গ্রাম অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী হলো- খই ভাঁজা।

in hive-131369 •  2 years ago 

বৃহস্পতিবার
তারিখঃ ২৩ শে মার্চ ২০২৩

আসসালামু আলাইকুম,

প্রিয় ভাই ও বোনেরা, আপনারা সকলে কেমন আছেন?আশা করি মহান আল্লাহ পাকের অশেষ রহমতে আপনারা সবাই ভালোই আছেন। আমিও আল্লাহ তায়ালার অশেষ নিয়ামতে ভালোই আছি। স্টিম ফর ট্রাডিশন আজ আমি গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী খাবার খই নিয়ে উপস্থাপন করতে যাচ্ছি। আশা করি সবার ভালো লাগবে ইনশাআল্লাহ।

IMG_20230323_131202.jpg
এই ছবিটি মুঠোফোন থেকে ফটোগ্রাফি করা।
mine.PNGঐতিহ্যবাহী খইmine.PNG

খই আমাদের গ্রাম-বাংলার অতিপরিচিত একটি খাবার। এক সময় খই শুধু অথিতি অ্যাপায়নের জন্য ব্যবহৃত হতো। আমাদের উপমহাদেশে বিন্নি ধানের খই খুবই প্রচলিত। খই সাধারণত গরম বালুতে ভেঁজে তৈরি করা হয়। যে কোন ধান থেকে খইয়ের উদ্ভব ঘটে।

IMG_20230323_114120.jpg
mine.PNGঐতিহ্যবাহী খই হাতে কিভাবে ভাঁজতে হয়ঃmine.PNG

"হাতে ভাঁজা খই" আমাদের গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যের সাথে মিশে আছে। কাঁঠাল ও খই মিশিয়ে খাওয়ার ঐতিহ্য অনেক আগের পূরাতন। গ্রামের লোকেরা বিভিন্ন জাতের ধান বিশেষ করে ১৬ ধান রোদে শুকিয়ে নেয়। এরপর গরম বালু চুলার আগুনে উত্তপ্ত করে এতে ধান দেওয়া হয়। তারপর ধান গুলো গরম বালুতে দেওয়ার পর খোঁচা দিয়ে নাড়তে হয়। নাড়তে নাড়তে এক সময় ধান উত্তপ্ত হয়ে সেই ধানের খোসা ছাড়িয়ে তৈরি হয় খই।

IMG_20230323_114002.jpg
হাতে ভাঁজা খইয়ের ফটোগ্রাফি।
IMG_20230323_113958.jpg
হাতে ভাঁজা খইয়ের ফটোগ্রাফি।

খই আগেরকার যুগে গ্রামে অঞ্চলে এর প্রচলন ছিল বেশি। আগের লোকেরা বিন্নি ধানের খই দিয়ে অতিথি অ্যাপায়ন করতো। আমি যখন ছোট ছিলাম আজ থেকে প্রায় ১৫-১৬ বছর আগে আমার দাদা যখন বেঁচে ছিলেন তখন আমাদের বাসায় খই ভাঁজত। আমার দাদা ও দাদী খই খুব ভালোবাসত। তারা সকালে কিংবা রাতে দুধ দিয়ে খই খেতে। আমিও দুধ ও খই অনেকবার খেয়েছি। এই দুধ ও খই আমার কাছে অনেক ভালো লাগতো।

mine.PNGঐতিহ্যবাহী খই সময়ের পরিবর্তনে হারিয়ে যাওয়ার পথে প্রায়ঃmine.PNG

গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী খই ভাঁজা আর আগের মতো নেই। সময় পরিবর্তনের সাথে সাথে সব কিছুই হারিয়ে যাচ্ছে। তবে কিশোরগঞ্জের কটিয়াদি গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্য খই এখনো টিকে রেখেছে। কিশোরগঞ্জের কটিয়াদির বিন্নি ধানের খই সারা দেশে বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করা হয়। তারা প্রতিমন খই ১৪ হাজার টাকা দরে খুচরা মূল্যে বিক্রি করে থাকে। তারা শতবছর ধরে বিন্নি ধানের খই ভেঁজে আসতেছে। তবে আধুনিক যুগে আর আগের মতো হাতে ভাঁজা খই তৈরি করা হয় না। এখন সব মেশিনের মাধ্যমে তৈরি করা হচ্ছে খই।

