হাই, সবাই কেমন আছেন? আশা করি অনেক ভালো আছেন। আমি মোশারফ হোসেন, আমার Steemit username @mosharroff আমি বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগের সিরাজগঞ্জ জেলায় বাস করি ।
#steem-bangladesh কমিউনিটিতে এটিই আমার সর্ব প্রথম বাংলা পোস্ট।
আমি এর আগে কখনোও বাংলায় ব্লগ লিখে Steemit এ শেয়ার করি নি। যাইহোক ব্লগ টি আসলে গতকাল আমার ফ্রেন্ডের ভাইয়ের বিয়ের দাওয়াত এ যাওয়া নিয়ে লেখা। আশা করি ব্লগ টি সবার ই ভালো লাগবে।
সকাল বেলা থেকেই মনের ভেতর এক অন্যরকম অনুভূতি হচ্ছিল কারণ এটি ছিল আমার ফ্রেন্ড দিপংকর সূত্রধর এর ভাই এর বিয়ে অর্থাৎ হিন্দু বাড়ির বিয়ে। আমি জানিনা হিন্দু দের বিয়ে আসলে আমাদের ধর্মের বিয়ে থেকে কতটা ভিন্ন বা আসলে কেমন। যাইহোক দুপুরের পরে বাসা থেকে বের হই শ্রীবাসের দোকানে বসার জন্য। শ্রীবাসের দোকানে আমরা এলাকার সব ফ্রেন্ডরা বসে আড্ডা এবং আলাপালোচনা করে থাকি। তো আমি গিয়ে ওদের জিজ্ঞেস করি যে কখন রওনা হতে হবে বিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে। ওরা বললো সন্ধ্যার পরেই বাস ছাড়বে এখান থেকে।
বাড়িতে এসে গোসল করে কিছু ঘুমিয়ে পড়ি ঘুম থেকে উঠে ফেসবুক স্ক্রলিং করতে থাকি। পরে দেখি দীপংকর কল দিলো৷ ফোন ধরলাম দীপংকর বললো, মোশারফ তাড়াতাড়ি রেডি হও। আমি পরে রেডি হয়ে শ্রীবাস দের বাড়িতে আসি শ্রীবাস দের বাড়িতে আরোও সবাই আসলো। পরে শ্রীবাস দের বাড়ি থেকে গিয়ে আমরা সবাই বাসে উঠলাম। বাসে আমরা সব বন্ধুরা
পাশাপাশি সিটেই বসলাম।
যাইহোক বাস এখান থেকে সন্ধ্যা ৬ টায় রওনা হলো। বিয়ে বাড়ি ছিল আমাদের এখান থেকে প্রায় ৫০-৫৫ কিলোমিটার দূরে, আমাদের ওখানে পৌঁছাতে রাত ৮টা বাজলো। আয়ামাদের যাওয়ার পর পরই স্যানিটাইজার দিয়ে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা ছিল। আমরা হাত ধুয়ে প্রথমে খাবার খাওয়ার প্যান্ডেলে বসি। বসার কিছুক্ষণের মধ্যে আমাদের সবাইকে খেতে দেয়া হলো হালকা নাস্তা (চা, বিস্কিট) । তার কিছুক্ষণ পরে টেবিলে চলে আসলো গরম গরম পোলাও, খাশির বটবটি, বুটের ডাল, এবং সবচেয়ে যেটি টেস্টি ছিল খাশির মাংস। আমরা সবাই অনেক তৃপ্তি করে পেট ভড়ে খাই।
খাওয়াদাওয়ার পর আমরা সব বন্ধুরা একটা রুমে কিছুক্ষণ বিশ্রাম করি। বিশ্রাম নিয়ে আমরা বিয়ে বাড়ির ভেতরে ঢুকি। দেখি বর কনে দের যেখানে বিয়ে পড়ানো হবে সেখানে অনেক সুন্দর একটি আসন সাজানো হয়েছে, আসন টি দেখে আমি সত্যিই খুব পুলকিত হই। আমরা বন্ধুরা মিলে কনের ঘরে যাই কনে দেখার জন্য।
আমরা এখানে আসার প্রায় ৩ ঘন্টা পর অর্থাৎ ঘড়িতে তখন রাত ১১টা বাজে। তখন বর+কনের বিয়ের অনুষ্ঠান আরম্ভ হয়।
আমরা যে কয়জন বন্ধু ছিলাম সবাই বসে বিয়ে পড়ানো দেখতে বসলাম। প্রায় এক ঘন্টা জুড়ে বিয়ে পড়ানো শেষে রাত ১২ টা ১৫-২০ এর দিকে আমাদের ঘুমানোর ব্যবস্থা করা হয়। এবারও আমরা সব বন্ধুরা এক রুমে গিয়ে শুয়ে পড়ি।
সকালে উঠে আমরা সবাই ফ্রেশ হই পরে এলাকায় একটুখানি ঘুরতে বের হই। আমরা সবাই কিছু ফটোশুট করি। তারপর সকাল ৮ টা তখন বিয়ে বাড়িতে ফিরে আসি। খাবার খাওয়ার প্যান্ডেলে দেখি সকালের নাস্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিয়ে বাড়ির অতিথিদের জন্য লুচি, ডাল এবং সুস্বাদু খিচুড়ির ব্যবস্থা করা হয়েছে। তারপর আমরা সবাই খিচুড়ি সুস্বাদু ডাল দিয়ে লুচি এবং খিচুড়ি খেয়ে সকালের নাস্তা সাড়লাম।
সকাল ১০টার দিকে বর+কনে কে এলাকার বিখ্যাত মন্দিরে নিয়ে যাওয়া হয় মন্দির থেকে আশীর্বাদ নেওয়ার জন্য ও বিয়ের কাজ সম্পূর্ণভাবে সম্পন্ন করার জন্য।
এরপর দুপুরবেলা দুপুরের খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। দুপুরে বড় মাছ, সবজির তরকারি, মুসুরের ডাল দিয়ে ভাত খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। ভাত খাওয়া শেষে অতিথিদের জন্য দই, মিষ্টির ব্যবস্থাও ছিল। আমারকাছে বিয়ে বাড়ি থেকে আয়োজিত সব খাবার ই খুব টেস্টি ছিল। একটিই দুঃখ খাবার বসার সময়কার একটি ছবিও তুলতে পারি নি।
আরে ভাই বইলেন না ২০২১ সালেও যে মেয়েরা বিয়েতে বাপের বাড়ি থেকে আসার সময় এভাবে কানবে কখনোও ধারণা করতে পারি নি। উনার কান্না দেইখা আমার কি যে মায়া লাগতেছিলো, বিশ্বাস না হইলে আপনেও দেখেনঃ
যাইহোক আমার দেখা অসাধারণ কিছু মুহূর্ত কাটিয়েছি বলতে হবে। আমি এর আগে কখনো এত্ত সুন্দর বিয়ের অনুষ্ঠান উপভোগ করি নি। বন্ধু দীপংকর এবং সব বন্ধুকে প্রাণ ঢালা ভালোবাসা ও ধন্যবাদ আমাকে সাথে নেওয়ার জন্য।
অবশেষে আপনার প্রতি কৃতজ্ঞ আপনারা আমার এত্ত বড় ব্লগটি অনেক কষ্ট করে পড়লেন, সবাই ভালো থাকবেন @steem-bangladesh এর সাথে থাকবেন 🙂❤️।
--আবার দেখা হবে নতুন কোনো ব্লগ নিয়ে-
💚💚💚