প্রাচীনকালের গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী যাতাঁকল আজ বিলুপ্তর পথে।

in hive-131369 •  2 years ago 

রবিবার
তারিখ - ২ এপ্রিল ২০২৩ইং

আসসালামু আলাইকুম,

প্রিয় ভাই ও বোনেরা, সকলে কেমন আছেন। আশা করি আল্লাহ তায়ালার অশেষ মেহেরবানিতে আপনারা সবাই ভালোই আছেন। আমিও আল্লাহ তায়ালার রহমতে ভালোই আছি। স্টিম ফর ট্রাডিশন কমিউনিটিতে আজ আমি ঐতিহ্যবাহী যাতাঁ নিয়ে উপস্থাপন করার চেষ্টা করব।

IMG_20230402_103536.jpg
ঐতিহ্যবাহী যাতাঁ
ঐতিহ্যবাহী যাতাঁ

গ্রামের প্রতিটি ঘরে একসময় যাতাঁকল ব্যবহার হতো।রবি শস্যের বিবিন্ন ডাল যেমন মসুর ডাল, খেসারি ডাল,মুগ ডাল ইত্যাদি ভাঙ্গা হতো এই যাতঁ দিয়ে।এছাড়া গম ও গুড়ো করা হতো এই যাতাঁ কলের সাহায্যে।যাতাঁকল হলো দুটি গোলাকার পাথর।একটি পাথরের উপর আরেকটি বসিয়ে ঘোরানো হয়।মাঝখানে একটি ছিদ্র থাকে। এই ছিদ্রে ডাল দিয়ে ঘুরালে ডাল ভেঙে যেত।এরপর কুলো দিয়ে খোসা থেকে ডাল আলাদা করে নেওয়া হয়।

IMG_20230402_103102__01.jpg
প্রাচীনকালের যাতাঁকলের ব্যবহারঃ

ছোট বেলায় দাদুর কাছে শুনেছিলাম আগে নাকি গ্রামের ভিতর ঢুকলেই প্রতিটি বাড়িতেই শোনা যেত যাঁতাকলে রবিশস্য ভাঙ্গার শব্দ। প্রতিটি বাড়িতেই ছিল যাতাঁকল। কিন্তু এখন আধুনিক যুগে আর এইরকম শব্দ শোনা যায় না। যেখানে মানুষের বসতি ছিল সেখানেই ছিল এই রবিশস্য ভাঙ্গার যাতাঁকল। আগের কার দিনে নববধূরা স্বামীর ঘরে এসেই শাশুড়ির কথায় ডাল ভাঙতে বসতো।কিন্তু এখন আর এই রকম যাতার ব্যবহার নেই।দাদুর কাছে গল্পে শোনা কথাগুলো এখন শুধুই স্মৃতি।

IMG_20230402_103221__01.jpg
বিলুপ্তর পথে ঐতিহ্যবাহী যাতাঁকলঃ

একসময় গ্রামের প্রতিটি ঘরে যাতার ব্যবহার থাকলেও এখন আর এই রকম যাতাঁকলের ব্যবহার দেখা যায় না।প্রযুক্তির প্রসারে আধুনিকতার ছোয়ায় ঐতিহ্যবাহী এই যাতাঁকল আজ বিলুপ্তির পথে। আগে ডাল গম ভাঙ্গার জন্য কোনো ইলেকট্রিক যন্ত্র বা মেশিন ছিল না কিন্তু আধুনিক যুগে ডাল গম ভাঙ্গার জন্য বিভিন্নরকম ইলেকট্রিক মেশিন রাইস মিল গড়ে উঠেছে। যার সাহায্য অল্প সময়েই রবিশস্য ভাঙ্গা হয়।

IMG_20230402_103311__01.jpg

যাতাঁকল এক প্রকার হস্ত চালিত যন্ত্র। জাতাঁকলের ব্যবহার ছিল কষ্টসাধ্য।যাতাঁকলে ডাল গম ভাঙ্গার জন্য প্রচুর শক্তির প্রয়োজন হতো।শত শত নারী শ্রমিক এই যাতাঁকলে উপর নির্ভরশীল ছিল। প্রাচীন কালে গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে বিকেলবেলা যাতাঁকল এর ঘ্যাড় ঘ্যাড় শদ্ব শুরু হতো।শুধু ডাল গম এই নয় সেসময় চাউলও গুড়া করে হতো। যাতায় গুড়ো চাউলের গুড়া খেতেও অনেক সুস্বাদু। প্রাচীনকালে বিভিন্ন মেলার আয়োজন করা হতো। আর এই সব গ্রাম্য মেলায় যাতাঁ কিনতে পাওয়া যেত। প্রাচীনকালে যাতাঁকলের ব্যবহার সর্বাধিক থাকলেও আজ এই যাতাঁকল বিলুপ্ত।

IMG_20230402_103508__01.jpg

আমার লেখা পোস্ট পড়ার জন্য সকলকে জানাই অসংখ্য ধন্যবাদ। সকলে সুস্থ ও ভালো থাকবেন।

মোবাইলের তথ্য সংরক্ষণঃ
মোবাইলTecno 9t spark
ক্যামেরা৩৮ মেগাপিক্সেল
পোস্টের ধরণঐতিহ্যবাহী যাতাঁ
লোকেশনচিরিরবন্দর গুড়িয়া পাড়া
3zpz8WQe4SNGWd7TzozjPgq3rggennavDx3XPY35pEAVnpvDGTmz6yM4BdeUwpQ8vMxtR3sQse9kG46R2Lk4NBaGfzPmL5tiA85DdFd7TDvbMGaNMAY2RBgSWfNp5kM1Qjr3515gWKvjxzADBcu4.png
Vote for @bangla.witness

ধন্যবাদ,
@siza

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

পুরনো এই যাঁতা কল শেষ কবে দেখেছি তা আমার মনে নেই। আমার এক খালাতো বাড়িতে এই যাঁতা কল দেখেছি এই কয়েকদিন আগেই। এখন আর এই যাঁতা কলের ব্যবহার কেউ করেনা এখন সবাই চাল গম ভুট্টা মিলে গুরো করে নিয়ে আসে। ধন্যবাদ আপু আপনার মাধ্যমে এই যাঁতা আবার দেখতে পেলাম

ধন্যবাদ

যাতাঁকল আমাদের ঐতিহ্য, যা এখন বিলুপ্ত প্রায়। ডাল গুরা বা মিহি করার জন্য এই যাঁতাকল ব্যবহার করা হতো। এটি একটি হস্ত চালিত যন্ত্র, যা পাথরের তৈরি। অনেক সুন্দর পোস্ট করছেন আপু। অনেক সাজিয়ে গুছিয়ে উপস্থাপন করছেন। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে এতো সুন্দর পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া এতো সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।

আমার জীবন দশা আমি কখনো এইরকম জাতাকল দেখি নাই। তবে বইয়ে পড়েছি প্রাচীনকালে সবথেকে বেশি এই জাতাকল ব্যবহার করে গম ভাঙ্গা হত। আপনার পোস্ট করার মাধ্যমে আমি এই জাতাকল সম্পর্কে জানতে পারি।

ধন্যবাদ ভাইয়া

Loading...

যাতাকল আমি সরাসরি কখনো দেখিনি। তবে এটি আমাদের অনেক ঐতিহ্যবাহী একটি জিনিস। বর্তমানে প্রায় বিলুপ্ত হওয়ার পথে। আপনার পোষ্টের মাধ্যমে যাতাকল সম্পর্কে অনেক কিছুই জানতে পারলাম। ভালো লিখেছেন।শুভকামনা রইল

ধন্যবাদ ভাইয়া আপনার সুন্দর মন্তব্যর জন্য।

আমার জীবন দশা আমি কখনো এইরকম জাতাকল দেখি নাই। তবে বইয়ে পড়েছি প্রাচীনকালে সবথেকে বেশি এই জাতাকল ব্যবহার করে গম ভাঙ্গা হত। আপনার পোস্ট করার মাধ্যমে আমি এই জাতাকল সম্পর্কে জানতে পারি।

যাতাঁ নিয়ে সুন্দর একটি উপস্থাপনা। ছবিগুলো অসাধারণ হয়েছে। আগেরকার যুগে ধান, কালাই,ভাঙ্গার কাছে এই যাঁতা ব্যবহার করা হতো।

ধন্যবাদ ভাইয়া

ঐতিহ্যর মধ্যে অন্যতম ঐতিহ্য হলো এই যাঁতা,আমি যাঁতার নাম অনেক শুনছি কিন্তু কখনো নিজের চোখ দিয়ে দেখি নাই, আমি জানতাম না এই যাঁতা দিয়ে মসুর ডাল,গম,কালাই এই সব গুড়ো করে।আজকে আপনার পোস্ট পরে আমি তা সব কিছু জানতে পারলাম, আমি আগের মানুষের কাছ থেকে শুনছিলাম আগে নাকি সবার ঘরে ঘরে এই যাঁতা ছিল কিন্তু এখন আধুনিকতার ছোঁয়ায় এই সব জিনিস হারিয়ে গেছে। আপনি অনেক সুন্দর করে উপস্থাপন করেছেন, পোস্টি খুব সাজিয়ে গুছিয়ে আমাদের মাঝে তুলে ধরছেন। আপনাকে অসংখ্য অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই সুন্দর একটা পোস্ট করার জন্য।

