স্বাগতম, লেখক ও পাঠকবৃৃন্দ। আজ আমি আপনাদের কাছে ভিন্নধর্মী লেখা নিয়ে হাজির হয়েছি। এ লেখায় তুলে ধরবো ছেলেবেলা আর শৈশবের দিনগুলোর কথা।
Source
ছোটবেলায় অনেকেই নানা উপন্যাস আর শিশুতোষ গল্পগ্রন্থ পড়ে দিন পার করেছি অামরা। কখনো রূপকথা তো ভ্রমণকাহিনী, কখনো ছড়ার বই তো রাক্ষস খোক্ষসের গল্পের বই হাতে নিয়ে মেতে ছিলাম সারাবেলা।
যারা শিশু বয়সে আমাদের মতো গোল্লাছুটের দিনগুলো দেখেছেন, বৃষ্টির দিনে আম কুড়োনির হিড়িকে গা ভাসিয়েছেন, শীতের সকালে রসের হঁাড়ির প্রাতরাশে প্রীত ছিলেন তারাই বুঝতে পারবেন আমি ঠিক কি বলতে চাচ্ছি। গ্রামীণ আবহে বেড়ে ওঠা মনগুলো অনুভব করতে পারবেন ছেলেবেলার সে অনুভূতি।
এখনকার দিনের ভিডিও গেমস আর অনলাইন যুগের ছেলেপুলেরা দিনগুলোর মর্ম বুঝবে না। শুধু শুনেই যাবে।
Source
নানান রঙের দিনগুলো শৈশবেই কেটে যায় প্রায় সবার। যখন মন থাকে সদা প্রফুল্ল, হাস্যোজ্জল কোলাহলে বিমোহিত, জীবনের ছোট সীমানায় দারুণ রোমাঞ্চকর অনুভূতি শুধু সেই ছেলেবেলা থেকেই অনুভব করা যায়। আর যদি দিনগুলো হয় সেই গ্রামীণ প্রকৃতি ঘেষা, অনাবিল আনন্দের ঘুরে বেড়ানোর ফাগুন হাওয়ার স্পর্শে বেমলিন তবে, যোগ হয় এক নতুন মাত্রা, স্মৃতিকাতরতার আর সোনালী অতীতের ঝিলিক ওঠা মুহূর্ত মনে পড়ে যায়, সে কথা মনে পড়ে যায়। 🙂
Source
আমার ছেলেবেলা কেমন ছিল তা বলার অপেক্ষা রাখেনা কোনে অংশে যে তার স্বপ্ন নির্বাণ কতটুকু প্রকৃতিঘেষা ছিল। আমি মূলত গ্রামের পরিবেশেই বেড়ে উঠেছি৷ প্রাইমারি বিদ্যালয়ের গন্ডি পেরোনোর আগ মূহুর্তই ছিল মনের রূপালী ফ্রেমে বঁাধা। ছোটবেলার খুনসুটি আর লাগামগীন দুরন্তপনা ছিল অঢেল। দুষ্টুমির কোনো অংশই বাদ রাখিনি ছোটবেলার। স্কুল টাইমে পড়ায় মনোযোগ দিয়ে, টিফিন পিরিয়ডে ঘুরে বেড়াতাম দিগ- বিদিক৷ কখনো ঢিল ছুঁড়ে আম চুরি, তো অন্য গাছের ফলপাকুরের অনুসন্ধান করা, দুপুরের ভাতঘুমে যখন সবাই বিশ্রাম রত তখন টুপ করে বাড়ি থেকে বের হয়ে কখনো সাঙ্গপাঙ্গের বাড়ি গিয়ে হিসফিস করে তলব করা,তারপর পাড়া ঘুরে বেড়ানো, মৌসুমি ফল পেড়ে নিয়ে একসাথে গ্রামের পুকুর পাড়ে লবন -মরিচ দিয়ে টক মিস্টি ফল উদরসাত করা, এ কাজগুলো ছিল অহর্নিশি অবশ্য কর্তব্য 😊
Source
কার গাছের আম পেকেছে, কার গাছের জামে রং ধরেছে, কার বাগানে কঁাঠাল আছে, লিচু গাছের বাদুর তাড়ানো ছিল আমাদের ডেইলি ওয়ার্ক। এ কাজগুলো ভাগ করে করতাম ছোটখাটো একটা টিম বানিয়ে 😃
Source
সকালবেলায় মক্তবের পাঠ চুকিয়ে, স্কুলে গিয়ে, দুপুরে বাড়ি ফিরতাম। তখন তপ্ত গরমে গামছা, টাওয়েল নিয়ে পুকুরের পানিতে সঁাতার কাটতাম। আমাদের গাঁয়ের পাশ দিয়ে বয়ে যেত রূপশা নদী। রূপশা নদীর রূপসাগরের ডুব দেওয়ার অনুভূতি কেমন এটা লিখে প্রকাশ করা যাবে না। সে কি মনরূপ নদী!! এ নদীর সুরের বয়ে যাওয়ার মধ্যে অপরুপ মূর্ছনা, ক্ষনিকের মধ্যে মন ভালো করে দেয়।
ছোটবেলার সব স্মৃতি মনে দাগ কাটে না। কিছু মুহূর্ত মনের অলিগলিতে রয়ে যায় চিরকাল। শৈশব পেরোনোর আগেই সবার স্মৃতিপট রচনা হয়ে যায়। কেউ হয়তো অনেক দিনের আগের কথা রোমন্থন করে, ভেসে ওঠে মনের কথা।
Source
আজ, এ পর্যন্তই। যে গল্প লিখতে চলেছি, সে গল্পের পরিধি কিছুটা সুদূরপ্রসারী। ধারাবাহিকভাবে লিখব আশা করি।
ভালো থাকবেন এ প্রত্যাশা করি।