সময়ের সদ্ব্যবহার করা নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য সর্বোত্তম। সময়ের সদ্ব্যবহার যে ব্যক্তি করে না সে জীবনে কখনোই কোনো কিছু করতে পারেনা।
কিভাবে সময় মত কাজ করা সম্ভব:
উদাহরণস্বরূপ:
আমরা ধরে নিই আমাদের কারো সাথে এমন কোন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে যে আমাদেরকে প্রতিদিন একটা জীবন্ত ব্যাঙ খেতে হবে। এবং যাই হোক না কেন এটা খেতেই হবে। এবং এই কাজটি সবথেকে বেশি করা সম্ভব হবে ঘুম থেকে ওঠার পরপরই। কারণ ব্যাঙ খাওয়ার এই যে কাজটি এটি হবে একটা মানুষের প্রতিদিনের সবথেকে কঠিন এবং খারাপ কাজ। সাধারনত এর থেকে আরও খারাপ কিছু হতেই পারে না। আজ তার জন্য এটা সবথেকে বেশি উত্তম সময় হচ্ছে ঘুম থেকে উঠার পর মুহূর্ত কারণ এর থেকে কোনো খারাপ কাজ হতে পারে না এবং এই সকালবেলা আমাদের মন এবং শরীর টা সবথেকে বেশি শক্ত কাজ করতে সক্ষম। এই উদাহরণটা পড়তে বা শুনতে এবং অনুভব করতে একটু খারাপ লাগলেও এই উদাহরণটা এই জন্য এখানে বলা কারণ যে কাজটা আমরা খুব কঠিন মনে করি সেই কাজটা আমাদের দিনের প্রথম কাজ হওয়া উচিত।
কখনো কখনো আমরা গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো কে রেখে দেই ভাবি যে এখন না একটু পরে করব। আগামীকাল করবো এভাবে অজুহাত দিতে থাকে। এটা আসলো আসলে কিছুই না এটা শুধু আমাদেরকে মানসিকভাবে কষ্ট দিতে থাকে আর ভিতরে ভিতরে আমরা চিন্তা করতে থাকি এটা কিভাবে সম্ভব কিভাবে করব! দিনের শুরুর দিকে অর্থাৎ সকালবেলা আমাদের কঠিন কাজ গুলো করার আরেকটি কারণ হচ্ছে ওই সময় আমাদের শারীরিক-মানসিক কর্মক্ষমতা অনেক বেশি থাকে দিনের অন্যান্য সময়ের থেকে। এবং ওই সময় যদি ব্যাঙ খাওয়ার মতো কোনো কঠিন কাজ আমরা শেষ করতে পারি, তাহলে কর্মস্পৃহা টা আরো বেড়ে যায়।এবং এর পরে দেখা যায় দিনের অন্য কোনো কাজই আর বোঝা মনে হয় না; খুব সহজে করে ফেলা সম্ভব হয় এবং সঠিকভাবে।
সতেজ অনুভূতি:
যখন আমরা কোনো কঠিন কাজ শেষ করে ফেলি তবে সাধারণত দেখা যায় আমাদের মন মেজাজ ভালো হয়ে যায়। এক প্রকার প্রশান্তি অনুভব করতে পারি। এটা এই কারণে হয় যে তখন আমাদের ব্রেইন অ্যান্ডোরপিন(Endorpin) নামক নাম একটি অংশ আমাদের মানসিক প্রশান্তি এনে দেয়। আমাদের উচিত একটা কঠিন কাজ শেষ করার পরে এই যে আনন্দ অনুভব হয় এটাকে একটা বিষয়ে পরিণত করা। কারণ সময়কে যথাযথভাবে ব্যবহার করে প্রতিদিনের গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো কে সময়ের মধ্যে শেষ করা। আর এটা করতে শুরু করলে মানসিক শক্তি বৃদ্ধি পাবে এবং আত্মবিশ্বাস ও অনেক গুণে বেড়ে যাবে। আর একটা গুরুত্বপূর্ণ কথা হচ্ছে আমরা কিন্তু সবাই জানি আত্মবিশ্বাস একটা কাজে সফলতা আনতে অনেকাংশে সহযোগিতা করে থাকে। আত্মবিশ্বাস যে ব্যক্তির নেই সে ব্যক্তি কখনো তার নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারে না।
যেভাবে যথাসময়ে করা সম্ভব:
প্রথম পদক্ষেপ:
প্রথমত আমাদের কি স্থির হতে হবে এবং সিদ্ধান্ত হতে হবে যে আসলে আমাদের লক্ষ টা কি?
দ্বিতীয় পদক্ষেপ:
এবং তারপরে সিদ্ধান্ত নিতে হবে আসলে আমরা কি খাচ্ছি আমাদের উদ্দেশ্যটা কি?
