পৃথিবীতে অনেক রকমের প্রাণী থাকলেও যে প্রাণীগুলো গৃহে পালন করার জন্য মানুষ নির্ধারণ করে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হচ্ছে,
বিড়াল, কুকুর, খরগোশ ,গিনিপিগ, বিভিন্ন রকমের পাখি যেমন ময়না, টিয়া, বাজরিগার, কাকাতোয়া ,শালিক ,ঘুঘু ইত্যাদি।
সবচাইতে কম যত্নের মধ্যে নিয়ন্ত্রণ করা যায় হচ্ছে বিভিন্ন রকমের গোল্ড ফিস ।
কিন্তু গৃহপালিত অনেকগুলো প্রাণীর মধ্যে আমার কাছে সবচাইতে সুন্দর এবং পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন পাখি হিসেবে মনে হয় কবুতর।
অন্যান্য পাখিগুলো পালন করার ক্ষেত্রে একটু কষ্ট বেশি থাকে।
যেমন এগুলোর প্রতিনিয়ত পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন দায়িত্ব আপনাকে নিজেকেই করতে হয়।
এছাড়াও অন্যান্য পাখিগুলোকে একটা নির্ধারিত খাচায় আপনাকে সব সময়ের জন্য বন্ধ করে রাখতে হয়।
কারণ এগুলোকে ছেড়ে দিলে পালিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে ।
ময়না ,টিয়া, শালিক পাখিগুলো কিন্তু খাঁচায় বন্দি না রাখলে আপনি উন্মুক্তভাবে এগুলোকে পালন করতে পারবেন না।
এ পাখিগুলোকে যখন আপনি ছেড়ে দিবেন তখন এই পাখিগুলো কিন্তু ঠিকই জঙ্গলের অন্যান্য পাখিগুলোর সাথে পালিয়ে যাবে এবং আর ফিরে আসবে না।
কিন্তু কবুতর এমন নয় আপনি যদি কবুতরকে একবার পোষ মানিয়ে নিতে পারেন কিংবা আপনার যে স্থানটা রয়েছে সেই স্থানে যদি সে একবার বসবাস করা শুরু করে দেয় তাহলে সে কিন্তু আর কখনোই সেই স্থান ছেড়ে পালাবে না।
সবসময়ের জন্য সেই স্থানে থেকে যাবে ।
বুঝাই যাচ্ছে যে কবুতর হচ্ছে সবচাইতে নিরাপদ প্রাণী ।
কবুতরের পেছনে কিন্তু আপনাকে খুব একটা বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় না ।
অন্যান্য পাখিগুলো যতটা দাম দিয়ে কিনতে হয় তত দাম দিয়ে আপনি তিন থেকে চার জোড়া কবুতর একসাথে কিনে নিয়ে আসতে পারবেন।
প্রথমে যদি আপনি দুই জোড়া কবুতর নিয়ে লালন পালন করা শুরু করেন ।
ঠিকমতো যদি আপনি এগুলাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন তাহলে এই দুই জোড়া থেকেই কিন্তু আপনি ছয় মাসের মধ্যে ১০ জোড়া কবুতর পেয়ে যাবেন।
কারণ কবুতর প্রতি মাসে এক জোড়া ডিম এবং একজোড়া বাচ্চা দেয় ।
আপনাকে শুধু কবুতর যে বাসায় থাকবে সেই বাসা একটু মজবুত করে তৈরি করতে হবে এবং এই বিষয়টা আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে যেন বাহিরের কোন প্রাণী এসে কবুতরের উপর আক্রমণ করতে না পারে ।
আপনি যদি কবুতরের নিরাপত্তারা নিশ্চিত করতে পারেন তাহলে কবুতর থেকে আপনি লাভবান হবেন ।
কবুতর যেহেতু পালিয়ে যাওয়ার কোন ভয় নেই।
এখানে যে বিষয়টা খেয়াল রাখতে হয় সেটা হচ্ছে অন্য প্রাণী যেন আপনার কবুতরকে শিকার করে নিয়ে না যায় ।
বিশেষ করে বিড়ালের উপদ্রব থেকে যদি আপনি রক্ষা করতে পারেন তাহলেই আপনি কবুতর পালনের ক্ষেত্রে লাভবান হতে পারবেন।
এছাড়া কবুতর কিন্তু তার যে নির্ধারিত জায়গা রয়েছে সেই নির্ধারিত জায়গা ছাড়া অন্যান্য জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে না ।
কবুতরের জন্য আপনি যে রুমটা নির্ধারণ করেছেন কিংবা যে স্থানে কবুতর রাখবেন সে স্থানটা আপনি মাসে কিংবা ১৫ দিন পরপর একবার পরিষ্কার করলেই হবে।