ধন্যবাদ ভাইয়া

আপনি বেশ চমৎকার একটি বিষয় তুলে ধরেছেন আমাদের কাছে। এই জাতি এখন আর তেমন দেখা যায় না। আমি অনেক আগে দেখেছিলাম এই জাতি।আপনি বিশেষ একটি ঐতিহ্য আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন।ধন্যবাদ আপনাকে।

ধন্যবাদ

যাঁতাকল আমি সরাসরি কখনো দেখি নাই। অনেক নাম শুনেছি। এবং শুনেছি যাঁতাকল দিয়ে অনেক কিছু ভাঙ্গা যায়।আপনার ফটোগ্রাফির মধ্যেমে আমি এটা দেখতেছি।আপনি খুব সুন্দর একটা পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। ধন্যবাদ আপু

ধন্যবাদ ভাইয়া

যাতাঁকল নিয়ে অনেক সুন্দর একটি পোস্ট করেছেন। এই যাতাঁকল আমাদের গ্রামঅঞ্চলের ঐতিহ্য। এই যাতাঁকল তেমন একটা দেখা যায় না। সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে সেয়ার করেছেন।অসাধারণ হয়েছে পোস্ট। ধন্যবাদ আপু।

গ্রাম বাংলার গৃহিণীদের সঙ্গী এবং বাঙালির ঐতিহ্য বহন করা এই যাঁতাগুলো আজ আর দেখাই যায় না। এগুলোর সাহায্য ডাল জাতীয় শস্যগুলো ভাঙ্গা হতো। একটি লোহার চাকতির উপর আরেকটি লোহার চাকতি দিয়ে হাতের সাহায্যে ভাঙ্গা হয় শস্যদানা গুলো। ধন্যবাদ আপু আপনাকে এই পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।

প্রাচীনকালে দেখা যেত প্রতিটি বাড়িতে কম বেশি ধান ভাঙ্গার জন্য যাতা ব্যবহার করা হতো। এই যাতা দিয়ে ধান ভাঙ্গায় সময়ের প্রয়োজন পড়ে তবে এটিতে অনেক শক্তি প্রয়োজন হতো। আমাদের বাসায় একটি যাতা পড়ে আছে কিন্তু ব্যবহার কম হয় বলা চলে। আমাদের সকলকে আগেরকার সময়ের প্রযুক্তি গুলো অনেক পুরনো হলেও সযত্নে রাখতে হবে। যা এই প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা দেখে আর উপলব্ধি করতে পারে আগেকার হাত দিয়ে চালিকাশক্তি গুলো। আপনি অনেক সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের সকলের মাঝে উপস্থাপন করেছেন আপু। শুভকামনা রইলো ধন্যবাদ।

যাতা শুধু আমি বইয়ে পড়েছি কখনো আসলে ওইভাবে দেখার সুযোগ হয়নি।তবে ছোটবেলা হয়তো একবার দেখেছিলাম কিছু কিছু স্মৃতি মনে আছে একটি বাড়িতে।যাতা দিয়ে বিভিন্ন রকম মসলা ডাল মিহি করা হয়।যাতা নিয়ে খুব সুন্দর লিখেছেন আপনি খুব সুন্দর ফটোগ্রাফি করেছেন ধন্যবাদ আপনাকে।

প্রাচীনকালের গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী একটি জিনিস হচ্ছে যাতাকল। যা কাল ক্রমে প্রায় বিলুপ্তির পথে। তবে গ্রামগঞ্জে এখনো কিছু জায়গায় এর দেখা পাওয়া যায়। ছবিগুলো আপনি অনেক সুন্দর ভাবে তুলেছেন আপু। এটি বাঙ্গালীদের একটি ঐতিহ্যের প্রতীক। এটি ব্যবহার করে অনেকেই গম ভাঙতো আগে। কিন্তু বর্তমানে গম ভাঙ্গার মেশিন আবিষ্কারের ফলে এটি বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছে। ঐতিহ্যবাহী এত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় নিয়ে পোস্ট শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।