ঐতিহ্যবাহী বাঁশের তৈরি টং

in hive-131369 •  last year  (edited)

আসসালামু আলাইকুম

আশা করি আল্লাহর রহমতে সবাই ভালো আছেন। আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। আজকে আমি গ্রামীণ একটি ঐতিহ্য বাঁশের তৈরি টং নিয়ে পোস্ট করতে যাচ্ছি। তো চলুন শুরু করা যাক।

Picsart_23-08-28_02-33-28-315.jpg

বাঁশের তৈরি টং হলো একটি গ্রামীণ ঐতিহ্য। গ্রামের মানুষদের বসে বিশ্রাম নেয়া ও আড্ডা দেয়ার জন্য এই বাঁশের তৈরি টং যুগ যুগ ধরে ব্যবহৃত হচ্ছে। সকাল থেকে যখন গ্রামের মানুষ মাঠে পুড়ে কাজ করার পর যখন দুপুরে বিশ্রাম নেয়ার প্রয়োজন মনে করে তখন ক্ষেতের নিকটবর্তী এই বাঁশের তৈরি টং এ এসেই বসে বিশ্রাম নেয়। এই ধরনের টংগুলোতে গ্রামের ছোট-বড়, পুরুষ-মহিলা সবাই আড্ডা দেয়। রাতে যখন কারেন্ট চলে যায় তখন গ্রামের মানুষ সবাই এই বাঁশের তৈরি টং এ ভীড় করে। গ্রামের মহিলারা সকালে বাড়ির কাজ শেষ করে যখন ফ্রি হয় তখন তারা টং এ এসে আড্ডা দেয়। আর মহিলা মানুষ একবার কথা বলা শুরু করলে আর থামেই না। যোহর পর্যন্ত তারা সেখান থেকে নরে না। আমাদের গ্রামে এইরকম অনেকগুলো বাঁশের তৈরি টং আছে।


Picsart_23-08-28_02-27-10-824.jpg
Picsart_23-08-28_02-30-33-319.jpg
Picsart_23-08-28_02-28-15-710.jpg

উপরের ছবিগুলোতে যে টং টি দেখা যাচ্ছে সেটি আমার চাচা বানিয়েছে। আমার চাচা বাড়িতে প্রাইভেট পড়ায়। ছাত্র-ছাত্রীরা অনেক আগে আসে। তাদেরকে অপেক্ষা করতে হয়। তাই আমার চাচা তাদের বসার জন্য এই বাঁশের টং টি বানিয়েছেন। এখন প্রতিদিন সকালে করে প্রাইভেটের ছাত্র-ছাত্রীরা এখানে বসে। আমার আম্মু ও আমার বড় আম্মাও এই টং এ বসে গল্প করে। আমিও মাঝে মাঝে এই টং এ গিয়ে বসে থাকি, শুয়ে পড়ি। বাঁশের তৈরি এই টং গুলোতে গ্রামের মানুষের অনেক স্মৃতি থেকে যায়। কেননা ছোটবেলা থেকেই আমি এই ধরনের টং দেখে আসছি এবং সেই টং গুলোতে আমার নিজেরই অনেক স্মৃতি জমা হয়ে আছে। পাশের বাড়ির এক দাদা ছিলো ওনার একটা টং ছিলো। উনি যখন বেঁচে ছিলেন তখন উনি টং এ থাকা অবস্থায় কোনো ছোট বাচ্চা সেই টং এ যেতো না। সবাই ওই দাদাকে ভয় করতো।


Picsart_23-08-28_02-31-00-338.jpg
Picsart_23-08-28_02-23-11-456.jpg
Picsart_23-08-28_02-23-47-605.jpg

উপরের ছবিতে যে বাচ্চাগুলোকে দেখা যাচ্ছে এরা আমার ভাতিজা। একজন ফুফাতো ভাইয়ের ছেলে আরেকজন জেঠাতো ভাইয়ের ছেলে। ছোট ভাতিজা বাড়িতে থাকতে চায় না সবসময় বাইরে আসতে চায়। প্রায়ই তাকে আমার বড় আব্বা, বড় আম্মা এই টং এ নিয়ে আসে। একটা সময় গ্রামের প্রতিটা দোকানের সাথেই একটি করে বাঁশের তৈরি টং ছিলো। কিন্তু এখন আর দোকানের সাথে টং গুলো দেখা যায় না। এখন মানুষ ইট সিমেন্ট দিয়ে পাকা করে মানুষের বিসার ব্যবস্থা করে দেয়। এই বাঁশের তৈরি টং গ্রামের মানুষের কাছে একটি প্রশান্তির স্থান। অতিরিক্ত গরমে যখন আর বাড়িতে থাকা যায় না তখন মানুষ এই বাঁশের টং এ এসেই বসে থাকে আর ঠান্ডা বাতাস খায়।



ডিভাইসস্যামসাং গ্যালাক্সি এ ১৩
ক্যামেরা৫০ মেগাপিক্সেল
লোকেশনজমির হাট, পার্বতীপুর, দিনাজপুর।


তো বন্ধুরা এই ছিলো আমার আজকের পোস্ট। আশা করি আপনাদের ভালো লেগেছে। ভূল-ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।