IMG_20230323_114117.jpg

আমার লেখায় কোন প্রকার ভুল-ভ্রান্তি হয়ে গেলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। আমার এই ঐতিহ্যবাহী খই ভাঁজা পোস্ট পড়ার জন্য অসংখ্য অসংখ্য ধন্যবাদ। সকলে সুস্থ ও ভালো থাকবেন। আল্লাহ হাফেজ।

ফোনের বিবরণঃ
ক্যামেরাOneplus
পোস্টের ধরণখই ভাঁজা
ক্যামেরা৬৪ মেগাপিক্সেল
ফটোগ্রাফার@riyan1020
অবস্থানপার্বতীপুর, দিনাজপুর, বাংলাদেশ।


3zpz8WQe4SNGWd7TzozjPgq3rggennavDx3XPY35pEAVnpvDGTmz6yM4BdeUwpQ8vMxtR3sQse9kG46R2Lk4NBaGfzPmL5tiA85DdFd7TDvbMGaNMAY2RBgSWfNp5kM1Qjr3515gWKvjxzADBcu4.png
Vote for @bangla.witness

ধন্যবাদান্তে,
@riyan1020.

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

সত্যি সত্যি অনেক সুন্দর লাগছে আপনার পোস্টটি। অনেকদিন পর দেখলাম বিন্নি ধানের
খই ওইভাবে সুন্দর ভাবে হাতে ভাজা হচ্ছে।
খই অনেক রুচিশীল একটি খাবার সত্যি বলতে আমার পছন্দের একটি খাবার। অনেক সুন্দর হয়েছে ছবিগুলো এবং অনেক সুন্দর হয়েছে কথাগুলো অসাধারণ সুন্দর লিখেছেন আপনি।

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

গ্রামের আসল ঐতিহ্য হলো এই খই ভাজা, গ্রামের মা চাঁচিরা সাড়াদিন অনেক প্ররিশ্রম করে খই ভাঁজে। চাল কে অনেক সুন্দর প্রক্রিয়াজাত করে খই ভাজা হয় । আপনি খই ভাঁজার পুরা প্রক্রিয়া ছবির মাধ্যমে আমাদের দেখিয়েছেন। অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই এতো সুন্দর পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য

খই একটি ঐতিহ্য বাহী খাবার। খই এখন আর তেমন দেখা যায় না সবার বাড়িতে। খই ভাজা অনেক কষ্টকর কাজ। চুলায় আগুনের কাছে বসে খই ভাজতে হয়।ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।

খই একটু ঐতিহ্যবাহী খাবার এই খইয়ের ধান অনেকদিন ধরে বাড়িতে শুকিয়ে শুকিয়ে একটি হাড়িতে করে জমা রাখা হয়ে থাকে। তারপর সেই ধান পুরাতন হলে সেই ধান দিয়ে খই ভাজা হয়ে থাকে এতে খই অনেক সুন্দর হয়ে থাকে। খই গ্রামের একটি ঐতিহ্যবাহী খাবার আগেরও দিবসে মুরুব্বী কিন্তু এখন এই খাবারটি আর তেমন দেখতে পাওয়া যায় ন।

