সেন্ট মার্টিনের ভ্রমণটা আসলে এতটাই উপভোগ্য ছিল যে একটা ব্লগের মধ্যে পুরো কাহিনীটা বলে শেষ করে সম্ভব হয়নি। তাই সেন্টমার্টিন ভ্রমণের ডায়েরিটা আপনাদের সামনে খন্ড খন্ড ভাবে উপস্থাপন করছি। সেন্ট মার্টিনে কিভাবে ভ্রমণ করতে যাবেন টিকিট কোথা থেকে কালেক্ট করবেন এই বিষয়গুলো নিয়ে আগের ব্লগে লিখেছিলাম। এবং সেন্ট মার্টিনে গিয়ে রিসোর্ট এবং খাবারের ব্যবস্থা কোথায় কিভাবে আছে সেটা সম্পর্কে পরবর্তী ব্লগে লিখেছিলাম। আজকে সেন্টমার্টিন দ্বীপের বিভিন্ন সুন্দর জামায়ে স্থান সম্পর্কে আপনাদের জানাবো। সেন্টমার্টিন দ্বীপ টা আসলে পড়াটাই সুন্দর আপনি সেন্টমার্টিনের যে প্রান্তে যান না কেন আপনার মন এবং চোখ জুড়িয়ে যাবে। প্রকৃতির এক অপরূপ সৌন্দর্য এর ঘেরা সেন্টমার্টিন দ্বীপ। সেন্টমার্টিন দ্বীপের প্রতি আমার আকর্ষণ তৈরি হয়েছিল হুমায়ুন আহমেদ স্যারের উপন্যাস পড়ার মাধ্যমে। সেন্টমার্টিন দ্বীপের জোসনা রাতের বর্ণনা তিনি এত সুন্দর করে দিয়েছিলেন যে আমার ইচ্ছা হয়েছিল এক জোসনা রাতে আমি সেন্টমার্টিন দ্বীপে না ঘুমিয়ে কাটিয়ে দিব।
কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো আমরা যে সময়ে সেন্টমার্টিন দ্বীপে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলাম সে সময় পরিপূর্ণ জোছনা ছিল না। কিন্তু জোছনার জন্য অপেক্ষা করতে গিয়ে যদি সেন্টমার্টিন যাওয়ার পরিকল্পনা করতাম তাহলে সেন্ট মার্টিনে হয়তোবা আর যাওয়া হতো না তাই জোসনা ছাড়াই সেন্টমার্টিনে চলে গিয়েছি।আমরা যখন সেন্ট মার্টিনে গিয়েছিলাম তখন খুব একটা মানুষ ছিল না এটা একটা ভালো
ধিক। কারণ সিজনের সময় যখন অনেক মানুষ সেন্টমার্টিনে ভ্রমণ করার উদ্দেশ্যে যায় তখন আপনি প্রকৃত সৌন্দর্যটা উপভোগ করতে পারবেন না। সেন্টমার্টিন দ্বীপে ছোট-বড় অনেকগুলো পাথর রয়েছে যেগুলো দ্বীপের চারিদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। এছাড়া সেন্টমার্টিন দ্বীপে রয়েছে প্রচুর কেয়া গাছ। এককথায় বলতে গেলে সেন্টমার্টিন দ্বীপ হলো কেয়া গাছের জঙ্গলে ভরা। এ ছাড়া আছেন মার্টিনে প্রচুর পরিমাণে নারিকেল গাছ রয়েছে। কিন্তু তাই বলে ভাব ভেবে নিয়েন না যে সেন্টমার্টিনে ডাব দাম সস্তা হবে। কক্সবাজারের যে ডাব আপনি ৬০ থেকে ৭০ টাকা দিয়ে খেতে পারবেন একই সমান ডাব সেন্টমাটিনে গেলে আপনাকে ১২০ থেকে ১৪০ টাকা খরচ করতে হবে। সেন্টমার্টিনের নাম নারিকেল জিনজিরা হলেও এখানে নারিকেলের পরিমাণ একেবারে নাই বললেই চলে।কারণ সব নারিকেল প্রথম দিকে যে সকল পর্যটকরা যায় তারা সব শেষ করে ফেলে।
সেন্ট মার্টিন এর শেষের দিকে বেশ কিছু নারিকেল গাছ আছে যেগুলো একটু হেলে পড়ে রয়েছে। আমরা ভিডিওতে দেখেছিলাম সেন্ট মার্টিন দ্বীপের নারিকেল গাছের গোড়ায় এসে সাগরের ঢেউ পড়ছে। এবং অনেক সময় ক্যালেন্ডারে সেন্টমার্টিন দ্বীপের সিনারি দেখেছি যেখানে সুন্দর সুন্দর নারিকেল গাছ গুলো আছে।কিন্তু বর্তমানে ছবির সিনারিতে যেই নারিকেল বাগান এবং যে নারিকেল গাছগুলো সংগ্রহ করা হয়েছিল ওগুলো এখন আর অবশিষ্ট নেই। সমুদ্রের ঢেউ এর সাথে এই নারিকেল গাছগুলো তলিয়ে গেছে অনেক আগে। তাই আপনারা যদি সেই ছবি সিনারি নারিকেল গাছগুলো খুঁজতে চান তাহলে সেন্টমার্টিন দ্বীপে বর্তমানে এগুলা আর দেখা পাওয়া সম্ভব না।সেন্টমার্টিন দ্বীপে ছোট ছোট অনেকগুলো রিসোর্ট রয়েছে যেগুলো খুব সুন্দর ডেকোরেশন করে গঠন করা হয়েছে। সেন্ট মার্টিন দ্বীপের সবচাইতে জনপ্রিয় রিসোর্ট হলো সমুদ্র বিলাস যেটা হুমায়ূন আহমেদ তৈরি করেছিলেন। এই রিসোর্টটা বেশিরভাগ সময়ই ফুল বুকিং করা থাকে। এই রিসোর্টে রোম পাওয়া অনেকটা স্বর্ণের হরিণের মতো। সব মিলিয়ে সেন্টমার্টিন এর ভ্রমণটা একটা দারুন উপভোগ্য বিষয় ছিল। আপনাদের যদি কখনো কক্সবাজারে আসার সুযোগ হয় তাহলে অবশ্যই সেন্টমার্টিন দ্বীপ ভ্রমণ করে আসবেন।
ধন্যবাদ আপনাকে সবাইকে শেষ পর্যন্ত রাখারই পরার জন্য।
আরও একটি নতুন লেখা নিয়ে পুনরায় আপনাদের মাঝে উপস্থিত হব ইনশাল্লাহ।