হ্যালো স্টিমমিনারস,
আসসালামু আলাইকুম, সবাইকে রমজানের শুভেচ্ছা, আমি আলাউদ্দিন পাবেল স্ট্রিম বাংলাদেশ কমিউনিটিতে আজকের কনটেস্টে অংশগ্রহণ করছি।
আমি আজকে আপনাদের সামনে আমার কিছু ছোটবেলার স্মৃতি উপস্থাপন করবো।
আমি ও আমার ছোট বোন
আমার ছোটবেলার কিছু হাস্যকর মুহূর্ত:
১. প্রথমেই বলে নেই আমার ছোটবেলার শৈশব কেটেছে চট্টগ্রাম শহরের পোর্ট কলোনী এলাকাতে।
আমি ছোটবেলায় খুব একটা দুষ্টু ছিলাম না তবে আমার কিছু দুষ্টু বন্ধু ছিল তাদের সাথে থেকে আমি অনেক কিছুই করেছি যা আমি আপনাদের সামনে আজকে তুলে ধরব।
আমি যে স্কুলে পড়াশোনা করতাম সেই স্কুলে অনেকগুলো নারিকেল গাছ ছিল। আমি আবার নারকেল গাছে উঠতে পারতাম, ধরতে গেলে সব গাছে উঠতে পারতাম। একদিন আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে ওই স্কুলের দারোয়ানকে বললাম যে আঙ্কেল আমরা কিছু ডাব খেতে চাই। কিন্তু উনি আমাদেরকে স্কুলের প্রধান শিক্ষকের ভয় দেখিয়ে তাড়িয়ে দিলেন। ওই দিন রাতেই আমরা রেগে গিয়ে সবাই সিদ্ধান্ত নিলাম একটা কাছেও একটা ডাব নারিকেল থাকবে না। যে কথা সেই কাজ আমি এবং আমার বন্ধুরা মিলে রাতে আনুমানিক প্রায় তিনটা সময় আমরা একত্র হয়ে চুরি করার জন্য স্কুলের বাউন্ডারি পার হলাম। আমি এবং আমার বন্ধুদের মধ্যে শুধুমাত্র আমি গাছে উঠতে পারতাম তাই আমি রাত তিনটার সময় আমি একটা রশি নিয়ে গাছে উঠে গেলাম এভাবে প্রায় তিন চারটা গাছের যতগুলো ডাবছিল রশ্মির মাধ্যমে সবগুলো ডাব চুরি করে নিয়ে আসলাম। এবং পরে দিন সবগুলো ডাব সবাই মিলে ভাগ করে নিয়ে গেলাম।
এবং পরের দিন দারোয়ান আঙ্কেল দেখল যে একটা গাছের ডাব নেই তখন সে চিল্লাচিল্লি শুরু করল এবং আমাদেরকে সন্দেহ করল কিন্তু সেরকম কোনো প্রমাণ পেল না।
২. এরকম আরো একটি ঘটনা আপনাদের সামনে তুলে ধরছি:
আমি তখন ক্লাস এইটে পড়তাম রমজান মাস ছিল এবং শীতকাল ছিল। শীতকালে আমরা ব্যাডমিন্টন খেলতাম তখন আমি চট্টগ্রামে ছিলাম। চট্টগ্রামে আমার কিছু বন্ধুদের সাথে নিয়ে ব্যাডমিন্টন খেলতাম। আমার বন্ধুদের মধ্যে দুইজন হুজুর ছিল। তারা আমরা যে কলোনিতে থাকতাম তার ঠিক পাশের একটা কলোনীতে থাকতো সেই কলোনি নাম হচ্ছে ইস্ট কলোনি আর আমি থাকতাম পোর্ট কলোনীতে। আমরা ব্যাডমিন্টন খেলতে যেতাম ইস্ট কলোনিতে আমার দুই হুজুর বন্ধু ওইখানে সেখানে অনেক বড় মাঠ ছিল। খেলতে খেলতে প্রায় সময় আমি আমার ওই দুই বন্ধুর কাছ থেকে যেতাম রাতে। একদিন আমার এক