গ্রাম বাংলার এক অন্যতম খাবার হলো এই খই।খই খেতে কাকে না ভালো লাগে খই হলো গ্রামীণ সমাজে মানুষের এক ঐতিহ্যবাহী খাবার। কালকে যখন আমি দিনাজপুর থেকে বাড়িতে আসলাম তখন দেখলাম যে আমার ফুপু খই ভাজতেছে। দেখে খুব ভালো লাগলো খই নিলাম এক মুঠ হাতে নিয়ে খেলাম। খৈ নিয়ে খুব সুন্দর লিখেছেন ভাই। ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর একটি পোস্ট করার জন্য।

অনেক সুন্দর একটা পোস্ট ভাই।খই আমাকে গুর এর সঙ্গে খেতে অনেক ভালো লাগে। খই যখন ভাজে তখন দেখতে অনেক সুন্দর লাগে । যখন আমার নানি দাদিরা ভাজতো তখন পাশে বসে দেখতাম। এখন আমরা শুধু বাজারে দেখতে পাই। ধন্যবাদ আপনাকে অনেক পরিচিত একটা পোস্ট করার জন্য।

গ্রামে আগে প্রায় সব বাড়তি খই ভাজা হত। এখন এই খই ভাজা আর দেখা যায় না।আর খই ভাজতে সবাই পারে না। পাড়ার অল্প কয়েকজন খই ভাজতে পারে। আমার মা খই ভাজতে পারে। আগে আমাদের বাসাতেও খই ভাজতো। বাট আমাদের বাসাতেও এই রকম খই ভাজা হয় না। খই খেতে খুব ভালো লাগে। খই দিয়ে আগে মানুষ গরমের সময় কাঁঠাল ও আম দিয়ে খেত। আপনি খুব সুন্দর করে সাজিয়ে গুছিয়ে উপাস্থপনা করেছেন ভাই। ধন্যবাদ

ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করার জন্য। আপনার কমেন্টর মধ্যে কয়েক জায়গায় ভাষা ও বানান ভুল আছে ঠিক করে নিন।

হাতে ভাজা খই আমার অনেক প্রিয়। যদিও খই এখন অনেকটা অপরিচিত খাবার বলা চলে। এটি গ্রাম বাংলার অন্যতম একটি ঐতিহ্যবাহী খাবার। যদিও এটি ভাজা অনেকটা কষ্টসাধ্য। আপনি খই সম্পর্কিত তথ্যগুলো অনেক সাজিয়ে গুজিয়ে উপস্থাপন করেছেন। অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।

Loading...

খই ভাঁজা খাইতে অনেক ভালো লাগে। গ্রামের মানুষরা এই খই দিয়ে অনেক আত্মীয় স্বজন আপ্যায়ন করে থাকে। আপনি এই খই ভাঁজার প্রতিটি ধাপ আপনি খুব সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করেছেন আমাদের মাঝে। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

  ·  2 years ago (edited)

হাতে ভাঁজা খই খেতে আমাকে অনেক ভালো লাগে আমাদের বাড়িতে যখন খই ভাঁজে তখন আমি সঙ্গে সঙ্গে সেখান থেকে গরম খই নিয়ে ধানগুলো বেঁছে ফেলে সঙ্গে সঙ্গে খেয়ে ফেলি কারণ আমাকে অনেক ভালো লাগে। এখন রমজান মাস চলে আসছে কয়েকদিন পর গ্রাম অঞ্চলের প্রত্যেকটি বাড়িতে খই মুড়ি ভাঁজবে আর সেই খই মুড়ি গুলো আত্মীয় স্বজনদের বাড়িতে পাঠাবে সেমাই, চিনি, খই, মুড়ি। ধন্যবাদ ভাইয়া এত সুন্দর পোস্ট আমাদের মাঝে মাঝে উপস্থাপন করার জন্য।

সুন্দর মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য অসংখ্য ধন্যবাদ। আপনি বানানের দিকে লক্ষ্য রাখুন ভাই।

