বাঙালি জাতির একটি ঐতিহ্যবাহী অনুষ্ঠান শুভ হালখাতা

in hive-131369 •  last year 

সবাইকে আদাব
আমি বিপ্লব সরকার



তারিখঃ২৩-০৬-২০২৩ ইং



প্রিয় বন্ধুরা আশা করি সকলেই ভালো আছেন। আমিও ভালো আছি। আমি আজকে একটি বিশেষ ঐতিহ্য আপনাদের সাথে শেয়ার করব।



শুভ হালখাতা

InCollage_20230623_154247569.jpg



আমরা বাঙালি জাতি। আমাদের বিভিন্ন ধরনের আনন্দ উৎসব পালন করতে হয় এবং আমরা বিভিন্ন ঐতিহ্য মেনে চলি। আমাদের এসব ঐতিহ্যের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে শুভ হালখাতা। হালখাতা আমাদের জাতির সাথে জড়িত। আমরা প্রতিবছর বিভিন্ন দোকান এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হালখাতার আয়োজন দেখে থাকি। দোকান এবং ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের বকেয়া টাকা আদায় করার জন্য এই হালখাতার আয়োজন করে থাকে। আমি আজকে এই হালখাতা নিয়ে কিছু তথ্য আপনাদের কাছে শেয়ার করব।

InCollage_20230623_154041015.jpgInCollage_20230623_154018667.jpg

আমরা বাজারে প্রতিটি দোকানে গেলে দেখতে পাই সবাই যে কোন দ্রব্য বাকিতে নিয়ে যায়। কেননা সবার কাছে সব সময় টাকা থাকে না। সব দোকানে এখন বাকিতে মাল কেনাবেচা হয়। পণ্য কেনাবেচা হওয়ার পর কিছু টাকা দোকান ওয়ালা অথবা মহাজনের কাছে থেকে যায়। সেই টাকা হালখাতার সময় তুলতে হয়। হালখাতা আয়োজন করে মহাজনেরা এ সময় এনারা কিছু খাওয়ার আয়োজন করে। খাওয়ার আয়োজন করার ফলে যারা বাকি নিয়ে গেছেন পণ্য তারা তাদের বকেয়া টাকা দিয়ে যায়।

InCollage_20230623_154121744.jpg

এই হালখাতা সম্পন্ন করার জন্য প্রথমে একটি নিমন্ত্রণ চিঠির প্রয়োজন হয়। সেই চিঠি দোকান থেকে তৈরি করে নিতে হয়। এই চিঠির উপরে প্রধান যে লেখা সেটি হচ্ছে শুভ হালখাতা। এটি লেখার পর এখানে যাকে এই চিঠিটি দেওয়া হবে তার নাম ঠিকানা এবং ফোন নম্বর দেওয়া থাকে। এর ভিতরে সুন্দর করে কিছু কথা লেখা থাকে এবং যাকে দেওয়া হচ্ছে তার কাছে কত টাকা মহাজন পাবে সেই টাকার পরিমাণ দেওয়া থাকে এবং হালখাতা কত তারিখে সেই তারিখ দেওয়া থাকে।

InCollage_20230623_154157802.jpgInCollage_20230623_154139286.jpg

হালখাতা আমাদের বাঙালিরা অনেক আগে থেকে পালন করে আসছে। আমরা ছোটবেলা থেকেই এরকম হালখাতা দেখে আসছি। আমিও নিজে অনেক হালখাতা খেয়েছি। হালখাতা খেতে গেলে বেশ আনন্দ লাগে কেননা এই দিন বেশ ভালো খাওয়ার আয়োজন করা হয়। কেননা মহাজনেরা টাকা আদায় করার জন্য একটু ভালো খাবার আয়োজন করলে বকেয়া পাওনা টাকা গুলো সহজে উঠে আসে। হালখাতা শেষে মহাজনেরা সবগুলো টাকা একসাথে পেয়ে সেই টাকাগুলো তাদের কাজে লাগিয়ে দেয় এবং তাদের ব্যবসা আবার নতুন করে শুরু করে দেয় পরবর্তী বছরের জন্য এবং পরবর্তী বছরে ক্রেতারা আবার তাদের কাছে কিছু টাকা দিয়ে পণ্য নেয় এবং কিছু আবার বাকিতে নিয়ে যায় এবং এভাবে পরবর্তীতে আবার এই হালখাতার আয়োজন করা হয়। এভাবে পর্যায়ক্রমে প্রায় কয়েক যুগ থেকে এভাবে হালখাতা আয়োজনের প্রচলন চলে আসছে।

বন্ধুরা এই ছিল আমার আজকের আলোচনার বিষয়। আপনাদেরকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমার পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য।



তথ্যবিস্তারিত
বিষয়ঐতিহ্য
ক্যামেরাস্যামসাং গ্যালাক্সি এ ৫২
সম্পাদন করাহ্যাঁ
অবস্থানপার্বতীপুর,দিনাজপুর ,বাংলাদেশ
ফটোগ্রাফার@biplobsarker


ধন্যবাদ সবাইকে



Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

অনেক আগে থেকেই হালখাতার প্রচলন ছিল আমাদের দেশে। পুরো হালখাতা বিষয়টি সুন্দরভাবে বর্ণনা করেছেন। আপনার পোস্ট থেকে হালখাতা সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পারলাম।

ধন্যবাদ

Loading...

বাঙালি জাতির একটি ঐতিহ্যবাহী অনুষ্ঠান শুভ হালখাতা নিয়ে অনেক সুন্দর একটি পোস্ট করেছেন। এই হালখাতার মাধ্যমে দোকানের বকেয়া টাকা উত্তলন করা হয়।

ধন্যবাদ

ঠিক বলেছেন ভাই শুভ হালখাতা বাঙালির ঐতিহ্যের সাক্ষী, অতীতের গ্লানি মুছে নতুনের আগমন ঘটে হালখাতার মাধ্যমে। ব্যবসায়ীরা তাদের পাওনাদারের কাছে পাওনাদী হিসাব নিতে দাওয়াত দেয় হালখাতার মাধ্যমে। অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই এত সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

ধন্যবাদ

হালখাতা অনুষ্ঠানটি যুগ যুগ ধরে হয়ে আসছে। এটি সাধারণত নতুন বছরে ধান কাটার পর হয়ে ধাকে। কৃষক দোকান থেকে অনেক কিছুই বাকিতে কিনে থাকে তারপর ধান কাটার পর সেই বাকি টাকা হালখাতা অনুষ্ঠানে শোধ করে। অনেক সুন্দর লিখেছেন।

হালখাতা বাঙালি জাতির অন্যতম একটি অনুষ্ঠান। এই হালখাতা প্রতি বছরই হয়। তবে ইরি ও আমন মৌসুমে। হালখাতা নিয়ে অনেক সুন্দর একটি পোস্ট উপস্থাপন করেছেন ভাই।

ধন্যবাদ

বাঙালি জাতির ঐতিহ্যবাহী অনুষ্ঠান হলো শুভ হালখাতা।হালখাতা অনুষ্ঠিত হয় বছরে দুই বার।আপনি নতুন একটা বিষয় নিয়ে আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন। আপনাকে অসংখ্য অসংখ্য ধন্যবাদ সুন্দর একটা পোস্ট করার জন্য।

ধন্যবাদ

হালখাতা হলে দোকান সুন্দর করে বিয়ে বাড়ির মত সাজানো হয় আমি দেখেছি। আর সারা বছরের বাকীর টাকা শোধ দিয়ে হয় এই হালখাতার দিনে। দোকানে টাকা শোধ করে মিষ্টি খেয়ে ঘরে ফেরে ধন্যবাদ আপনাকে।

ধন্যবাদ

হালখাতা অনেক প্রাচীণ একটি অনুষ্ঠান। আগেরকার হালখাতা আর এখনকার হালখাতার মধ্যে অনেক পার্থক্য রয়েছে। আগে হালখাতার সময় পান সুপারি খাওয়ানো হত।ধন্যবাদ।

ধন্যবাদ

হালখাতা নিয়ে আপনি অসাধারণ একটি পোস্ট লিখেছেন। হালখাতা প্রতি বছরই অনুষ্ঠিত হয়।দোকানীরা তাদের পন্যসামগ্রি নগদ ও বাকি দুই ভাবেই ক্রয় বিক্রয় করে থাকে।বাকি অর্থ আদায়ের জন্য এই হালখাতার আয়োজন করে। ধন্যবাদ ভাইয়া হালখাতা নিয়ে সুন্দর একটি পোস্ট উপস্থাপন করার জন্য।

ধন্যবাদ

বাঙালি জাতির শুভ হালখাতার মাধ্যমে তারা বিগত বছরের সকল হিসেব মিটিয়ে নতুন বছর শুরু করে নতুন ভাবে। আর হালখাতার মাধ্যমে অনেক মিষ্টি খাওয়ানো হয়। আবার কোন কোন জায়গায় মাংস ভাত খাওয়ানো হয়। ধন্যবাদ অনেক সুন্দর একটা পোস্ট শেয়ার করার জন্য।

ধন্যবাদ

আমরা বাঙালি জাতি আমাদের বিভিন্ন উৎসব রয়েছে। আমাদের অনেক উৎসব এর মধ্যে একটি পরিচিত উৎসব হালখাতা। ধান কাটার পরেই হিসাব মেটানোর জন্য এই রকম কার্ড বানিয়ে বাসায় দেওয়া হয়ে থাকে। হালখাতার দাওয়াত পাওয়ার পরেই হিসাব মিটিয়ে ফেলে বকেয়া খাইয়া ক্রেতারা। সুন্দর লিখেছেন ভাই।

ধন্যবাদ ভাই

আপনার পোস্ট দেখে হালখাতা'র কথা মনে পরে গেলো। ছোট বেলায় ধান কাটার মৌসুমে নানি বাড়ি গেলে হালখাতা খাওয়া হইতো৷ ১৫ বছর আগে হয়তো শেষ হালখাতা খেয়েছি৷

এখন তো মনে হচ্ছে আপনি শহরের বয়লার মুরগি

ধন্যবাদ ভাই

আজ থেকে প্রায় ১৫-১৬ বছর আগে আমাদের দোকানের হালখাতা করা হতো জাঁকজমকপূর্ণভাবে। আর এখন এমন একটা সময় এসেছে কোন রকম ভাবে হালখাতা সারানো হয় টাকা আদায় করার জন্য। এখন হালখাতার আইটেমগুলো হয়ে থাকে বিরিয়ানি মিষ্ট ইত্যাদি অল্প আয়ের খাদ্যগুলো। ধন্যবাদ দাদা সুন্দর একটি পোষ্ট আমাদের মাঝে উপস্থাপন করার জন্য।

ধন্যবাদ

এই হালখাতা প্রতিটি দোকানে কমবেশি হয়ে থাকে ৷ এই হালখাতা করার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে ক্রেতার কাছে দোকানদার যে টাকা পাওনা আছে সেটাকে আদায়ের একমাত্র মাধ্যম হলো হালখাতা ৷ এই হালখাতা যুগ যুগ ধরে চলে আসছে আমাদের মাঝে ৷ খুবই সুন্দর উপস্থাপন করেছেন দাদা আপনি ৷ ধন্যবাদ

ধন্যবাদ