রংপুর অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী খাবার সিদল

in hive-144064 •  last year 

"বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম"

আশা করি সবাই ভালো আছেন আল্লাহর রহমতে

আমার ইউজার আইডি হলো @gulshanpupry

কেমন আছেন সবাই? আলহামদুলিল্লাহ আমিও আল্লাহর রহমতে অনেক ভালো আছি। আমি আজকে Beauty of Creativity কমিউনিটিতে আমার পছন্দের খাবার সিদল নিয়ে আপনাদের সকলের মাঝে শেয়ার করতে যাচ্ছি। সিদল হলো রংপুর অঞ্চলের নিজস্ব খাবার।
বাঙালিরা খাদ্যরসিক। প্রত্যেক মানুষের নিজস্ব কিছু জনপ্রিয় খাবার থাকে। সিদল একটি বহুল জনপ্রিয় খাবার উত্তরাঞ্চলের রংপুর বিভাগের আটটি জেলার মানুষের কাছে।

17.07.47.jpg

বিভিন্ন ধরণের ছোট মাছ আর দেশি কালো কচু /সাদা মান কচুর ডাটা মিশিয়ে মন্ড তৈরি করে সিদল তৈরি হয়।
সিদল ভর্তা , শোল মাছ দিয়ে সিঁদলের তরকারি অতুলনীয় স্বাদের। উত্তরাঞ্চলের গ্রামীণ নারীরা হাতে তৈরী করে থাকে এই সিদল। সিদল তৈরী করা অনেক কঠিন কাজ ।

17.07.45.jpg

একদিনে তৈরী করে খাওয়া যায় না। সিদল তৈরি থেকে খাওয়ার উপযোগী হতে সময় লাগে অনেক দিন। সারা বছর সিদল তৈরি করা গেলেও ফাল্গুন-চৈত্র মাস সিদল তৈরির জন্য ভালো কারণ এই সময় বাতাসে আদ্রতা কম থাকে।

 17.07.46.jpg

সিদল তৈরি প্রণালী : ছোট মাছ গুলিকে প্রথমে পানিতে ভালো করে ধুয়ে ৭-৮ দিন কড়া রোদে শুকিয়ে নিতে হয়। রোদে শুকানো মাছের শুঁটকি গুলো মচমচে হলে ঢেঁকি/হামামদিস্তায় পার দিতে হয় অথবা শীল-পাটায় পিষে গুঁড়া করে নিতে হয়। এরপর কচুর ডাটা গুলো ছোট ছোট করে কেটে ধুয়ে পানি ঝরিয়ে নিয়ে কাঁচা অবস্থায় ঢেঁকি/হামামদিস্তায় অথবা শীল-পাটায় মন্ড করে নিতে হয়। এরপর কচুর ডাটার মন্ডের সাথে শুঁটকি মাছের গুঁড়া, আদা, রসুন, হলুদ গুঁড়া, সরিষার তেল সহ সব উপকরণ দিয়ে মন্ডটিকে খুব ভালো করে মিশিয়ে হাতের তালুর সাহায্যে চ্যাপ্টা করে ১৭-১৮ দিন রোদে শুকাতে হয়। রোদে শুকানোর সময় সিদল গুলিকে পাতলা করে ছড়িয়ে দিতে হয় যাতে সিদল দ্রুত শুকিয়ে যায়। সিদলের দুই পাশ উল্টিয়ে পাল্টিয়ে খুব ভালো করে শুকিয়ে নিতে হয়। সিদল শুকিয়ে শক্ত হলে সিদল খাওয়ার উপযোগী হয়। সিদল সংরক্ষনের জন্য শুকনো পাত্রে ছাইয়ের মধ্যে সিদল রাখলে ছোট ছোট পোকা আক্রমণ করে না। বেশি দিন সংরক্ষণের জন্য প্লাস্টিকের বক্স, টিনের কৌটা অথবা কাঁচের মুখ বন্ধ পাত্রে করে ফ্রিজে রাখলে ২-৩ বছর রেখে খাওয়া যায়। তবে মাঝে মাঝে রোদ দেখালে সিদল ভালো থাকে।

17.07.48.jpg

সিদল ভর্তার পদ্ধতি: সিদল সরাসরি আগুনে পুড়িয়ে বা তাওয়ায় খুব ভালো করে ভেজে নিতে হবে। এরপর পোড়া বা ভাজা অংশ গুলো ফেলে দিয়ে পানিতে ভালো করে ধুয়ে বাটনায় রাখতে হবে। (বাটনা হলো উত্তরাঞ্চলের মানুষের কাছে খুব পরিচিত ভর্তা করার পাত্র। বাটনায় খুব সহযে ভর্তা করা যায়)। চুলায় একটি পাত্রে কাঁচা মরিচ আর রসুন কুঁচি শুকনো করে ভেজে নিয়ে বাটনায় সিদলের সাথে পিষে নিয়ে এর মধ্যে লবণ, সরিষার তেল আর পিয়াজ কুঁচি দিয়ে মিশিয়ে মজাদার ভর্তা তৈরি হয়। গরম ভাতের সাথে সিদল ভর্তা তৃপ্তির খাবার।

"Newcomers' Community" Achievement Verified Link :

Achievement-1

Thank you

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

আপু রংপুরের ঐতিহ্যবাহী খাবার সিদলের নাম শুনেছি। তবে কখনো খাওয়ার সুযোগ হয়নি। আপনার ফটোগ্রাফির মাধ্যমে দেখতে পেয়ে অনেক ভালো লেগেছে।