হুজুর বন্ধু বলল সেই যে বিল্ডিংয়ের থাকে সে বিল্ডিং এর মালিক এর অনেক গুলো কাঠাল গাছ ছিল এবং কাঁঠাল ও ধরতো অনেক। আমার সে হুজুর বন্ধুর বাড়ির মালিকের কাছে কাঁঠাল চেয়েছিল কিন্তু তাকে নাকি দেয় নাই সেই রাগে সে আমাকে বলল যে আমরা তার গাছের সবগুলো কাঁঠাল চুরি করবো। যদিও আমার এত সাহস ছিলনা সেজন্য আমি তাকে এই কাজটি করার জন্য নিষেধ করেছিলাম। সে আমাকে বলল তার অর্ধেক কাঁঠাল আমাকে দিবে। এবং তারপর আমিও রাজি হয়ে ওই দিন রাতেই কাঁঠাল চুরি করতে নেমে পড়লাম ঐদিন রাতে ঐ কলোনিতে পাহারাদার ছিল বেশি যার কারণে আমরা ঐদিন সাকসেস হতে পারি নাই তাই আমরা পরের দিন রাতে আবার কাঁঠাল চুরি করার জন্য নেমে পড়লাম এবং সেইরাতে সবগুলো কাঁঠাল বস্তা ভরে চুরি করে নিয়ে আসলাম। সত্যিকার অর্থে এসব ঘটনা ভোলার নয় তাই ভুলতেও পারিনা।
আমার শৈশবের ভীতিকর স্মৃতি ঘটনা আপনাদের সামনে উপস্থাপন করব:
আমার ছবি
আমি যখন সপ্তম শ্রেণীতে পড়ি তখন কার ঘটনা। তখন প্রচুর কারেন্টের লোডশেডিং হত রাতে গরমের সময়ে বাসায় বসে পড়া যেতোনা লোডশেডিংয়ের কারণে আমরা সে সময়টা পড়ালেখা না করে বাইরে বের হয়ে যেতাম খেলাধুলা করার জন্য। প্রায় সময় আমরা এরকম খেলে থাকি কিন্তু হঠাৎ একদিন আমরা চোর পুলিশ খেলতে ছিলাম আমার বেশ কয়েকজন বন্ধুদেরকে নিয়ে তখন রাত নয়টা বেজে ছিল। আমরা দুই গ্রুপে ভাগ হয়ে গিয়েছিলাম। আমি ছিলাম চোর গ্রুপে। নিয়ম অনুযায়ী পুলিশ চোরকে খুঁজে বের করবে। আমি এবং আমার কয়েকজন বন্ধু মিলে আমরা চোর গ্রুপে এবং আমরা লুকিয়ে যাই। আমাদের এখানে একটা বস্তি ছিল। বস্তির সামনে ছোটখাটো একটা জঙ্গল ছিল অনেকগুলো কলমি গাছ ছিল। সেই কলমি গাছের ভিতর আমি এবং আমার বন্ধু ফারুক আমরা দুজনে লুকিয়ে পড়ি তখনও কারেন্ট ছিল না। অনেকক্ষণ লুকিয়ে বসে থাকার পর আমি আমার বন্ধু ফারুক কে পিছনের দিকে তাকিয়ে বললাম যে চল আমরা বেরিয়ে যাই ওরা মনে হয় আমাদেরকে খুঁজে না। ঠিক তখন আমি যা দেখলাম আমি সেটা কখনো কল্পনাও করতে পারি না। আমার গা শিউরে ওঠে। আমি দেখলাম পুরো সাদা আলো একটা বুড়ো মানুষের ছবি জ্বলজ্বল করছে আমার বন্ধু ফারুক এর পিছনে এবং আমাদেরকে ধরার জন্য এগিয়ে আসছে তখন আমি ভয়ে চিৎকার দিয়ে তাকে নিয়ে দৌড়ে পালিয়ে গেলাম। সে রাত থেকে আমি দুইদিন এই ভয়ের আতঙ্কে অসুস্থ ছিলাম। বলতে গেলে আরো অনেক ঘটনা আছে আমার জীবনে আসলে মূলত আমার বন্ধু ফারুকের সাথে কিছু একটা ছিল বিশেষ করে ওর পরিবারের সাথে কিছু একটা থাকত সবসময় তার কারণ হচ্ছে ওদের সব সময় একটু আনকমন দেখাতো অন্যরকম থাকতো সবার থেকে আলাদা থাকতো।
ছুটির দিনের কিছু স্মৃতি আপনাদের সামনে উপস্থাপন করব:
আমি তখন অষ্টম শ্রেণীতে পড়ি গ্রীস্মের ছুটিতে আমাদের স্কুল বন্ধ হয়ে গেল তখন আমাদের স্কুলের বেশ কয়েকজন বন্ধু মিলে আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম আমরা কোথাও ঘুরতে যাব এক পর্যায়ে সিদ্ধান্ত হলো চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড এলাকায় নতুন একটা পার্ক উদ্বোধন করা হয়েছিল এটা উদ্বোধন করেছিলেন আমাদের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পার্কটির নাম ছিল ইকোপার্ক। আমরা সবাই সবার প্রস্তুতি নিয়ে পরের দিন ইকোপার্ক এর উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম । আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম আমরা তো সবসময়ই বাসে টেম্পুতে রিকশা চলাফেরা করি আজকে আমরা যদি ট্রাকে করে যাই তবে কেমন হয় সবাই উৎফুল্ল হয়ে বলল তাহলে তো ভালই হয়। আমরা ট্রাকে করেই যাবার সিদ্ধান্ত নেই এবং রাস্তায় এসে একটা ট্রাক থামিয়ে আমরা ট্রাকে করে ইকো পার্কের উদ্দেশ্যে রওনা হলাম। প্রায় এক ঘণ্টা পর আমরা সেখানে পৌঁছে গেলাম এবং আমরা সেখানে খুব ইনজ্য় করলাম। আমরা সাথে একটা রিল ভরে ক্যামেরা নিয়ে গিয়েছিলাম ছবি তোলার জন্য এবং সেখানে আমরা অনেক রকম করে ছবি তুললাম ঝরনা ছিলো খুব সুন্দর সুন্দর ছবি তুললাম ঝরনায় গোসল করলাম আরো কত কি করলাম। তারপর আমরা সেখান থেকে ফিরে বিকেল বেলায় আমাদের ছবিগুলো কেমন হয়েছে সেটা দেখার জন্য রিল ডেভলপ করতে দিলাম । দুঃখের বিষয় হল এই যে আমাদের রিলটি ক্যামেরায় ঠিকমতো স্থাপন করা হয় নাই যার কারণে আমরা কোন ছবি স্মরণীয় করে রাখতে পারলাম না। তবে আমরা অনেক ইনজয় করেছিলাম সেটা আমাদের স্মৃতিতে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
স্কুল লাইফের প্রথম দিনের একটি স্মরণীয় ঘটনা:
আমি ও আমার ভাই বোন
আমি প্রথমে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত গ্রামের একটি স্কুলে পড়ালেখা করেছিলাম সেখান থেকে আমার বাবা চট্টগ্রাম পোর্ট এ চাকরি করার সুবিধার্থে আমরা চট্টগ্রামে যাই সেখানে আমি চতুর্থ শ্রেণীতে ভর্তি হই। আমার স্কুলের নাম ছিল বাংলাদেশ রেলওয়ে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় এটি