|কালের গহ্বরে হারিয়ে গেছে বিশুদ্ধ চাল তৈরীর সেই উরুন গাইন|

in hive-131369 •  2 years ago  (edited)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ

রবিবার
তারিখ:২১-মার্চ-২০২৩

প্রিয়, স্টিম ব্যবহারকারী সকল ভাই বোন ও বন্ধুগণকে জানাই ভালবাসা এবং আন্তরিক শুভেচ্ছা । আমার পক্ষ থেকে সকলকে সালাম, আসসালামু আলাইকুম। আপনারা সকলে কেমন আছেন?আশা করি বসন্তের শেষে ফুর ফুরে মন নিয়ে কলে ভালোই আছেন।আজকে আমি গ্রামবাংলার ঐতিহ্য উরুর-গাইন ও উরুন-গাইনে চালের তৈরি ঝালের গুরা নিয়ে কিছু বর্ননা নিম্নে উল্লেখ করলাম। আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে।

গ্রাম বাংলা আদিম সংস্কৃতি

গ্রাম বাংলার গৃহ বধূঁর এক সময়ের ধান থেকে চাল তৈরীতে এক মাত্র মাধ্যম ছিলো উরুন গাইন। বদলে গেছে যুগ আর পাল্টে গেছে সময়।কালের গহ্বরে হারিয়ে গেছে বিশুদ্ধ চাল তৈরীর সেই সেই উরুন গাইন।

বড় বট গাছের গুল আর শাল গাছের ডাল দিয়ে তৈরী হতো উরুন গাইন। এখন আর সেই বট গাছও নেই আর নেই শাল গাছের সেই শক্তিশালী ডাল। তা ছাড়া কালের বিবর্তনে উরুন গাইন এর স্থান দখল করে নেয় ঢেঁকি। সেই ঢেঁকিও তার অস্তিত্ব হারিয়েছে অনেক আগে।নতুন ধানের আঁতব চালের আটা তৈরিতে উঁরুন গাইনের পাড় দেয়ার ধুপ ধাপ ছন্দময় শব্দে গ্রামের আকাশ বাতাস মুখরিত হয়ে যায়।
ঐতিহ্যবাহী সেই ঝালের গুরা তৈরির কিছু দৃশ্য।

কিন্তু পল্লি সমাজে এখনও কিছু পরিবার সেই গহ্বরে পতিত হওয়া উঁরুন গাইনে ঐতিহ্যটি ধরে রেখেছ। অতীতে যখন ধান ভাঙ্গার কোনো উন্নত যন্ত্র ছিলো না, তখন এই উরুন ও গানের মাধ্যমে ধান থেকে চাল বের করা হত। সে যুগে, নারীরা প্রতিদিন ধান থেকে চাল বের করার পর সেই চাল রান্না করত। কিন্তু আজকে সেই সোনলি দিন নেই। কিন্তু সেই অতীত গুলো রয়েগেছে মানুষের মনে। আমাদের বাসাতে সেই আমলের বট গাছের গোরা দিয়ে তৈরি উরুন নেই, কিন্তু অতীতকে ধরে রাখার জন্য কিছু পরিবার সিমেন্ট ও পাথরের সাহাযে তৈরি করেছে উরুন আর শক্ত কোনো গাছের ডাল দিয়ে বানিয়েছে গাইন।

বর্তমানে এই উরুন গাইন খুব একটা চোখে পরে না। তবে কিছু পরিবার, আটা, মসলা, চালের গুরা, মরিচের গুরা ইত্যাদি তৈরিতে এটি ব্যবহার করেন। উরুন গাইনে করে আমরা আমাদের বাসায়, চাল ভেজে মরিচ, চবণ ও রসুন দিয়ে গুরা করে সেটা খেতাম, গ্রামের ভাষায় যাকে বলে ঝলের গুরা তরই কিছু দৃশ্য আপনাদের মাঝে তুলে ধরলাম।

কিন্তু পল্লি সমাজে এখনও কিছু পরিবার সেই গহ্বরে পতিত হওয়া উঁরুন গাইনে ঐতিহ্যটি ধরে রেখেছ। অতীতে যখন ধান ভাঙ্গার কোনো উন্নত যন্ত্র ছিলো না, তখন এই উরুন ও গানের মাধ্যমে ধান থেকে চাল বের করা হত। সে যুগে, নারীরা প্রতিদিন ধান থেকে চাল বের করার পর সেই চাল রান্না করত। কিন্তু আজকে সেই সোনলি দিন নেই। কিন্তু সেই অতীত গুলো রয়েগেছে মানুষের মনে। আমাদের বাসাতে সেই আমলের বট গাছের গোরা দিয়ে তৈরি উরুন নেই, কিন্তু অতীতকে ধরে রাখার জন্য কিছু পরিবার সিমেন্ট ও পাথরের সাহাযে তৈরি করেছে উরুন আর শক্ত কোনো গাছের ডাল দিয়ে বানিয়েছে গাইন।

