ফুলকপির গুনাগুন 🥦🥦

in hive-170554 •  6 days ago  (edited)

2033.jpg

Source


ফুলকপি সবজিটির সাথে আমরা সবাই পরিচিত। স্বাদে, গুনে ও সৌন্দর্যে অনন্য শীতের এই সবজিটি। তবে ফুলকপির সমস্ত পুষ্টিগুণ ও ভালো-মন্দ বিভিন্ন দিক আমাদের অনেকেরই অজানা। তাই আজ আমি এসেছি বিভিন্ন আঙ্গিক থেকে ফুলকপির বিষয়ে বিশদ আলোচনা করার জন্য। আজ আমরা জানবো ফুলকপির বিভিন্ন পুষ্টিগুণ সম্বন্ধে ; কিভাবে রান্না করলে সবজিটি থেকে সর্বোচ্চ উপকার পাওয়া যায় ; সবজিটি কাদের জন্য বেশি উপকারী এবং কাদের খাওয়া উচিত নয় ইত্যাদি বিষয়। চলুন আলোচনা শুরু করা যাক।


ফুলকপির কিছু সাধারণ কথা
ফুলকপি Brassica oleracea প্রজাতির একটি সবজি। এর উৎপত্তি দক্ষিণ এশিয়ার উত্তর ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে। বিজের মাধ্যমে এর বংশবৃদ্ধি হয় এবং একটি গাছ একবারই ফল দেয়। এর সাদা পুষ্পাক্ষটি ফুলের মত দেখায় এবং এটিই মূলত সবজি হিসেবে খাওয়া হয়। এই চারপাশের সবুজ ডাটা গুলোও সবজি হিসেবে ব্যবহার করা যায়।

উৎস



ফুলকপির পুষ্টিগুণ
পুষ্টি উপাদানপরিমাণ(প্রতি ১০০ গ্রাম)
ক্যালরি২৫
ফ্যাট০.২৫
শর্করা
ফাইবার
প্রোটিন
সোডিয়াম৩০ মি.গ্রা.
ক্যালসিয়াম২২ মি.গ্রা.
পটাশিয়াম৩০৩ মি.গ্রা.
আইরন০.৪৪ মি.গ্রা.
ভিটামিন সি৪৬.৪ মি.গ্রা.

উৎস

উৎস



ফুলকপির স্বাস্থ্যগুণ

132380.jpg
Source

  • ওজন কমাতে সাহায্য করে
ফুলকপি একটি নিম্ন ক্যালরির সবজি যা বেশি পরিমাণে গ্রহণ করলেও ওজন বৃদ্ধি পায় না বরং এটি উচ্চ ক্যালরির খাবার যেমন ভাত ও আটার বিকল্প হিসেবে কাজ করে। যেহেতু ফুলকপিতে ফাইবার বেশি থাকে এটি পাচন ক্রিয়াকে মন্থর করে পেট ভর্তি অনুভব করায়। এতে পানিও থাকে বেশি ফলে অল্প খেলেই পেট ভর্তি অনুভব হয়।
  • অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের ভালো উৎস
ফুলকপিতে রয়েছে উচ্চ মাত্রায় গ্লুকোসাইনোয়েট এবং আইসো থায়োসায়ানেট যা ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধি রহিত করে। এতে রয়েছে ক্যারোটিনয়েড ও ফ্লাভোনয়েড অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা ক্যান্সার প্রতিরোধী ও হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। ফুলকপির ভিটামিন সি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
  • উচ্চ মাত্রায় কোলিন
ফুলকপিতে উচ্চমাত্রায় কোলিন থাকে যা কোষের ডিএনএ তৈরিতে সাহায্য করে। এটি মস্তিষ্কের গঠনে ও নিউরোট্রান্সমিটার তৈরিতে সাহায্য করে। লিভারে কোলেস্টেরল জমা হতে বাধা দিয়ে লিভারের রোগের ঝুঁকি কমায়।

উৎস

  • অস্থির গঠনে সাহায্য করে
ফুলকপিতে থাকে ভিটামিন কে ও ক্যালসিয়াম। অস্থি গঠনের জন্য ভিটামিন কে অত্যাবশ্যক এবং ক্যালসিয়াম হলো অস্থি টিস্যুর প্রধান উপাদান।

উৎস



ফুলকপির পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া
অতিরিক্ত কোন কিছুই ভালো নয়। নিয়মিত অধিক পরিমাণে ফুলকপি খেলে নিম্নলিখিত সমস্যা গুলো হতে পারে।
  • অত্যধিক গ্যাস তৈরি করা
ফুলকপির জটিল শর্করা র‍্যাফিনোজ সহজে পাচিত হয় না। এটি অপাচ্য অবস্থায় ব্যাকটেরিয়ার দ্বারা ফার্মেন্ট হয়ে পেটে গ্যাস তৈরি করে।
  • হাইপোথাইরয়েডিজম
ফুলকপির আইসোথাইয়োসায়ানেট উপাদানটি আয়োডিন শোষণে বাধা দেয়। তাই যাদের খাবারে আয়োডিন ঘাটতি আছে তারা অধিক পরিমাণে ফুলকপির খেলে হাইপোথাইরয়েডিজম হতে পারে।
  • কিডনির সমস্যা
যাদের ইউরিক এসিড জনিত কিডনির সমস্যা আছে তাদের জন্য ফুলকপি ক্ষতিকর।

উৎস



ফুলকপির কিছু সুস্বাদু রান্না
১) ফুলকপি ভাজি: ফুলকপিকে আলুর সাথে ছোটো ছোটো টুকরো করে কাঁচা মরিচ ও মসলা দিয়ে ভাজা হয়; যা অত্যন্ত মুখরোচক। অথবা শুধু ফুলকপিকে বড় বড় টুকরো করে তেলে ভাজা হয়; যা কিছুটা মিষ্টি ও স্বাদে অনন্য।

17379.jpg
Source


২) ফুলকপির পকোরা: ফুলকপির মাঝারি মাপের টুকরো করে সিদ্ধ করতে হয়। তারপর বেসনের অর্ধ-তরল মিশ্রণে ডুবিয়ে গরম তেলে ছেড়ে দেওয়া হয়। এভাবে বানানো হয় ফুলকপির মজাদার পকোরা।

43959.jpg
Source


৩) ফুলকপির ডালনা: এই শীতে আলু ও টমেটোর সাথে ফুলকপির ডালনা অসাধারণ একটি আইটেম। গরম ভাতের সাথে এর কোনো জুড়ি নেই।

curry-7249244_1280.jpg
Source


৪) ফুলকপি পোস্ত: ফুলকপিকে সিদ্ধ করে পোস্ত বাটার মিশ্রণ দিয়ে রান্না করা হয়। অসাধারণ হয় এর স্বাদ।

৫) ফুলকপির ভর্তা: ফুলকপির ছোটো ছোটো টকরোকে সিদ্ধ করে মরিচ ও মসলা সহ হালকা ভাজা হয়। তারপর লবণ ও ধনেপাতা দিয়ে সরিষার তেলের সাথে মাখানো হয়। এই শীতে এর স্বাদ অসাধারণ লাগে।

11108.jpg
Source



ফুলকপি নিয়ে কথা রইল আজ এই পর্যন্তই। পরবর্তীতে কথা বলবো অন্য কোন একটি পুষ্টিকর খাদ্য নিয়ে। আমার লেখাটি মনোযোগ দিয়ে পড়ার জন্য সকলকে ধন্যবাদ। আজকের মতো এখানেই বিদায়।

IMG_20250105_183720_383.jpg

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  
Loading...