আমাদের সংগঠনের স্থায়ী সদস্য হিসেবে রয়েছে 50 জন স্বেচ্ছাসেবী সদস্য। আমাদের সংগঠনের কিছু নিয়মাবলী রয়েছে সেই নিয়মাবলী গুলো হলো
১. আর্ত মানবতার সেবায় সহযোগীকরণ ।
২.দরিদ্র ,অসহায় এবং মেধাবী শিক্ষার্থীদের অর্থায়ন ।
৩. দরিদ্র, শ্রমিক ও পথ শিশুদের শিক্ষাদান।
৪.সবুজ বনায়ন ।
৫.পরিষ্কার ও পরিছন্ন পরিবেশ সৃষ্টি ।
৬.মাদকমুক্ত যুবসমাজ গঠন ।
নিয়মাবলী দুইয়ের মধ্যে রয়েছে দরিদ্র ,অসহায় এবং মেধাবী শিক্ষার্থীদের অর্থায়ন । আমাদের যেকোন স্বেচ্ছাসেবী সদস্য এর আশেপাশে মানুষেরা যদি কষ্টে থাকে বা অসহায় হয়ে পড়ে তখন আমরা সংগঠনের পক্ষ থেকে সেই সব মানুষকে সাহায্য করতে পারি।
প্রতিটি স্বেচ্ছাসেবী সদস্যদের এলাকার আশেপাশের মানুষদের সাহায্য করার ক্ষমতা দেওয়া থাকে। যেকোনো অবস্থায় কেউ অসহায় হয়ে পড়ে আমরা তাদের নাম তালিকাভুক্ত করে সংগঠন থেকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেই।
কিছুদিন আগে আমাদের এক বড় ভাই। সাজিন শরকার সৌরভের দরিদ্র গ্রামে কিছু মানুষের অবস্থা অনেক বেশি খারাপ হয়ে পড়েছিল। তারা অনাহারে ভুগছিল। তাই আমরা সংগঠন থেকে তাদের নামের তালিকা অনুযায়ী কিছু স্বল্প পরিমাণ এর নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ক্রয় করি এবং তা প্রতিটি প্যাকে লেগে সাজিয়ে তাদের বাসায় পৌঁছে দেওয়ার জন্য একটি দিন ঠিক করে।
সংগঠনের সকল সদস্যরা উপস্থিত হতে না পারলেও অনেক স্বেচ্ছাসেবী সদস্য উপস্থিত হয়েছিল এবং আমরা সবাই মিলে সকল খাদ্যদ্রব্য কিনে প্রতিটি প্যাকেট প্যাকেট সাজিয়ে সকলেই রওনা হয়ে পড়ি সেই স্বেচ্ছাসেবীর সদস্যের দরিদ্র গ্রামে এবং সকলেই পৌঁছে যায় সেইসব অনাহারে ভোগা মানুষের দুয়ারে দুয়ারে।
সকলের দুয়ারে দুয়ারে পৌঁছায় যখন তাদের খাবারের ব্যাক্তি দিচ্ছিলাম তখন সবাই অনেক বেশি খুশি হয়েছিল । সবার মুখে হাসি ফোটাতে পেরেছিলাম আমরা। একবেলা মিলে আমরা সকলেই সবার দুয়ারে দুয়ারে খাদ্য পৌঁছে দিতে পেরেছিলাম। আসলে দানের মধ্যে একটা শান্তিতে আছে। প্রিয় বড় ভাই ও সহপাঠীদের সাথে মিলে যখন আমরা কিছু দরিদ্র অসহায় মানুষকে সাহায্য করতে যাই সেই অনুভূতিটা আসলেই ব্যাখ্যা করা সম্ভব নয়। খুবই ভালো লাগে গরিব মানুষদের পাশে দাঁড়াতে তারা অনেক খুশি হয় এবং আমাদের মন খুলে দোয়া করে।
আমি এবং আরও 2 জন স্বেচ্ছাসেবী বড় ভাই একদমই হতদরিদ্র একটি বাসায় গিয়েছিলাম এই বাসায় অনেকগুলো ছোট শিশু রয়েছে যাদের গায়ে কোন কাপড় ছিলনা। আপনাদের বাড়ি ঘরের অবস্থা খুবই খারাপ দেখেই বোঝা যাচ্ছে বৃষ্টি এলে চাল দিয়ে পানি পড়ে। বাসার ভেতরে থাকার একদমই সুব্যবস্থা নেই। এগুলো কে দেখে বোঝা যাচ্ছে খুবই অনাহারে ভুগতেছে তারা।
আমরা যখনই তাদের বাসার ভেতরে ঢুকেছি শিশুগুলো আমাদের ঘিরে ধরেছে এবং আমরা শিশুদের হাতে চকলেট এবং কিছু নগদ অর্থ দিচ্ছিলাম তখন তারা অনেক বেশি খুশি হচ্ছিল তাদের মা কে আমরা খাবারের ব্যক্তি যখন হাতে দেই তখন শিশুরা খুব চিল্লাচিল্লি করছিল এবং খুব মজা করছিল তারা অনেক বেশি খুশি হয়েছিল আমরা সকলেই নিজ পকেট থেকে তাদের কিছু অর্থ দান করি তাতে শিশুর কাপড় ক্রয় করতে পারে এবং আমরা তাদের নাম তালিকাভুক্ত করে রেখে দিলাম যাতে পরবর্তীতে সকলের সাহায্য আমাদের করতে পারি।
