Steem Bangladesh Contest || Sports|| by @nishatoishi

in hive-138339 •  4 years ago  (edited)

আসসালামু আলাইকুম,

আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমি @niahatoishi বাংলাদেশ থেকে। @steem-Bangladesh কতৃর্ক আয়োজিত Sports Contest -এ অংশগ্রহণ করতে যাচ্ছি । আজকে আমি সবার প্রিয় একজন ফুটবল প্লেয়ারকে নিয়ে কথা বলো। তিনি হচ্ছেন আর্জেন্টিনা দলের অধিনায়ক লিওনেল মেসি।

তবে শুরু করা যাক...

25361663229_65debdd03d_z.jpg
source

মেসি


বর্তমান বিশ্বে সেরা ফুটবলার লিওনেল মেসি। তাঁকে ছিনে না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া অসম্ভব । কাব্যিক ভাষায় তিনি ভিন্ন গ্রহরের ফুটবলার। সিনেমার গল্পকে হার মানিয়ে তাঁর উথান। ভারসাম্য কাজে লাগিয়ে খেলার সাম্য অবস্থা ভাঙাতে একেবারে কটুর তিনি। খেলাটা যখন ডি-বক্সে তখন মেসি আলাদা সবার থেকে। গোলকিপারের সাথে লড়াইয়ে তিনি নাম্বার ওয়ান। মানুষটা ছোটকাটো হলেও শক্তিতে কমতি নেই। তার বা পায়ের শর্টে প্রায় ছিড়ার উপক্রম হয় জালের। সবশেষ হয় তার চোখে বিছখন্নতা। চোখেই বলে দেই রক্ষানে তচনচ করতে, কথটা মরিয়া এই স্ট্রাইকার। কিন্তু তারপর ফুটবল বিশ্বে রহজ্যময় লিওনেল মেসি।

ব্যক্তিগত তথ্যাদি


নামলিওনেল আন্দ্রেস মেসি
জন্ম২৪ জুন ১৯৮৭
জন্ম স্থানরোসারিও,আর্জেন্টিনা
উচ্চতা৫ ফুট ৭ ইঞ্চি
মাঠে অবস্থানআক্রমণভাগের খেলোয়াড়
বর্তমান ক্লাববার্সেলোনা
জার্সি নম্বর১০


মেসির শৈশব


maxresdefault.jpg
source

আর্জেন্টিনার ছোট শহর রোজারিওতে তাঁর জন্ম। যার ভাই বোনদের মধ্যে তিনি তৃতীয়। মেসির বয়স যখন পাঁচ তখন তিনি স্থানীয় ক্লাব গ্রান্দোলির হয়ে ফুটবল খেলা শুরু করেছিলেন যার কোচ ছিল তার বাবা হোর্হে।১১ বছরে গ্রোথ হরমোনের সমস্যার জটিলতায় তার ভবিষ্যৎ অন্ধকার। জীবনটা যখন অন্ধকার সেখানে ফুটবলটাই বাঁচিয়ে ছিলো তার প্রাণ। ছোট মেসির খেলায় মুগ্ধ হয়ে একটা টিস্যু পেপারে হয় চুক্তি। আর্জেনটির মানচিত্র ঘুরে স্পেনের বার্সেলোনায়। মাত্র ১৩বছরে বয়সে ছাড়তে হয়েছিল তার নিজ ভূমিকে। কিন্তু ওইটুকু বয়সে তার চোখ ধাধানো ফুটবলের মহুময়তা দেখে, তাকে তার গন্তবে পৌঁছে দিয়েছে বার্সেলোনার এক্সিকিউটিভ চার্লরেকস।