চট্টগ্রামে অবস্থিত। আমি যখন প্রথম দিন স্কুলে যাই একপর্যায়ে আমি কাউকে চিনতাম না একটা ছেলে নাম ছিল আসাদ সে খুব দুষ্ট ছিল শুধু শুধু আমার সাথে লাগতেছিল আমাকে ধাক্কা দিচ্ছিল আমাকে চিমটি মারছিল। আমি আবার খুব সহজে রাগ হইনা কিন্তু সেদিন আমার খুব রাগ হয়েছিল এবং আমরা দুজনে একজন একজনকে অনেক আঘাত করি, চিমটি দিয়ে দুজন দুজনকে রক্ত বের করে দেই, সেদিন ছিল বর্ষাকাল মাটিতে অনেক কাদা ছিল। কাদায় দুজনে অনেক গড়াগড়ি করি। এক পর্যায়ে স্কুলের এক সিনিয়র ভাই এসে আমাদের কে ছাড়িয়ে নেয় এবং সেইদিন আর আমার স্কুলে ক্লাস করা হয়নি এবং বাসায় গিয়েও অনেক বকা খেতে হয়েছে।
আমার শৈশবের খারাপ স্মৃতি:
আমি যখন ষষ্ঠ শ্রেণীতে পড়ি তখন আমার ছোট মামা আমাদের বাসায় বেড়াতে এসেছিলেন। মামা এসেছিলেন মূলত বান্দরবানে তার মামার বাসায় যাওয়ার জন্য তার মামা আর আমার নানা তিনি ছিলেন পুলিশের একজন এসপি তখন তিনি বান্দরবানের ট্রানস্ফার ছিলেন সেখানে যাওয়ার জন্য ছোটমামা তার সাথে করে আমাকে নিয়ে গেলেন। সেখানে গিয়ে আমি প্রথমে অনেক আনন্দ পেয়েছি কারণ তখনকার লাইফে আমার এটাই ছিল প্রথম কোন একটা জার্নি। কিন্তু দুঃখের বিষয় হল আমার শরীরের এবং কপালে খোস পাঁচড়া ছিল। এতদুর জার্নি করে যখন ওই নানার বাসায় গিয়ে পৌছালাম তখন প্রায় রাত হয়ে গিয়েছিল রাত্রে খাবারের সময় আমরা সবাই একসাথে খেতে বসেছিলাম নানা-নানি এবং আংটি সহ হঠাৎ করে নানী আমার কপালের খোস পাঁচড়া টি দেখে ফেলে এবং বলে ওকে আলাদা করে খেতে দাও আমার সাথে খেলে নাকি তাদের সবারই খোঁস পাঁচড়া হবে। তখন আমার খুব খুব মন খারাপ হয়েছিল এবং আমার মনে হয়েছিল আমি তখনই বান্দরবান থেকে চট্টগ্রামে আমাদের বাসায় চলে আসি কিন্তু আমি তখন ছোট হওয়ার কারণে তা আর করতে পারলাম না। সবচেয়ে বড় ব্যাপার হচ্ছে আমি এই ঘটনাটি আমার ষষ্ঠ শ্রেণির পরীক্ষার রচনা (স্মরণীয় ঘটনা) লিখেছিলাম এবং সে রচনায় আমার মনে আছে আমি ২০ মার্ক এর মধ্যে 13 মার্ক পেয়েছিলাম।
আমি ও আমার বন্ধু
আমার পোস্টটি পড়ার জন্য সকলকে ধন্যবাদ।
Cc:
@steem-bangladesh
শৈশবের মুহুর্তগুলোই সবচেয়ে আনন্দের। খারাপ স্মৃতি গুলোই ভাল কিছু করার অনুপ্রেরণা যোগায় তাই আপনি হয়তো রচনাটিতে ভালো করতে পেরেছিলেন।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
অনেক আনন্দের ছিল আপনার শৈশবকাল
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit