আব্বু যেহেতু সরকারি চাকরিজীবী ছিল সেই সুবাদে আমরা কক্সবাজারে ছিলাম অনেকদিন যাবত ।এছাড়াও কক্সবাজারে আমাদের নানুর বাড়ি । আমি কক্সবাজারে জন্মগ্রহণ করেছিলাম। সে ১৯৯৭ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ এই কয়েক বছর আমরা কক্সবাজারে বসবাস করেছি। অতঃপর গত বছর ডিসেম্বরে কক্সবাজার শহরের ছেড়ে চলে গিয়েছিলাম আমাদের গ্রামের বাড়ি আনোয়ারা পারকির গ্রামে ।আব্বুর জন্মস্থান যেহেতু আনোয়ারাতে সুতরাং আব্বু সবসময় চেয়ে ছিল তার গ্রামের বাড়িতে ফিরে যেতে অর্থাৎ বাবার বাড়িতে।
কর্মজীবন শেষ করে বাবা চেয়েছিল তার কাছের মানুষজন আত্মীয়স্বজনের পাশে একটি বাড়ি নির্মাণ করবে এবং সেখানে জীবনের শেষ সময় গুলো কাটাবে। যেহেতু আব্বু সেটা ইচ্ছা করেছে আমরাও আমাদের বাবার সন্তুষ্টির জন্য গ্রামে চলে গেলাম এবং সেখানে বাড়ি নির্মাণের ক্ষেত্রে সম্মতি পোষণ করি ।কারণ দিনশেষে আপনার পরিবারের সন্তুষ্টি আপনার জন্য সবকিছু।
আমরা এত পরিশ্রম এবং এত কাজ করি সবকিছু একটাই কারণ সেটা হচ্ছে পরিবারের প্রিয় মানুষগুলোর মুখে হাসি দেখতে পাওয়া এবং তাদেরকে একটু শান্তিতে রাখা ।গ্রামে আসে এভাবে থাকার ইচ্ছা না থাকলেও যেহেতু বাবার সন্তুষ্টি সেখানে রয়েছে আমরাও সেখানে থাকার ইচ্ছা পোষণ করলাম ।কারণ বাবার সন্তুষ্টির মধ্যেই আমাদের সন্তুষ্টি রয়েছে। মহান আল্লাহর ইচ্ছায় আমার বাবা দীর্ঘকর্ম জীবনের যে অর্থ গুলো জমানো ছিল এবং পেনশনের টাকা দিয়ে আমরা একটা একতালা বাড়ি নির্মাণ করতে পেরেছি।
গত একমাস যাবত আমরা সে বাড়িতে বসবাস শুরু করেছি। কিন্তু আমার বড় ভাইয়া যেহেতু কক্সবাজারের চাকরি করে সে সুবাদে আমাদের এখনো কক্সবাজারে আনাগোনা হওয়ার একটা সুযোগ রয়েছে আর তাছাড়া কক্সবাজারে আমার নানুর বাড়িতে রয়েছে। কক্সবাজারে আমরা পার্মানেন্ট থাকতে না পারলেও এখানে আনাগোনা আমাদের থাকবেই ।কক্সবাজারের অনেকগুলো প্রিয় মানুষজন রয়েছে ।আমার প্রাথমিক শিক্ষা জীবন থেকে শুরু করে গ্রেজুয়েশন পর্যন্ত সম্পূর্ণ পড়ালেখা আমি কক্সবাজার শহরেই শেষ করেছি। তাই আমার বন্ধুবান্ধব থেকে শুরু করে পরিচিত মানুষগুলো কক্সবাজারে এই অবস্থান করছে। যেহেতু আমি চট্টগ্রামে ছিলাম না কিংবা গ্রামের বাড়িতে বড় হয়নি তাই সেখানকার পরিবেশের সাথে অথবা সেখানে মানুষের সাথে পরিচয় হয়ে নতুন বন্ধুত্ব তৈরি করাটা খুবই কঠিন হয়ে পড়েছে। আপনি যখনই একটি নতুন এলাকায় স্থায়ীভাবে থাকবে যাবেন আপনাকে সে এলাকার পরিবেশ মানুষের অবস্থান প্রকৃতি বুঝতে আপনাকে অনেক দিন সময় লেগে যাবে। কিন্তু যখনই আপনি একটা সমাজের পরিবেশের সাথে নিজেকে খাপ খাইয়ে নিতে পারবেন তখনই সেখানকার পরিবেশ সেখানকার মানুষজন সেখানে আশেপাশের সবকিছু আপনার ভালো লাগতে শুরু করবে। শুধুমাত্র আপনাকে ধৈর্যধারণ করে অপেক্ষা করতে হবে সেই পরিবেশটা বুঝার জন্য। আমি প্রায় দীর্ঘ ৮ মাস যাবত গ্রামে বসবাস করছি সেখানকার মানুষজনের পরিবেশ আকৃতি সবকিছু বোঝার চেষ্টা করছি ।ধীরে ধীরে তাদের সঙ্গে নিজেকে অ্যাডজাস্ট করার চেষ্টা করছি।
যদিও বা সহজ নয় একটা পরিবেশ ছেড়ে দিয়ে নতুন একটা পরিবেশে নিজেকে এডজাস্ট করে নেওয়া। কারণ শহরের পরিবেশের সাথে গ্রামের পরিবেশ কখনই মিলবে না ।শহরের মানুষের চিন্তা-ভাবনার সাথে গ্রামের মানুষের চিন্তা ভাবনা কখনোই মিলবে না। শহরের মানুষের চিন্তা ভাবনার চেয়ে গ্রামের মানুষের চিন্তা ভাবনার মধ্যে আকাশ-পাতাল পার্থক্য রয়েছে। কিন্তু শহরের জীবনের ছেয়ে গ্রামীন জীবনের একটা বিষয় সুন্দর সেটা হচ্ছে আপনি প্রাকৃতিক পরিবেশ দেখতে পারবেন। সেখানে আপনি পুকুর খাল বিল নদী পাবেন এবং সবুজের সমারোহ পাবেন ।যেটা দেখে আপনার চক্ষু জুড়িয়ে যাবে এবং আপনার মনে প্রশান্তি কাজ করবে । এমন একটা সুন্দর্য উপভোগ করতে চাইলে আপনাকে শহরের কর্মজীবন ছুটি নিয়ে ভ্রমণের উদ্দেশ্যে বের হয়ে যেতে হবে ।এছাড়াও শহরের মানুষের চেয়ে গ্রামীণ মানুষের সহযোগী হয় বেশি। আপনি গ্রামের যে কোন মানুষকে আপনার বিপদে আপদে যে কোন কাজে ডাকলে সহজে তাদেরকে কাছে পাবেন এবং তারা বিনা দিদায় আপনার যে কোন কাজ করে দিবে। আমার গ্রামের আমাদের চাচাতো ভাই এবং আত্মীয়-স্বজনদের আসে পাশে যারা আছে তারা আমাদেরকে সহযোগিতা করেছে ।আমরা যখন এখান থেকে গিয়েছিলাম আমরা দিশেহারা হয়ে পড়েছিলাম যে আসলে কিভাবে কি করব না করব। কারণ আমরা সেখানকার পরিবেশ পরিস্থিতি সম্পর্কে বুঝে উঠতে পারেনি। আব্বুর ছোটবেলা থেকে পরিচিতি থাকলেও আমাদের তেমন কোনো পরিচিতি ছিল না ।তবে আমরা আমাদের আশেপাশের আত্মীয় স্বজন এবং পাড়া প্রতিবেশীর যথেষ্ট সহযোগিতা পেয়েছি সেটা অস্বীকার করা যাবে না।
সবকিছু যাচাই-বাছাই করলে বোঝা যায় যে আপনি যেকোনো সমাজে যেকোনো পরিবেশে যে কোন স্থানে যখন নিজেকে খাপ খাইয়ে নিতে পারবেন সে স্থানটা আপনার বসবাস উপযোগী হয়ে পড়বে। শুধুমাত্র আপনার চিন্তা ভাবনাটাকে সেই এলাকার মত করে তৈরি করে নিতে হবে। আপনি নিজেকে যত সুন্দর ভাবে গুছিয়ে নিতে পারবেন আপনি ততো বেশি সে এলাকার সাথে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারবেন। দিন শেষে আপনার বসবাসের সেই সমাজ তাই আপনার জন্য সহযোগিতার হাত হয়ে দাঁড়াবে। সুতরাং আপনি যে সমাজেই থাকুন না কেন কিংবা যে জায়গাতেই বসবাস করুন না কেন তাদের সহযোগিতা করতে চেষ্টা করুন এবং বিপদে আপদে তাদের পাশে দাঁড়ান ।ইনশাল্লাহ তারাও আপনার বিপদে আপদে সবসময় আপনার পাশে থাকবে।
ধন্যবাদ আপনাদের সবাইকে মনোযোগ সহকারে শেষ পর্যন্ত ব্লকটি করার জন্য অন্য একটি ব্লক নিয়ে আপনাদের সামনে আবার উপস্থিত হব ।
ইনশাল্লাহ
আপনি খুবই ভাল লিখতে জানেন ভবিষ্যতে আপনি লেখক হতে পারবেন আপনার জন্য শুভকামনা রইল।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ধন্যবাদ ভাই আপনার মূল্যবান কথার জন্য
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit