হাতে গন্ধ হবে বলে আগে কখনো তেমন একটা মাছ কাটা হয়নি, মা সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত মাছ কাটলেও আমাকে মাছ কাটার আশেপাশে পাননি।
হাতে কালি লাগবে বলে কখনও কোনো থালা বাসন ধোয়া হয়নি। খাওয়ার প্লেটটি খাওয়া শেষে কখনো পরিষ্কার করে রাখা হয়নি। খেতে বসার আগে পানি এনে কোনোদিন খেয়েছি বলে মনে পড়ে না। তারপরও মা এগুলো নিয়ে কখনো অভিযোগ করেন নি।
বিয়ের পর...! পেঁয়াজ, আলু থেকে শুরু করে রান্নাবান্না থেকে শুরু করে সবই করা হয়, তারপরও কারো না কারো অভিযোগ থেকেই যায়। আগে যে মেয়েটার সামান্য কষ্ট পেলে সারাবাড়ি মাথায় করে ফেলতো, আর সেই এখন সবজি, বড় বড় মাছ, মুরগি কাটতে গিয়ে হাত কেটে ফেললেও ওহ, আহ শব্দ টুকুও করে না।
নিজের মাকে কখনো রান্না করে বলা হয়নি খেয়ে নাও মা। কখনো বলিনি মা তোমার জামা কাপড় গুলো দাও ধুয়ে দেই। নোংড়া দেখা যাচ্ছে বলে সকালে উঠে আগে কখনো সারা বাড়ি ঝাড়ু দেওয়া হয়নি। কখনও বলিনি এসো মা তোমার মাথায় তেল দিয়ে দেই, তোমার মাথায় বিলি কেটে দেই। তারপরও মায়ের কোনো অভিযোগ ছিলনা।
কিন্তু এই কথা গুলো শ্বাশুড়িকে ঠিকি বলা হয়। শ্বাশুড়ি বলার আগেই তার হাতের কাছে পেয়ে যান সবকিছু। একদম যেমন তিনি চান বা তার থেকেও ভালোভাবে। কিন্তু তারপরেও কতো অভিযোগ শ্বাশুড়ি এবং আর বাকি সবার। বউ শ্বাশুড়িকে ভালোবাসে না, মা ভাবে না, আপনজন মনে করে না আরো অনেক কিছু আর কর্কশ ব্যবহার সব সময়ের জন্যে তো আছেই।
তারা এটুকু বোঝেনা একটা মেয়ে তার মা কে কতটা কষ্ট দিয়ে, জ্বালিয়ে, বিরক্ত করে শ্বশুর বাড়ি আসে। আর একটা মেয়ে তার মা - বাবাদের যত কষ্ট, প্যারা দেয় তার বিন্দু মাত্র কষ্ট অনিচ্ছাকৃত ভাবে শ্বশুর বাড়ির কেউ পেলে বাড়িতে কেয়ামতের মতো পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। আর তাই যখনি কষ্ট হয় মায়ের মুখটা সবার আগে চোখে ভেসে উঠে। মায়ের কষ্ট গুলো এখন উপলব্ধি করতে পারি। কত কষ্ট করে মানুষ করেছেন আমাদের। তার জন্যে বড্ড কষ্ট হয় আসলেই তাকে কতটা কষ্ট দিয়েছি। তবে দিন শেষে মা - বাবারও এতে দোষ কম নেই এত ভালোবেসে আদর করে মানুষ না করলেই পারতেন। অন্তত এত কষ্ট পেতে হতো না। ছোট থেকেই সব পরিস্থিতি মেনে নেওয়ার অভ্যাস হয়ে যেত।