মুভি রিভিউ: চন্দ্রমুখী ২

in hive-129948 •  last year 
হ্যালো বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।

আজকে আপনাদের সাথে একটি মুভি রিভিউ শেয়ার করে নেবো। এই মুভিটির নাম হলো "চন্দ্রমুখী২"। এটি একটি হরর মুভি। এই হরর কাহিনীটা কিভাবে শুরু হয় সেটা দেখা যাক।


স্ক্রিনশর্ট: ইউটিউব


✠কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য:✠

মুভির নাম
চন্দ্রমুখী ২
প্লাটফর্ম
নেটফ্লিক্স
পরিচালকের নাম
পি ভাসু
অভিনয়
কঙ্গনা রানাউত, মহিমা নাম্বিয়ার, রাঘব লরেন্স, লক্ষ্মী মেনন, সুবিক্ষা, ভাদিভেলু ইত্যাদি
মুক্তির তারিখ
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩( ইন্ডিয়া )
সময়
২ ঘন্টা ৫০ মিনিট
ভাষা
হিন্দি
কান্ট্রি অফ অরিজিন
ইন্ডিয়া


✠মূল কাহিনী:✠


স্ক্রিনশর্ট: NETFLIX

কাহিনীটা সাধারণত শুরু হয় গ্রামের একটি বড়ো বাড়ি থেকে। আর এই বাড়ির মালিক ভাদিভেলু নামের একজন। এই ব্যক্তি তার বাড়ি বিক্রি করার জন্য অনেক রকম চেষ্টা করে, আর বাড়িটি মোটামুটি যেই দেখবে তারই পছন্দ হয়ে যাবে। কিন্তু এখানে কেউ বেশিদিন থাকতে পারে না। এইভাবে বেশ কিছু পার্টি চলে যায়। এরপর একটি পরিবার শহর থেকে এখানে আসে এবং বাড়িটি কেনার জন্য রাজি হয়। তবে তার আগে এখানে তারা কিছুদিন থেকে দেখতে চায়, তারপর সবকিছু ফাইনাল করবে। এই গ্রামে একটা মন্দির আছে যেটা তাদের পূর্বপুরুষের সময় থেকে চলে আসছে, কিন্তু তাদের কোনো প্রজন্মই কখনো সেই মন্দিরের চৌকাঠ পার হয়নি, দীর্ঘদিন ধরে পড়ে থাকায় একপ্রকার জঙ্গলের মতো অবস্থা তৈরি হয়ে যায় সেখানে। এদিকে তারা এই বাড়িতে থাকার পরের থেকে বিভিন্ন ধরণের আওয়াজ শুনতে পায়, তবে এই ঘরের একদম উপরের একটি রুমে চন্দ্রমুখী নামের একটি মেয়ের আত্মা আটকিয়ে রাখা আছে, তাই সেখানে কাউকে যেতে মানা করে। এইসব ঘটনার কারণে একজন গুরুজীকে ডাকে আর সেই বলে এইসবের কারণ ওই মন্দিরে কোনো পুজো না করায় আর এইসব সমস্যার সমাধান হতে পারে সেখানে যজ্ঞ করে।


স্ক্রিনশর্ট: NETFLIX

এরপরের দিন তাদের পরিবারের কয়েকজন ওই মন্দিরের কাছে গিয়ে এই পরিস্থিতি দেখে সেখানে কিছু লোকজন ঠিক করতে চায় জায়গাটা পরিষ্কার করার জন্য, তবে সেখানে একজন বৃদ্ধ পুরোহিত বলে এখানে ভেট্টাইন নামের একজনের আত্মা আছে আর তাই এই মন্দিরে কোনো প্রদীপ জ্বালালে তার আত্মা আরো শক্তিশালী হয়ে উঠবে আর চন্দ্রমুখী তা কখনোই হতে দেবে না। তাই তাদের এইসব করতে মানা করে। সেখানে কয়েকজনকে ঠিক করলেও তাদের পরেরদিন মৃত দেহ পাওয়া যায়। এরপরে তারা হাল ছেড়ে দেয়। এরপর তাদের পরিবারের একজন এই ভেট্টাইন এর রূপেই আসে আর সেই মোটামুটি সব ব্যবস্থা করে। তবে যেখানে চন্দ্রমুখী নামের একটি মেয়ের আত্মা বন্দি করে রাখা হয়েছিল সেখানে তাদেরই একজন চলে যায় ঘুরতে ঘুরতে এবং সেই মুহূর্তে তার আত্মা তার শরীরে প্রবেশ করে বশ করে নেয়। এরপর থেকে ভেট্টাইনকে মারার জন্য উঠে পড়ে লাগে কারণ তাকে সে পুড়িয়ে মেরেছিলো। এই মন্দিরের ওখানে একজন সাধু ছিল, আর সে এই চন্দ্রমুখীর কাহিনী জানতো সবকিছু, আসলে কি ঘটনা ঘটেছিলো।


