ঈদের ছুটি পেলাম না
আজ একটা গল্প নিয়ে হাজির হলাম। আসলে এটা গল্প না বললেও চলে এমন ঘটনা প্রতিবছরই আমাদের সাথে ঘটে।
আজ কের গল্পে মূল চরিত্রে আছে রুবেল
রুবেলের সারা শরীরে যেন একটা অদ্ভুত ঝিমঝিম অনুভূতি। অফিস থেকে ফিরতে ফিরতে রাত হয়ে গেছে। বাসার দরজায় পৌঁছানোর পর ক্লান্ত শরীরে চাবি খুঁজে বের করে তালা খুললো। দরজা খুলেই দরজার সাথে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে পড়লো কিছুক্ষণ। আজকেই বস জানিয়েছেন, ঈদের ছুটি এবার দিতে পারছেন না।
রুবেলের মনটা ভারী হয়ে উঠলো। প্রতি বছরই পরিবার আর প্রিয়জনদের সাথে ঈদ পালন করে আসছে, কিন্তু এবার তা সম্ভব হবে না। অফিসের জরুরি প্রজেক্টের জন্য তাকে ঢাকায় থাকতে হবে। রুবেলের মনটা খারাপ হয়ে যায়। সে ভাবতে থাকে, মা আর ছোট বোন মুনিরার মুখগুলো। ছোটবেলায় মা তাকে কীভাবে ঈদের দিন সকালে নতুন জামা পরিয়ে দিতেন, আর মুনিরা কেমন করে খুশিতে নাচানাচি করতো।
রুবেল দরজাটা বন্ধ করে বিছানায় বসলো। তার চোখের সামনে ভেসে উঠছে গ্রামের সেই ছবিগুলো। গ্রামের মেঠো পথ, বাড়ির উঠোন, আঙ্গিনার সেই পুরোনো নিম গাছের ছায়া। ঈদের নামাজ শেষে বন্ধুদের সাথে আনন্দে কাটানো সময়গুলো। এবারের ঈদ যে কতটা মন খারাপের হবে, তা ভাবতেই মনটা আরও ভারী হয়ে উঠলো।
দুপুরের খাবারের পর আবার কাজে বসতে হলো। অফিসের কাজ শেষ না করলে তো ছুটি পাওয়া যাবে না। সারাদিন ল্যাপটপের সামনে বসে কাজ করতে করতে শরীর ক্লান্ত হয়ে গেলেও মনটা শান্তি পাচ্ছে না। প্রতিটি মুহূর্তেই গ্রামের কথা মনে পড়ছে।
রাত হয়ে গেছে, ঘড়িতে বাজে বারোটা। রুবেল জানালার ধারে এসে দাঁড়ালো। বাইরে পুরো শহর যেন নিঝুম। আকাশে পূর্ণিমার চাঁদ, তার আলোতে পুরো শহর যেন মুগ্ধ হয়ে আছে। রুবেল জানালার বাইরে তাকিয়ে ভাবতে থাকে। হঠাৎ তার মাথায় একটা ভাবনা আসে।
"যদি মাকে আর মুনিরাকে এখানে নিয়ে আসা যায়!"
ভাবনাটা তার মনে আনন্দের জোয়ার বইয়ে দেয়। ফোনটা হাতে তুলে নিয়ে মাকে কল দিলো। মা ফোন তুলতেই রুবেল উত্তেজিত কণ্ঠে বললো মা, তুমি আর মুনিরা কি ঢাকায় আসতে পারবে ঈদের দিন?
মা একটু বিস্মিত হয়েই বললেন, ঢাকায়? কেন রে?
রুবেল সব খুলে বললো, বস ছুটি দেয়নি, আর অফিসের কাজ শেষ করতে হবে। মা কয়েক মুহূর্ত চুপ করে রইলেন। তারপর হেসে বললেন, ঠিক আছে রে, আমরা আসবো। তুই শুধু ঠিকানা পাঠিয়ে দিস।
রুবেল আনন্দে ভরে উঠলো। এবার ঈদের দিনটা সে একা কাটাবে না। মা আর মুনিরা তার সাথে থাকবে। সেই রাতে ঘুম টা যেন আরও মিষ্টি হয়ে উঠলো।
ঈদের দিন। রুবেল কাজ শেষ করে রেডি হয়ে গেলো। বাসা সাজানো, রান্না করা সব কিছুই । মা আর মুনিরা আসার সময়টা যেন কাটতেই চাইছে না। অবশেষে দরজায় বেল বাজলো। রুবেল দরজা খুলতেই মাকে আর মুনিরা কে দেখে মনটা ভরে উঠলো।
মা রুবেল কে দেখে হাসি দিলেন, তুই কত বড় হয়ে গেছিস রে।
মুনিরা খুশিতে চিৎকার করে উঠলো, ভাইয়া তুই কত সুন্দর বাসা সাজিয়েছিস
ঈদের নামাজ পড়ে এসে সবাই মিলে খাওয়া-দাওয়া শুরু করলো। হাসি-ঠাট্টায় সময় টা কেটে গেলো নিমেষেই। রুবেল অনুভব করলো, ঈদ মানে শুধুমাত্র ছুটি নয়, পরিবার আর প্রিয়জনদের সাথে সময় কাটানো। এই আনন্দটাই সবার মধ্যে ভাগাভাগি করে নিতে হবে।
রাতে মা আর মুনিরা ঘুমিয়ে পড়লে রুবেল জানালার ধারে এসে দাঁড়ালো। পূর্ণিমার আলোতে শহর টা আরও সুন্দর লাগছে। আজকের রাতটা যেন আরও বেশি মিষ্টি। মনটা ভরে উঠলো, আর মনে মনে ভাবলো, ঈদের আনন্দটা শেষ পর্যন্ত পেয়েই গেলাম।
আমাদের সমাজে হাজারো রুবেল আছে , যারা এই ঈদের পরিবারের সাথে ঈদ করতে পারছে না, মহান সৃষ্ট কর্তা যেনো তাদের যে ভাবে হোক ঈদের আনন্দ টা করার ইছে পূরণ করে।
আপনাকে এই দুইটা আর্টিকেল মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য পরামর্শ দিচ্ছি। আশাকরি এটা আপিনাকে সাহায্য করবে।
🆕 New to Steemit? Start Here!
📜 Newcomers' Certification
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit