শুরু হবে সকাল ১১টা থেকে। কিন্তু তার আগে যে কাকলির অনেক কাজ! তাড়াতাড়ি উঠে স্নান করে, শাড়ি পরে, গয়না পরে, চুলে খোঁপা বেঁধে ফুল লাগিয়ে কাকলি পুরো তৈরি। সকাল ৬টার আগেই তার সব কিছু করা হয়ে গিয়েছে। কারণ ৬টা থেকে ৭টার মধ্যে সকালের রোদে সে বেশ কিছু ছবি তুলবে। এই সময়েই যে সূর্যের আলোয় সবচেয়ে ভাল ছবি ওঠে। তার পর সেগুলি ইস্টাগ্রামে দিতে হবে না! কাকলি প্রত্যেক বুধবার নিয়ম করে এ ভাবে ছবি তোলে। প্রত্যেক বুধবারই তার পরনে থাকে শাড়ি।
রাতুলের প্রিয় বন্ধুর জন্মদিন। সেই উপলক্ষে বন্ধুরা মিলে পার্ক স্ট্রিটের এক নতুন রেস্তরাঁয় খেতে যাওয়া হবে। রাতুলও তাই তাড়াতাড়ি তৈরি হয়ে বাড়ি থেকে বেরোনোর চেষ্টা করছে। আলমারি খুলেই এক বার সে টি-শার্টগুলিতে চোখ বুলিয়ে নিল। কোন টি-শার্টই পরতে ইচ্ছে না করায়, সে খাদি থেকে কেনা পাঞ্জাবীটি গায়ে গলিয়ে বেরিয়ে পড়ে।
দু’টির কোনওটিই বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এক সময়ে যে কমবয়সি বাঙালি শাড়ি-ধুতি পাঞ্জাবি পরতেই চাইত না, এখন সেই বাঙালিই বার বার সাবেক সাজ বেছে নেয়। তবে কোনও গতে বাঁধা, পত্র-পত্রিকার প্রচ্ছদে দেখা সাজ তাদের পছন্দ নয়। বরং সাবেক সাজের মধ্যেও বাঙালি প্রতিনিয়ত স্বতন্ত্রতা খুঁজে চলেছে।
বেশ কয়েক দশক আগে বেশির ভাগ কলেজ পড়ুয়াকে দেখা যেত শাড়ি আর ধুতি-পাঞ্জাবীতেই। নরম সুতির কাপড়ের পাঞ্জাবী আর সুতি কিংবা সিন্থেটিক কাপড়ের শাড়ি তখন ছিল রোজের পোশাক। তার পর শাড়ির বদলে চলে এল সালোয়ার কামিজ আর ধুতির বদলে পাজামা। ধীরে ধীরে নানা রকম পশ্চিমী পোশাক এসে জুড়ল আমবাঙালির আলমারিতে। কমবয়সিরা নানা ধরনের ড্রেস, ট্রাউজার্স, টপ পরা শুরু করল। নব্বইয়ের দশকে তা পাকাপাকি ভাবে জিন্স-টি-শার্টের বদলে গেল, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে। তার পর বহু দিন কমবয়সিদের শাড়ি বা ধুতিমুখো করা যায়নি। ডেনিম ছিল যে কোনও সময়ে পরার জন্য আদর্শ। মেয়েরা আরও অনেক বিকল্প পেয়ে গেল। কেউ বেছে নিল মিনি স্কার্ট, আবার কেউ বেছে নিল ড্রেস। তার পর বেশ কিছু বছর বাঙালি সমাজে এক হাহাকার শোনা গেল, ‘শাড়ি এখন আর কেউ পরতে চায় না। ধুতি পরার চল বোধ হয় এ বার উঠেই যাবে’! কিন্তু বাস্তবে ছবিটি তেমন হল না। সময় বদলাল। আর সেই সঙ্গে বদলাল বাঙালির সাজের ধরনও। ফের শাড়ি-ধুতি-পাঞ্জাবীর দিকে ঝুঁকল বাঙালি। ১৬ থেকে ৬০, সব বয়সের বাঙালিই এখন আগের তুলনায় শাড়ি-ধুতিতে অনেক বেশি স্বচ্ছন্দ।
পুজো, বিয়েবাড়ি বা বিশেষ কোনও অনুষ্ঠান ছাড়া এক সময়ে শাড়ি পরার চল তেমন ছিল না। কিন্তু ইদানীং অনেক মেয়ে কলেজের ক্লাস করতেও শাড়ি পরে যায়। রাস্তাঘাটে দিব্যি স্নিকার্স আর শাড়িতেই বেরিয়ে পড়ে। রং মিলিয়ে ব্লাউজ না পাওয়া গেলে টি-শার্ট কিংবা কুর্তির সঙ্গেও কায়দা করে শাড়ি পরে নেয়। হাতের কাছে যা গয়না থাকে, তাই দিয়ে সাজা হয়ে যায়। না থাকলে বেল্টও চলে! সাজগোজের ক্ষেত্রে মেয়েরা অনেক বেশি সাবলীল এখন। হালফ্যাশনের সব নিয়ম মানতেই হবে, এমন মনে করে না। বরং নিজেরাই নতুন নিয়ম তৈরি করে।
Hi, @banglakhobor
Make an introduction post in the community to get yourself labeled as Verified Member.
Make sure you add a verification picture in your introduction post
Verification Picture:
Take a selfie while holding a page written Beauty of Creativity with the date and your Steemit username
for more information join us on Discord
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit