যে উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে ১৯৪৫ সালে জাতিসংঘের জন্ম হয়েছিল, আজ প্রায় আট দশক পরে এসে জাতিসংঘের প্রধান উদ্দেশ্য, পৃথিবীতে শান্তি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে এখন পর্যন্ত খুব কমই সফলতা অর্জন করেছে। এইসব সফলতা অর্জনে ব্যর্থতার পিছনে অনেকগুলো কারণ থাকলেও প্রধান একটি কারণ হলো, জাতিসংঘের আন্তঃরাষ্ট্রীয় সংগঠন। সদস্য রাষ্ট্রগুলোর শক্তিই জাতিসংঘের শক্তির প্রধান উৎস, এর নিজের কোনো শক্তি নেই। ফলে সদস্য রাষ্ট্রগুলো মিলিতভাবে কোন একটি ক্ষেত্রে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য যদি শক্তি প্রয়োগ না করে তবে জাতিসংঘের উদ্দেশ্য ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়। জাতিসংঘের ব্যর্থতার পেছনের ঠিক এই কারণটিই সবচেয়ে বেশি দায়ী।
জাতিসংঘের সদস্য সংখ্যা প্রায় ২০০ টির মতো হলেও, কোন একটি ক্ষেত্রে শক্তি প্রয়োগের সময় এর নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচ স্থায়ী রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ ক্ষমতা রয়েছে। রাষ্ট্রগুলো হল আমেরিকা, রাশিয়া, চীন, ইংল্যান্ড ও ফ্রান্স। এর পাঁচটি রাষ্ট্রের উপর রয়েছে ভেটো দেওয়ার ক্ষমতা। অর্থ্যাৎ কোন একটি পরিকল্পনার ওপর পাচটি স্থায়ী দেশের একটি রাষ্ট্র ও যদি দ্বিমত পোষণ করে তবে সেই পুরো পরিকল্পনা টি বাদ দিতে হয়। ঠিক এখানে রয়েছে সবচেয়ে বড় গলদ। এই পাচটি সদস্য রাষ্ট্র সবসময় তাদের ভেটো দেওয়ার ক্ষমতা নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করে এসেছে। শান্তি প্রতিষ্ঠার মতো কোনো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়েও যখন এই পাচটি সদস্য রাষ্ট্রের কোন একটি সদস্যের স্বার্থে আঘাত লেগেছে, তখন সে তার ভেটো ক্ষমতা ব্যবহার করে পুরো শান্তি প্রতিষ্ঠার বিষয়টি ভন্ডুল করে দিয়েছে। যার ফলে জাতিসংঘ কখনোই তার কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারেনি।
এরকম অবস্থায় দাঁড়িয়ে একটা প্রশ্নের উত্তর না হতেই পারে," জাতিসংঘের পেছনে কালো পর্দার আড়ালে কি তবে রাঘব বোয়ালদের স্বার্থই জড়িত ছিল? শান্তি প্রতিষ্ঠার বিষয়টি কেবলই একটি ফাঁকিবাজি মাত্র?"