ঐতিহ্যবাহী মানবসৃষ্ট দীঘি রামসাগর 🌊

in hive-131369 •  2 years ago 
স্টিম ফর ট্রেডিশন

20220205_153116-01.jpeg

প্রিয় ব্লগারবৃন্দ,

আসসালামু আলাইকুম। আশা করি সকলেই আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহর রহমতে আমিও ভালো আছি। আজ আমি আপনাদের সামনে গুরুত্বপূর্ণ একটি ঐতিহাসিক জায়গা সম্পর্কে বিবরণ দিবো। জুম্মা মোবারক দিয়ে শুরু করছি আজকের বিবেচ্য বিষয়।

20220205_153103-01.jpeg

বাংলাদেশের দিনাজপুর জেলায় অবস্থিত দেশের সবচেয়ে বড় মানব সৃষ্ট দিঘি রামসাগর। এটি ঐতিহ্যবাহী ও ঐতিহাসিক একটি নিদর্শন। দিনাজপুর জেলা শহর থেকে ৮ কিলোমিটার দক্ষিণ দিকে উক্ত দিঘিটির অবস্থান। এটি তাজপুর নামক একটি গ্রামে অবস্থিত। পুলহাট নামক একটি এলাকা পার হয়ে এই গ্রামের ভেতরে প্রবেশ করতে হয়। ১৭৫০ সালের দিকে এই দিঘিটি খনন করা হয়েছিল। সেই সময় দিনাজপুরের বিখ্যাত রাজা রামনাথ পলাশীর যুদ্ধের আগে এই মানব সৃষ্ট রামসাগর দিঘীটি খনন করেন। তখন রাজা রামনাথের নাম অনুসারে এই বিরাট দিঘিটির নামকরণ করা হয় রামসাগর দীঘি। তখনকার সময়ে দিঘিটি খনন করতে প্রায় ৩০ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছিলো। তখন প্রায় ১৫ লাখ শ্রমিক একত্রে দিঘিটি খননের কাজে নিয়োজিত ছিল। এই রামসাগর দীঘিটি নিয়ে মানুষদের মাঝে অনেক মতপার্থক্য রয়েছে। দিঘিটির গভীরতা হচ্ছে প্রায় ১০ মিটার (৩০ ফুট)। এই দিঘির পানি কখনোই শুকায় না। সেই সময়ে অতিরিক্ত খরার কারণে রাজা রামনাথ তাঁর প্রজাদের পানির প্রয়োজন মেটানোর জন্য এই সুবিশাল দীঘিটি খনন করেছিলেন। ২০০১ সালে এই রামসাগর দিঘীটিকে সামাজিক বন বিভাগের ব্যবস্থাপনায় নিয়ে এসে বাংলাদেশের জাতীয় উদ্যান হিসেবে ঘোষণা করা হয়। দিঘিটির চারপাশ অসংখ্য বড় বড় গাছপালা দিয়ে সুসজ্জিত রয়েছে। প্রতিবছরে দেশি-বিদেশি প্রায় পঞ্চাশ হাজারেরও বেশি পর্যটক রামসাগরের প্রাকৃতিক অপূর্ব সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসেন। এটি একটি দর্শনীয় পিকনিক স্পট। দিঘিটির একপাশে একটি মসজিদ ও অন্য আরেক পাশে একটি মন্দির রয়েছে। বর্তমানে এটি বাংলাদেশের একটি অন্যতম দর্শনীয় স্থানে পরিণত হয়েছে।

20220205_153432-01.jpeg

রামসাগরের ভেতরে দর্শনার্থীদের থাকার জন্য একটি রেস্ট হাউজ রয়েছে। তার পাশেই রয়েছে একটি ছোট চিড়িয়াখানা। এই চিড়িয়াখানায় অনেক পশুপাখি রয়েছে। এদের মধ্যে হরিন, অজগর সাপ, খড়গোশ ও কিছু বিলুপ্তপ্রায় সুদর্শন পাখি অন্যতম।