স্ক্রিনশর্ট: NETFLIX

একদিন এই ভেট্টাইনকে সবকিছু খুলে বলতে থাকে। আসলে অনেক বছর আগে একটা রাজ্যে হামলা হয় আর সেই রাজ্যের রাজমহলের নর্তকী ছিল এই চন্দ্রমুখী। হামলা করে তাদের রাজ্য হাতিয়ে নেয় এবং তার দৃষ্টি পড়ে চন্দ্রমুখীর উপরে। তবে ভেট্টাইন নামের লোকটি সেই রাজার বন্ধু ছিল আর তাকে চন্দ্রমুখীকে তার কাছে ধরে নিয়ে আসতে বলে। কিন্তু এখানে তার বন্ধুই ভেট্টাইন চন্দ্রমুখীকে পছন্দ করে ফেলে আর তাকে বিয়ে করতে চায় আর এই নিয়ে তাদের মধ্যে যুদ্ধ হয় আর তার বন্ধুকে মেরে ফেলে। তবে চন্দ্রমুখী আবার অন্য আরেকজনকে ভালোবাসতো। তার পরেও ভেট্টাইন তাকে জোর করে বিবাহ করে, আর এরপর সে যাকে ভালোবাসতো একদিন তার সাথে পালিয়ে যেতে দেখলে তাকেও মেরে ফেলে আর চন্দ্রমুখীকে জীবিত পুড়িয়ে মেরে ফেলে।


স্ক্রিনশর্ট: NETFLIX

তারপরের থেকে এই কাহিনী শুরু হয় অর্থাৎ চন্দ্রমুখী ভেট্টাইনকে মারার জন্য খুঁজে বেড়াতে থাকে আত্মারূপে। এরপর এই কাহিনী শোনার পরে তাদের কাছে চন্দ্রমুখীর আসল রহস্য বের হয়। এখন তাদের মতে চন্দ্রমুখীর আত্মা সেই মেয়ের শরীর থেকে তখনই যাবে যখন সে ভেট্টাইনকে হত্যা করতে পারবে। আর ভেট্টাইন সেই হিসেবে তার সামনে যায় আর তার সাথে তলোয়ার যুদ্ধ করে, কিন্তু প্ল্যান ছিল অন্যরকম অর্থাৎ ওর জায়গায় ওই বৃদ্ধ লোকটি মারা যায়, কিন্তু চন্দ্রমুখী বুঝতে পারে না, কারণ সে তাকে মারার আনন্দে খেয়ালই করিনি কাকে মেরেছে আর সেই সাথেই তাকে পুড়িয়ে দেয়।


✠ব্যক্তিগত মতামত:✠

এই হরর কাহিনীটা পুনর্জন্মের কাহিনীর মতো। তবে এখানে ভেট্টাইন নামের এই ব্যক্তিটির পুনর্জন্ম হলেও চন্দ্রমুখীর আর পুনর্জন্ম হয়নি। তবে ভেট্টাইন এর আগের জন্মে মারা গেলেও তার আত্মা ওই বাড়িতে রয়ে গিয়েছিলো। এই বাড়িটা আগেরকার সময়ে রাজমহল ছিল, তবে এই রাজমহলের সিংহাসন বা যেখানে বৈঠক হতো সেইটা বন্ধ করে রেখেছিলো। ভেট্টাইন একদিন সেখানে প্রবেশ করে সিংহাসনে বসার পরেই তার শরীরেও এই আত্মা প্রবেশ করে যায়। চন্দ্রমুখী যেমন একজনের শরীর বেছে নিয়েছিল, এখানে ভেট্টাইনও তার আগের রূপের এই লোকটার শরীরে প্রবেশ করে তাদের ইচ্ছা মতো প্রতিশোধ নেওয়ার খেলায় মেতে ওঠে। অবশেষে চন্দ্রমুখী তার প্রতি হওয়া অন্যায়ের প্রতিশোধ নিয়ে নিলেও সেটা ভুল লোকের উপরে ছিল। আর চন্দ্রমুখীর সাথে ভেট্টাইন এর তলোয়ার যুদ্ধের সময়ে তার আত্মাটাকেও বন্দি করে নিয়েছিল।


