বিশ্বজুড়ে প্রাচীনকাল থেকে কালোজিরা ব্যবহৃত হয়ে আসছে। বিভিন্নরকম রান্নায় কালোজিরা ব্যবহার করা হয়। আর কালোজিরা কম বেশি সবাই খেয়ে থাকে। এজন্য কালোজিরা সবার রান্নাঘরেই কম বেশি পাওয়া যায়।
কালোজিরায় ভিটামিন, অ্যামিনো অ্যাসিড, স্যাপোনিন, ক্রুড ফাইবার, প্রোটিন, ফ্যাটি অ্যাসিডের মতো লিনোলেনিক, ওলিক অ্যাসিড, উদ্বায়ী তেল, আয়রন, সোডিয়াম, পটাসিয়াম ও ক্যালসিয়াম রয়েছে।
ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, একজিমা, এলার্জি ইত্যাদি নিয়ন্ত্রণে থাকে যদি নিয়মিত কালোজিরা খাওয়া যায়।
আসুন কালোজিরার উপকারিতা সমূহ জানি
১) ডায়াবেটিস
বর্তমান যুগে ডায়াবেটিস সবচেয়ে বিপজ্জনক রোগ। প্রতিদিন সকালে এক কাপ চায়ের সঙ্গে আধা চা চামচ তেল মিশিয়ে পান করুন। কারন কালোজিরার তেল ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে দারুন ভাবে সাহায্য করে। তাই কালোজিরার তেল সেবনের অভ্যাস গড়ে তুলুন সুস্থ থাকার জন্য।
২) মাথা ব্যথা নিরাময়ে কালোজিরা
কালোজিরা তেল মাথাব্যথার নিরাময়ের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এটি মাথার ত্বকের ম্যাসাজ করুন। তাহলে মাথাব্যথা চলে যাবে।**
৩) হাঁপানি বা শ্বাসকষ্ট নিরাময়
হাঁপানি বা শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যায় কালোজিরা অনেক বেশি উপকারী। কালোজিরা হাঁপানি বা শ্বাস কষ্টজনিত সমস্যা দূর করে। এজন্য নিয়মিত কালোজিরার ভর্তা ভাতের সাথে খেলে অনেক উপকারিতা পাওয়া যায়।
৪) দেহ ও মস্তিষ্কের রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে
প্রতিদিন কালোজিরা খেলে দেহে রক্ত সঞ্চালন ঠিকমতো হয়। যার ফলে মস্তিস্কে রক্ত সঞ্চালনের বৃদ্ধি পায় যা আমাদের স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। দেহ ও মন চাঙ্গা থাকে। শরীর সুস্থ থাকে।
৫) রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করে
প্রতিদিন কালোজিরা খেলে শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সতেজ থাকে। এতে করে যে কোনও জীবানুর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে দেহকে প্রস্তুত করে তোলে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করে। শরীর দীর্ঘদিন সুস্থ ও স্বাভাবিক থাকে।
৬) লিভার ও কিডনি সুরক্ষায় কালোজিরা
কালোজিরা লিভার ও কিডনি ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে। কালোজিরাতে প্রচুর পরিমান অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকায়, প্রদাহ, অক্সিডেটিভ স্ট্রেস হ্রাস করার ক্ষমতাসহ লিভারকে সুরক্ষিত করতে সাহায্য করে। কালোজিরা রাসায়নিকের বিষাক্ততা কমাতে পারে। এজন্য সকলের বেশি করে কালোজিরা খাওয়া উচিত।
৭) সর্দি-কাশি নিরাময়ে কালোজিরা
সর্দি-কাশি নিরাময়ের জন্য ১ চামচ কালোজিরার তেলের সাথে ১ চামচ মধু মিশিয়ে দিনে ২-৩ বার সেবন করলে সর্দি-কাশি থেকে সহজেই নিরাময় লাভ করা যায়। অথবা কালোজিরার তেলের সাথে মধু ও তুলসি পাতার রস মিশিয়ে খেলে জ্বর, ব্যথা ও সর্দি-কাশি থেকে মুক্তি মেলে।
৮) যৌন ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
কালোজিরা ও মধু একত্রে মিশিয়ে খেলে মানুষের যৌন ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়, সহবাসের স্থায়ীত্ব বাড়ে।
৯) শিশুর দৈহিক ও মানসিক বৃদ্ধিতে
কালোজিরা শিশুর মস্তিষ্কের সুস্থতা এবং স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতেও অনেক কাজ করে। এজন্য শিশুদের শিশুকাল থেকেই কালোজিরা খাওয়ানোর অভ্যাস করানো উচিৎ।
১০) ত্বকের সমস্যা সমাধানে কালোজিরা
কালোজিরার তেল ও লেবুর রস একত্রে মিশিয়ে ত্বকের অনেক সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। কালোজিরার তেল ও লেবুর রস একত্রে মিশিয়ে দিনে ২ বার মুখে ব্যবহার করলে মুখের ব্রনের দাগ দুর হয়ে যায়।
১১) ডায়েটের জন্য কালোজিরা
যারা ডায়েট করতে চান তারা রুটি, তরকারি, ডাল ও অন্যান্য সবজির সাথে কালোজিরা মিশিয়ে খেতে পারেন। কালোজিরা ওটমিল ও টকদই এর সাথে মিশিয়ে খেলে বেশ ভাল উপকার পাওয়া যায়।
১২) মায়ের বুকের দুধ বৃদ্ধিতে
প্রসুতি মায়েদের প্রতিদিন ১০ গ্রাম কালোজিরা চুর্ন করে ভাতের সাথে খেলে ১৫ দিনের মধ্যে বুকের দুধের প্রবাহ বৃদ্ধি পাবে। যে সকল মায়ের বুকের দুধ পর্যাপ্ত নয় তাদের জন্য কালোজিরা মহৌষধ হিসাবে কাজ করে।
১৩) হাটু বা জয়েন্টের ব্যথা নিরাময়ে কালোজিরা
সরিষার তেলের সাথে কালোজিরার তেল একত্রে মিশিয়ে গরম করে হাটু ও শরীরের অন্যান্য জয়েন্টে ভাল ভাবে ম্যাসেজ করলে জয়েন্টের ব্যথায় নিরাময় পাওয়া সম্ভব।