তৃতীয় পদক্ষেপ:
শুধুমাত্র দেখা যায় তিন থেকে চার পার্সেন্ট লোক তাদের নির্দিষ্ট লক্ষ্যকে কাগজে লিখে রাখে। যার জন্য দেখা যায় এই লোকগুলোর তার নির্দিষ্ট লক্ষ্যকে অর্জন করার সুযোগটা অন্যদের তুলনায় একটু বেড়ে যায়। কারণ আমাদের ব্রেইন কোন তথ্যকে সংরক্ষণ করার করার জন্য অনেক বেশি উপযুক্ত তা কিন্তু ঠিক নয়। সুতরাং আমাদের উচিত আমাদের ধারণা তথ্যগুলো এবং আমাদের কাজের তালিকা করে একটা কাগজে লিপিবদ্ধ করে রাখা।
চতুর্থ পদক্ষেপ:
এবং লিখে রাখা এই কাজের তালিকা গুলোর সঙ্গে একটা নির্দিষ্ট সময় নির্ধারিত করা উচিত যে সময়ের মধ্যে এই কাজটি শেষ করতেই হবে। নির্ধারিত কোন সময় না থাকলে ওই কাজ সময়ের মধ্যে এবং উপযুক্ত সময়ে শেষ করা সম্ভব হয়ে ওঠেনা।
পঞ্চম পদক্ষেপ:
আমাদের কোন কাজটি সম্পন্ন করতে হলে, এরপর প্রতিটা পদক্ষেপ তালিকাভুক্ত করতে হবে। আগে থেকে সাজিয়ে নিতে হবে কোন টার পর কোনটা করতে হবে। যতগুলো পদক্ষেপ মাথায় আসে সব গুলো লিখে রাখতে হবে। না হলে দেখা যাবে যখন কাজ শুরু করা হবে তখন এর ভিতরে গুরুত্বপূর্ণ কিছু পদক্ষেপ বাকি থেকে যাবে।
ষষ্ঠ পদক্ষেপ:
আমাদের করিপরিকল্পনায় পদক্ষেপ নিতে হবে। পরিকল্পনা করে বসে থাকলে চলবে না কাজ শুরু করে দিতে হবে। কোন কাজ শুরু না করলে শেষ হবেনা তাই মূল্যবান সময় নষ্ট না করে শুরু করতে হবে তাহলেই লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব হবে সময়ের মধ্যে।
সপ্তম পদক্ষেপ:
পরিকল্পনা অনুযায়ী নিজস্ব লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য এ পর্যন্ত যতগুলো কাজের তালিকা করা হয়েছে কাজ শুরু করতে গিয়ে যদি কোনো জটিলতা অনুভব হয়, তাহলে সেইটা সমাধান করার চেষ্টা করতে হবে।
আমরা যখন প্রতিদিন সকালবেলা উঠে আমাদের মোবাইল ফোনটা হাতে নেই; তখনই আমাদের সামনে চলে আসে কিছু পরিশ্রম সফল ব্যক্তির জীবনী তাদের জীবন চলার ধরন। আর তখন কিছু সময়ের জন্য আমাদের মাথায় কাজ করে আমরা যদি এদের মতো হতে পারতাম। বা অনেকে হয়তবা চিন্তা এবং পরিকল্পনা করে বসেন যে আমি কিছু একটা করব। কিন্তু এই চিন্তাটা চিন্তাই শুধু। আমরা শুধু কল্পনা প্রিয় মানুষকে শুধু দেখি আর তার বিষয়গুলো সাময়িক সময়ের জন্য ভিতর থেকে উপলব্ধি করতে পারে পরক্ষণে আমাদের মন থেকে সেটা সেরে ফেলে দিই। কারণ আমরা পরিশ্রম করতে রাজি না। এই যে সকল ব্যক্তি গুলোকে আমরা দেখতে পারি এদের এই সফলতার পেছনে রয়েছে অক্লান্ত শ্রম যাদের একটা সেকেন্ড একটা মিনিট অযথা বাইক করার সময় ছিল না।
অন্যের সফলতা দেখে সমালোচনা না করে নিজে কিছু করতে চাইলে আজ থেকে লেগে পড়ুন। কাগজ আর কলম হাতে নিন এবং নির্দিষ্ট তালিকাভুক্ত করুন এখন কি করবেন। এখন তো এই দুই ঘন্টা সময় নষ্ট হবে কিন্তু পরবর্তীতে আপনার হাজারো ঘন্টা এটা বাঁচিয়ে দিবে।
প্রিয় বন্ধুরা,
ধন্যবাদ সকলকে আমার লেখাটি পরিদর্শন করার জন্য।