দুঃখিত ভাইয়া হাঁটতে হাঁটতে কমেন্ট করা হয়েছিল তাই মিসটেক হয়ে গেছে।

আমার কমেন্ট পড়ে আমি অবাক

খই নিয়ে অসাধারণ লেখছেন ভাই, খই কম বেশি সবাই পছন্দ করে, আর গ্রাম বাংলার খাওয়ার জন্য খই আর মুড়ি বেশি খাওয়া হয়। তবে আগের মত এখন বাসায় খই ভাঁজা হয় না।আমি ছোট বেলায় দেখছি সবার ঘরে ঘরে খই ভাঁজতো, কিন্তু এখন আগের থেকে খুব কম মানুষ খই ভাঁজে, তবে খই কিন্তু খেতে খুব ভালো লাগে আমিও খই খেতে খুব ভালো বাসি। আমাদের বাসায়ও মাঝে মাঝে খই ভাঁজে, তবে আমাদের এই দিকে মুড়িও ভাঁজে।আমি ছোট বেলায় দেখছি যখন আমাদের বাসায় খই ভাঁজে তখন আমাকে খুব আনন্দিত লাগে। কিন্তু এখন আধুনিকতার ছোঁয়ায় সব কিছু হারিয়ে গেছে। তবে আমাদের দেশ ডিজিটাল হলেও কিছু কিছু মানুষ কিন্তু এখনো পাল্টে নাই,তারা কিন্তু এখনো আগের দিনের ঐতিহ্য টিকে ধরে আছে।আপনি অনেক সুন্দর লেখছেন ভাই খই ভাঁজার দৃশ্য গুলো দেখে খুব ভালো লাগলো আমার। আমি কিন্তু খই আর মুড়ি এই দুইটায় খেতে খুব ভালো বাসি, যখন বাসায় খই ভাঁজে তখন আমি খই খাই,আর খই কিন্তু সারা বছর ভাঁজা হয় না তাই খই সারা বছর খাওয়া হয় না। আমি মনে করি যে গ্রাম বাংলার মানুষ বেশি খই খাই আর খই গ্রাম বাংলার কাছে খুব প্রচালিত, তবে শহর অঞ্চলে মনে হয় তেমন কেউ খই খাই না।বাসায় যখন খই ভাঁজা হয় তখন সবাইকে খুব ভালো লাগে। আগের মত এখন আর দেখা যায় না দিন দিন কেনো যানি সব হারিয়ে যাচ্ছে,আপনাকে অসংখ্য অসংখ্য ধন্যবাদ সুন্দর একটা পোস্ট উপস্থাপন করার জন্য।

আগে গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে কম বেশি খই ও মুড়ি ভাজা হতো।আমরা যখন ছোট ছিলাম তখন আমার দাদী খই ভাজত আর আমরা বসে বসে দেখতাম। গরম খই এর স্বাদই আলাদা। তারপর ধানের খোসা ছাড়ানোর জন্য চালুনি তে হাত দিয়ে চালানো হতো।তাহলেই সব খোসা ছাড়িয়ে যেত।কিন্তু এখন আর বাড়িতে খই ভাজা হয় না। বাজার থেকে কিনে নিয়ে আসা হয়।গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য বাহী খই নিয়ে আপনি অনেক সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন। এতো সুন্দর একটি পোস্ট উপস্থাপন করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া। শুভকামনা রইল আপনার জন্য।

খই ভাঁজা নিয়ে অনেক সুন্দর হয়েছে পোস্টি।খই ভাঁজার দৃশ্য গুলো দেখে খুব ভালো লাগলো আমার। আমি কিন্তু খই আর মুড়ি এই দুইটায় খেতে খুব ভালো বাসি।যখন বাসায় খই ভাঁজে তখন আমি খই খাই।আর খই কিন্তু সারা বছর ভাঁজা হয় না তাই খই সারা বছর খাওয়া হয় না।সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের কাছে সেয়ার করেছেন।ধন্যবাদ ভাই।

সুন্দর মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ। বানানের দিকে লক্ষ্য রাখুন দয়া করে।