প্রতিযোগিতার ১৫তম সপ্তাহ - আমার ছোট বেলার একটি মজার স্মৃতি

in hive-131369 •  last year 

আসসালামু আলাইকুম বন্ধুগণ।আশা করি সকলেই ভাল আছেন। আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভাল আছি। আজ আমি আমার ছোটবেলার একটি মজার স্মৃতি আপনাদের সাথে শেয়ার করব ইনশাআল্লাহ। চলুন কথা না বাড়িয়ে শুরু করা যাক।

শৈশবকাল

জীবনের সবথেকে আবেগঘন ও প্রাণৌচ্ছল সময় হল শৈশবকাল।শৈশবের নির্দিষ্ট করে কোনো সময়সীমা নেই।শৈশবের থাকে হাসিকান্নার কিছু আবেগময় সময়। যেগুলো সারা জীবনেও আর পাওয়া যাবে না।কবে যে এত বড় হয়ে গেলাম বুঝতেই পারলাম না।শৈশবকাল কতই না সুন্দর। জীবনের অতীব দূরন্ত সময় এটি।আজ আমি আমার শৈশবের কিছু স্মৃতিচারণ করব আপনাদের সাথে। আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে।

IMG_20230515_172050.jpgIMG_20230515_172034.jpg
শৈশবের বিভিন্ন স্মৃতি

শৈশবের সাথে জড়িয়ে থাকে বিভিন্ন স্মৃতি যেগুলো কখনও ভোলার মতো নয়। আর সেগুলো ভোলাও যাবে না কোনোদিন কারণ এগুলো আমাদের জীবনের সাথে অতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে।আমাদের শৈশবের বিভিন্ন স্মৃতি হল পুকুরে গোসল করতে যাওয়া,রাস্তার গাছের আম পেড়ে খাওয়া,কদম ফুল পাড়া, রাস্তার ছোট কালভার্টগুলোর একপাশে পাতা ছুঁড়ে দিয়ে দৌড়ে গিয়ে অন্যপাশে আবার দেখা,পুতুল খেলা,লুকিয়ে লুকিয়ে বান্ধবীর বাড়ি বেড়াতে যাওয়া, মাটির ছোট্ট হাড়িপাতিলে রান্না করাসহ আরও কত কিছু- যা বলে শেষ করার মতো নয়।

IMG_20230515_170358.jpgIMG_20230515_170631.jpgIMG_20230515_170556.jpg
IMG_20230515_170513.jpgIMG_20230515_170501.jpgIMG_20230515_170443.jpg

ছোটবেলায় আমার পুকুরে গোসল করার নেশা ছিল খুব।যখনই পারতাম লুকিয়ে লুকিয়ে গোসল করতে যেতাম। আর এজন্য মারও খেয়েছি বহুবার।ছোটবেলায় আমরা কাপড় বা মাটি দিয়ে পুতুল তৈরি করতাম আর সেগুলো দিয়ে খেলতাম বরবউ।আমার বড়আম্মু লালমাটি দিয়ে পুতুল তৈরি করতেন।সেগুলো আমরা আবার চারু ও কারুকলা পরীক্ষার দিন জমা দিতাম।আগে আমাদের স্কুলে যাওয়ার রাস্তাটি কাচারাস্তা ছিল।রাস্তার পাশে ছিল কদম ও তুঁত গাছ।আমরা পাকা তুঁত পেড়ে খেতাম আবার বান্ধবীর জন্য স্কুলে নিয়ে যেতাম।রাস্তার ধারগুলোতে ছিল প্রচুর প্রেমকাঁটার গাছ।এগুলোর পাশ দিয়ে গেলে কাপড়ে লেগে যেত এবং তা পরে একটা একটা করে তুলতে হত।কিন্তু এখন পাকা রাস্তা হওয়ার পর থেকে প্রেমকাঁটার গাছগুলো আর নেই। রাস্তার পাশের জমিগুলোতে কচুরিপানার ফুল ফুটত।আমি সেগুলো তুলতাম।এ ফুলগুলো আমার খুব ভালো লাগে। আমার মনে আছে একদিন এই কচুরিপানার ফুল তুলতে গিয়ে আমার পা কাচ দিয়ে কেটে গিয়েছিল।

IMG_20230508_132317.jpgIMG_20230508_132013.jpg

আগে স্কুলে যাওয়ার জন্য বরাদ্দ থাকত ২ টাকা।তখন আমার বাবা সাইকেলে করে স্কুলে যেতেন।যেহেতু আমার আব্বুর স্কুল দূরে তাই বাবার সাথে যেতে পারতাম না।তাই আর কি করার স্কুলে আইসক্রিম খাওয়ার টাকা বাঁচাতে ১ কি.মি. রাস্তা হেঁটেই যেতাম।তখন রাস্তার গাছের আম পাড়তাম আবার কদম পাকলে পাকা কদম পেড়ে খেতাম। এগুলো স্মৃতি আমি কোনোদিনও ভুলব না।সবথেকে একটা ইন্টারেস্টিং ব্যাপার হলো বাঁশের পাতার নৌকা।আগে শ্যালো মেশিন ছিল ও পানি যাওয়ার জন্য নালা ছিল। এই নালায় আমরা বাঁশের পাতার নৌকা ছেঁড়ে দিতাম ও তার পিছন পিছন দৌড়াতাম। এসব কথা লিখতে লিখতে আমি আমার শৈশবের আবেগে ভেসে যাচ্ছি। আরও কতো স্মৃতি আছে যেগুলো বলে শেষ করতে পারব না।

আমার শৈশবের একটি মজার স্মৃতি

আগে আমরা মাটির হাঁড়ি পাতিল নিয়ে খুব খেলতাম।একাজে আমরা কচুপাতা লম্বালম্বি চিকন করে কেটে নুডলস বানাতাম।ভাত বা পোলাও হত নদীর বালু।ইটের গুড়া হত হলুদ/মসলা,ইটের ভাঙা টুকরোগুলো হতো মাংস। কলাপাতা দিয়ে চুল বানাতাম।কচুর ড়াটাগুলো কেটে মুরগীর লেগপিস বানাতাম।তারপর কলার গাছের ডাল কেটে ছোট চারকোনা করে বিস্কুট বানাতাম,কুচি কুচি করে কাটলে সেগুলো হয়ে যেত চানাচুর। আবার জিলিপির মতো করে কাটলে সেগুলো হয়ে যেত জিলিপি। এগুলো আবার কাঁঠাল পাতার টাকার বিনিময়ে বিক্রি করা হত।আবার কলার ডাল কেটে দাঁড়িপাল্লা বানাতাম।হাঁড়ি পাতিল খেলার জন্য মাটিতে দাগ কেটে ঘর তৈরি করতাম।সিড়ি বেয়ে বেয়ে আবার ঘরে ঢুকতে হবে -এই নিয়ম না মানলে খেলা থেকে বাদ।🙃তো একদিন কি হল আমরা তিন বোন মিলে হাঁড়ি পাতিল খেলছি।খেলায় পানির দরকার হল।তাই আমাকে পাঠানো হল পুকুর থেকে পানি আনতে।যথারীতি আমি চলে গেলাম পুকুরের ধারে।পুকুর পাড়টি ছিল উঁচুনিচু। তাই পুকুরে নামতে গিয়ে আমি ধপ্যাস্ করে পড়ে গেলাম পুকুরে। বাকিদুজন বুঝতে পেরে দৌড়ে এসে আমাকে টেনে তুলল পুকুর থেকে। তারপর সেখান থেকে চলে গেলাম বাড়ি।বাড়িতে মা জিজ্ঞেস করলেন শরীরের এ অবস্থা কেন? আমি বললাম পুকুরে পড়ে গেছি।তারপর বাড়িতে আমাদের বিচার বসল।তিনজনই খেলাম উত্তম -মধ্যম😁। তখন থেকেই কান ধরেছি আর পুকুরে নামব না।

IMG_20230515_162749.jpgIMG_20230515_162716.jpgIMG_20230515_162626.jpg

তো কেমন লাগলো আমার শৈশবের স্মৃতি। আশা করি সবার ভাল লাগবে। এ প্রতিযোগীতার জন্য আমি তিনজন স্টিমিট বন্ধু কে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি @patjewell @ana07 @heriadi ধন্যবাদ 😊


ডিভাইজ সংক্রান্ত তথ্যঃ


ডিভাইসরেডমি ১০ সি
ক্যামরা৫০ মেগাপিক্সেল
ফটোগ্রাফার@tamannafariah
লোকেশনভবের বাজার,পার্বতীপুর

