ওয়েব সিরিজ রিভিউ: ব্যাধ ( পর্ব ৬ )

in hive-129948 •  last year 
হ্যালো বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।

আজকে আপনাদের সাথে 'ব্যাধ' ওয়েব সিরিজটির ষষ্ঠ পর্ব তথা অন্তিম পর্ব রিভিউ দেব। এই পর্বের নাম হলো "দ্যা রেভোলুশন"। গত পর্বের শেষ দেখেছিলাম যে সৌভিক পরে কানাই এর কাছে ফিরে এসে তারা একসাথে হয়ে খুনি লোকটাকে ধরবে। আজকে তার শেষ পরিণতিটা কি হয় সেটা দেখা যাক।


স্ক্রিনশর্ট: ইউটিউব


✠কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য:✠

সিরিজটির নাম
ব্যাধ
প্লাটফর্ম
hoichoi
সিজন
পর্ব
দ্যা রেভোলুশন
পরিচালকের নাম
অভিরূপ ঘোষ
অভিনয়
রজতাভ দত্ত , অনির্বান চক্রবর্তী, খরাজ মুখার্জি, সৌমেন বোস , বিবৃতি চ্যাটার্জি, যুধজিৎ সরকার ইত্যাদি
মুক্তির তারিখ
১১ ফেব্রুয়ারি ২০২২( ইন্ডিয়া )
সময়
২৩ মিনিট ( ষষ্ঠ পর্ব )
মূল ভাষা
বাংলা
কান্ট্রি অফ অরিজিন
ইন্ডিয়া


☫মূল কাহিনী:☫


স্ক্রিনশর্ট: hoichoi

তো সৌভিক যখন তার নতুন পোস্টিং ছেড়ে কানাই এর কাছে আনইউসিয়াল ডিপার্টমেন্টে আসে তখন তাদের একটা ফোন আসে। এই ফোনটা মূলত সেই মুকুন্দপুর গ্রামের পোস্ট অফিস থেকে একটা লোক করেছিল অর্থাৎ যে চিঠিপত্র কলকাতায় পাঠিয়ে থাকে। তো সেই লোকটা সেই হিসেবে পনেরো দিন বাদে তাদের পোস্ট অফিসে এসে আবার সেই ম্যাগাজিন অফিসে কয়েকটা চিঠি পাঠানোর জন্য বলে এবং সব ঠিকানাও বলে। তবে সে এইসব পুরোটাই মধুসূদন নামের লোকটার নাম দিয়ে চালিয়ে দেয়। লোকটা চলে যাওয়ার পরে পোস্ট অফিসের সেই লোকটা তার পিছু নেয় যে কোথায় যাচ্ছে। লোকটা ওখান থেকে বাড়ির দিকে না গিয়ে সরাসরি স্টেশন থেকে টিকিট কেটে আবার সেই কাজের জন্য যেতে থাকে। সোনাহাটি নামের একটি গ্রামে যাওয়ার জন্য সেখান থেকে লোকাল ট্রেন ধরে চলে যায়।


স্ক্রিনশর্ট: hoichoi

তবে সমস্যাটা হয়ে সৌভিক আর কানাই এর, কারণ এই সোনাহাটি গ্রামে যেতে গেলে এর পরের ট্রেন যেটা ছিল সেটাও চলে যায় তাই তাদের একমাত্র উপায় ছিল কোনো কিছু করে একটা গাড়ি করে চলে যাওয়া, না হলে তার আগেই লোকটা আবার পাখি মেরে শেষ করে ফেলবে। লোকটা তাদের আগে সেখানে পৌঁছিয়ে যায় এবং কাশবনে যেখানে চড়াই পাখিগুলো সাব্সময় আসে সেখানে জাল বিছাতে থাকে খাবার ছড়িয়ে। এর মধ্যে তারা একটা ট্যাক্সি ধরে সোনাহাটি গ্রামে পৌঁছিয়ে যায় এবং সেখানে গিয়ে আরো সময় নষ্ট হতে থাকে, কারণ এতো বড়ো মাঠ জুড়ে কাশবন যে খুঁজে পেতেই খুব হেপা। তার মধ্যে লোকটা চড়াই পাখি ধরে ধরে গলা কাটতে শুরু করে দেয়, কিন্তু কানাই আর সৌভিক অন্তিম মুহূর্তে সেখানে পৌঁছিয়ে যায় আর পাখি মারা থেকে আটকায়।


স্ক্রিনশর্ট: hoichoi

তবে লোকটা খুবই চালাক, সেখান থেকে বাঁচার জন্য পাখির খাবার তাদের চোখে ছুড়ে মেরে কাশবনে লুকিয়ে পরে। এরপর তারা খুঁজতে লাগলে লোকটা চালাকি করে কানাই এর পিছন থেকে মাথায় পাথর দিয়ে আঘাত করে অজ্ঞান করে ফেলে। সৌভিক পরে সেই শব্দ শুনে সেখানে আসে, কিন্তু তাকেও কাস্তে দিয়ে হাতে আঘাত করে, আর তাদের মধ্যে ধস্তাধস্তি হতে থাকে। কানাই আবার এর মধ্যে উঠে এসে গুলি চালায় আর তখনি তাকে আটক করতে পারে। এরপর থানায় ফোন করে গাড়ি আর ফোর্স নিয়ে আসতে বলে। তবে এর মধ্যে তার এই পাখি মারার ঘটনা শুনতে চায় অর্থাৎ কেন সে এই কাজে নিয়োজিত হলো।