আর্জেন্টিনা দলে মেসির যাত্রা


standard_compressed_Lionel_Messi.jpg
source

২০০৫ সালের অগাস্টে আর্জেন্টিনা জাতীয় দল মেসির অভিষেক হয়। তিনি আর্জেন্টিনার ফুটবল ইতিহাসে সর্বাধিক গোলদাতা। ২০০৫ সালে বয়ঃভিত্তিক পর্যায়ে, আর্জেন্টিনাকে ফিফা ইয়ুথে চ্যামপিয়ানশিপ জিতাতে সাহায্য করেন, তখন তিনি সর্বোচ্চ গোলদাতা এবং সেরাখোলোয়াড় হিসাবে পুরুষ্কার পান। ২০০৬ সালে ফিফা বিশ্বকাপে গোল করার মধ্য দিয়ে তিনি সর্বকনিষ্ঠ আর্জেন্টাইন হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেন। ২০০৭ সালে কোপা আমেরিকায়, সেরা যুব খেলোয়াড়ের পুরস্কার অর্জন করেন। ওই আসরে আর্জেন্টিনা দ্বিতীয় স্থান অর্জন করে। এছাড়া ২০০৮ সালে অলিম্পিককে আর্জেন্টিনা হয় স্বর্ণপদক লাভ করেন। এর ফলে ২০১১ সালের আগস্টে মাসে তিনি আর্জেন্টিনা দলের অধিনায়কে হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ পান। আর্জেন্টিনার অধিনায়ক হিসেবে টানা তিনটি প্রতিযোগিতার ফাইনাল খেলেছেন তিনি। তা হলো
  • ২০১৪ ফিফা বিশ্বকাপ,
  • ২০১৫ কোপা আমেরিকা এবং
  • ২০১৬ কোপা আমেরিকা।
এতে তিনি কোন ফাইনাল ম্যাচ জিততে পারিনি, তারফলে হতাশাগ্রস্ত হয়ে ২০১৮ সালে মেসি জাতীয় দল থেকে অবসরের ঘোষণা দেন। তবে ভক্তদের আভেগভরা উল্লসে কয়েক মাস পরেই তিনি তাঁর সিদ্ধান্ত বদলে পুনরায় জাতীয় দলে ফিরে আসেন।


বার্সেলোনা ক্লাবে মেসির যাত্রা


17465963099_64694a8cf0_b.jpg
source

লিওনেল মেসি বার্সেলোনার যুব খেলোয়াড়ে ইনফান্তিল-বি, কাদেতে-বি এবং কাদেতে-এ দলে খেলেছেন ২০০০-২০০৩ সাল পর্যন্ত। ২০০৩ সালে ক্লাবে অর্থনৈতিক সীমাবদ্ধতার কারণে মেসিকে ক্লাব থেকে ছেড়েই দিচ্ছিলো, পরবর্তীতে যুব দলের প্রশিক্ষণ কর্মীদের জোড়াজুড়িতে ক্লাবের ব্যবস্থাপনা পরিষদ তাকে দলে রেখে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। যুব খেলোয়াড় হিসেবে সি দলে ১০ ম্যাচ খেলে ৫ গোল করেন । ২০০৪ সালে ১৬ অক্টোবর লা লিগায় বার্সেলোনার হয়ে এস্পানিউলের বিপরীতে অভিষেক হয়। ২০০৫ সালে ৯মে বলোস্পাইয়ানের বিপক্ষে কনিষ্ঠতম গোলতাদা হিসেবে গোল করেন তিনি। যে রেকর্ড আজও কেউ ভাঙ্গাতে পারিনি। সান্তোসের হয়ে কিংবদন্তি পেলে ১৯ মৌসুমে ৬৪৩ গোল করেছেন আর মেসি বর্সেলোনা হয়ে ১৭ মৌসুমে ৬৪৩ গোল করেছেন। সকল প্রতিযোগীতায় ৪৮ হ্যাট্রিক এবং লা লিগায় ৩৪ হ্যাট্রিক করেছেন।

ব্যক্তিগত অর্জন


পুরষ্কারসংখ্যা
ফিফা ব্যালন ডি ওর৬বার
ইউরোপীয় গ্লোডেন বুট৬বার
উয়েফা ইউরোপে সেরা খেলোয়াড়২বার
আর্জেন্টিনা সেরা ফুটবলার১২বার
লা-লিগা সেরা খেলোয়াড়৬বার
লা-লিগা সেরা ফরওয়ার্ড৭বার


