আসসালামুআলাইকুম সবাই
আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন।আমি @haideremtiaz বাংলাদেশ থেকে আজকের প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে যাচ্ছি। @mdshafi -কে ধন্যবাদ দিতে চায় এমন একটি কন্টেস্ট আয়োজন করার জন্য।আজকের প্রতিযোগিতার বিষয় হলো প্রিয় ঋতু। তো আমি আজকে আমার প্রিয় ঋতু নিয়ে আলোচনা করার চেষ্টা করবো।চলুন শুরু করা যাক।
প্রিয় ঋতু বর্ষাকাল
source
বাংলাদেশে ছয়টি ঋতু রয়েছে।বর্ষাকাল হচ্ছে সেগুলোর মধ্যে দ্বিতীয়। বসন্তজালকে ঋতুরাজ বলা হলেও রূপের ও সৌন্দর্যের দিক দিয়ে বর্ষাকালই শ্রেষ্ঠ। বাংলা আষাঢ় ও শ্রাবন এই দুই মাস বর্ষাকাল।মাঝে মাঝে এটি কিছুটা আগে শুরু হয় এবং দেরিতে শেষ হয়।কোন কোন মাসে বর্ষা জ্যৈষ্ঠ মাসে আরম্ভ হয়ে আশ্বিন মাস পর্যন্ত স্থায়ী হয়।
গ্রীষ্মের দিনগুলোতে যখন মানুষ অসহ্য গরমে ছটফট করতে থাকে তখনই বর্ষার আগমন হয় প্রবল গর্জনের মাধ্যমে।প্রকমতি যেন নিজের বুক জুড়ানোর জন্য বর্ষাকে আহব্বান করে।
যেসব কারণে বর্ষাকাল আমার প্রিয় ঋতু
১)ফুল: বর্ষার সময় সবুজ পাতার ফাঁকে ফাঁকে উঁকি দেয় সুগন্ধি সব ফুল। কদম, কেয়া, কামিনী, বেলি ও বকুলের সুবাসে তখন মুখরিত থাকে চারপাশ।
বর্ষায় ফোটা ফুলগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল- কদম, বকুল, স্পাইডার লিলি, দোলনচাঁপা, সুখদর্শন, ঘাসফুল, শাপলা, সন্ধ্যামালতি, কামিনী, গুলনার্গিস, দোপাটি ও অলকানন্দ প্রভৃতি।
source
বর্ষা মানেই কদম ফুল। তাই বর্ষার শুরুতেই মিলবে কদমের সৌরভ। গ্রামে গাছে গাছে ফুটে থাকা কদম ফুল বর্ষার প্রকৃতিতে এনে দেয় নজরকাড়া সৌন্দর্য। কদম গাছ দীর্ঘাকৃতির ও বহু শাখাবিশিষ্ট। কদম ফুলের আদি নিবাস ভারত, চীন ও মালয়। গ্রামাঞ্চলে নদীর তীরে, খোলা প্রান্তরে প্রচুর কদম গাছ চোখে পড়ে। শহরে দেখা মেলে পার্কে ও উদ্যানে। কদম গাছের ছোট ডালের আগায় গোল হয়ে কলি ও ফুল ফোটে।
২)ফল:বর্ষাকালের ফলগুলো পুষ্টিগুণে ভরা থাকে।
source
এই সময় বিভিন্ন ধরনের ফল পাওয়া যায়।যেমনঃপেয়ারা, লটকন, আমড়া, জাম্বুরা, জামরুল, ডেউয়া, কামরাঙা, কাউ, গাব ইত্যাদি।বর্ষার এতসব ফলের মাঝে আমার প্রিয় ফল হচ্ছে পেয়ারা।পেয়ারার জন্য বরিশাল বিখ্যাত।
৩)বর্ষার আবহাওয়া:বর্ষার সময় আকাশ ঘনকালো মেঘে ডাকা থাকে।
source
সারাদিন ঝিরঝিরে বৃষ্টি হয়।প্রকৃতির পরিবেশ অনেক শান্ত থাকে।সারাদিন বৃষ্টি থাকার ফলে বাহিরে বের হওয়া যায়না।
৪)খেলাধুলা:বর্ষায় বৃষ্টির পানি জমে থাকা মাঠে ফুটবল খেলার মজাই আলাদা।
source
সে সময় গ্রামের ছেলেরা ফুটবল খেলায় মেতে উঠে।আমিও ছোটবেলায় বৃষ্টিতে ভিজে অনেক ফুটবল খেলেছি।ফুটবল খেলার মজাটাই ছিল অন্যরকম।
বাংলার অর্থনীতিতে বর্ষার ভূমিকা
কৃষি বাংলার অর্থনীতির প্রধান চালিকা শক্তি।বাংলার কৃষি অনেকটাই বৃষ্টি নির্ভর।পরিমিত বৃষ্টিপাত বাংলাদেশে প্রচুর ফসল ফলাতে সহায়তা করে।অনাবৃষ্টি ও খরায় বাংলাদেশের কৃষি ভেঙে পড়ে।তাই বর্ষাকাল বাংলাদেশের কৃষিতে এক অনবদ্য সম্ভবনার দুয়ার খোলে দেয়।
এতসব উপকারিতা থাকলেও বর্ষাকালের কিছু অপকারিতা রয়েছে।তা হলো:
বর্ষাকাল সবসময় বাঙালির মুখে হাসি ফোটায় তা নয়।খরস্রোতা নদী মাঝে মাঝে লাগামছাড়া হয়ে বান ডাকে,ভাসিয়ে নেয় উপকূলের অনেক মানুষের বসতবাড়ি। এসময় রাস্তাঘাট কর্দমাক্ত হয়ে থাকে। যার জন্য চলাফেরা করতে দুর্ভোগ পোহাতে হয়।বিশেষ করে যারা দরিদ্র পরিবারের তারা জীবিকার জন্য বাহিরে যেতে পারেনা।তার ফলে না খেয়ে থাকতে হয়।এসময় বিভিন্ন পানিবাহিত রোগ হয়।যার ফলে জনজীবনে স্থবিরতা বয়ে আসে।
তো এই ছিল আমার প্রিয় ঋতু সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত বিবরণ। আশা করি আপনাদের ভালো লেগেছে।ধন্যবাদ সবাইকে পোস্টটি পড়ার জন্য।