আসসালামু আলাইকুম

in hive-144064 •  3 years ago  (edited)

***হ্যালো বন্ধুরা ..|| আমি জুবাইদুল। আমি বাংলাদেশের নাগরিক***

***আমার ইউজারনেম @jubsjubaidul30 . আজ আমার লেখা একটি গল্প শেয়ার করছি। আশা করি ভালো লাগবে সবার***

***গল্পের নাম শান্ত দিঘি***

আঁকাবাঁকা মেঠোপথে কিছুদূর হাটতেই দেখা পেলাম স্মৃতিবিজড়িত সেই শান্ত দীঘির জল।

এই দীঘির জল বাতাস আমার অনেক দিনের চেনা। সামনে চোখ মেলে তাকাতেই দেখলাম সেই খেজুরের গাছ দুটি। কুয়াশার চাদরে ঢাকা খেজুরের গাছের সামনে কে যেন উকি দিচ্ছে। মনে হচ্ছে চেনা কেউ হবে। কাছাকাছি আসতেই মামুন বললো, আরে কবি সাহেব।

আমি বললাম থাক আর বাহবা দিতে হবে না, কেমন আছিস তাই বল?

মামুন বললো, ভালো আছি। বাবুলের চায়ের দোকান থেকে শুনলাম তোদের ইউনিভার্সিটি বন্ধ হয়ে গেছে। বাড়িতে আসলি কবে?

"গতকাল রাত্রে আসছি। তুই ঠিকই শুনেছিস। কভিড ১৯ এর কারণে ক্লাস পরীক্ষা সব বন্ধ হয়ে গিয়েছে। আমাদের গ্রামের পরিবেশ অনেক বদলে গেছে দেখছি। চলো মামুন একটু গ্রামটা ঘুরে দেখে আসি।" আমি বললাম। " দুজনে মাঠের ভেতরের সেই চিকন রাস্তায় কিছুদুর হাটছিলাম। হঠাৎ সে বললো "ঐ যে দেখা যায় সরিষার ক্ষেত সেটা আমাদের।" বাহ অনেক সুন্দর লাগছে তো সরিষার ফুলগুলো। " আমি বললাম।সে বললো, " অনেক কাজ আছে, আসিরে। আবার দেখা হবে। " আমি তাকে যেতে বলায় সে চলে গেল। হাঁটতে হাঁটতে অনেক বিষয়ে কথা হলো মামুনের সাথে। আমিও বাড়ির উদ্দেশ্যে হাটা ধরলাম। শফিক চাচার বাড়ির সামনে আগুন জ্বালিয়েছে। আগুনের কাছে দাড়িয়ে নিজেকে গরম করে বাড়িতে প্রবেশ করলাম। শফিক চাচার বড় ছেলে বাবুলের চায়ের দোকানটা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তাদের সংসারের অভাব দেখা দিয়েছে। বাড়িতে ঢুকতেই ইলিশ মাছের গন্ধ চলে এলো নাকের ভেতরে। মা একবার খাওয়ার জন্য ডাক দিতেই চলে এলাম খেতে। পাঁচজনের সংসারে আমি বড় ছেলে। খাচ্ছি এবং ভাবছি কিভাবে আমার প্রতিভার বিকাশ ঘটাবো। বিকেলে একটু বাজারের দিকে যাওয়ার পথে দেখলাম জাবির স্যার মন খারাপ করে বসে আছে পুকুর পাড়ে। চাচা আমাদের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন। কাছে আসতেই আমি জানতে চাইলাম, " কেমন আছেন স্যার? স্যার চোখের পানি মুছে আমাকে উত্তর দিলেন,"ভালো আছি স্রষ্টার অশেষ রহমতে। " চাকুরির মেয়াদ শেষ হয়ে গিছে সাত বছর আগেই। শেষ সম্বল পুকুর বিক্রি করতে হবে রাফিয়ার হৃদপিণ্ডের সার্জারির জন্য। রাফিয়া স্যারের পাঁচ সন্তানদের মধ্যে একমাত্র ছোট মেয়ে।

রাফিয়ার জন্য স্যারের চোখের জল যে নিরবে শান্ত দীঘির জলের সাথে একাকার হয়ে যাছে তা আমি ভালোই উপলব্ধি করতে পারছি। আমার মতো কবিদের অনুভূতি কুয়াশার চাদরে এক ফোটা শিশির বিন্দুর ন্যায়।

পরিবেশ যদি এমন থাকে তাহলে জন্ম নিতেও পারে মধুময় শান্ত দীঘি।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!