যুগ যুগ ধরে গ্রাম অঞ্চলে ব্যবহার হয়ে আসছে মাটির বানানো সানকি এবং বাঁশের নোড়া || ১৩ই মে ২০২৩steemCreated with Sketch.

in hive-131369 •  2 years ago 

আসসালামু আলাইকুম


আশা করি সকলে ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমিও অনেক ভালো আছি। আমি আজকে আপনাদের সাথে গ্রামের একটি বিশেষ ঐতিহ্য নিয়ে আলোচনা করব।


কভার ফটো


অনেক প্রাচীনকাল থেকে আমাদের দেশের ঐতিহ্য মাটির বানানো সানকি ও কাঠের বানানো নোড়া। বিভিন্ন রকমের মসলা ও ভর্তা বানানোর জন্য ব্যবহার করা হয় এই সানকি ও নোড়া। মাটি দিয়ে অনেক যত্ন করে বানানো হয় সানকি। চিনা মাটি দিয়ে বানানো হয় সানকি। প্রথমে চিনা মাটি সংগ্রহ করে তারপর সানকির রূপ দেওয়া হয় সেই কাদামাটিকে। নির্দিষ্ট রূপ দেওয়ার পরেই রোদে শুকাতে দেওয়া হয় সানকিকে। অনেকদিন শুকানোর পরে সেই সানকিকে একটি চুলার মধ্যে পোড়ানো হয় আর তারপর হয়ে উঠে ব্যবহার উপযোগী সানকি বা সারোয়া।



সানকিতে বাটার জন্য ব্যবহার করা হয়ে থাকে বাঁশের গোড়ার বানানো নোড়া। এই নোড়া একটি কুড়ির শিল্প। আমাদের দেশের গ্রাম অঞ্চলের বৃদ্ধ মানুষ পুরাতন বাঁশের আড়া থেকে এই সকল গোড়া সংগ্রহ করে সেগুলাকে দা দিয়ে সিলে একটি নতুন রূপ দিয়ে থাকে। এই নোড়া অনেক সুন্দর ভাবে বানিয়ে নতুন রূপ দেওয়া হয়। এই নোড়া ধরার জন্য একটি লম্বা অংশ রাখা হয়ে থাকে। বাজারে এমন একটি নোড়া কিনতে গেলে দাম পড়ে ৫০-৭০ টাকা পর্যন্ত।



এই সারোয়া ও নোড়ার ওজন অনেক কম হওয়ায় সবজায়গায় পরিবহন করা যায়। দামে অনেক কম হওয়ায় সবাই কিনতে পারে। একটি সারোয়া ও একটি নোড়া কিনতে লাগে মাত্র ১৫০ টাকা। একটি সারোয়া ৩ মাস ব্যবহার করা যায়। একটি নোড়া অনেকদিন ব্যবহার করা যায়। একটি নোড় ৬ মাসের মতো ভালোভাবে ব্যবহার করা যায়। আমাদের এই সারোয়া ও নোড়ার প্রচলন গ্রামে অনেক বেশি কিন্তু শহরে তেমন দেখা যায় না। বর্তমানে প্রযুক্তির যুগে হারিয়ে যাইতেছে মাটির বানানো এই মৃৎশিল্প।



বর্তমানে সবথেকে বেশি ব্যবহার হইতেছে প্লাস্টিকের বানানো পট। যার কারনে বেশি ভাবে বিলুপ্তর পথে জাইতেছে এই মাটির বানানো সারোয়া। প্লাস্টিক আমাদের শরীরে অনেক খারাপ প্রভাব ফেলতেছে। কিন্তু তারপরেও আমরা ব্যবহার করতেছি। আমাদের সবাইকে সচেতন করা উচিত প্লাস্টিকের ক্ষতিকর দিক গুলো দিয়ে এবং সেই সাথে মাটির বানানো পাত্র ব্যবহার করার পরামর্শ দেওয়া।



এই মাটির বানানো সারোয়ার সাথে জড়িত একটি সম্প্রদায় তাদের জীবিকা নির্বাহ করে থাকে মাটির মৃৎশিল্প বিক্রি করে। কিন্তু বর্তমানে এর চাহিদা অনেক হারে কমে গেছে। তার অনেক কারন রয়েছে। প্লাস্টিক অনেক কম দামে পাওয়া যায়। কিন্তু তুলনা মূলক ভাবে আমাদের মাটির বানানো সারোয়ার দাম অনেকটা বেশি মনে হয়। কিন্তু মাটির বানানো সারোয়ায় সবকিছু অনেক ভালোভাবে মিরামিশ করা যায়। মসলা বাটা, মরিচ বাটা সবকিছু করা হয় এই সারোয়াতে। মাটির বানানো সারোয়া আমাদের একটি ঐতিহ্যবাহী শিল্প।



এই শিল্প আমাদের টিকিয়ে রাখার জন্য সবাইকে এই মাটির তৈরি সারোয়া ব্যবহার করতে হবে। তবেই আমাদের একটি ঐতিহ্যবাহী শিল্প টিকিয়ে থাকবে।


ডিভাইস সংক্রান্ত তথ্যবলিঃ
ডিভাইসরেডমি নোট ১০প্রো
ফটোগ্রাফার@mainuna
লোকেশনপার্বতীপুর,দিনাজপুর

আমার পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

আপনি অনেক সুন্দর একটা পোস্ট উপস্থাপন করেছেন ভাই, সানকি আমাদের গ্রাম অঞ্চলে যুগ যুগ ধরে আসতেছে,তবে আমাদের গ্রাম অঞ্চলে এটাকে আমরা বাঁটনা বলে থাকি,আপনি দারুণ ফটোগ্রাফি করছেন ভাই আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।

অনেক ধন্যবাদ।

আপনার শেয়ার করা শেষ দুটি ছবি দেখে আমার এমন শুকনা মরিচ এবং লবণ ভর্তা করে আম দিয়ে তা খেতে ইচ্ছে করছে। আপনি সরোয়া ও নোড়া নিয়ে খুবই সুন্দর একটি পোস্ট করেছেন। আপনার তোলা ছবিগুলো অত্যন্ত সুন্দর হয়েছে। ধন্যবাদ আপনাকে

  ·  2 years ago (edited)

আপু আপনার দাওয়াত রইল। আপনি আসেন। বাগানে বসে আম পার্টি হইবে।😊

এই লবণের জন্য আজকে আমরা আম খেতে পারলাম না 😔

20230513_110911.jpg

আমার কাছে আছে ভাই 😃 এইদিন আইলে দিব নি।

কামের দিন আইসো না৷ আজকে আম খাওয়ার প্যারা ছিলো৷ সবসময় থাকে নাকি 🤐

আমার যাওয়ার ব্যবস্থা ছিলো না ভাই। আরেকদিন হইবে ১০০%।

ততদিনে আম পাকি যাবে 🤐

আশিনি আম খাবো তখন।😊

আশিনি আম খাবো তখন।😊

Loading...

সারোয়া শুধুমাত্র আমি উত্তর বঙ্গের মানুষকে ব্যবহার করতে দেখেছি। আমাদের দক্ষিণ বঙ্গের মানুষ এটার ব্যবহার জানে না। তবে এই সারোয়া তে ভর্তা করতে অনেক সুবিধা হয়। এটা দিয়ে মসলা বাটার কাজ ও করা হয়।

বউ করেন আপেনে বুজবেন ভাই।😊

উনি দক্ষিণ বঙ্গে বিয়ে করবে।

এইটা তো হয় না ভাই। কামাই করবে পার্বাতিপুর আর বিয়ে করবে দক্ষিণে 😃

মাটির বানানো সানকি এবং বাঁশের নোড়া নিয়ে অনেক সুন্দর একটা পোস্ট লিখেছেন। আমরা এই মাটির বানানো সানকিকে পশুন বলে থাকি। সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের কাছে সেয়ার করেছেন।সুন্দর ভাবে সাজিয়ে গুছিয়ে উপস্থাপন করার জন্য ধন্যবাদ ভাই।