✠ব্যক্তিগত রেটিং:✠
৭.৫/১০


✠ট্রেইলার লিঙ্ক:✠



শুভেচ্ছান্তে, @winkles


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

চমৎকার একটি মুভি রিভিউ শেয়ার করলেন দাদা। হরর মুভি গুলো খুবই ভালো লাগে। তবে এত রাতে দেখে তো মুশকিলে পড়ে গেছি একটু একটু ভয় লাগতাছে। আমি তো প্রথমে বুঝতে পারিনি এটা যে হরর মুভি হি হি হি। কিন্তু আপনার লেখা বিস্তারিত পড়তে পড়তে বুঝতে পারলাম। অসাধারণ একটি রিভিউ ছিল চন্দ্রমুখী-২। অনেক ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি মুভি রিভিউ আপনি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।

দাদা আপনি অনেক সুন্দর করে এই মুভিটার রিভিউ পোস্ট লিখেছেন। আমার কাছে অনেক বেশি ভালো লেগেছে, আপনার লেখা এই মুভিটার রিভিউ পোস্ট। এরকম হরর টাইপের মুভি গুলো আমার কাছে অনেক ভালো লাগে। এই মুভিটার সম্পূর্ণ কাহিনী বেশ দারুন ছিল। আর আপনিও অনেক সুন্দর করে পুরো কাহিনীটা তুলে ধরেছেন। অবশেষে কিন্তু চন্দ্রমুখী তার প্রতি হওয়া অন্যায়ের প্রতিশোধ নিয়েছে, কিন্তু ভুল লোকের উপরে নিয়েছে। এই মুভিটা এখনো পর্যন্ত আমার দেখা হয়নি। তবে আমি অবশ্যই সময় পেলে চেষ্টা করব, এই মুভিটা দেখে নেওয়ার। কারণ পুরো কাহিনী অসম্ভব সুন্দর ছিল। আপনি এত সুন্দর করে, মুভিটার সম্পূর্ণ কাহিনী সবার মাঝে তুলে ধরেছেন দেখে অনেক ভালো লেগেছে। দাদা আশা করছি পরবর্তীতেও আমাদের মাঝে মুভির রিভিউ পোস্ট শেয়ার করবেন।

মুভিটির টাইটেল দেখেই বুঝতে পেরেছি এটি ভুতের কাহিনী।কারন আমি এই মুভিটা দেখেছি।মুভিটিতে চন্দ্রমুখীর পুড়ে যাওয়ার সিনটি মর্মান্তিক ছিল।চন্দ্রমুখীর আত্মা অনেকদিন অপেক্ষা করার পর শেষমেষ তার প্রতিশোধ নিতে পারে।কিন্তু ভুল মানুষের উপর নিয়ে ফেলে।ভেট্টাইন নামের শয়তানের আত্মার উপরে প্রতিশোধ নিতে পারিনি বলে আমার কাছে মনে হয়েছে মুভিটা কেমন অসমাপ্ত।অনেক সুন্দর রিভিউ দিয়েছেন,সবাই সহজেই কাহিনীটি পড়ে বুঝতে পারবে।ধন্যবাদ দাদা।

দাদা আপনি আজকে নতুন একটা মুভির রিভিউ পোস্ট করেছেন, যেটার রিভিউ করতে পেরে আমার কাছে দারুন লেগেছে। আমি এমনিতেই মুভি দেখার চেষ্টা করি, কারণ মুভি আমার অনেক বেশি পছন্দের। হরর মুভিগুলো ও দেখা হয় আমার বেশিরভাগ সময়। তবে চন্দ্রমুখী ২ মুভিটা এখনো পর্যন্ত আমার দেখা হয়নি। কিন্তু আজকে দেখলাম আপনি এই মুভিটার রিভিউ পোস্ট তুলে ধরেছেন সবার মাঝে। আপনার রিভিউ পোস্ট এর মাধ্যমে মুভিটার সম্পূর্ণ কাহিনী তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন দেখে ভালো লাগলো। এখানে তো দেখছি ভিট্টাইন একদিন সিংহাসনে বসার পরে তার শরীরে ও আত্মা প্রবেশ করে যায়। চন্দ্রমুখীর মতো ভিট্টাইন ও তার আগের রূপের এই লোকটার শরীরে প্রবেশ করে। চন্দ্রমুখী তো বুঝতেই পারেনি কাকে মেরেছে। সে তো মারার আনন্দে এ বিষয়টা খেয়াল করেনি আর। আর সেই সাথে তাকে পুড়িয়ে দিয়েছিল। কাহিনীটা অনেক ভালো লেগেছে। অবশ্যই মুভিটা দেখে নেওয়ার চেষ্টা করব আমি।