আর্জেন্টিনা জার্সিতে মেসির প্রথম শিরোপা


768-512-12421281-thumbnail-3x2-messi.jpg
source

রেকর্ড অনুযায়ী দীর্ঘ ২৮ বছর পর আর্জেনরিনা ঘরে শিরোপা। যা ছিলো মেসির জাতীয় দলের প্রথম শিরোপা। এ জয়ের মাধ্যমে মেসির জীবনে পূর্ণতা পেয়েছে।আর্জেন্টিনার জার্সিতে ১৬ বছরের ক্যারিয়ারে এই প্রথম কোনো ট্রফি জয়ের শুভক্ষণ দারুণ উপভোগ করলেন লিওন মেসি। একই সঙ্গে ব্রাজিলের হাত থেকে লাতিন ফুটবলের রাজমুকুট, ছিনিয়ে নিতে পারার প্রতিটা মূহুর্ত তাঁকে ভরিয়ে দিয়েছে প্রাপ্তির আনন্দে। এক ফাঁকে সজল চোখে নেইমার এসে জরিয়ে ধরেন সাবেক বার্সা-সতীর্থকে।

ফুলটাইম স্কোর: ব্রাজিল ০-১ আর্জেন্টিনা

একটা শিরোপার জিতার জন্য,সকল কিছু উপেক্ষা করে তৃষ্ণার্ত পাখির মতো অপেক্ষায় মগন্ন ছিল আর্জেন্টাইন বাসীরা। অবশেষে সকল অপেক্ষার অবসন ঘটিয়ে মারাকানায় আসলো সেই স্বস্তিটা। ডি মারিয়ার একমাত্র গোলে ব্রাজিলকে তাদেরই মাঠে হারিয়ে ২৮ বছর পর কোপা আমেরিকার ট্রফি জিতল আর্জেন্টিনা। টানা চারবার ফাইনালে হারার পর মেসিও পেলেন অধরা আন্তর্জাতিক ট্রফির স্বাদ। আসলে বলতে গেলে দি মারিয়া, মার্তিনেজেরা ২৮ বছর পর আর্জেন্টিনাকে কোপা আমেরিকার শিরোপা জেতাইনি মনে হয়েছিল সবাই মিলে ট্রফিটা উপহার দিয়েছিলো মেসিকে।


পরিবার ও ব্যক্তিগত জিবন


kzyxvyzeyi7zmchy_1604916053.webp

source

মেসির জীবনসঙ্গী আন্তোনেল্লা রকুজ্জো, মেসির নিজের শহর রোজারিওর স্থায়ী বাসিন্দা। তবে এর আগে মাকারিনা লেমোস এবং লুসিয়ানা স্যালজার নামে এক আর্জেন্টাইন মডেলের সাথে তার সম্পর্কে আছে। তিনি ফুটবল খেলায় দেখতে তেমন আগ্রহী নই, সে কারণে বাড়িতে মেসির ফুটবল পারফরম্যান্স নিয়ে আলোচনা হয় না। মেসির তিন পুত্র সন্তান। তাদের নাম হলো-
  • থিয়াগো মেসি
  • মাতে্রও মেসি
  • সিরো মেসি।
মেসির দুই খালাতো ভাইয়ের একজন মেক্সিকো বিয়ানকুচ্চি, প্যারুগুয়ের ক্লাব, অলিম্পিয়ার স্ট্রাইকার হিসেবে খেলেন। অন্যজন এমানুয়েল বিয়ানকুচ্চি প্যারাগুয়ের আরেক ক্লাব ইন্দিপেনদিয়ান্ডে মিডফিল্ডার হিসেবে খেলেন।