বর্তমানে এই উরুন গাইন খুব একটা চোখে পরে না। তবে কিছু পরিবার, আটা, মসলা, চালের গুরা, মরিচের গুরা ইত্যাদি তৈরিতে এটি ব্যবহার করেন। উরুন গাইনে করে আমরা আমাদের বাসায়, চাল ভেজে মরিচ, চবণ ও রসুন দিয়ে গুরা করে সেটা খেতাম, গ্রামের ভাষায় যাকে বলে ঝলের গুরা তরই কিছু দৃশ্য আপনাদের মাঝে তুলে ধরলাম।
গ্রাম বাংলার আদি ঐতিহ্যের প্রতিক উরুন-গাইন, সেই উরুন-গাইনের সাথে জরিয়ে রয়েছে আমাদের সোনালি অতীত, জরিয়ে আছে আমাদের দাদা-দাদি কিংবা নানা-নানীর সেই হৃদয় বিজারিত ঘটনা। সে সময়ে চালের কল।

আজকে, সময়ের প্রয়োজনে বিজ্ঞানের বদৌলতে এসেছে চাল তৈরীর চাল কল, মসলা গুরা করার জন্য ব্লেনডার। কিন্তু অত্যান্ত দুঃখের সাথে বলতে হয়,প্রাচীন আমলের সেই উরুন গাইন এখন তাদের জীবনের শেষপ্রান্তে এসে পৌছেছে।
এখন ওই উরুন গাইনে শুধু পিঠা তৈরীর আটা এবং চিড়া তৈরী করা হয়। সেই আমলের জীর্ণ শীর্ণ সেই উরুন বা গাইন কোন রকমে বেঁছে থাকলেও সেই ঐতিহ্য অনেক আগেই ভেঙ্গে গেছে। হয়তো এভাবেই এক দিন সম্পূর্ণ বিলুপ্ত হবে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য উরুন গাইন।

সকলকে ধন্যবাদ
@naeem


Vote for @bangla.witness

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

কালের গহ্বরে হারিয়ে গেছে বিশুদ্ধ চাল তৈরীর সেই উরুন গাইন এটি নিয়ে সুন্দর পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। আমি এই উরুন গাইন কখনো দেখিনি। তবে আমার দাদা-দাদির মুখ থেকে উরুন গাইন নিয়ে অনেকবার শুনেছি। এটি চাল ভেজে মরিচ,লবন ও রসুন দিয়ে গুড়ো করে সেটা খেতে হয়। গ্রামের লোকেরা ঝলের গুড়ো নামে চিনে।

ধন্যবাদ।

আজকে, সময়ের প্রয়োজনে বিজ্ঞানের বদৌলতে এসেছে চাল তৈরীর চাল কল, মসলা গুরা করার জন্য ব্লেনডার। কিন্তু অত্যান্ত দুঃখের সাথে বলতে হয়,প্রাচীন আমলের সেই উরুন গাইন এখন তাদের জীবনের শেষপ্রান্তে এসে পৌছেছে।

শেষ প্রান্তে এসেছে বললে ভুল হবে ভাই নেই বললেই চলেবর্তমানে। আমি এটি আজকে প্রথম দেখলাম এর আগে আমি আমার গ্রামে কখনো এটা দেখিনি।তবে টিভিতে অনেক দেখেছি বিশেষ করে তামিলনাড়ু ছবিগুলোতে এই জিনিসটি দেখা যেত যখন বিয়ের কোন সিন দেখা যেত। বর্তমানে চালগুড়া করা হলুদ গুঁড়া করা এসব গুড়া করার জন্য বিভিন্ন প্রকার যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হয় বা কলকারখানার যন্ত্র ব্যবহার করা হয়।এই ঐতিহ্যবাহী জিনিসটি কালের বিবর্তনে এখন তেমন নেই বললেই চলে। এটির নাম অরুণ গাইন আজকে আমি প্রথম জানলাম।খুব সুন্দর পোস্ট উপস্থাপন করেছেন ভাই ঐতিহ্যবাহী একটি জিনিস নিয়ে। খুব সুন্দর লিখেছেন ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর একটি পোস্ট করার জন্য।

ধন্যবাদ ভাইয়া।

আমি এর আগে এই উনুন গাই দেখিনাই ভাই। এই একটা পদ্ধতি যার মাধ্যমে হয়ত চাল ভাঙ্গা যায়। আপনি অনেক সুন্দর।লিখেছেন ভাইয়া। এই উনুন গাই প্রযুক্তির ভিড়ে আজ বিলুপ্তি প্রায় দারপ্রান্তে। আপনাকে ধন্যবাদ এমন একটি প্রাচীন ঐতিহ্য শেয়ার করার জন্য।

ধন্যবাদ

ধন্যবাদ

আপনার পোস্ট কোয়ালিটি যথেষ্ট ভাল হয়েছে তবে পোস্টের লেখাগুলো ব্লোড না করাই ভাল সাধারণ ভাবে পোস্ট করবেন। পোস্টে কমপক্ষে ৮ /১০ টি ছবি শেয়ার করভেন তাহলে পোস্ট আরো ভাল দেখাবে।

ধন্যবাদ।

উরুন গাইন এখন আর তেমন দেখা যায় না। আগে এই উরুন গাইন ব্যবহার করে বিভিন্ন রকমের জিনিস বেটে নেওয়া হত।বিশেষ করে আমরা শিদল তৈরি করার জন্য এটি ব্যবহার করতাম।ধন্যবাদ আপনাকে এত ঐতিহ্য বাহী একটি বিষয় আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন।

ধন্যবাদ

Loading...

উরুন গাইন এখন বর্তমান সমাজে নেই বললেই চলে, এটা এখন বিলুপ্তের পথে, আগের দিনে, চাল গুড়া, এবং মসলা গুঁড়া করার জন্য এগুলো ব্যবহার করা হতো, আপনি অনেক সুন্দর লিখছেন ভাই, অনেক সাজিয়ে গুছিয়ে উপস্থাপন করছেন, অনেক ভালো লাগলো, অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে এতো সুন্দর পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

ধন্যবাদ

উরুন গাইন এর অস্তিত্ব বর্তমানে আর নেই। এখন আর কেউ এ ধরনের জিনিসপত্র ব্যবহার করে থাকে না। প্রযুক্তি নির্ভরশীল যুগে সবই এখন বিভিন্ন প্রকার বাটনা বাটার ডিজিটাল যন্ত্রের উপর নির্ভর করে। এ ধরনের উরুন গাইন মুভিতে দেখা হয়েছে তবে বাস্তবে কখনো দেখিনি।আগেকার গ্রাম অঞ্চলের মানুষেরা এ ধরনের জিনিসপত্র ব্যবহার করতো বাটনাবাটার কাজের জন্য।কালের গহব্বরে পড়ে তলিয়ে গিয়েছে এই উরুন গাইন। আগেকার সময় যখন মেশিন ছিল না তখন মানুষ এই উরুন গাইন চাল বানাতো।এখন বর্তমানে মানুষ আর এত কষ্ট করতে চায় না। তাই ইলেকট্রিক্যাল যন্ত্রের সাহায্যে অনায়াসে চাল তৈরি করে ফেলে। ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর ভাবে ফটোগ্রাফি করে আমাদের মাঝে উপস্থাপন করার জন্য।

ধন্যবাদ

উরুন গাইন নিয়ে অনেক সুন্দর একটি পোস্ট করেছেন।উরুন গাইন এর অস্তিত্ব বর্তমানে আর নেই। উরুন গাইন এখন আর তেমন দেখা যায় না। প্রাচীন কালের মানুষ এই উরুন গাইন ব্যবহার করতো।সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে সেয়ার করেছেন।সুন্দর ভাবে সাজিয়ে গুছিয়ে লিখেছেন ভাই। ধন্যবাদ।

ধন্যবাদ

বর্তমানে উরুন গাইন নাই বললে চলে। আধুনিকতার ছোঁয়ায় হারিয়ে গেছে উরুন গাইন আগের কালের লোকেরা এই উরুন গাইন দিয়ে সিদ্ধ চাল গুড়া করতো, মসলা গিড়া করতো। চাল গুড়ার জন্য এইটা ছিল গ্রামের ঐতিহ্য। আপনি খুব সুন্দর একটা পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন ভাই। ধন্যবাদ আপনাকে,

ধন্যবাদ

আপনি অনেক সুন্দর ফটোগ্রাফি করেছেন। এর প্রশংসা না করে পারলাম না। গ্রাম বাংলার সেই আদিম সংস্কৃতি হচ্ছে বিশুদ্ধ চাল তৈরির উরুণ গাইন। এটি কালের বিবর্তনে বর্তমানে আর নেই বললেই চলে। প্রায় বিলুপ্তির দ্বারপ্রান্তে। আপনার পোস্ট কোয়ালিটি যথেষ্ট ভালো হয়েছে। অসংখ্য ধন্যবাদ।

উরুন গাইন এখন বর্তমান সমাজে নেই বললেই চলে। ডিজিটাল যুগ চলে এসেছে এখন আর কোন জিনিস হাত দিয়ে করতে হবে না। উরুন গাইন এর বদলে ব্যালেন্ডার মেশিনে সবাই সহজে কোন ক্লান্তি পরিশ্রম ছাড়া যে কোন জিনিস গুড়া করতেছে। এসব জিনিস প্রায় বিলুপ্ত, বিলুপ্ত হবে না কেনো আমাদের বাড়িতেই রয়েছে উরুণ গাইন কিন্তু আমরাই সেটা ব্যবহার করিনা ঘুনে ধরে গেছে আমরা এখন সব বাজার থেকেই কিনে আনি। কালের বিবর্তনে এইসব জিনিস দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে নতুন প্রজন্ম এগুলোকে চিনতেও পারবেনা এবং কল্পনা করতে পারবে না যে আমরা কত কষ্ট করেছিলাম আর এই সেগুলো এখন নিমেষের মাধ্যমেই সব হয়ে যাচ্ছে। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এমন সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের সামনে তুলে ধরার জন্য।

ধন্যবাদ।