করোনা ছিল এই পৃথিবীর জন্য একটা বিপর্যয় । এমন একটা ভয়াবহ রোগের জন্য মানুষ কখনো প্রস্তুত ছিল না।
অনেকগুলো মানুষ তাদের আপনজন হারিয়েছে। অনেক মানুষ খুবই কষ্টের মাধ্যমে জীবন অতিক্রম করেছে।
হাজার হাজার মানুষ কর্মজীবন থেকে বেকারত্বের প্রবেশ করেছে।
কারণ যেহেতু প্রতিষ্ঠানসমূহ বন্ধ ছিল তাই কোন প্রতিষ্ঠান কোন কাজ ছাড়া কাউকে চাকরিতে রাখতে চাইনি ।
এই কঠিন অভাবের মুহূর্তের গুলোর মধ্যে মানুষ কোন রকম করে তাদের জীবনটা অতিক্রম করেছে।
এই সময়ে আমরা ছিলাম কক্সবাজারের মধ্যে। মানুষকে করোনা সম্পর্কে সচেতন করার পরেও মানুষ সচেতন না হওয়ায়।
সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল পরিপূর্ণভাবে লকডাউন দিয়ে দিবে।
২৬ শে মার্চ থেকে সারাদেশে লকডাউন ঘোষণা করা হয়। যেদিন থেকে লকডাউন শুরু হয় সেদিন থেকেই আসলে বুঝতে পেরেছিলাম যে ১৪৪ ধারা কাকে বলে।
কারণ যেদিনই অফিসিয়াল ভাবে ঘোষণা করা হয়েছিল যে আজকে থেকে লকডাউন শুরু বের হওয়া নিষেধ তখনই বুঝতে পেরেছিলাম চারিদিকে একদম থমথমে একটা অবস্থা বিরাজমান করছে ।
কঠিন লকডাউনের ঘোষণা দেওয়ার পরের দিন থেকেই পুলিশ এবং আর্মি সমগ্র এলাকায় টহল দেওয়া শুরু করেছিল। বিশেষ করে সন্ধ্যা থেকে রাত নটা দশটা পর্যন্ত পুলিশ বাহিনী টহল দিত। সমগ্র এলাকা জুড়ে আমরা সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কলোনির মধ্যে আবদ্ধ জায়গায় বসে থাকতাম।
এভাবে প্রায় ১০-১৫ দিন অতিক্রম হওয়ার পর নিজের মধ্যে একটা একঘেয়েমি কাজ করছিল। তবে সুযোগ পেলে মাঝেমধ্যে সাহস করে সাইকেল নিয়ে ভ্রমণের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়তাম। চারিদিকের পরিবেশ পরিস্থিতি বুঝতে চেষ্টা করতাম। রাস্তাঘাটে কুকুরগুলো ছাড়া মানুষ দেখা যেত না। আমরা যেহেতু সাইকেল নিয়ে পরিপূর্ণ নিরাপত্তার মাধ্যমে বের হতাম তাই আর মেয়ে বা পুলিশ আমাদেরকে খুব একটা কিছু বলত না। কিন্তু লক ডাউনের মহান আল্লাহর কাছে অশেষ শুকরিয়া যে আমরা অন্তত কঠিন মুহূর্ত গুলো সম্মুখীন হতে হয়নি।
মহান আল্লাহর অনুগ্রহে আমাদের আত্মীয়-স্বজন মধ্যে কেউ মারা যায়নি করোনায় আক্রান্ত হয়ে।
লকডাউনের সময় গুলোতে চেষ্টা করেছি পুরাতন স্মৃতিগুলোকে স্মরণ করার জন্য ।
পরিবারের সবাই একত্রে হওয়ার একটা সুযোগ হয়েছিল লকডাউনের সময়গুলোতে।
ছোটবেলায় আমাদের কলোনির অফিসের যে বিল্ডিংটা ছিল সে বিল্ডিং এর ছাদে প্রায় সময় ঘুড়ি উড়াতাম।
লকডাউনে আমি আমার ভাতিজা এবং ভাগিনীদের কে নিয়ে একসাথে অনেক দিন পর ঘুড়ি বানিয়ে ছাদের উপর ঘুড়ি উড়িয়েছিলাম। লকডাউনের মুহূর্তগুলো সবার জন্য একটা কঠিন অবস্থা বিরাজমান করলেও এর মধ্যে কিছু পজিটিভ দিক হলো মানুষগুলো সবাই একত্রিত হয়ে একে অপরের পাশে ছিল। লকডাউনে আমরা অনেক রকমের মানুষ চিনতে পেরেছি। আমরা চিনতে পেরেছি কে আসলে আপন এবং কে পর। কে সহযোগিতার জন্য পাশে এসে দাঁড়ায় এবং কে বিপদের সময় হাত ছেড়ে দিয়ে চলে যায় ।