স্ক্রিনশর্ট: hoichoi

মূলত এই লোকটা আর মধুসূদন দত্ত জেলে থাকাকালীন পরিচিত হয় আর সেখান থেকে সে জানতে পারে এই চড়াই পাখির জন্য প্রতিবছর ফসল নষ্ট হতে থাকে। তবে এই চড়াই পাখি মারার বিপ্লব সে ১৯ শতকের কোনো এক সময়ে বাইরের দেশে সরকার এই চড়াই পাখি মারার বিপ্লব শুরু করেছিল আর তাই সেই বিপ্লবটা এই দেশেও সে শুরু করতে চেয়েছিলো যাতে তার দেখাদেখি অন্যরাও এই বিপ্লবে অংশগ্রহণ করে। তবে এটা মধুসূদন দত্ত তার ম্যাগাজিন এর মাধ্যমে সবার মাঝে জানাতে চেয়েছিলো, কিন্তু কোনো বড়ো ম্যাগাজিন কোম্পানি সেটাতে রাজি হয়নি আর তারপর সে মারা যায়। আর সেই কাজকে সম্পন্ন করতে এই লোকটা এই পাখি মারা শুরু করে দেয়।


☫ব্যক্তিগত মতামত:☫

এই ছিল কাহিনীর অন্তিম ঘটনা। যতগুলো গ্রাম সে লিস্ট করে একটা টার্গেট করে রেখেছিলো, এটি ছিল তার মধ্যে শেষ গ্রাম। এই ঘটনা সব খুলে বলার পরে পুলিশ গাড়ি নিয়ে আসলে তাকে নিয়ে যায় আর এইসব সিরিয়াল কিলারের কেস লাগিয়ে দেয়। এটা ঠিক যে, খুন খুনই, সেটা মানুষ খুন হোক আর অন্য কোনো প্রাণীই হোক না কেন। তাই সাজা একই তার প্রাপ্ত।


☫ব্যক্তিগত রেটিং:☫
৯/১০


☫ট্রেইলার লিঙ্ক:☫



শুভেচ্ছান্তে, @winkles


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

দাদা কাহিনী তাহলে এই। চড়াই পাখি মারার জন্য বিল্পপ ঘটাতে চেয়েছিল। আমি যতটুকু জানি ১৯ শতকের কোনো এক সময়ে চীন দেশে সরকার এই চড়াই পাখি মারার বিপ্লব শুরু করেছিল। সেই বছর চীন সরকার কে কেউ বলেছিল যে এই চড়াই পাখির জন্য প্রতিবছর অনেক ফসল নষ্ট হয়। এই চড়াই পাখি কৃষকের অনেক ফসল নষ্ট করে ফেলে। যার ফলে সেই বছর অনেক পাখি মেরেছিল। কিন্তুু এতে হিতে বিপরীত হয়ে যায়। পাখি মারার কারনে পরের বছর কৃষকের ফসলে এমন পোকা আক্রমন করেছিলো যে পোকা চড়ই পাখি খেয়ে ফেলতো। এখন চড়ই পাখি না থাকার কারনে পোকা তাদের সব ফসল খেয়ে ফেলে। তাদের অনেক লস হয়। চীনের ইতিহাসে সেই বছরই সব থেকে বড় দুর্বিক্ষ দেখা দিয়েছিল। আজকের মুভিটা সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই সাজানো হয়েছিল। এখানে মধুসূদন দত্ত আগে পাখি মারার কাজটা শুরু করে। সে তার ম্যাগাজিন এর মাধ্যমে সবার মাঝে জানাতে চেয়েছিলো, কিন্তু কোনো বড়ো ম্যাগাজিন কোম্পানি সেটাতে রাজি হয়নি আর তারপর সে মারা যায়। আর সেই কাজকে সম্পন্ন করতে এই লোকটা এই পাখি মারা শুরু করে দেয়। এই রহস্য উন্মোচন করতে পুলিশের অনেক বেগ পেতে হয়েছে। এখানে খুনিকে খুজে বের করতে প্রধান ভূমিকা পালন করেছে মুকুন্দপুর গ্রামের পোস্ট অফিসের পোষ্ট মাস্টার। তাকে পুরষ্কার দেওয়া দরকার। ধন্যবাদ।