4i88GgaV8qiFU89taP2MgKXzwntUGAvkoQiKU7VxyD37q94i8e38qvF9HBknYTWLbKs3wg1cbtfZvU44CUYbBqLEEX6YDgQznQURMvBExn7FCAPjAUKLwJ1kpe.png

পোস্টটি পড়ার জন্য সকলকে অসংখ্য ধন্যবাদ
Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

আপনার পোস্ট পড়ে ভাল লাগল।ছোটবেলার স্মৃতি পোস্টে তুলে ধরেছেন তবে আপনার পোস্টে প্রথম ছবিটা আমার ছোটবেলার কথা মনে করিয়ে দিল।আমি ছোটবেলা বাঁশ পাতার নৌকা বানিয়ে পুকুরে ছেড়ে দিয়ে খেলতাম।আপনার পোস্ট কোয়ালিটি অনেক উন্নতি হয়েছে। আপনার জন্য শুভকামনা রইলো ধন্যবাদ।

ধন্যবাদ

ছোটবেলার স্মৃতি নিয়ে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহন করেছেন দেখে ভাল লাগল।বাঁশের পাতার নৌকা আমরা ছোটবেলায় বানিয়ে পানিতে ভেসে দিয়ে খেলতাম।এট ছিল আমার ছোটবেলার স্মৃতি।

ধন্যবাদ

Loading...

শৈশবের স্মৃতি নিয়ে অনেক সুন্দর উপস্থাপন করেছেন আপু। সোনালী শৈশব নিয়ে আপনি অনেক সাজিয়ে গুছিয়ে উপস্থাপন করেছেন। আইসক্রিম ছোটবেলার একটা বায়না ছিল। আপনি সেটা ফুটিয়ে তুলেছেন। অনেক ভালো লাগলো আপু অসংখ্য ধন্যবাদ।

ধন্যবাদ

ছোট্ট বেলার স্মৃতি নিয়ে আপনি অনেক সুন্দর একটি বিষয়ে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। আপনার ছোট বেলার ঘটনা গুলো সত্যিই অসাধারণ ছিল এবং আপনি অনেক সুন্দর একটি মুহূর্ত পার করেছেন। কারণটি হলো ছোটবেলায় অনেকেই অনেক ধরনের বিষয় পার করে আসে কিন্তু এগুলো কখনোই ভোলার নয় কারণ ছোটবেলার স্মৃতি সব সময় অনেক আনন্দদায়ক হয়ে থাকে। কিন্তু মাঝে মাঝে ভয়ানক হয়ে থাকে কারণ এই সময়টি হলো একেবারেই মুক্ত। আপনার ছোটবেলার ঘটনাটি অনেক সুন্দর ছিল আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল

ধন্যবাদ ভাইয়া

তখন থেকেই কান ধরেছি আর পুকুরে নামব না।

তারপর থেকে কি আর কোনদিন পুকুরে নামেননি? আপনার ছোটবেলার মজার স্মৃতিগুলো পড়ে অনেক ভালো লাগলো।এরকম সবারই কমবেশি ছোটবেলার অনেক মজার স্মৃতি আছে।যেগুলো মনে হলে এখন খুব আবেগপ্রবণ হয়ে পড়ি। অসাধারণ লিখেছেন আপু শুভকামনা রইল আপনার জন্য

ভাইয়া লুকিয়ে লুকিয়ে গিয়েছিলাম। ধন্যবাদ ভাইয়া আমার পোস্টে কমেন্ট করার জন্য।

আপনার করা শৈশবের ফটোগ্রাফির মধ্যে বাঁশের পাতা দিয়ে নৌকা বানানোর দিনটি আমার মনে পড়ে যায়। শ্যালো মেশিনের ড্রেন বাঁশের তৈরি নৌকা বানিয়ে ছেড়ে দিতাম এবং নৌকার সাথে সাথে যতদূর ধানক্ষেত হয়েছিল ততদূর চার থেকে পাঁচজন প্রতিযোগিতা করে গিয়েছিলাম। ধন্যবাদ আপু সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে উপস্থাপন করার জন্য।

ধন্যবাদ ভাইয়া আমার পোস্টে কমেন্ট করার জন্য।

Awh this is such a nice post! Thank you for the invite. You've put a big smile on my face.

You brought back so many memories of my own childhood.
Good luck with the contest.

PS: Next time when you write a post see if you cannot use shorter paragraphs as it not only reads easier but it will also make your post look neater.
Also check your post for repeating phrases.

Thank you so much.💞