"চন্দ্রমুখী২" মুভি রিভিউ পড়ে অনেক ভালো লাগলো দাদা। হরর মুভি গুলো দেখতে অনেক ভালো লাগে। আর হরর মুভি গুলো সব সময় কোন রাজবাড়ী কিংবা পুরনো গাড়িগুলোকে কেন্দ্র করে তৈরি করা হয়। আর সেই বাড়ির পুরনো ইতিহাসের উপরে নির্মাণ করা হয়। ভেট্টাইন জোর করে চন্দ্রমুখীকে বিয়ে করেছিল কিন্তু সে অন্য কাউকে ভালোবাসত। আর যখন চন্দ্রমুখী তার সাথে পালিয়ে যেতে চেয়েছিল তখন ভেট্টাইন কাকে মেরে ফেলল। আর চন্দ্রমুখীকেউ পুড়িয়ে মারল। এটা সত্যি অনেক দুঃখজনক ঘটনা ছিল। তাই তো চন্দ্রমুখী অনেক ক্ষিপ্ত ছিল। এরপর থেকেই চন্দ্রমুখী আত্মারূপে ঘুরে বেড়ায় আর ভেট্টাইনকে মারার জন্য খুঁজে বেড়াতে থাকে। ভেট্টাইনের পুনর্জন্ম হলেও চন্দ্রমুখীর আর কোন পুনর্জন্ম হয়নি। তাইতো সে আত্মারূপে ফিরে আসে। আর চন্দ্রমুখী প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য একজনের শরীরে প্রবেশ করে। অন্যদিকে ভেট্টাইন আবারও তার নতুন দেহতে প্রবেশ করে আর দুজনের যুদ্ধ শুরু হয়ে যায়। অবশেষে চন্দ্রমুখীর সাথে ভেট্টাইনের তলোয়ার যুদ্ধের সময়ে চন্দ্রমুখী আত্মাটাকেও বন্দি করে নেয় জেনে ভালো লাগলো দাদা। দারুন একটি মুভি রিভিউ শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি দাদা।

দাদা দারুন একটি মুভির রিভিউ করেছেন। আমি এই তামিল চন্দ্রমুখী ২ মুভিটি দেখিনি তবে এটার ভারতীয় বাংলা মুভিটা দেখেছিলাম। আর সেই ভারতীয় বাংলা মুভিটার নাম হলো অরুনধুতী। চন্দ্রমুখী ২তে যে বাড়িটা দেখলাম এমন বাড়ি গুলো ভারতে বেশি দেখা যায়। আমাদের দেশেও কিছু আছে তবে সে গুলো নষ্ট হয়ে গেছে। এই বাড়ি গুলোতে এক সময় রাজা বাদশা বা নবাবরা থাকতো। আর তারা বিভিন্ন রাজ্যের সাথে যুদ্ধ করতো। সেই যুদ্ধ করতে গিয়েই ভেট্টাইনের নজরে পড়ে চন্দ্রমুখী। এখনে ভেট্টাইন চন্দ্রমুখীকে পাওয়ার জন্য কত কিছু করলো। দুই রাজাকে হত্যা করলো আবার চন্দ্রমুখী যাকে ভালোবাসতো তাকেও হত্যা করলো। একজকে পেতে তিনজনকে হত্যা। অবশেষে চন্দ্রমুখীকেও আগুনে পুড়িয়ে দিলো। কি ভয়ংকর কাজ চিন্তা করা যায়। অবশেষে চন্দ্রমুখী মৃত্যুর পরেও প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য আত্না হয়ে ঘুরতে থাকে। অবশেষে সুযোগ পেয়ে এই বাড়িতে থাকতে আসা এক মেয়ের উপর বসে পরে। সাধু বলছে মন্দিরে যজ্ঞ না করলে বাড়ি থেকে আত্না যাবে না। আবার মন্দিরে আগুন জ্বালালে ভেট্টাইনের শক্তি বেড়ে যাবে সেটা আবার চন্দ্রমুখী মেনে নিবে না। বাড়ির লোকজন পড়েছে মহা মুশকিলে। যায়হোক অবশেষে চন্দ্রমুখীর সাথে ভেট্টাইন এর তলোয়ার যুদ্ধের সময়ে তার আত্মাটাকেও বন্দি করে নিয়েছিল। এটি দারুন একটি হরর মুভি। ধন্যবাদ দাদা।