আমরা এমনও দেখেছি ছেলেকে বাঁচানোর জন্য বাবা করনাই আক্রান্ত ছেলেকে বুকে জড়িয়ে ধরে হাসপাতালের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। আবার এমনও তথ্য শুনেছি যে যেখানে ছেলে মা কে ফেলে চলে গিয়েছে কারণ সে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছে। করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করা মানুষগুলোর লাশ দাপন করার জন্য মানুষ খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না ।আপনজন নিজের ছেলে-মেয়ে পর্যন্ত সে লাশগুলোকে কবরস্থ করার জন্য রাজি হচ্ছিল না। ঠিক সেই সময় কিছু মানব দরদী মানুষ নিজের জীবনের পরোয়া না করে এই দায়িত্ব গ্রহণ করে ,এই উদারতও আমরা দেখেছি।
করুণা কালীন সময়ে অনেক মানুষের মধ্যে খাদ্য সংকট ছিল ।অর্থনৈতিক মন্দার কারণে অনেক প্রভাবশালী ও বিত্তবান মানুষ দরিদ্র মানুষকে সহযোগিতা করার জন্য এগিয়ে এসেছে ।
বেশ কিছু সংগঠন ছিল যারা অর্থ সংগ্রহ করে দরিদ্র মানুষদের মধ্যে বিলিয়ে দিয়েছে।
করোনা কালীন সময়ে সেরকম একটি সংগঠনের হয়ে কিছু অর্থ দেওয়ার সুযোগ আমারও হয়েছিল। তো সেই সব সংগঠনগুলো মানবতার জন্য সবকিছু উজাড় করে দিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে ছিল। কঠিন এই মুহূর্তটা ছিল আসলে আল্লাহর পক্ষ থেকে একটা পরীক্ষা ।
যখন আমরা বুঝতে পেরেছি যে আসলে বিপদে মানুষের পাশে দাঁড়ানোটাই একটা বড় ইবাদতের অংশ ।
লকডাউনের সময় আমরা খাবার হোম ডেলিভারি করার দায়িত্ব পালন করেছিলাম।
বিভিন্ন উদ্যোক্তাদের কাছ থেকে খাবার সংগ্রহ করে আমরা খাবার বাড়ি বাড়ি গিয়ে পৌঁছে দিয়েছি।।
সব মিলিয়ে যদি চিন্তা করি তাহলে এই লকডাউন টা ছিল মানুষের জীবনে একটি ভয়াবহ অবস্থা।
কিন্তু সেই সাথে এই লকডাউন এর কিছু মানুষ কাছে এসেছে একে অপরের পাশে দাঁড়িয়ে একে অপরের ভরসা হতে পেরেছে।
এই কঠিন মুহূর্ত গুলো থেকেই আমরা পাশে দাঁড়িয়ে সবার সহযোগিতা করতে পেরেছি।
এটাই আমাদের জন্য সৌভাগ্য।
মহান আল্লাহ এধরনের কঠিন পরিস্থিতি থেকে আমাদেরকে রক্ষা করুক ।
এবং সব ধরনের বিপদে আমরা একে অপরের পাশে থেকে একে অপরকে সহযোগিতা করব সেই কামনা করছি ।
ধন্যবাদ আপনাদের সবাইকে শেষ পর্যন্ত ব্লগটি পরার জন্য ।
নতুন কোন ব্লগ নিয়ে আপনাদের সামনে উপস্থিত হব
ইনশাল্লাহ
Keep on being active in Steemit community and growing.
You're being supported with Steemit Community account for Newcomers Growth.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
I will try my best
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
করোনা পরিস্থিতি আসলেই আমাদেরকে অনেক কিছু শিক্ষা দিয়ে গিয়েছে । আমাদের লাইফস্টাইল অনেকটা হলেও আমরা নিয়মনীতির মধ্যে আনতে পেরেছি । যদিও করোনা পরিস্থিতি অনেক শিথিল রয়েছে কিন্তু আমাদের সর্বদা মাস্ক ব্যবহার করা উচিত । আশা করছি আপনি সকল টিকা নিয়েছেন ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
সতর্কতার সাথে আমরা থাকলে ইনশাল্লাহ সমস্যা হবে না জ্বী ভাইয়া সব টিকা কমপ্লিট
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Determination of Club75 Status refers to the https://steemworld.org/transfer-search Web-based Application
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit