##গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য,আঁখ থেকে গুড় তৈরির সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া

in hive-131369 •  2 years ago 

আসসালামু আলাইকুম,,আমি @abdullah-44

আশা করি সবাই অনেক ভাল আছেন,আল্লাহর অশেষ রহমতে আমিও ভাল আছি।


গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য খোলায় রস জ্বালিয়ে গুড় তৈরি করা

IMG_20210111_083016_compress77.jpg

শীতকাল মূলত আঁখের মৌসুম। শীতের সময় গ্রামে মাঠের দিকে তাকাইলে সারি সারি আঁখের মাঠ দেখা যায়।এই আঁখ গুলো শীতের মাঝা মাঝি সময় থেকে কাটা শুরু হয়।শুধু গুড় তৈরীই নয়,এছাড়া অনেক ব্যবসায়ী আছে তারা মাঠের আঁখ গুলো কিনে বাজারেও বিক্রি করে থাকে।তো আঁখ থেকে গুর তৈরির প্রথম ধাপ হচ্ছে, সর্বপ্রথম মাঠ থেকে আঁখ গুলো লেবারের মাধ্যমে কেটে রাখা হয়। পর্যাপ্ত পরিমাণ আঁখ কাটা হয়ে গেলে, লেবারের মাধ্যমে একটি নির্দিষ্ট স্থানে নিয়ে গিয়ে আঁখ গুলো জমা করা হয়।

IMG_20210101_091014_compress65.jpg

পরবর্তীতে ঐ জমাকরে রাখা আঁখ গুলো থেকে, আখেঁর গায়ে থাকা মরা পাতা ও ময়লা গুলো ভালোভাবে ছারিয়ে নেওয়া হয়।এবং আখেঁর মাথায় যে সতেজ পাতা থাকে ওইগুলো গৃহপালিত পশুদের খাওয়ানোর জন্য নিয়ে যাওয়া হয়।ছবিতে আপনারা দেখতে পাচ্ছেন একটি ছেলে, আঁখ গুলো পরিষ্কার করে, আখেঁর রস তৈরি করার জন্য প্রস্তুত করছে ।

IMG_20210101_155334_compress95.jpg

পরবর্তীতে ওই পরিষ্কার করে রাখা আঁখ গুলো মেশিনের কাছে নিয়ে এসে রাখা হয়,আঁখ মারাই করে রস বের করার জন্য। মেশিনের সামনে যে লোকটিকে বসে থাকতে দেখছেন, এই লোকটি আঁখ গুলো মেশিনের মধ্যে প্রবেশ করাচ্ছে। মেশিনের অন্য দিক দিয়ে আখেঁর ছোবা বেরিয়ে যাচ্ছে। আর মেশিনের সামনে থেকে আখেঁর রস বের হয়ে এসে,জালের মাধ্যমে সেকে একটি ড্রামে গিয়ে জমা হচ্ছে।

IMG_20210106_210910_compress48.jpg

আঁখ থেকে রস বের করার পর, অবশিষ্ট আঁখের ছোবা গুলো একটি ঝোলাই করে,দুজন লোক মাঠে নিয়ে যাচ্ছে আঁখের ছোবা গুলো শুকানোর জন্য। এই আঁখের ছোবা গুলো শুকিয়ে গেলে পরবর্তীতে আঁখের রস জ্বালানোর জন্য জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হবে।

IMG_20210111_082252_compress37.jpg

আঁখ মারাই এর পর,ড্রম থেকে আঁখের রস একটি কন্টেনারে ভরে নিয়ে নিয়ে গিয়ে একটি বড় কড়াইয়ে ঢালা হয়। এই কড়াইটি যে বড় চুলার উপর বসানো রয়েছে,এই চুলাকে গ্রাম্য ভাষায় খোলা বলে। পরবর্তীতে আঁখের রস সম্পূর্ণ করাই ভর্তি করে, ধীরে ধীরে জ্বালানো হয়। কিছুক্ষণ জ্বালানোর পর আখের রসের মধ্যে কোন ময়লা থাকলে সেটা উপরে ভেসে ওঠে। আঁখের রসের এই ময়লাকে আমাদের গ্রাম্য ভাষায় বলে গাঁদ। এরপর এই গাঁদ ছেকে রস থেকে উঠিয়ে নেওয়া হয়।

IMG_20210101_161817_compress65.jpg

আঁখের রস দীর্ঘ সময় জ্বালানোর পর,রস যখন ছবির মতো গোল্ডেন কালার হয়ে যায় তখন বুঝতে হবে গুড় প্রায় হয়ে গেছে তখন চুলা থেকে করাইটি নামিয়ে ফেলতে হবে। এরপর সামান্য পরিমাণ ডালডা ও চিনি মেশানো হয় এবং পাশস্যার দিয়ে ভালোভাবে মেশানো হয়,যা আপনারা ছবিতে দেখছেন। এই কাজটি করা হয় গুড়ের কালার ঠিক রাখার জন্য এবং জমানোর জন্য।

