Steem Bangladesh Contest - Creative Writing | | 30% benefit set to @hive-138339

শৈশব হলো একটা শিশুর বীজ বপনের সময়। ফসলের ক্ষেত্রে যেমন বীজ বপনের পর ঠিকমতো যত্ন নিলে ভালো ফলন হয় ঠিক তেমনি শিশুর শীশবকালে তাকে ভালোভাবে শিক্ষা দিলে ভবিষ্যতে সে একজন ভালো ব্যাক্তি হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হতে পারে।

এই শৈশবকালে একটা শিশু সমাজের রীতিনীতি সবকিছু শিখে ফেলে। শৈশবকালটা হলো একজন শিশুর শেখার বয়স তবে সেই শেখাটা কোনো প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নয়। সেটা হবে পারিবারিক শিক্ষা। আর এই শৈশবের শেখার ক্ষেত্রে লক্ষ রাখতে হবে শিশু যেনো আনন্দ ও খেলাধুলার মধ্য দিয়ে বেড়ে ওঠে।

শৈশবের কথা বলতে বলতেই মনে পড়ে গেলো আমার নিজের শৈশবের কথা। ছোটোবেলায় আমাকে পুকুরে ও নদীতে গোসল করতে দিতো না কিন্তু আমি চুপি চুপি বন্ধুদের সাথে পুকুরে গোসল করতাম। গোসল করে যখন ভেজা জামাকাপড় নিয়ে বাড়িফিরতাম তখন আমার মা আমাকে খুব বকাবকি করতো। আগে ছোটোবেলায় গ্রীষ্মকালে মানুষের আম কুড়াতাম। আমাদের বাড়ির সাথে এক দাদির বিশাল বিশাল তিনটি আমাদের গাছ ছিলো। পুরো গ্রামের মানুষ আমু কুড়াতো। আগে সবাই মিলে টাকা দিয়ে একটা বল কিনে খেলতাম। একটু দেরি করে গেলে কোনোদিন খেলায় নিতো না কারন প্লেয়ার অনেক বেশী হয়ে যায়। আগে বিটিভিতে সবাই একসাথে আলিফ লায়লা দেখতাম।

কিন্তু এখন সেই সোনালি শৈশবটাকে প্রচুর মিস করি। মিস করি বন্ধুদের সাথে লুকিয়ে গোসল করার সময়টাকে, মিস করি আম কুড়ানোর সময়টাকে। এখন একটা বল টেপ ও ব্যাট কেনার টাকা আমি একাই দিতে পারবো কিন্তু সেই শৈশবের সব বন্ধুদের আর একসাথে পাই না। আগে স্মার্টফোন, ইন্টারনেট ছিলো না কিন্তু শান্তি ঠিকই ছিলো।

এখনকার বাবা-মায়েরা সারাদিন স্মার্টফোন, কম্পিউটার, ল্যাপটপ ইত্যাদি নিয়ে পড়ে থাকে। যার ফলে সন্তানদের প্রতি তারা এক প্রকার বেখেয়ালি হয়ে যায়। শিশুরা পায় না তাদের বাবা-মাকে পায় না তাদের শৈশবকে রাঙাতে। আবার অনেক বড়লোক পরিবারের শিশু আছে যারা শৈশব থেকেই স্মার্টফোন ও অনলাইন গেমে আসক্ত। আগে আমরা সারাদিন বাইরে খেলে বেড়াতাম আর এখনকার বাচ্চারা সারাদিন মোবাইলে ফ্রি ফায়ার ও পাবজির মতো অনলাইন গেলগুলো খেলে। যার কারনে তাদের মেধাগুলো ভালোভাবে বিকশিত হচ্ছে না।

আমাদের সকলেরই উচিত ১৮ বছরের আগে নিজের সন্তানকে স্মার্টফোন না দেয়া। এতে করে শিশুটি তার শৈশবকাল, বাল্যকাল ও কৈশোরকাল সবগুলোই ভালোভাবে কাটাতে পারবে।