HELLO
MY DEAR FRIENDS
This is @mahmudul20 from Rangpur Bangladesh
আসসালামু আলাইকুম
পিতা মাতার পর-ই যার অবস্থান, তিনি হচ্ছেন আমাদের শিক্ষক।পিতা-মাতা জন্ম দেন,কষ্ট করে লালন পালন করেন কিন্তু মানুষের মতো মানুষ গড়ে তোলেন একজন শিক্ষক।ছোট বেলা থেকে শুরু করে স্কুল জীবন শেষ হওয়া পর্যন্ত আমাদের জীবনে অনেক শিক্ষকের আর্বিভাব ঘটে।কিন্তু এমন কিছু শিক্ষক আমাদের জীবনে আসে যাকে জীবনেও ভুলে যাওয়া যায় না।
আজকে আমি কথা বলবো আমার প্রিও শিক্ষক সম্পর্কে।
আমার প্রিয় শিক্ষকের নাম গৌতম বসু।যিনি একজন বাংলা বিষয়ে খুবই ভালো অভিজ্ঞতা সম্পূর্ণ একজন শিক্ষক। আমি যখন তারাগন্জের একটি প্রাইভেট স্কুলে পড়তাম তখন তিনি আমাদের হঠাৎ করেই ক্লাস নেওয়া শুরু করে দেয়।মূলত তিনি নবম দশম শ্রেণির ক্লাস নেন।কিন্তু তিনি আমাদের অষ্টম শ্রেণির ক্লাস নেওয়া শুরু করে। তিনি ছিল প্রচন্ড রাগি,আবার খুবে ভালো মিশুক টাইপের। আসলে এক কথায় বলতে গেলে স্যারের ভিতরে যে শুধু রাগ রয়েছে তা নয়,স্যারের ভিতরে রয়েছে সব কিছুই সমান।
বসু স্যার কে আমার প্রথমে ভালো লাগতো না। একদিন তিনি বাংলা ব্যাকরণ ক্লাস নিচ্ছিলেন।আর বাংলা ব্যাকরণ ছিল আমার খুবই একটা বিরক্তিকর সাবজেক্ট। কিন্তু প্রথম দিন থেকেই স্যার এতো সুন্দর ভাবে বুঝানো শুরু করেছে, তারপর শুধু ব্যাকরণ পড়তেই ইচ্ছে করে।আমার বিরক্তিকর সাবজেক্ট টি এখন আমার একটি প্রিয় সাবজেক্ট। এটি সম্ভব হয়েছে শুধু স্যারের জন্য। স্যারের সহজ, সুন্দর ও সাবলীল ভাবে বুঝার ধরন আমার নজর কেড়েছিল।সেই সাথে আমার সব সময় মনে হতো বসু স্যার যেন সারাদিন ক্লাস নেয়।এভাবে ভালোই কাটছিল কিন্তু তিনি একদিন হঠাৎ আমাদের কাছ থেকে বিদায় নেন।কারণ স্যার দিনাজপুর সেইন্ট ফিলিপ্স হাইস্কুল এন্ড কলেজে শিক্ষকতার সুযোগ পান।তারপর আমি সহ অনেক শিক্ষার্থী ব্যাপক ভাবে ভেঙে পরেছিলাম।
স্যার যতোক্ষণ আমাদের ক্লাস নিত ঠিক ততোক্ষণ আবার বিভিন্ন মনীষী দের বাণী বলতো, এবং সেই সাথে আমাদের কে অনুপ্রেরণা দিত।যার মাধ্যমে অনেক অনিয়মিত ছাত্র, ভালো হয়ে গিয়েছিল।
স্যারের সবথেকে যে জিনিসটা আমার সবচেয়ে ভালো লেগেছে তা হচ্ছে তার সততা। তিনি প্রত্যেক ছাত্র কে সমান ভালোবাসতো।তিনি সবসময় মনে করতো শুধু যে ১-২ রোল রা এ+ পাবে তা হয় না।যার রোল শেষে সেও এ+ পাবে।এর জন্য তিনি কখনো ভালো ছাত্র ও খারাপ ছাত্র কে পার্থক্য করতেন না।**
স্যার অবসর সময়ে আমাদের সাথে হাসি মশকরা করতো।স্যার আমাদের সাথে সব সময় বন্ধু সুলভ আচরণ করতো। কারো মন খারাপ থাকলে তাকে হাসাতো।এমন কথা বলতো না হেসে উপায় থাকতো না
স্যারের কিছু কমন ডায়লগঃ
এই বীর বাঙালির দল পড়া বলো;
এই গাধার দল খবর কি;
স্যারের কিছু শাস্তি
স্যারের পড়া না হলে মারতো,তবে পরবর্তী তে তিনি আর মারতেন না।
তিনি একটি লাঠি আর একটি ডাস্টার নিতেন।যদি কারো পড়া না হতো তাহলে লাঠি টা তার শার্ট এর পকেটে ঢুকায় দিতো,লাঠির অপর প্রান্তে ডাস্টার দিয়ে আঘাত করতো,যার ফলে শার্ট এর পকেট ছিড়ে যাওয়ার উপক্রম হইতো।এভাবে আমারা সব ছাত্র হাসতাম,স্যারো হাসতো। কিন্তু যার এ রকম করতো সে তো খুবই চেচামেচি করতো।এ রকম করার কারণে আমরা ছেলে ভয়ে পড়া পড়ে আসতাম।আর স্যার হেসে বলতো মার এর চেয়ে এটি বেশি উপকারী।
পরিশেষে স্যার সম্পর্কে কিছু কথাঃ
স্যারের কথায় আমি আমার জীবন পাল্টে ফেলতে সক্ষম হয়েছি।তিনি আমাকে একজন ভালো ছাত্র গড়তে সাহায্য করেছেন। যদিও আবার আমি নিজেকে কখনো ভালো ছাত্র দাবি করি না।তবুও যখন আমি ঠিক ভাবে লেখা পড়া করছিলাম না,তখন তিনি আমাকে সঠিক বুঝ দিয়েছেন। যার অনুপ্রেরণায় বাংলা ব্যাকরণ আমার একটি প্রিয় সাবজেক্ট হয়েছে।
আমার দেখা সেরা, সৎ, নিষ্ঠাবান স্যার তিনি।
স্যারের জন্য সব সময় দোয়া করি,সৃষ্টি কর্তা যেন স্যারের হায়াত বৃদ্ধি করে।
দ্রষ্টব্যঃ এখানে আমি যে পিকচার দিয়েছি সগুলো, স্যারের ফেসবুক প্রোফাইল থেকে নেওয়া।