আপনি একজন উদ্যোক্তা হিসেবে ব্যবসা করতে পারবেন কবুতর পালনের মাধ্যমে।
যদি আপনি সুন্দর করে কবুতর লালন পালন করতে পারেন তাহলে আপনি যদি ১০ জোড়া কবুতর নিয়ে শুরু করেন তাহলে এর মাধ্যমে আপনি প্রতি মাসে একটা ভালো ইনকাম করতে পারবেন।
কারণ কবুতর প্রতি মাসে এক জোড়া বাচ্চা দেয় সেই বাচ্চা কিন্তু আপনি বাজারে বিক্রি করে মোটামুটি ভালো একটা অর্থ সংগ্রহ করতে পারবেন ।
আপনার যদি ভাল মানের ২০ জোড়া কবুতর থাকে তাহলে প্রতি ২০ জোড়া থেকে আপনি প্রতি মাসে ২০ জোড়া করে বাচ্চা পাবেন। বাচাগুলো 350- 400 টাকা পর্যন্ত বাজারে বিক্রি করতে পারবেন।
আর আপনি যদি একটু ভালো কোয়ালিটির কবুতর লালন পালন করেন সেই ক্ষেত্রে কিন্তু আপনি বড় সাইজের কবুতরের গুলোকে একটু দাম দিয়েও কিন্তু বিক্রি করতে পারবেন।বিশেষ করে আপনার কাছে যদি গিরিবাজ, সিরাজি, ময়ূরপঙ্খী ইত্যাদি ভালো কোয়ালিটির কবুতরগুলো থাকে ।
তাহলে আপনি এগুলোর বাচ্চাগুলোকে যদি বড় করতে পারেন তাহলে প্রতি তিন মাস চার মাস পর পর এগুলোর বাচ্চাগুলোকে বিক্রি করে আপনি ভালো একটা এমাউন্ট জমা করতে পারবেন।
সুতরাং বুঝা যাচ্ছে কবুতর লালন পালন এবং কবুতরটাকে যদি আপনি বাণিজ্যিক আকারেও যদি করতে চান তাহলে সেটা আপনার জন্য অন্যান্য প্রাণীর ক্ষেত্রে একটু সহজ ।
এছাড়াও কবুতর কিন্তু অন্যান্য পাখিগুলো তুলনায় দেখতে সুন্দর । গিরিবাজ কবুতর কিন্তু খুবই মিশুক।
আপনি যদি সুন্দর ভাবে তাদের সঙ্গে মিশতে পারেন তাহলে এরা আপনার সঙ্গে একদম আপনার বন্ধুর মত লেগে থাকবে ।
গিরিবাজ কবুতরকে আপনি ঠিকমতো লালন পালন করতে পারলে এরা আপনার পাশে পাশে থাকবে আপনার গায়ে উঠবে আপনার হাতে এসে বসবে ।
আগে যখন যোগাযোগের ব্যবস্থা এত উন্নত ছিল না তখন কিন্তু কবুতরের মাধ্যমে এক শহর থেকে অন্য শহরে বিভিন্ন তথ্য আদান প্রদান করা হতো।
আর এই তথ্য আদান প্রদান করার ক্ষেত্রে বেশিরভাগ সময় কিন্তু গিরিবাজ কবুতরকেই ব্যবহার করা হতো ।
গিরিবাজ প্রজাতির যতগুলোই কবুতর রয়েছে তারা অনেকক্ষণ পর্যন্ত আকাশে উড়তে পারে। অর্থাৎ ঘন্টার পর ঘন্টা তারা কোন জায়গায় না দাঁড়িয়ে বিশ্রামহীন ভাবে আকাশে উড়তে থাকে। তাই এই শ্রেণীর কবুতরগুলোকে বিশেষ কায়দায় প্রশিক্ষণ দিয়ে তখনকার সময়ে যাবতীয় তথ্য আদান প্রদান করা হতো এবং বিভিন্ন সার্কাস কবুতরকে দিয়ে বিভিন্ন রকমের খেলা দেখানো হয়।
তাই আপনি যদি একজন অ্যানিমেল লাভার হন এবং আপনি যদি শখের বসে বিভিন্ন প্রাণী আপনার গৃহে লালন পালন করতে চান তাহলে কবুতরটাও আপনার জন্য গ্রহণযোগ্য প্রাণী বলে আমি মনে করি।
আমার নিজের কাছেও কবুতর ছিল বর্তমানে আমি যেহেতু এলাকা পরিবর্তন করেছি তাই কবুতরগুলোকে বিক্রি করতে হয়েছে।
তবে খুব শিগরি আবার নতুন করে কবুতর পালন করা শুরু করব ইনশাল্লাহ।
আশা করি আপনাদের বিষয়টি ভালো লেগেছে পুনরায় আরও একটি নতুন ব্লগ নিয়ে আপনাদের সামনে উপস্থিত হব ।
ইনশাল্লাহ
Thank you for sharing posts, improve the quality of your posts and stay original.
Review |
Determination of Club75 Status refers to the https://steemworld.org/transfer-search Web-based Application
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit