ওয়েব সিরিজ রিভিউ: মার্ডার ইন দ্যা হিলস - আলটিমেট ট্রুথ ( সিজন ১-অন্তিম পর্ব )

in hive-129948 •  2 years ago 
হ্যালো বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।

আজকে আপনাদের সাথে মার্ডার ইন দ্যা হিলস ওয়েব সিরিজটির অন্তিম পর্ব অর্থাৎ অষ্টম পর্ব রিভিউ দেব। এই পর্বে সব রহস্যের উদ্ঘাটন হবে। এই অন্তিম পর্বের নাম হলো "আলটিমেট ট্রুথ"। আগের পর্বে শেষ দেখা গিয়েছিলো যে DSP অর্জুনের ঘরে ঢুকে অর্জুনকে অজ্ঞান করে ফাইলপত্র নিয়ে যাচ্ছিলো। আজকে শেষমেশ কি হতে চলেছে দেখা যাক।


স্ক্রীনশর্ট: ইউটিউব


☀কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য:☀

সিরিজটির নাম
মার্ডার ইন দ্যা হিলস
প্লাটফর্ম
hoichoi
সিজন
পর্ব
আলটিমেট ট্রুথ
পরিচালকের নাম
অঞ্জন দত্ত
অভিনয়
অর্জুন চক্রবর্তী, অনিন্দিতা বোস, সৌরভ চক্রবর্তী, রাজদীপ গুপ্তা, সন্দীপ্তা সেন, রজত গাঙ্গুলি ইত্যাদি
মুক্তির তারিখ
২৩ জুলাই ২০২১ ( ইন্ডিয়া )
সময়
৩৬ মিনিট ( অষ্টম পর্ব )
ভাষা
বাংলা
কান্ট্রি অফ অরিজিন
ইন্ডিয়া


☫মূল কাহিনী:☫


স্ক্রীনশর্ট: hoichoi

এই পর্বে কাহিনীটা সেখান থেকেই শুরু হলো যেখান থেকে অর্জুনের ঘাড়ে আঘাত করে কিছু সময়ের জন্য অজ্ঞান করে ফেলে। এখানে DSP আসলে তাকে অজ্ঞান করে সমস্ত এভিডেঞ্চ নিয়ে নিয়েছিল ঠিকই কিন্তু তারও কোনো একটা খারাপ উদ্দেশ্য ছিল না এখানে। সে অর্জুনকেও অজ্ঞান অবস্থায় টনির বাড়িতে নিয়ে যায় আর সেখানে সমস্ত লোকজনই ছিল যারা যারা টনির বার্থডে তে ছিল। সেখানে শিলাও ছিল। DSP পরে অর্জুনের জ্ঞান ফিরলে তাকে বলে যে সেই তাকে ঘাড়ে আঘাত করে সমস্ত এভিডেঞ্চ নিয়ে নেয় আর নষ্টও করে ফেলে। তবে তারা একটা বিষয় স্বীকার করেছে যে টনির আসলেই যে খুন করা হয়েছে সেটা তুমি ঠিকই বের করেছিলে কিন্তু তুমি এই কথাগুলো যদি লিখতে তাহলে সেটা হাফ সত্যি হতো আর আমরা এর মধ্যে সবাই জড়িত কারণ সেদিন তার পার্টিতে কিন্তু আমরা সবাই ছিলাম। ফলে আসল সত্যিটা তোমার আগে জানা দরকার। এরপর কাহিনীটা ফিরলো শৈবাল বোসের মৃত্যুর বিষয় নিয়ে কারণ এখানে তার সাথে অনেকের সম্পর্ক জড়িত আছে। যে ডাক্তার নিমা এ আসলে টনির সাথে মিথ্যা ভালোবাসার অভিনয় করছিলো তাকে শাস্তি দেওয়ার জন্য, কারণ শৈবাল এর যে ৮ বছরের একটা বোন ছিল সে এই নিমা ছিল। আবার এদিকে শৈবালের আরেকটা ৮ বছরের ছেলে ছিল একদিন বলেছিলাম সে হচ্ছে এই ফিল্ম মেকার সৌরভ। তারপর এখানে যে তরুণ বোস বলে একজন লেখক ছিল সে শিলার বাবা ছিল। তারপর এখানে বব দাস ছিল উদয় বলে সেই ইন্সপেক্টরের ছেলে।


স্ক্রীনশর্ট: hoichoi

তাহলে কেচ্ছা এখানেই একটাই দাড়িয়েছে সবার মধ্যে যে সবাই কিন্তু কলকাতাবাসি ছিল, কিন্তু তাদের প্রত্যেকের একটা একটা উদ্দেশ্য নিয়ে এই দার্জেলিং এ পা রেখেছিলো আর টনির সমস্ত কুকর্মের শাস্তি দিতে চেয়েছিলো। এখানে বব তার নিজের কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা করে এবং পরে DSP সাহেব তার বিষয় বলে। DSP ছিল সেই ডাক্তার রিমা ব্যানার্জির ছেলে অর্থাৎ তখন সে অনেক ছোট ছিল আর কলকাতায় ছিল। পরে সে পুলিশ অফিসার হয়ে দার্জেলিং এ ট্রান্সফার হয়। এখানে যে লোকটাকে টনির বন্ধু হিসেবে জানতাম আমরা সে আসলে তার সাথে মিথ্যে মিথ্যে বন্ধুত্ব পাতায় তার ক্লোজলি আসার জন্য। এই রজত বাবু ছিল সেই ৩০বছর আগে টনির পার্সোনাল সেক্রেটারি বীরেন বোসের ভাই যার হাতে সমস্ত সত্যি ঘটে যাওয়া অর্থাৎ টনি আর তার বাবার সমস্ত অপকর্মের বিষয় তুলে দিয়ে কলকাতায় পাঠিয়ে দিয়েছিলো। আর এই রজত বাবু এতো বছর ধরে এদের সবাইকে খুঁজে খুঁজে বের করে সমস্ত বিষয় খুলে বলে আর তারা আস্তে আস্তে বিষয়গুলো বোঝার চেষ্টা করে আর এই সত্যিটা অনুধাবন করে। এরপর তারা সবাই মিলে টনিকে মারার প্ল্যান তৈরি করে, যদিও এখানে অর্জুন ছিল বাইরের ব্যক্তি কিন্তু তাকেও ডেকেছিল শিলার ফ্রেন্ড হিসেবে।


স্ক্রীনশর্ট: hoichoi

টনির বার্থডে পার্টিতে কি হবে না হবে সব তারা রজত বাবুর সাথে বসে সাজিয়ে নেয় আর এখানে টনির ওয়াইফকেও রজত সব কাগজপত্র দেখিয়ে সত্যিটা বলে টনির বিষয়ে। তাই রমা দেবীও তাদের কাজে বাধা দেইনি অর্থাৎ তাদের বলে গিয়েছিলো আমি কলকাতায় চলে যাচ্ছি তোমরা যা খুশি করো। এরপর তারা পার্টিতে এমন কিছু প্ল্যান করে এসেছিলো যাতে তাদের সবার মনে হয় হার্ট এটাক এ মারা গেছে। আর এইজন্যই অর্জুনকে একজন জার্নালিস্ট হিসেবে এনেছিল যাতে তার হাত দিয়ে সমস্ত বিষয় একটা হার্ট এটাক হিসেবে খবরের কাগজে বেরিয়ে যায় আর আসল সত্যি ঘটনাটা চাপাই থেকে যায়। এখানে আসলে অর্জুন এতদিন পর্যন্ত যা কিছু করেছে তা সব নিজের ইচ্ছাতে করতে পারতো না কারণ এখানে তারা সবাই একটু একটু করে গাইড করেছিল রজত বাবুর কোথায়। রজত বাবু এটা চেয়েছিলো যে আস্তে আস্তে তাকে সত্যির দিকে ঠেলে দিতে হবে কারণ তার জার্নালিস্ট হিসেবে সত্যি কথা লেখাটা তার কাজ। এখানে যে ডায়েরিটা অর্জুন শিলার ঘরের থেকে পেয়েছিলো সেটা বব রেখে এসেছিলো আর সেটা পরে জানতে পারে কারণ অর্জুনও ভুল করে তার চশমা সেখানে রেখে এসেছিলো। আর এইটা নিয়ে সবাই বব এর উপরে ভীষণ চোটে ছিল, কারণ এই ডায়েরির মাধ্যমে ও সব কিছু জেনে যাবে আমাদের ব্যাপারে।


স্ক্রীনশর্ট: hoichoi

রজত বাবু তাদের বিষয়গুলো বুঝিয়ে পরে শান্ত করে এবং তাদের বোঝায় যে তাকে আমাদের নিজেদের গন্ডির মাধ্যমে রাখতে হবে যাতে বাইরে কোনোকিছু প্রকাশ না করতে পারে তাহলে সব বিষয় বাইরে জানাজানি হয়ে যাবে খুব শীঘ্রই। আর বিষয়গুলো জায়েসওয়াল এর দিকে ঠেলে দিতে হবে। তাই অর্জুনকে তারা মাঝে মধ্যে ভয় দেখিয়ে দেখিয়ে ঠান্ডা রাখার চেষ্টা করতো। আর রজত বাবুর আরো একটা প্ল্যান ছিল যে তার বিষয়গুলোতে একটু ধোয়াঁশা রাখার চেষ্টা করতে হবে যাতে সে বারে বারে আমাদের কাছে আসে আর আমরা প্রোমোটার জায়েসওয়ালের দিকে চাপিয়ে দেব। কিন্তু তারা শেষ পর্যন্ত বুঝতে পারিনি যে জায়েসওয়াল তাকে তুলে নিয়ে যেতে পারে। অর্জুনকে তারা ভয় অবশ্যই দেখাতে চেয়েছিলো কিন্তু ক্ষতি কখনো করতে চায়নি। আর তার জন্য বব সবসময় লুকিয়ে লুকিয়ে অর্জুনকে পাহারা দিতো। জায়েসওয়ালের লোকজন যেদিন তাকে তুলে নিয়ে গেছিলো সেদিনও বব তাকে পাহারা দিচ্ছিলো অর্থাৎ সর্বক্ষণ। এই ছিল সমস্ত বিষয়ের কেচ্ছা, স্ক্যান্ডেল।


☫ব্যক্তিগত মতামত:☫

অবশেষে সবকিছু জানা গেলো যে এই টনির খুনের পিছনে অনেকগুলো মানুষের হাত ছিল যেমন এই চরিত্রের সবাই। এমনকি তার নিজের ওয়াইফও জড়িত ছিল। তার ওয়াইফ তাদের সঙ্গ দিয়েছিলো কারণ যে মানুষ এতগুলো মানুষের জীবন নষ্ট করলো তার আসলে বেঁচে থাকার কোনো অধিকার আছে বলে মনে হয় না। এখানে যারা যারা খুনের জন্য দায়ী ছিল আর টনি তাদের পরিবারের যাদের যাদের হত্যা করেছিল তাদের মধ্যে কারো বাবা, পিসি, বোন, মা, ভাই ছিল। ফলে এতগুলো মানুষকে ছোট থাকা অবস্থায় তাদের এতিম করে দিয়েছে যে ব্যক্তি তাকে হত্যা করলেও সেটাকে অপরাধ বলা যায় না, যদিও নিজের হাতে আইন তুলে নেওয়া অপরাধ কিন্তু মানুষ হিসেবে তারা যেটা করেছে সেটা উচিত ছিল আর সেটাই প্রমান করার চেষ্টা করেছে। আর এখানে সবকিছু তাদের সেই ৩০ বছর এর থেকে প্ল্যান সাজানোর কাহিনী চলছে। সবাই যখন কোনো কোন কিছুতে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করে নিয়েছে তখন সবাই দার্জেলিং এ পোস্টিং হয়ে চলে এসেছে এই টনির মারার জন্য। প্রথম থেকেই একটা কথা বলেছিলাম চিরকুটের কথা এটাও ডাক্তার নিমা তার পকেটে ঢুকিয়ে দিয়েছিলো। তারপর শিলা যে ঘায়েল হয়ে অর্জুনের বাড়িতে এসেছিলো এটাও একটা সাজানো ছিল অর্থাৎ শিলা নিজেই নিজেকে আঘাত করে কপাল ফাটিয়ে তার বাড়িতে যায় যাতে লেখাগুলো অর্জুন না লিখতে পারে। টনির বার্থডেতে যে বিষ দেওয়া হয়েছিল টনিকে সেটা শিলাই দিয়েছিলো আর কেকের সাথে মিশিয়ে দিয়েছিলো। এরপর এই কাহিনীগুলো তারা যখন বলছিলো তখনও অর্জুন সেগুলো অন্য আরেকটা সেলফোনে রেকর্ড করছিলো কিন্তু সে যদি তাদের এই ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে লেখে তাহলে অনেক বড়ো ক্ষতি সবার হয়ে যাবে তাই অর্জুন শেষে না লেখার সিদ্ধান্ত নেয় আর চলে যায় সেখান থেকে। এই ছিল মার্ডার ইন দ্যা হিলস এর আসল রহস্য।


☫ব্যক্তিগত রেটিং:☫
৯.৮/১০


☫ট্রেইলার লিঙ্ক:☫


শুভেচ্ছান্তে, @winkles


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

দাদা আজকের পর্বটি পড়ে খুবই ভালো লাগলো। অবশেষে এই গল্পের রহস্য জানতে পারলাম। সত্যিই টনিকে হত্যা করার পেছনে সকলেই হাত রয়েছে। এটা জানতে পেরে ভাল লাগল, কারণ টনি একজন খারাপ মানুষ। আর তাকে হত্যা করাটা খুবই ভাল হয়েছে। যদিও হাতে আইন তুলে নিয়েছে, হাতে আইন তুলে নেওয়ার অপরাধ। তারপরেও টনি যে অপরাধ করেছে তার শাস্তি পেয়েছে। এমন কি তাকে হত্যা করতে তার ওয়াইফ সাহায্য করেছে। আসলে এতগুলো মানুষকে এতিম করেছে এতগুলো মানুষকে মেরে হত্যা করেছে। তার এই শাস্তি প্রাপ্য ছিল। সত্যি দাদা আজকের পর্বটি আমার খুবই ভালো লেগেছে। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি পর্ব আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।

যদিও টনি একজন খারাপ লোক ছিল কিন্তু সবাই মিলে টনিকে খুন না করে আইনের আয়ত্তে আনতে পারতো। তা না করে আইন নিজের হাতে তুলে নিয়েছে সবাই । মোটামুটি এই সিরিজের সকল চরিত্রই এই খুনের সঙ্গে জড়িত। অর্জুন শেষে গিয়ে সবার বিষয় চিন্তা করে আর পত্রিকায় বিষয়টি ছাপালো না। কাহিনী যেভাবে আগাচ্ছিলো শেষে গিয়ে তেমন একটা ভালো লাগলো না আমার কাছে। কেমন একটা গোল মেলে মনে হল। যদিও টনি অনেক লোকের ক্ষতি করেছিল তারপরও এভাবে সমাধান ঠিক হয়নি। যাইহোক দাদা গল্প তো শেষ হয়েছে। এখন আপনার নতুন কোন সিরিজের অপেক্ষায় রইলাম।

টনির মতো একটা খারাপ লোক যে কিনা এতো গুলো মানুষের ক্ষতি করেছে, বেশ ভালোই পরিকল্পনা করে তাকে শাস্তি দিয়েছে। তবে আইন হাতে তুলে না নিয়ে তাকে পুলিশে দিয়ে শাস্তি দিতে পারতো। এতো মানুষকে মেরে লোকটা ঠিক ফাঁসিতে ঝুলতো। যাক গল্প তো গল্পই হয়ে থাকে। যাক বেশ রহস্যময় কাহিনীর অবসান ঘটলো। ভালো রিভিউ করেছেন দাদা পুরোটার।

দোয়া রইল পুরো পরিবারের জন্য।

দেখতে দেখতে শেষ পর্বে চলে এলাম। তবে এতটা রহস্য ঘেরা ছিল এটা কিন্তু আগে বুঝতে পারিনি। টনির মৃত্যুর পেছনে দেখি অনেকের হাত আছে। এমনকি তার স্ত্রীর হাত আছে এটা জেনে সত্যি অবাক হলাম। আসলে যে মানুষটি অপরাধ করে সেই মানুষটির শত্রুর সংখ্যা সব সময় বেশি হয়। আর শিলা যে অভিনয় করেছে তাতে বোঝার কোন উপায় ছিল না যে সে নিজেই নিজেকে আঘাত করেছে। অর্জুনকে বেশ ভালই বোকা বানানোর চেষ্টা করেছে এবং তার কাজে বাধা হয়ে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছে। তবে অপরাধীকে শাস্তি না দিয়ে যদি আইনের আওতায় আনা হতো তাহলে এতগুলো মানুষ অপরাধমূলক কাজের সাথে জড়িয়ে পড়তো না। ভালো লাগলো দাদা আপনার শেয়ার করা ওয়েব সিরিজের রিভিউটি পড়ে।

দাদা অবশেষে মার্ডার ইন দ্যা হিলস এর রহস্য জানা গেল। টনিকে মারার পিছনে সবারই হাত ছিল। যার সূচনা হয় টনির বার্থডে অনুষ্ঠানে চিরকুটের মাধ্যমে। সব থেকে বেশি আশ্চর্য লাগে টনির ওয়াইফও টনির হত্যার সাথে জড়িত ছিল। একজন মানুষ কতটা খারাপ হলে তার ওয়াইফ তার হত্যার সাথে জড়িত থাকতে পারে। যদিও মানুষ হত্যা অন্যায় তবে সবাইকে টনি অনেক কষ্ট দিয়েছে।যার জন্য সবাই এক সাথে হয়ে কাজটি করেছে। ধন্যবাদ দাদা। দারুন একটি ওয়েব সিরিজ রিভিউ দিলেন।