IMG_20210101_113832_compress59.jpg

সর্বশেষে কড়াই থেকে বড় টিনের একটি পাত্রে সম্পূর্ণ গুড় ঢালা হয়। এরপর এই টিনের পাত্রের সাথে একটি বাঁশ বেঁধে বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার পর খাবার গুড় হিসেবে কিছুটা গুড় পাত্রে ঢালা হচ্ছে। এরপর বাকি গুড় বড় কুলায় ভরে মজুদ করে রাখা হয়,বাজারজাত করার জন্য।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

আঁখ থেকে গুড় তৈরির সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া নিয়ে অনেক সুন্দর একটা পোস্ট লিখেছেন। আখের রস থেকে গুড় তৈরি আমি নিজ চোখে কখনো দেখেনি। সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের কাছে উপস্থাপন করার জন্য ধন্যবাদ।

বাহ চমৎকার উপস্থাপন করেছেন ভাই, আখ থেকে গুড় তৈরি করার পুরো প্রক্রিয়া খুব সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করেছেন ভাই। ফটোগ্রাফি অসাধারণ হয়েছে। অনেক সাজিয়ে গুছিয়ে উপস্থাপন করেছেন ভাই। অনেক ভালো লাগলো অসংখ্য ধন্যবাদ।

আখ থেকে গুড় তৈরির প্রক্রিয়া আপনি বেশ চমৎকারভাবে তুলে ধরেছেন। এটি একটি সময়সাপেক্ষ প্রক্রিয়া।বেশ সময় লেগেছে ছবিগুলো দেখেই বোঝা যাচ্ছে। ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

আখের গুড় কিভাবে তৈরি করা হয় আপনি সুন্দর ও চমৎকার করে আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন। শীত কালে আঁখ বেশি বেশি পাওয়া যায়। ঐ সময়টা আঁখের জন্য মৌসুম সময়। কৃষকরা আঁখ তৈরির পাশাপাশি আঁখ বাজারেও বিক্রির জন্য নেওয়া হয়। আখ নিয়ে সুন্দর একটি উপস্থাপনা। ছবিগুলো অসাধারণ হয়েছে।

Loading...

গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্য আখ থেকে গুড় করার প্রক্রিয়া গুলো অপূর্ব আপনার পোস্টের মাধ্যমে তা জানতে পারলাম ভাই। আখের রস তাপ দিয়ে তা থেকে গুড় তৈরি করে। আপনার পোস্টের মাধ্যমে আখ থেকে গুড় তৈরি করার প্রক্রিয়াটি জানতে পারলাম। ছবিগুলো ভালোই হয়েছে ভাই।

আখের রস দিয়ে গুড় এই ভাবে তৈরি করে, আগে কখনো দেখি নাই। অনেক শুনেছি আখের রস দিয়ে গুড় তৈরি হয়।আপনার পোস্টের মাধ্যমে দেখতে পেয়েছি। আপনি গুড় তৈরি নিয়ে খুব সুন্দর ভাবে সাজিয়ে গুছিয়ে উপাস্থপনা করেছেন ভাই। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ

আপনি অসম্ভব সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। এজন্য শুরুতেই আপনাকে আমি ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আখ থেকে গুড় তৈরি করার প্রসেসটি অত্যন্ত সুন্দরভাবে আপনি বর্ণনা করেছেন এবং ছবির মাধ্যমে বুঝিয়ে দিয়েছেন। আপনার এই পোস্টটি একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ পোস্ট। আবারো ধন্যবাদ জানাই আপনাকে।

গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য,আঁখ থেকে গুড় তৈরির সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া আগে কখনও দেখি নি। তবে আপনার পোস্ট পড়ে ও ছবিগুলো দেখে বুঝতে পারলাম আখ থেকে গুড় তৈরির প্রক্রিয়া। আপনার পোস্ট মোটামুটি ভাল তবে পোস্টে আরো মার্কডাউন ব্যবহার করলে পোস্ট ভাল দেখাবে। আপনার জন্য শুভকামনা রইলো ধন্যবাদ।

ওয়াও ভাই আপনি দারুণ একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন আমাদের মাঝে। আখ থেকে গুড় তৈরির পদ্ধতি কখন ও দেখা হয় নি। আপনি খুবই সুন্দর ভাবে আমাদের মাঝে আখ থেকে গুড় তৈরির সম্পূর্ণ চিত্র তুলে ধরেছেন। ধন্যবাদ

আখ থেকে কিভাবে গুড় তৈরি করা হয় সরাসরি কখনও দেখার সৌভাগ্য হয়নি। আপনার পোষ্টের মাধ্যমে পুরো প্রক্রিয়াটি সম্পর্কে জানতে পারলাম। ফটোগ্রাফি গুলো দেখে অনেক ভালো লাগলো। ভালো লিখেছেন। বানানের প্রতি একটু যত্নশীল হতে হবে ভাই। শুভকামনা রইল আপনার জন্য

আখ দিয়ে গুর তৈরি করা এটি হলো আমাদের গ্রাম বাংলার এক অন্যতম ঐতিহ্য। যুগ যুগ ধরে মানুষ আঁখ দিয়ে গুড় চিনি তৈরি করে আসতেছে।আপনি খুব সুন্দরভাবে গুড় তৈরির প্রক্রিয়াটি বর্ণনা করেছেন।ফটোগ্রাফি গুলো খুব সুন্দর হয়েছে ভাই ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর একটি পোস্ট করার জন্য।