Sports||stickfighting and boat races|| লাঠি খেলা ও নৌকা বাইচ

in hive-138339 •  4 years ago  (edited)

আসসালামু আলাইকুম বন্ধুরা,

আশা করি সবাই ভাল আছেন।আমিও আল্লাহতালার অশেষ রহমতে অনেক ভাল আছি।আজ আমি আপনাদের বাংলাদেশের প্রাচীন এবং অতি পরিচিত দুইটি খেলা নিয়ে আলোচনা করব।

১)লাঠি খেলা:লাঠি খেলা বাংলাদেশের একটি জনপ্রিয় খেলা।বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে এর জনপ্রিয়তা তুঙ্গে।শীতের প্রারন্তে কার্তিক-অঘ্রায়ন মাসে এ খেলা দেখা যায়।লাঠি খেলায় বিভিন্ন ধরনের খেলা প্রর্দশন করে থাকে লাঠিয়ালরা।

Source

ক)বড় লাঠি: লাঠি খেলায় বিভিন্ন ধরনের লাঠি ব্যবহার করা হয়ে থাকে ।লাঠির কোন সঠিক আকার বা আকৃতি নেই।বড় লাঠি খেলা হয় ফ্রিষ্টাইল পদ্ধতিতে।খেলা হয় অনেকটা যুদ্ধাকারে।কেউ কারো বাধা মানে না।যে তার প্রতিপক্ষকে পরাস্ত করতে পারে সে জয়ী।

images-17.jpeg

Source
খ)ছোট লাঠি:ছোট হাতের লাঠি সাধারণত নিজের হাতের আড়াই হাত লম্বা হয়ে থাকে।এই লাঠির যে দিকটা ধরা হয় সেই দিকটা একটু মোটা এবং সামনের দিকটা একটু চিকন হয়ে থাকে।

images-18.jpeg
Source

গ)সবচেয়ে বড় লাঠি খেলা:লাঠি খেলার মধ্যে সবচেয়ে আকর্ষণীয় খেলা হল সচেয়ে বড় লাঠি খেলা।লাঠির দৈর্ঘ্য লাঠিয়ালের পায়ের পাতা থেকে মাথার উপরেএক হাত লম্বা থাকে।বড়লাঠির আয়ত্তে এনে লাঠির রং খেলা শেখা যায়।এই খেলায় একপক্ষ মারতে গেলে অন্যপক্ষ প্রতিরোধ করবে।এই খেলা শুরুর আগেই জানিয়ে দেওয়া হবে কে কিবিষয়ে খেলবে।এই খেলা বিভিন্ন রকমের আঘাত করা যায়।যেমন:ঘাত,বিঘাত সমঘাত প্রভৃতি।বিভিন্ন জায়গায় আঘাত কে বিভিন্ন নামে অভিহিত করা হয়।যেমন: শির,তামেচা,বাহেরা,ডাক্তার,কটি,মন,দে,কটি প্রভৃতি।

লাঠি-খেলার-ছোট-লাঠি.jpg
Source

রেফারি:কোনো কোনো যায়গায় রেফারি রাখা হয় আবার কোনো কোনো যায়গায় রেফারি রাখা হয় না।এটা নির্ভর করে আয়জনকারিদের উপর।খেলা শেষে বিভিন্ন ধরনের পুরষ্কারও দেওয়া হয়।

লাঠি-খেলার-শির.jpg
Source

২)নৌকা বাইচ:নৌকা বাইচ হল নদীতে নৌকা চালানোর প্রতিযোগিতা।বাইচ শব্দটি "ফারসি" বাজি শব্দজাত যার বিবর্তন এরূপ বাজি>বাইজ>বাইচ। এক দল মাঝি নিয়ে একেকটি দল গঠিত হয়।এমন দল নিয়েই নৌকা দৌড় বা নৌকা চালনাকেই নৌকা বাইচ বলা হয়।

images-12.jpeg
Source

ইতিহাস:নদীমাতৃক বাংলাদেশে নৌকা বাইচ লোকসংস্কৃতির একটি অংশ।এদেশে কবে নৌকা বাইচ গণবিনোদন হিসেবে প্রচলন হয়েছিল তার সঠিক ইতিহাস পাওয়া যায় না।তবে ধারনা করা হয় মধ্যযুগের নবাব,সবেদর,ভূস্বামিরা তাদের নৌবাহিনী,তারা এই প্রতিযোগিতা মূলক বিনোদনের সূত্রাপাত করেছিল।
নৌকার গঠন:লম্বায় ১৫০-২০০ ফুট,মাঝখানে ৮-৯ ফুট প্রশস্ত,সামনে পানি থেকে ৩ ফুট পিছনে পানি থেকে ৪,৫ ফুট উচু হয়।
images-16.jpeg
Source

নৌকার নাম:বাইচে নৌকা গুলোর বিভিন্ন নাম রয়েছে।যেমন:অগ্রদূত ময়ূরপঙ্খী পঙ্খিরাজ,সাইমন,তুফান মেল,সোনার তরী ইত্যাদি।
images-13.jpeg
Source

নৌকা বাইচের নিয়ম:একটি নৌকায় ৫,২৫,৫০বা ১০০ জন মাঝি থাকে।সবার মাঝখানে থাকে নৌকার নির্দেশক।মাঝিদের বৈঠা টানাকে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করার জন্য এক জন পরিচালক থাকে যাকে বলা হয় গায়েন।সে বসে নৌকার গুলই-এ।
images-14.jpeg
Source

নৌকা বাইচের গান:নৌকা বাইচের সময় মাঝি মল্লারা যে গান গায় তা সারি গান নামে পরিচিত।নৌকার মধ্যে ঢোল তবলা নিয়ে থাকে গায়েনরা।গানের সুরে সুরে নৌকা ছুটাতে থাকেন। একটি জনপ্রিয় সারি গান হল:

আল্লাহ বলিয়া নাও খোলরে

ভাই সক্কলি

আল্লাহ বলিয়া নাও খোল।।

ওরে আল্লাহ বলে নাও খোল

শয়তান যাবে দূরে

ওরে যে কলমা পইড়া দেছে

মোহাম্মাদ রসুলে।

নৌকা বাইচকে উৎসাহ প্রদান ও ঐতিহ্য ধরে রাখার জন্য প্রতি বছর ভাদ্র- আস্বিন মাসে বিভিন্ন ধরনের নৌকা বাইচে প্রতিযোগিতা করা হয়।প্রতিযোগিতা শেষে বিভিন্ন পুরষ্কার দেওয়া হয়।

images-15.jpeg
Source

ধন্যবাদ সবাইকে

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Copyright free ছবি ব্যবহার করতে হবে। আপনার প্রথম ছবিটি copyright free নয়৷ ছবির উপর লেখা থাকলে ঐ ছবি নেওয়া যাবে না।

দু:খিত ভাই বুঝতে পারি নি।

ইমেজ কোন সাইট থেকে নেয়া হয়েছে, সোর্স ব্যবহার করুন। অথবা স্ক্রিনশট নেয়া হয়ে থাকলে উল্লেখ করুন কোথা থেকে স্ক্রিনশট নিয়েছেন।