মেসির ফ্যান হিসেবে আমি


IMG_20210716_190616.jpg

তা লিখতে গেলে, লেখা শেষ হবে না আজ। আমি ক্লাস-টু থেকে আর্জেনটিনা সাপোর্টার, তখন থেকেই মেসির ভক্ত। কিন্তু তখন খেলা সম্পর্কে তেমন কোন আইডিয়া ছিলো না। তবে খেলা দেখতে দেখতে কিছুটা আইডিয়া হয়েছে। ২০১৪ সালের ফিফা বিশ্বকাপে জার্মানির সাথে ফাইনাল ম্যাচ হারার পর আমি এক কথায় বাকরূদ্ধ হয়ে গিয়েছিলাম সেই মুহুর্তে। পরবর্তীতে চিলির সাথে কোপা আমেরিকার ফাইনাল ম্যাচে হার। মেসির কান্নাতে, আমারও কান্না এসে গিয়েছিল। আর্জন্টিনা জার্সিতে ফাইনাল ম্যাচগুলোতে হার, মেনে নেওয়ার ছিলো না। তাতে আমি মধ্যে রাতে উঠে ক্লাবের খেলা দেখতাম। সাথে ছিলো আমার বড় ভাই। মাঝে মাঝে ভাইয়া আমাকে ডাক দিতো খেলা দেখার জন্য। ক্লাবের খেলা দেখে মেসির পাকাপোক্ত ভক্ত হয়ে গিয়েছি। সাম্প্রতিক সময়ে কোপা আমেরিকার খেলা শুরু হয়েছিলো সেই সাথে মেসির একটা স্কেচ আঁকতে ইচ্ছা হলো। আঁকতে বসে পড়লাম। দুই দিনে আঁকা শেষ করলাম। সময়টা ছিলো ২৩.০৬.২০২১ রাত ১টা। সেই সাথে ব্রাজিলের হাত থেকে লাতিন ফুটবলের রাজমুকুট ছিনিয়ে নিতে পারার প্রতিটা মূহুর্ত মেসিকে যেভাবে ভরিয়ে দিয়েছে প্রাপ্তির আনন্দে, তেমনি আমার মতো সকল ভক্তরা স্বস্তির নিঃস্বাস ফেলেছে।


মেসিকে নিয়ে আমার তুলে ধরা বক্তব্য, আশা করি সবার কাছে ভালো লাগবে। তবে কেমন হয়েছে তা জানাতে ভুলবেন না। ধন্যবাদ সবাইকে। ভালো থাকেন, সুস্থ থাকেন ।

আল্লাহ হাফেজ।

ধন্যবাদ

@Steem-bangladesh

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

সুন্দর উপস্থাপন।

ধন্যবাদ আপনাকে।

দারুন ছিলো পোস্টটা।
মেসির স্কেচটা অসাধারণ লেগেছে।

ধন্যবাদ ভাইয়া 😊

মেসি আমার প্রিয় খেলোয়াড়। তিনি বর্তমান বিশ্বের একজন সেরা ফুটবলার। এবারের কোপা আমেরিকায় তার পারফরমেন্স অসাধারণ ছিল। আপনি সুন্দর ভাবে মেসির ফুটবল ক্যারিয়ারের কিছু মূহূর্ত বিশ্লেষণ করেছেন। আপনি মেসির স্কেচ টি সুন্দর করে বানিয়েছেন।

ধন্যবাদ ভাইয়া❤️

ভালো লিখছেন অনেক

ধন্যবাদ আপু😘

ভালো লিখেছেন অনেক

ধন্যবাদ ভাইয়া😊

😘😘😘most fav player
onk valo likhchen

ধন্যবাদ আপনাকে🥰

nice writing keep it up ☺️

Thank you

You have been upvoted by @toufiq777 A Country Representative, we are voting with the Steemit Community Curator @steemcurator07 account to support the newcomers coming into steemit.


Follow @steemitblog for the latest update. You can also check out this link which provides the name of the existing community according to specialized subject

For general information about what is happening on Steem follow @steemitblog.