20220205_154752-01.jpeg

20220205_154916-01.jpeg

কোনো এক সাপ্তাহিক ছুটির দিনে আমি ও আমার কলেজের কয়েকজন বন্ধু মিলে রামসাগর দিঘী ঘুরতে যাই। সেখানকার অসাধারণ প্রাকৃতিক দৃশ্য আমাদের সবাইকে অনেক মুগ্ধ করে। সেদিন ছিলো রামসাগরে যাওয়ার আমার ২য় অভিজ্ঞতা। দিনটি আমার অনেক ভালো কেটেছে। বিশেষ করে এই বিশাল আকৃতির দিঘিটি দেখে আমাদের মন ছুঁয়ে যায়। আর সেখানকার বড় বড় গাছপালা আমাদের নজর কাড়ে। দিনটি আমাদের জন্য একটি স্মরণীয় দিন হয়ে থাকবে।

CYMERA_20220206_220923-01.jpeg

20220205_153231.jpg

এই ছিলো আমার রামসাগর যাওয়ার সবশেষ অভিজ্ঞতা। আজকে তাহলে এই পর্যন্তই। সকলে ভালো থাকবেন এই কামনা করি। আমার ভুলগুলো ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। আবারো দেখা হবে নতুন কোন পোস্টে, নতুন কোনো টপিক্স নিয়ে। আল্লাহ হাফেজ। আসসালামু আলাইকুম।

ধন্যবাদান্তে,
tawhid4159

মোবাইলের নাম
মডেল
Samsung GalaxyA30s
ক্যামেরা 📷 26
ফটোগ্রাফার@tawhid4159

Black & White Minimalist Business Logo.png


You can also vote for @bangla.witness witnesses

3zpz8WQe4SNGWd7TzozjPgq3rggennavDx3XPY35pEAVnpvDGTmz6yM4BdeUwpQ8vMxtR3sQse9kG46R2Lk4NBaGfzPmL5tiA85DdFd7TDvbMGaNMAY2RBgSWfNp5kM1Qjr3515gWKvjxzADBcu4.png
Vote for @bangla.witness


Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

ইতিহাসে মানবসৃষ্ট সবথেকে বড় পুকুর হলো রামসাগর। প্রাচীনকালে মানুষ খনন করেছিল। এমন আর কোথাও দেখা যায়নি যে এত বড় পুকুর মানুষ নিজের হাতে খুন করেছিল।রামসাগর দেখতে অনেক সুন্দর মাছ ধরার জন্য অনেক ভালো। আপনি অনেক সুন্দর লিখেছেন এবং সুন্দরভাবে ছবিগুলো তুলেছেন আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

ধন্যবাদ

রামসাগর দীঘি দেখতে একবার ছুটে গিয়েছিলাম। অনেক সুন্দর মানুষের তৈরি এই দীঘি।আপনি রামসাগর দীঘি সম্পর্কে অনেক জানা অজানা তথ্য আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন। অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই রামসাগর দীঘি নিয়ে এত সুন্দর তথ্য আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য। রামসাগর দিঘির পাশে চিড়িয়াখানাটা আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছিল, অনেক দর্শনার্থীরা দীঘির পাশাপাশি চিড়িয়াখানাও দেখে আসতে পারে। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে

ধন্যবাদ ভাই

ঐতিহ্যবাহী রামসাগর একটি আনন্দ বিনো দনের স্থান। সবথেকে বড় পুকুর হলো রাম সাগর। এই সাগরে মত এতো বড় সাগর আর কোথাও নেই। আমি এখানো রামসাগর সম্পর্কে বেশি কিছু জানিনা। আপনার এই পোস্টের মাধ্যমে খুব ভালোভাবে জানতে পারলাম আমি।আপনার ফটোগ্রাফি সুন্দর হয়েছে। ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর একটি উপস্থাপন করার জন্য।

ধন্যবাদ ভাই 🥰

Loading...

রামসাগর দিঘি নিয়ে অসাধারণ লেখছেন আপনি, আমার বাসা থেকে প্রায় এই ঐতিহাসিক স্থানে ঘুরতে যায়, আমি আমার জীবনে একবার গেছিলাম জায়গাটা বেশ অনেক সুন্দর, তবে আমি ঐ সময় কিছু দেখতে পাই নাই, আপনার পোস্টের মাধ্যমে আমি অনেক কিছু দেখতে পেলাম, আমরা এবার কয়জন বন্ধু মিলে যাওয়ার জন্য কথা বলছি,রামসাগর দিঘি টাও অনেক বড় এই দিঘি দেখলে অনেকের মন ভালো হয়ে যায়, আর এই ঐতিহাসিক স্থান রামসাগর দিঘি দেখার জন্য অনেক মানুষ আসে। আপনি অনেক সুন্দর লেখছেন ভাই ছবি গুলো অসাধারণ হয়েছে আপনাকে অসংখ্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই সুন্দর একটা পোস্ট উপস্থাপন করেছেন।

অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া

রামসাগর নিয়ে অনেক সুন্দর একটি পোস্ট করেছেন। এই রামসাগর দিনাজপুর জেলায় অবস্থিত। আমিও আজ থেকে কয়েক মাস আগে এই ভ্রমন স্থানে ঘুরতে গেছিলাম। সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের কাছে সেয়ার করেছেন। সুন্দর একটি পোস্ট উপস্থাপন করার জন্য ধন্যবাদ ভাই।

ধন্যবাদ ভাই

দিনাজপুরের এক ঐতিহ্যবাহী স্থান হল রামসাগর।রামসাগর আমি প্রায় চার থেকে পাঁচবার গিয়েছিলাম বন্ধুদের সঙ্গে।এখানকার একটি ছোট চিড়িয়াখানা রয়েছে। চিড়িয়াখানাতে বিভিন্ন রকম পশুপাখি রয়েছে। আপনি রামসাগরে গিয়ে খুব সুন্দর সময় কাটিয়েছেন আপনার পোস্টটি পড়ে বুঝতে পারলাম। ধন্যবাদ ভাই এত সুন্দর একটি পোস্ট করার জন্য।

অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া

দিনাজপুর শহরের ঐতিহ্যবাহী বা ঐতিহাসিক নিদর্শন হলো রামসাগর। রামসাগর দিনাজপুর শহর ৮ কিলোমিটার দূরেই এর অবস্থান। রামসাগরটি খনন কাজ করতে অনেক শ্রমিকের প্রয়োজন হয়েছে প্রায় ১৫ লক্ষ। যাই হোক রামসাগরের পরিবেশ অনেক সুন্দর ও মনোরম। রামসাগরে অনেক পর্যটন আসেন ঘুরতে দুরদুরান্ত থেকে। রামসাগরে আমি ৩ বার গেছিলাম পিকনিক। আমার কাছে বেশ ভালই লেগেছে। রামসাগর নিয়ে বেশ সুন্দর একটি পোস্ট উপস্থাপন করেছেন ভাই। শুভকামনা রইল।

অনেক ধন্যবাদ আপু

বাংলাদেশের ঐতিহাসিক ও প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন সমূহের মধ্যে রামসাগর অন্যতম।প্রাকৃতিক সৌন্দর্য জন্য প্রতি বছর অসংখ্য দর্শনার্থীরা এই দিনাজপুরের রামসাগরে এসে ভিড় জমায়। আমি আর আমার বন্ধুরা মিলে গত বছরেই রামসাগরে ঘুরতে গেছিলাম ও সবাই মিলে একসাথে অনেক মজা করেছিলাম। রামসাগর নিয়ে অসম্ভব সুন্দর একটি পোস্ট আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করছেন। ধন্যবাদ ভাইয়া

আপনাকেও ধন্যবাদ আপু

আমি আগে রাম সাগর অনেকবার গিয়েছি। রামসাগর দীঘির চেয়ে এর চারপাশের মনোরম পরিবেশ আমার কাছে বেশি ভালো লেগেছে। এখন অবশ্য এই দিঘীকে কেন্দ্র করে ছোট পার্ক এবং চিড়িয়াখানা তৈরি করা হয়েছে। বর্তমানে রামসাগর দিনাজপুর শহরের একটি প্রধান পর্যটক কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। ধন্যবাদ আপনাকে।

ধন্যবাদ আপু 🖤