আমি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ শামসুজ্জোহা হলের একজন আবাসিক শিক্ষার্থী। আমাদের হলের পাশেই রয়েছে একটি বিশালাকার পুকুর। শহীদ শামসুজ্জোহা হল, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হল ও মাদার বক্স হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা সাধারনত এই পুকুরে গোসল করে। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এই পুকুরে মাছ চাষ করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের যেকোন শিক্ষার্থী এই পুকুরে বিনা বাধায় মাছ ধরতে পারে। গতকাল আমি ও আমার তিনজন রুমমেট মিলে এই পুকুরে মাছ ধরেছিলাম। মাছ ধরার জন্য আমরা মূলত জাল ব্যবহার করেছিলাম। এবং ছোট-বড় মাছ মিলে একদিনেই প্রায় তিন কেজি মাছ ধরতে সক্ষম হয়েছিলাম।
গতকাল সকাল বেলা নাস্তা শেষ করে শুরু হলো মাছ রান্না করার পালা। আমরা চারজন মিলে বেশ কয়েক রকমের খাবারের আইটেম করেছিলাম মাছ রান্নার পাশাপাশি। তবে এই আর্টিকেলে আমি মাছ রান্না করার বিষয়েই লিখবো। বাঙ্গালীরা কিভাবে মাছ রান্না করে খায় সেটার সম্পর্কে ধারণা পেতে পুরো লেখাটি পড়ুন।
মাছের আঁইশ ছাড়িয়ে প্রথমে মাছগুলো সুন্দর করে কেটে নেয়া হয়েছিল। তারপর ভালকরে মাছগুলো ধৌত করে লবণ, মরিচের গুড়া ও হলুদের গুড়া মাখিয়ে নিয়ে কিছুখন রেখে দেয়া হলো। এরপট মাছগুলো সুন্দর করে ভেজে নিয়েছিলাম। তবে মাছ না ভেজেও রান্না করা যায়। আমি ব্যক্তিগত ভাবে মাছ না ভেজে রান্না করলে সেই তরকারি খেতে পারিনা, তাই মাছ রান্না করার আগে আমি মাছ ভেজে নেই।
মাছ ভাজা শেষ হলে কড়াইতে প্রথমে তেল দিয়ে তারপর পেয়াজ কুঁচি গুলো ছেড়ে দিয়ে ভাজতে শুরু করেছিলাম। পেয়াজ কুচির রং টা যখন প্রায় লাল হয়ে যায় তখন অন্যান্য মসলা ছেড়ে দিই। অন্যান্য মসলাগুলোর মধ্যে ছিল, আদা, রসুন, গরম মসলা, মরিচের গুঁড়ো, জিরাগুঁড়া, ধনিয়ার গুঁড়া, হলুদের গুড়া, রাধুনি মাছের মসলা, ধনিয়ার পাতা, কাচা মরিচ ইত্যাদি। মসলা গুলো কিছুক্ষণ গরম করে পানি দেয়া হয় অল্প পরিমাণ। এই পানিসহ মসলা যখন টগবগ করে ফুটতে শুরু করে তখন ভেজে রাখা মাছগুলো ছেড়ে দেয়া হয়েছিল। তারপর মাছগুলো ঢেকে দিয়ে প্রয়োজনীয় সময় মতো জ্বালিয়ে রান্নার প্রক্রিয়া শেষ করা হয়েছিল।
সত্যি বলতে মাছের তরকারি অসাধারণ সুস্বাদু হয়েছিল। আমরা চারজন খুবই তৃপ্তি সহকারে খেয়েছিলাম। মনে রাখার মত অসাধারণ একটি মুহূর্ত ছিলো এটি।