কটেজ, মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (সিএমএসএমই) খাতের জামানতবিহীন ঋণের ঝুঁকি নেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এই স্কিমের আওতায় বিতরণ করা কোনো ঋণ শেষ পর্যন্ত খেলাপি হলে তার ৮০ শতাংশ পর্যন্ত অর্থ বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে পাবে সংশ্নিষ্ট ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে গত জুলাই মাসে গঠিত দুই হাজার কোটি টাকার তহবিল থেকে এ অর্থ দেওয়া হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের জারি করা ‘ক্রেডিট গ্যারান্টি স্কিম’ পরিচালনার নীতিমালায় এ কথা বলা হয়েছে। সিএমএসএমই খাতের ঋণে ব্যাংকগুলোকে আগ্রহী করতে গত ২৭ জুলাই দুই হাজার কোটি টাকার ক্রেডিট গ্যারান্টি স্কিম গঠন করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এখন কীভাবে ব্যাংকগুলোকে নিশ্চয়তা দেওয়া হবে তার জন্য নীতিমালা জারি করা হলো।
মূলত করোনাভাইরাসে ক্ষতিগ্রস্ত সিএমএসএমই খাতের উদ্যোক্তাদের জন্য গঠিত ২০ হাজার কোটি টাকার তহবিল থেকে ঋণ বিতরণে ব্যাংকগুলোর অনীহার বিষয়টি সামনে আসায় ক্রেডিট গ্যারান্টি স্কিম গঠনের উদ্যোগ নেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। নীতিমালায় বলা হয়েছে, একটি ব্যাংক সিএমএসএমই খাতে যে পরিমাণ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করবে তার ৩০ শতাংশ পর্যন্ত এ স্কিমের আওতায় জামানতবিহীন ঋণ দিতে পারবে। স্কিমের আওতায় বিতরণ করা ঋণ কোনো কারণে খেলাপি হলে তার ৮০ শতাংশ ঝুঁকি নেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, কোনো ব্যাংক ২০২১ সালে সিএমএসএমই খাতে মোট ১০০ কোটি টাকা ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করল। এর মধ্যে ক্রেডিট গ্যারান্টি স্কিমের আওতায় ওই ব্যাংক ৩০ কোটি টাকা বিতরণ করতে পারবে। কোনো কারণে এর মধ্যে পাঁচ কোটি টাকা খেলাপি হলো। বাংলাদেশ ব্যাংক এই খেলাপির ৮০ শতাংশ তথা চার কোটি টাকা ওই ব্যাংককে দিয়ে দেবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক এই ঝুঁকি নেবে কিছু শর্তের বিনিময়ে। এই স্কিমের আওতায় বিতরণ করা ঋণের বিপরীতে প্রথম বছরে গ্রাহককে নির্ধারিত সুদহারের অতিরিক্ত ১ শতাংশ হারে পরিশোধ করতে হবে। যথাসময়ে অর্থ আদায় না হলে দ্বিতীয় বছর থেকে যতদিন ওই ঋণ অনাদায়ী থাকবে, ব্যাংকগুলোকে একটি অংশ এই তহবিলে জমা দিতে হবে।
এ ক্ষেত্রে যেসব ব্যাংকের মোট খেলাপি ঋণের হার ৫ শতাংশের নিচে তাদের অনাদায়ী ঋণের দশমিক ৫ শতাংশ হারে দিতে হবে। আর ৫ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশ পর্যন্ত খেলাপি থাকা ব্যাংকগুলোকে দশমিক ৭৫ শতাংশ হারে অর্থ জমা দিতে হবে। তবে বেসরকারি ও বিদেশি মালিকানার যেসব ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ১০ শতাংশের বেশি, তারা এই স্কিমের আওতায় নিশ্চয়তা পাবে না। অবশ্য সরকারি ব্যাংকে যে হারেই খেলাপি ঋণ থাকুক তারা এই স্কিমের আওতায় চুক্তিবদ্ধ হতে পারবে