ধন্যবাদ সবাইকে


Vote for @bangla.witness

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

এসব বাঁশের তৈরি টং আমাদের ঐতিহ্য। সেই প্রাচীনকাল থেকে এরকম বাঁশের তৈরি টং দেখে আসতেছি। টং গুলো মানুষের বিশ্রাম নেওয়ার জন্য অন্যতম একটি মাধ্যম। এরকম বাঁশের তৈরি টং আমাদের বাড়ির পাশে রয়েছে। কারেন্ট চলে গেলে সেখানে গিয়ে বাতাস খাই। বাঁশের তৈরি টং সম্পর্কে অনেক সুন্দর লিখেছেন ভাইয়া। ধন্যবাদ আপনাকে

ধন্যবাদ ভাই

বাঁশের তৈরি টং আমাদের গ্রামের ঐতিহ্য। মানুষ আড্ডা দেওয়ার জন্য এই টং ব্যবহার করে। রাতের আড্ডা জমে এই বাঁশের তৈরি টং এ। গ্রাম বাংলার প্রতিটি বাড়ির সামনে এই টং দেখা যায়। আপনি অনেক সুন্দর উপস্থাপন করছেন ভাই, ফটোগ্রাফি দারুণ হয়েছে। অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই সুন্দর পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

ধন্যবাদ ভাই

বাঁশের তৈরি টং নিয়ে আপনি দারুণ উপস্থাপনা করেছেন। এটি একটি গ্রামীণ ঐতিহ্য। আপনি ঠিকই বলেছেন যে, যখন বিদ্যুৎ চলে যায় তখন টং এ এসে মানুষ আড্ডা দেয়। তাছাড়া ছেলে মানুষেরা বিভিন্ন সময় টঙে বসে আড্ডা দেয়। টঙে বসে তারা পিকনিক খায়, মুড়ি পার্টি করে। আমাদের বাড়ির পাশেও আগে একটি টং ছিল। আপনার ভাতিজা দেখতে মাশাল্লাহ অনেক সুন্দর। ছবিগুলো অনেক সুন্দর হয়েছে। ধন্যবাদ আপনার সুন্দর পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।

ধন্যবাদ আপু

গ্রামে প্রতিটি দোকানের সামনে এবং বাগান বা কোন ফাঁকা জায়গায় এরকম বাঁশের তৈরি টং দেখা যায়।আমাদের এদিকে এইটাকে টং বলে না, চরাট বলে। বাঁশের তৈরি টং নিয়ে খুব সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন। আপনার ফটোগ্রাফি গুলো খুব সুন্দর হয়েছে। পোস্টটি সাজিয়ে গুছিয়ে খুব সুন্দর লিখেছেন। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ সুন্দর একটি পোষ্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

ধন্যবাদ ভাই

জ্বি আমাদের গ্রামের ঐতিহ্য হলো এই বাঁশের টং। এবং আমরা সেই ছোট থেকে দেখে আসতেছি আমাদের গ্রামেও একটি টং রয়েছে এবং ওখানে বিশেষ করে বয়স্ক লোক গুলো আড্ডা ও বিশ্রাম নিয়ে থাকে। গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য টং নিয়ে আপনি অনেক সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের সকলের মাঝে শেয়ার করেছেন। ধন্যবাদ আপনাকে

ধন্যবাদ ভাই

আমাদের গ্রামেও বাঁশ দিয়ে এরকম টং বা মাচা বানানো হয়ে থাকে। আপনার এই ছবিটা দেখে বোঝা যাচ্ছে এই মাচাটি বেশ লম্বা, আমাদের গ্রামে যে টং বানানো হয়ে থাকে সেগুলো এত বড় হয় না । সেগুলো তো শুধুমাত্র তিন থেকে চারজন মানুষ বসা যায়। আপনার শেয়ার করা যে টংটি দেখা যাচ্ছে সেটিতে নিঃসন্দেহে অনেক জন মানুষ বসতে পারবে। গরমের দিনে গাছের ছায়ার নিচে এরকম সুন্দর টঙে বসে থাকার মজাই অনেক।ধন্যবাদ আপনাকে।

ধন্যবাদ আপু

অসাধারণ একটা পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন। গ্রামে বাঁশের তৈরি এই টং মানেই বিভিন্ন বয়সের মানুষের আড্ডা। ছোট বড় সবাই এখানে বসে বিশ্রাম নেয় এবং বিভিন্ন ধরনের গল্প করে আড্ডা জমায়। টং আমাদের গ্রাম অঞ্চলের এক অন্যরকম ঐতিহ্য বহন করে। আপনার ফটোগ্রাফি গুলো অসাধারণ হয়েছে। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এত সুন্দর একটা পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।

ধন্যবাদ আপু

Loading...

আমাদের এলাকায় সবথেকে বড় বড় রাজনীতিবিদ দেখতে পাওয়া যায় এই টঙ গুলোতে। বাঁশের তৈরি একটি প্রাচীন আড্ডা খানা। আদিম কাল থেকে মানুষ বাঁশের বানানো টঙের মধ্যে আড্ডা দিয়ে থাকে। আমাদের এলাকায় গ্রামের ভিতরের টঙ গুলোতে মহিলা পুরুষ সবাই আড্ডায় মেতে উঠে। রাতে বেলা বিদ্যুৎ না থাকল্র আমি আড্ডা দেওয়ার জন্য টঙ গুলোতে যাই। আপনি অনেক সুন্দর লিখেছেন ভাই।

ধন্যবাদ ভাই

বাঁশের তৈরি টং গুলে গ্রামের মানুষ বেশি ব্যবহার করে। আপনি খুবই সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করেছেন।