জাতের নামঃ আমন
জাতের বৈশিষ্টঃ
o বিনাধান-12 বন্যা সহিষ্ণু স্বল্পমেয়াদী ও অধিক ফলনশীল আমন ধানের জাত।
o জীবনকাল 123-129 দিন।
o এ জাতটি 23 দিন পযর্ন্ত পানিতে সম্পূর্ন নিমজ্জিত অবস্থায় বেঁচে থাকতে পারে,দেশের আকস্মিক বন্যাপ্রবণ ও বন্যামুক্ত উভয় এলাকাতেই আমন মৌসুমে বন্যা সহিষ্ণু জাত চাষাবাদের উপযোগী।
জমি ও মাটিঃ দেশের বন্যাপ্রবণ ও বন্যামুক্ত উভয় এলাকাতেই আমন মৌসুমে এ জাতটি চাষের উপযোগী। তবে বন্যামুক্ত এলাকায় ফলন বেশি পাওয়া যায়, বেলে দো-আঁশ এবং এটেল দো,আঁশ জমি এ জাতটি চাষের উপযোগী।
জমি তৈরীঃ জাতটির চাষাবাদ পদ্ধতি অন্যান্য উফশী রোপা আমন জাতের মতই।
বপণের সময়ঃ জুন মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ হতে জুলাই মাসের ২য় সপ্তাহের (১-৩০ আষাঢ়) মধ্যে বীজ তলায় বীজ বপনের উপযুক্ত সময়।
বীজ হারঃ প্রতি হেক্টর জমি চাষের জন্য 23-29 কেজি বা এক একর জমির জন্য ১০-১২ কেজি বীজ প্রয়োজন হয়।
বীজ শোধনঃ উপযুক্ত ফলন নিশ্চিত করতে হলে পুষ্ট ও রোগবালাই মুক্ত বীজ ব্যবহার করতে হবে। প্রতি ১০ কেজি বীজ শোধনের জন্য 23 গ্রাম প্রোভ্যাক্স ব্যবহার করলে ভাল হয়।
সার ও প্রয়োগ পদ্ধতিঃ সারের মাত্রা (মূল জমি): হেক্টর প্রতি 143-175 কেজি ইউরিয়া, 111-133 কেজি টিএসপি এবং50-70 কেজি এমওপি। আকস্মিক বন্যায় ধানের জমি ডুবে গেলে সারের মাত্রা ও প্রয়োগ পদ্ধতি ভিন্নতর হবে। সেক্ষেত্রে জমি তৈরীর সময় নিম্নোক্ত পরিমান সার প্রয়োগ করতে হবে :
একর প্রতি 53-57 কেজি টিএসপি, 11-13 কেজি এমওপি, 7-11 কেজি জিপসাম এবং 4'6-5,6 কেজি দস্তা। যদি ধান গাছের প্রাথমিক বৃদ্ধি পর্যায়ে বন্যা হয়, তাহলে বন্যার পানি নেমে যাওয়ার 10 দিন পরে প্রথম কিস্তিতে হেক্টর প্রতি 45কেজি (একরে 17 কেজি) ইউরিয়া সার এবং হেক্টর প্রতি 23 কেজি (একরে 9 কেজি) এমওপি সার প্রয়োগ করতে হবে। প্রথম কিস্তির 20-25 দিন পর হেক্টর প্রতি 45 কেজি (একরে 18 কেজি) ইউরিয়া সার দ্বিতীয়বার উপরি প্রয়োগ করতে হবে। তবে জমির উর্বরতা অনুযায়ী ইউরিয়া সারের মাত্রা কম-বেশি হতে পারে।
সেচ ও নিষ্কাশনঃ সেচের খুব একটা প্রয়োজন হয়না তবে প্রয়োজন হলে সেচ দিতে হবে। ধান পাকার ১০-১২ দিন আগে জমির পানি শুকিয়ে ফেলা ভাল।
আগাছা দমন ও মালচিং: চারা রোপনের পর আগাছা দেখা দিলে নিড়ানী বা হাতের সাহায্যে আগাছা পরিষ্কার এবং মাটি নরম করতে হবে।
বালাইব্যবস্থাপনাঃ এ জাতগুলোর রোগ বালাই ও পোকামাকড়ের আক্রমণ কম হয়। তবে প্রয়োজনে বালাইনাশক প্রয়োগ করা উচিত। এ জাতটি মাজরা পোকার প্রতি মধ্যম প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন। মাজরা পোকার আক্রমন হলে দানাদার কীটনাশক (মার্শাল 6 জি/কুরটার 6 জি) জমিতে স্প্রে করা যেতে পারে । খোল ঝলসানো বা সিথব্লাইট রোগ দেখা গেলে ফলিকুর (টেবুকোনাজল) বা স্কোর (ডাইফেনোকোনাজল) একর প্রতি 200 মিলি হারে 200 লিটার পানিতে মিশিয়ে থোর আসার সময় বা তার পরপরই স্প্রে করা যেতে পারে। এছাড়া ব্লাষ্ট রোগ দমনের জন্য ট্রুপার একর প্রতি 160 মিলি হারে 300 লিটার পানিতে স্প্রে করা যেতে পারে। পোকামাকড় দমনের জন্য আইপিএম পদ্ধতিই সবচেয়ে ভাল ।
হেক্টর প্রতি ফলনঃ জলমগ্ন অবস্থায় ফলন 3,9 টন/ হেক্টর এবং বন্যামুক্ত জমিতে ফলন 4.5-5.0 টন/হেক্টর।
লোগোটি ভালো লাগছে তাই দিলাম নিজের তৈরি