্ক কাজ করবে। খুনি কলকাতায় একজনকে খুন করার পরে আবার এই পাহাড়ের রিসোর্টে আরো একজনকে খুন করেছে। একটা খুনের তদন্ত এখনো জারি আর তার মধ্যে আরো একটা খুন। এইবার এই অনন্যা হোমস্টে মার্ডারস এর কাহিনীতে ট্যুইস্ট আসবে পরবর্তী পর্বের থেকে। এখন পরে দেখা যাক এই খুনের খবর জানার পরে কি পদ্ধতি অবলম্বন করতে চলেছে।


❂ব্যক্তিগত রেটিং:❂
৭.৬/১০


❂ট্রেইলার লিঙ্ক:❂


শুভেচ্ছান্তে, @winkles


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

'হোমস্টে মার্ডারস' নামক নতুন একটি ওয়েব সিরিজের রিভিউ নিয়ে আমাদের মাঝে হাজির হয়েছেন দেখে ভালো লাগলো দাদা। নতুন নতুন ওয়েব সিরিজের রিভিউ পড়তে ভালো লাগে। রহস্যময় মৃত্যুকে ঘিরে এই ওয়েব সিরিজটি তৈরি হয়েছে। মৃত্যুর রহস্য যেন বেড়েই চলেছে। কোন সিরিয়াল কিলার হয়তো সবাইকে খুন করছে। সেই ভয়ংকর খুনি খুবই বুদ্ধি করে রিসোর্টে প্রবেশ করেছিল এবং বুদ্ধি করে লাইটের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছিল। যাতে করে অন্ধকারে সে তার নিজের কাজ করতে পারে। মনীষাকে যেভাবে হত্যা করা হয়েছিল ঠিক সেই ভাবে কুহেলীকে প্রথমে অজ্ঞান করে এবং এরপর আঘাত করে। পুরো ব্যাপারটা একই জনের দিকে ইঙ্গিত করছে। একজন সিরিয়াল কিলার সবকিছু করছে। হয়তো এর পেছনে অনেক রহস্য লুকিয়ে আছে। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম দাদা।

দাদা আপনার শেয়ার করা প্রত্যেকটি ওয়েব সিরিজ রিভিউই আমি এ টু জেট পড়ে থাকি। আজকে আরেকটি নতুন ওয়েব সিরিজ ‍রিভিউ শুরু করলেন। হোমস্টে মার্ডারস- চেক ইন। প্রথম পর্বটি পড়ে বুঝতে পারলাম কোন একজন সাইকো কিলার কোন কারনে মানুষ খুন করছে। এই পর্বে অলরেডি দুটি খুন হয়ে গেচে। দেখা যাক পরের পর্বে কোন খুন হয় না কি কাহিনী অন্য দিকে যায়। ধন্যবাদ দাদা।