ধন্যবাদ।

যুগ যুগ ধরে গ্রাম অঞ্চলে ব্যবহার হয়ে আসছে মাটির বানানো সানকি এবং বাঁশের নোড়া নিয়ে সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। সানকি ও বাঁশের নোড়া আমাদের দেশের গ্রাম- অঞ্চলে ব্যবহার করা হয়। মরিচ,আদা,পিয়াজ ও মসলা বাটার কাজে লাগে এটি।

ধন্যবাদ।

বাহ মাটির তৈরি বাটনা নিয়ে চমৎকার উপস্থাপন করেছেন ভাই। আগে এই বাটনা কখনো চিনতাম না। সৈয়দপুর থাকার সুবাদে এখন এই বাটনা ব্যবহার করি, বাঁশের তৈরি নোড়ার মাধ্যমে মসলা বাটা হয়। সুন্দর লিখছেন ভাই অসংখ্য ধন্যবাদ।

ধন্যবাদ প্রিয় ভাই।

সানকি ও বাঁশের তৈরি নোড়া আমাদের দেশের এটা ঐতিহ্য। গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে এই সানকি ও বাঁশের তৈরি নোড়া দেখা পাওয়া যায়। এটি আমাদের নিত্য-প্রয়োজনীয় কাজে ব্যবহার করা হয়।ফটোগ্রাফি গুলো অসাধারণ হয়েছে।

@md-sajalislam.

20230511_105644__01.jpg

ধন্যবাদ।

এটির ব্যবহার আমাদের এলাকায় নেই বললেই চলে। উত্তরাঞ্চলে এর ব্যবহার সর্বত্রই লক্ষ্য করা যায়।বিভিন্ন রকম ভর্তা এবং মসলা বাটতে অনেক কাজে লাগে।ভালো লিখেছেন ভাই শুভকামনা রইল

ধন্যবাদ প্রিয় ভাই।

গ্রামাঞ্চলে মাটির তৈরি সানকি বা সারোয়া আমরা অনেকেই গ্রাম্য ভাষায় বলে থাকি।এই সারোয়া বা সানকি হচ্ছে মাটির তৈরি। সানকিতে মুলত মসলা,মরিচ,পিয়াজ ইত্যাদি পিষে থাকে।আপনার পোস্ট কোয়ালিটি যথেষ্ট ভাল আর ভাল করার চেষ্টা করবেন।

হ্যা।

সানকি ও নোড়া নিয়ে চমৎকার একটি পোস্ট করেছেন। সানকি ও বাঁশের তৈরি নোড়া আমাদের নিত্য দিনের সঙ্গী। এই সানকি ও নোড়া দিয়ে সকল রান্নার রেসিপি উপকরণ তৈরি করা হয়।

ধন্যবাদ।

মাটির সানকি বা বাটনা হল মাটি দিয়ে তৈরি। এই সানকি বা বাটনায় বিশেষ পদ্ধতিতে তৈরি মসলা বাটা ও ভর্তা করে থাকে।মাটির বাটনায় ধার দেয়া থাকে তাই খুবই সহজে মসলা বাটা যায়। আপনার জন্য শুভকামনা রইলো ধন্যবাদ।

ধন্যবাদ আপনাকে।

মাটির তৈরি বাটনা বা সানকি। তবে এক এক অঞ্চলে এক এক নামে পরিচিত। তবে আমাদের সানকি কে বলা হয় মাটির তৈরি বাটনা। সানকি নিয়ে অনেক সুন্দর পোস্ট শেয়ার করেছেন।

অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

বর্তমানে মানুষ শিলপাটা ব্যবহার না করে এখন গ্রামের মানুষ গুলো সানকি ও বাঁশের তৈরি নোড়ার মাধ্যমে মরিচ,পেঁয়াজ, আদা ও মসল্লা বাঁটা প্রস্তুত করে থাকে। ছবিগুলো অস্থির হয়েছে ভাই।

ধন্যবাদ।