আমরা শহরে থাকি বলে কষ্ট আসলে বুঝতে পারি না গ্রামের মানুষদের আসলেই অনেক বেশি কষ্ট কারণ তারা অনেক বেশি কষ্ট পেয়েও অনেক কম অর্থ উপার্জন করতে সক্ষম হয়। একটা দিনমজুর সারাদিন কষ্ট করে কাজ করে ইনকাম করে মাত্র 300 টাকা। সেই দিক দিয়ে একই শহরে দিনমজুর প্রতিদিন 500 থেকে 600 টাকা। তাই গ্রামের মানুষেরা কষ্ট অনেক করলেও অর্থ কম বর্জন করে এবং তারা উন্নতি লাভ করতে সক্ষম হয় না। এখনো তাদের মাটির বাড়ি, ফুটো ফুটো টিন দিয়ে চাল বানানো থাকার সুব্যবস্থা নেই খুবই খারাপ অবস্থা। সরকারের সকল উন্নয়ন এখান পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে না। অনেক কিছুই আছে গ্রামের মানুষেরা।
ভাঙ্গা ভাঙ্গা মাটির বাড়ি তে আমরা পৌছে গেলাম এবং আমাদের খাদ্য বস্তু তাদের দুয়ারে দুয়ারে পৌঁছে দিলাম এতে তারা অনেক খুশি হয়েছে কিন্তু এটা তাদের জন্য যথেষ্ট নয় আমাদের দেওয়া খাদ্য-দ্রব্য দিয়ে হয়ত তাদের তিন চার দিন খাওয়া দাওয়া হতে পারে কিন্তু এতে করে তাদের কষ্ট থেমে যাবে না তিন চার দিন পরেও তারা অনাহারে ভুগবে।
প্রতিনিয়ত চোখে দেখা এক ভদ্রলোক তিনি আমাদের এলাকার পাশেই একটি বাগানে কাজ করে। তিনি সেই বাগানে থাকে সেই বাগানে রান্না করে খাওয়া দাওয়া করে তার কোন বাড়িঘর নেই। সন্তান রয়েছে কিন্তু সন্তান তাকে ছেড়ে দিয়েছে। বাগান দেখাশোনা করে এবং বাগানে বসবাস করে। বাগানটাই তার বাড়ি। আমাদের সংগঠনের প্রতিটি কর্মসূচিতে আমরা এই ভদ্রলোকের নাম তালিকাভুক্ত করি এবং তার বাগানে গিয়ে থাকে খাদ্য দিয়ে আসি।সে নিতে চায় না আমরা তাকে জোর করে দেই সে খাদ্য গুলো দেখার পর আমাদের দিকে তাকিয়ে একটি হাসি দেয় এবং আমরা চলে আসি। সে আর কিছু বলে না।
এভাবেই আমরা গ্রামে অনাহারে ভোগা মানুষদের পাশে দাঁড়িয়ে ছিলাম। এ তো আমরা তাদের অনাহার দূর করতে পারিনি কিন্তু তাদের সাময়িক ভাবে কিছু খুশি দিতে পেরেছি। আমরা তাদের যে খাদ্যবস্তু দিয়েছি তা দিয়ে তাদের তিন-চারদিন খাওয়া-দাওয়া হতে পারে এতে করে তাদের দরিদ্রতা কমে যাবে না তারা ঠিকই অনাহারে ঢুকবে কিন্তু আমরা আমাদের সামর্থ্য মতো তাদের দেওয়ার চেষ্টা করেছি এবং আমরা পেয়েছি তাদের মুখে হাসি ফোটাতে।
আমাদের সংগঠনের কর্মসূচি দেখে অনেক দানশীল মানুষেরা এগিয়ে আসছে। তারা আমাদের সংগঠনে ডোনেশন দিচ্ছে যাতে আমরা দরিদ্র মানুষের পাশে ভালো ভাবে দাঁড়াতে পারি। এভাবেই সকলেই আমাদের পাশে দাঁড়াতে শুরু করলে ইনশাআল্লাহ আমরা একদিন আমাদের আশেপাশে থাকা সকল অনাহারে ভোগা মানুষদের একটি গতি করে দিতে পারব যাতে তারা আর অনাহারে না ভুগে। আমরা তাদের কর্মসংস্থান বা আয় করার উপায় খুঁজে দিব এবং অর্থায়ন দিয়ে সাহায্য করার চেষ্টা করব।
আমি আপনাকে এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য আমন্ত্রণ জানাচ্ছি।@yeri52 ও @hidayat96 আমি আশা করি আপনি এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করবেন। ধন্যবাদ।