'ব্যাধ' ওয়েব সিরিজের ষষ্ঠ পর্ব অর্থাৎ অন্তিম পর্ব রিভিউ পড়ে অনেক ভালো লাগলো। যখন শেষ পর্ব পড়া হয় তখন সম্পূর্ণ বিষয় সামনে চলে আসে। আর খুব ভালোভাবে বুঝতে পারা যায়। তবে এই খুনের রহস্য উদঘাটন করা মোটেও সহজ ছিল না। সৌভিক যখন তার নতুন পোস্টিং ছেড়ে কানাই এর কাছে অর্থাৎ আনইউসিয়াল ডিপার্টমেন্টে আসে তখন তাদের কাছে ফোন আসে সেই পোস্ট অফিস থেকে। আসলে সেই খুনি আবারো চিঠি পোস্ট করার জন্য সেখানে এসেছিল। যেহেতু পনেরো দিন পর পর সে সেখানে আসতো তাইতো পোস্টমাস্টার তাকে ফলো করেছিল। কিন্তু খুনি অনেক চালাক ছিল। আসলে এই পাখি হত্যার প্লান অনেকদিন আগেই করা ছিল। ব্যাধ লোকটি মূলত মধুসূদন দত্তের সাথে জেলখানায় একসাথে ছিল। আর সেখান থেকেই এই প্লান করেছিল। যেহেতু মধুসূদন দত্ত তার নিজের অসম্পূর্ণ কাজ রেখে গিয়েছিলেন তাইতো ব্যাধ নতুন করে সবটা শুরু করে। আর ফসল রক্ষা করার জন্য পাখিগুলো মেরে ফেলে। তবে খুনি সব সময় খুনিই হয়। কারণ পশু পাখি হত্যা করা আর মানুষ হত্যা করা একই কথা। দারুন একটি ওয়েব সিরিজের রিভিউ আমাদের মাঝে উপস্থাপন করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাচ্ছি দাদা।

১৯ শতকে চিনে সম্ভবত এইরকম একটা উদ‍্যোগ নেওয়া হয় যার নাম ছিল দ‍্যা প্স‍্যারো কিলিং মিশন। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় এই চড়ুই মারার পরের বছর ঐ দেশে ভয়াবহ দূর্ভিক্ষ দেখা দেয়। ফসল না হওয়াই চড়ুই হত‍্যা করা মোটেই ঠিক না। কিন্তু শেষ গ্রাম সোনাহাটি তে গিয়ে ঠিকই ধরা পড়ে যায় সেই লোকটা। এবং কেসটাও ক্লোজড হয়। রহস‍্য ভেদ হয় চড়ুই হত‍্যার।

Posted using SteemPro Mobile

দাদা আপনি অনেক সুন্দর করে এই ওয়েব সিরিজের ষষ্ঠতম পর্ব আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। অনেক সুন্দর করে আপনি এই ওয়েব সিরিজের ষষ্ঠতম পর্বটা তুলে ধরেছেন। এই পর্বের মাধ্যমে মূল কাহিনীটা জানতে পেরেছি। এখানে তো দেখছি চড়াই পাখি মারার জন্য বিপ্লব ঘটাতে চেয়েছিল ওই খুনিটা। আসলে পশু পাখি হত্যা করা কিন্তু একেবারেই ঠিক না। খুনি সব সময় খুনি হয় ,তা মানুষ খুন করুক বা পশুপাখি খুন করুক না কেন। ১৫ দিন পর পর যেহেতু ওই লোকটা আসতো সেজন্যই তো ওই পোস্টমাস্টার তাকে ফলো করতো। লোকটা তো অনেক বেশি চালাক তা শুরু থেকেই বুঝতে পেরেছিলাম। মধুসূদন দত্ত নিজের অসম্পূর্ণ কাজ রেখে যাওয়ার পর এই খুনিটা আবারো এটি চালু করতে চেয়েছিল, সে ভেবেছিল তার থেকে দেখে অন্যরাও অংশগ্রহণ করবে। ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর করে এই ওয়েব সিরিজের রিভিউ টা সবার মাঝে ভাগ করে নেওয়ার জন্য। ধন্যবাদ দাদা।

দাদা আপনার ওয়েব সিরিজের রিভিউ গুলো আমার কাছে অনেক বেশি ভালো লাগে। ব্যাধ লোকটা দেখছি অনেক বেশি চালাকির মাধ্যমে চড়ুই পাখি গুলোকে মেরে ফেলছিল। এই কাহিনীটির অন্তিম ঘটনা আপনি এই পর্বের মধ্যে অনেক সুন্দর করে তুলে ধরেছেন। আর এই পর্বের মাধ্যমে অনেক কিছুই স্পষ্টভাবে বুঝতে পেরেছি। চড়ুই পাখি কিন্তু ফসলের মধ্যে থাকা পোকাগুলো খেয়ে ফেলত। যার কারনেই ফসল ভালোভাবে হত, কিন্তু চলো পাখিগুলো মেরে ফেলার কারণে ভালোভাবে ফসল হয় না। উনিশ শতকে চীন দেশের সরকার এই চড়ুই পাখি মারার বিপ্লব শুরু করেছিল। ওনাকে কেউ বলেছিল চড়ুই পাখির কারনে ফসল ভালোভাবে হয় না। কিন্তু এই পরামর্শটা একেবারে ভুল ছিল। রিভিউটা অনেক বেশি সুন্দর ছিল দাদা।