আসসালামু আলাইকুম
হ্যালো বন্ধুরা!
কেমন আছেন সবাই। আমি @mamunxxx 🇧🇩 বাংলাদেশ থেকে। আজ আমি বিপ্লবী শহিদ ক্ষুদিরাম বসু সম্পর্কে লিখবো।
ফাঁসির আগে ব্রিটিশ বাহিনীর হাতে বন্দি ভারতবর্ষের সর্বকনিষ্ঠ বিপ্লবী শহিদ ক্ষুদিরাম বসু ৷
বিপ্লবী ক্ষুদিরাম বসু জন্মেছিলেন ১৮৮৯ খ্রিস্টাব্দের ৩রা ডিসেম্বর, পশ্চিমবঙ্গের মেদিনীপুর জেলার কেশপুর থানার মৌবনী (হাবিবপুর) গ্রামে ৷ পিতা ত্রৈলোক্যনাথ বসু ও মাতা লক্ষ্মীপ্রিয় দেবীর চতুর্থ সন্তান ক্ষুদিরাম বসু ৷ তিন কন্যা সন্তানের পর তাঁর জন্ম হলেও, দুই পুত্রের অকাল মৃত্যুতে ক্ষুদিরামের মৃত্যুশঙ্কায় মা প্রচলিত সামাজিক নিয়ম অনুযায়ী তাঁর বড়ো দিদির কাছে তিন মুঠো চালের খুদের বিনিময়ে বিক্রি করে দেন । খুদের বিনিময়ে কেনা হয়েছিল বলে শিশুটির নাম পরবর্তীকালে রাখা হয় ক্ষুদিরাম ৷ ক্ষুদিরাম বসু মাত্র পাঁচ বছর বয়সে মাকে হারান, তার এক বছর পর হারান পিতাকে!
১৯০২ এবং ১৯০৩ খ্রিস্টাব্দে মেদিনীপুরে বিপ্লবী অরবিন্দ ঘোষ এবং ভগিনী নিবেদিতা’র স্বাধীনতাকামী বক্তব্য ও গোপন বিপ্লবী কর্মকাণ্ডে অনুপ্রাণিত হয়ে কিশোর ছাত্র ক্ষুদিরাম অংশগ্রহণ করেন । স্পষ্টভাবেই তিনি ‘অনুশীলন সমিতি’-তে যোগদান করেন এবং কলকাতায় বারীন্দ্র কুমার ঘোষের কর্মতৎপরতার সংস্পর্শে আসেন । তিনি ১৫ বছর বয়সেই অনুশীলন সমিতির একজন স্বেচ্ছাসেবী হয়ে ওঠেন এবং ভারতে ব্রিটিশ শাসন বিরোধী পুস্তিকা বিতরণের অপরাধে গ্রেপ্তারও হন ৷
১৯০২ খ্রিস্টাব্দে জ্ঞানেন্দ্রনাথ বসু এবং রাজনারায়ণ বসুর প্রভাবে মেদিনীপুরে একটি গুপ্ত বিপ্লবী সংগঠন গড়ে উঠেছিল । ব্রিটিশবিরোধী রাজনৈতিক সেই সংগঠনের নেতা ছিলেন বিপ্লবী হেমচন্দ্র দাস কানুনগো এবং বিপ্লবী সত্যেন্দ্রনাথ বসু ছিলেন হেমচন্দ্রের সহকারী । অল্প কিছু সময়ের মধ্যেই ক্ষুদিরাম তার গুণাবলীর জন্য সবার চোখে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেন । ক্ষুদিরাম সত্যেন্দ্রনাথের সাহায্যে বিপ্লবী দলভুক্ত হয়ে এখানে আশ্রয় পান । সেখানে পরিচয় হয় ব্রিটিশবিরোধী প্রথম আত্মত্যাগকারী বিপ্লবী প্রফুল্ল চাকী’র সাথে ৷
ইতোমধ্যে ব্রিটিশ বিচারক ম্যাজিস্ট্রেট কিংফোর্ড প্রচণ্ড অত্যাচারী হয়ে উঠে ৷ সেজন্য বিপ্লবীরা সিদ্ধান্ত নেয় তাকে হত্যা করার ৷ ক্ষুদিরাম বসুর সাথে সেই পরিকল্পনায় অংশ নেয় প্রফুল্ল চাকী ৷ এক রাতে সপত্নীক ম্যাজিস্ট্রেট কিংসফোর্ড ও ব্রিটিশ ব্যারিস্টার পত্নী মিসেস কেনেডি ও তার কন্যা একই রকম দুই গাড়িতে করে ফিরছিলেন ৷ যে গাড়িতে মিসেস কেনেডি ও তার কন্যা ছিলো, সেই গাড়িতে কিংফোর্ড আছে ভেবে তাকে গুপ্তহত্যা করার জন্যে বোমা ছোঁড়েন ক্ষুদিরাম বসু ৷ কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে তাঁর বোমার আঘাতে প্রাণ যায় মিসেস কেনেডি ও তার কন্যার ৷
এই ঘটনা ব্রিটিশ মহলকে তোলপাড় করে দেয় ৷ ক্ষুদিরাম ও প্রফুল্ল চাকীকে ধরার জন্য হন্য হয়ে উঠে ব্রিটিশবাহিনী ৷ অবশেষে ক্ষুদিরাম বসুকে ১৯০৮ খ্রিস্টাব্দের ১লা মে, ওয়াইনি রেল স্টেশন (বর্তমান নাম ক্ষুদিরাম বোস পুসা স্টেশন) থেকে গ্রেফতার করে ৷ পরের দিন প্রফুল্ল চাকী ব্রিটিশ দালাল এক বাঙালি অফিসারের হাতে ধরে পড়ে গেলে নিজে নিজে আত্মহনন করেন ৷ ক্ষুদিরাম বসু’র অপরাধ হিসেবে তাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয় ৷ ১৯০৮ খ্রিস্টাব্দের ১১ই আগস্ট তাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করা হয় ৷ ফাঁসি হওয়ার সময় ক্ষুদিরামের বয়স ছিল মাত্র ১৮ বছর, ৭ মাস এবং ১১ দিন; যিনি ছিলেন ভারতবর্ষের সর্বকনিষ্ঠ বিপ্লবী ৷
আজ বাঙালির বীরবিপ্লবী এই সূর্যসন্তানের মহাপ্রয়াণবার্ষকীতে জানাই অন্তর্লীন শ্রদ্ধাঞ্জলি ও স্যালুট ৷
আমি বাংলাদেশের Steemit ব্যবহারকারীদের তথ্য বিশ্লেষণের জন্য একটি গুগল ফর্ম ডিজাইন করেছি। অনুগ্রহ করে উক্ত গুগল ফর্মে আপনি আপনার তথ্যাবলি সংযুক্ত করুন। বিস্তারিত জানতে দয়া করে এই পোস্টটি দেখুন।
ফর্ম লিংক: https://forms.gle/w2a4FtCVarnRUP5f8
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit