জীবনে ঠেকে বোধ হয় সবচাইতে বেশী শেখা যায়।

in hive-176627 •  3 years ago  (edited)

IMG-20210305-WA0059.jpg

বন্ধুরা,
আশাকরি সবাই ভালো আছেন? আজ ইয়াস্ এর হাত থেকে কোনো ক্রমে রক্ষা পেয়েছি।
খুব দুশ্চিন্তায় ছিলাম, কারণ গতবার এর আমফানের অভিজ্ঞতা ভালো ছিল না।
যাক আজ যা বলতে এখানে আসা, সেটা হলো পুঁথি পাঠ করে জীবনে যতটা না শেখা সম্ভব; তার চাইতে ও জীবনে ঠেকে বোধ হয় অনেক বেশী শেখা যায়।

তাছাড়া জীবন এর শিক্ষা চলে আমৃত্যু। যতদিন বাঁচা, ততদিন শিক্ষা জীবন দিয়েই যাবে।

সেই শিক্ষাটা কিন্তু কেবল কার্যক্ষেত্রে নয় ব্যক্তিগত জীবনের মানুষ দের থেকেও পাওয়া যায়।

গত দুতদিন এ আমি দুরকম এর শিক্ষা পেয়েছি।
একটি কার্যক্ষেত্রে এবং একটি ব্যক্তিগত জীবনে।

আচ্ছা একজন যখন কারোর জন্য প্রত্যাশা বিহীন ভাবে কিছু করে; তখন সেই ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গের কি কোনো দায়বদ্ধতা থাকে না সেই মানুষটির প্রতি? যে প্রত্যাশা বিহীন ভাবে উপকার করছে।

সবার আগে এটা আসলে মানার ক্ষমতা রাখতে হয়, যে, আমরা সর্বজ্ঞানী নই। হতেই পারে একটি বিষয় একজন বেশি জানেন, আবার একটি বিষয় কম।

কিন্তু সেটা না মেনে যদি কেবলমাত্র নিজের যুক্তি এবং তর্ক দিয়ে নিজেকে শ্রেষ্ঠ প্রমাণের লড়াই এ সবসময় সামিল হন, তাহলে সেই ইংরিজি প্রবাদ,' জ্যাক অফ অল ট্রেডস, কিং অফ নান্' এর মত অবস্থা দাড়ায়।

IMG-20210305-WA0051.jpg

আমি বিশ্বাস করি কোনো মানুষ কখনোই সর্বজ্ঞানী হতে পারে না, প্রত্যেকের থেকেই কিছু না কিছু শেখার আছে।
মানুষটি বয়সে ছোট না বড়, অভিজ্ঞ না অনভিজ্ঞ এগুলো কিন্তু বড়ো বিষয় নয়।
বিষয়টি হলো সে কি জানে এবং আমার কি জানা নেই।

আমি যদি কাউকে বিশ্বাস বা ভরসা করি তাহলে তার মতামত এবং পরামর্শকে ও সমান বিশ্বাস এর সাথে গ্রহণ করা উচিত।

জীবনে উপরে উঠতে গেলে আমার মনে হয় সবার আগে কি করে নামতে হয় সেটা শেখা উচিৎ।

একটি গাছ যতো আকাশের কাছে পৌঁছয় ততটাই তার শেকড় মাটির গভীরে পৌঁছয়।

তার মানে হলো, ভীত শক্ত না থাকলে দাড়িয়ে থাকা যায় না, এবং জীবনে যতো উপরেই ওঠো না কেনো পা যেনো মাটিতে থাকে।

কোনো কিছুর উপকারিতা বা অপকারিতা ততক্ষণ বোঝা যায় না যতক্ষণ সেটা গ্রহণ না করা হয়।

এখন যদি গ্রহণের পূর্বেই কেউ নিজের জ্ঞানের প্রয়োগ করে বলে যে, ওটা গ্রহণ করে লাভ হবে না।

তার মানে হলো, সে তার ভীতি কে আড়াল করছে, সে গ্রহণে অসমর্থ অথবা সে নিজেকে নিজের গণ্ডির বাইরে বেরোতে দিতেই অরাজি।

নিজের সীমিত জ্ঞানের মধ্যেই বাকি জীবন কাটিয়ে দিতে পারলেই খুশি।

আবার ব্যক্তিগত জীবনে দেখা যায়, অনেক খানি পথ চলার পর ও আসলেই কেউ কাউকেই চিনতে পারেনি, বা বুঝতে পারেনি।

বিশ্বাস শব্দটা কিন্তু ব্যক্তিগত ক্ষেত্রেও প্রযজ্য, কারণ আমি যদি কাউকে ভালোবাসি তাহলে আমার মনে হয় তার প্রতি এই বিশ্বাস টা থাকা খুব প্রয়োজন যে, আর যাই হোক সে আমার ক্ষতি চায় না।

যা কিছু আমাকে পরামর্শ দেবে, বা যে কাজ করতে বলবে সেটা আমার মঙ্গলের জন্যই।

সেটা না হয়ে যদি প্রশ্ন উঠে আসে কার্যের পিছনের কারণ কি জানার, তার মানে কোথাও সেই সম্পর্ক আজ ও কাঁচাই রয়ে গেছে।

IMG-20210305-WA0039.jpg

আচ্ছা ছোটো বেলাতে মা, যা বলতেন আমরা শুনতাম; কেনো কাজটা করতে বলছেন, সেই প্রশ্নটা আমরা কখনো আমাদের মা কে করেছি কি?

আমি অন্তত কোনোদিন করিনি এই বিশ্বাস নিয়ে যে, মা এর কথা শুনতে হয় এবং উনি যেটা করতে বলছেন সেটা আমার ভালোর জন্যই।

তাহলে বিষয়টা কি দাঁড়ালো, সম্পর্কে বিশ্বাস এর অভাব থাকলেই প্রশ্ন উঠে আসে।

সবচাইতে গা জ্বালার বিষয়, আমরা কারোর দিক এ যখন কোনো বিষয় নিয়ে একটি অভিযোগ আঙ্গুল তুলি, তখন তিনটে আঙ্গুল নিজের দিকে থাকে সেটা দেখতে ভুলেই যাই।

IMG-20210305-WA0046.jpg

অবশেষে বলবো, আজ আমি শিখেছি, তাদের নিয়ে জীবনে চলা উচিত যারা আমাকে ভরসা করে কোনো প্রশ্ন ছাড়া।

যারা আমাকে বিশ্বাস করে সন্দেহ ছাড়া; যারা কোনো কাজ করতে বললে, অজুহাত খোঁজে না।

কাজেই দুষ্টু গরুর থেকে শূন্য গোয়াল ভালো।

সেটা কাজের ক্ষেত্রে হোক বা ব্যক্তিগত জীবনের ক্ষেত্রে।

অন্যের উপকার করে দেখলাম, শিক্ষাও পেলাম।তাই উপকার করার ইচ্ছে আপাতত আর নেই।

আপনে বাঁচলে বাপের নাম।

অবশেষে বলতে চাই, মানুষ রাগ করেই সত্যি কথাগুলো বলে ফেলে, বরঞ্চ ইমোশনাল হয়ে মিথ্যে কথা বলে বেশি।

আমি ভুল হলে তার পরিণতি যেমন আমাকে ভুগতে হবে , ঠিক তেমনি অন্যকে আঘাত করে , অপমান করে অন্যরাও রেয়াত পাবে না, কারণ কর্ম কাউকেই ছেড়ে কথা বলে না।

ও আর হ্যাঁ! আমি না বলতে, শুনতে এবং মেনে নিতে অভ্যস্থ। কাজেই যে যাচ্ছে যাক, যে থাকবে থাক, আহ্বান নেই, বিসর্জন ও নেই।
তবে দিন দিন মানুষের এই আচরণগুলো আমাকে শক্ত হতে সাহায্য করছে।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

@sonu98 বাস্তবটা লেখার মাধ্যমে এতো সুন্দর ভাবে তুলে ধরার জন্যে ধন্যবাদ।"যে যাচ্ছে যাক, যে থাকবে থাক, আহ্বান নেই, বিসর্জন ও নেই।"এই লাইনটা মন ছুঁয়ে গেল।অপূর্ব লিখেছেন।আসলে জীবনে ভালোবাসাই শেষ কথা নয়।বিশ্বাস,ভরসার ও একটা আলাদা জায়গা থাকে, যেটা শক্ত হলে ভালোবাসা এমনিতেই তৈরী হয়ে যায়। ভালো থাকবেন।মন খারাপ করবেন না, আপনি নিজের কাজ করেছেন, কারোর ভালো চেয়েছেন, ভালোটা অনেকেই নিতে পারে না, তাতে আপনার কষ্ট পাওয়ার কিছু নেই।

অনেক ধন্যবাদ সহমত পোষণের জন্য, সবটাই সময় এর ব্যাপার আমিও দেখি সময় কি দেখায় আমি ভুল না ঠিক @sampabiswas

একদম সঠিক কথা বলেছেন সঠিক মানুষ এবং সঠিক পরামর্শ দাতার আজ বড়ই অভাব কাজেই সেটা যদি কেউ বুঝতে না পারে তাহলে সেটা তাদের বিফলতা। @sonu98

ধন্যবাদ আপনাকে, ভালো করতে চাইলেই হয়না কারোর জন্য, যার জন্য করতে চাইছি তার আমার উপরে বিশ্বাস থাকাটাও জরুরি @pulook

সত্যি শিক্ষার কোন বয়স হয়না। শিক্ষা সবার কাছ থেকে নেওয়া যায়। ছোট, বড় সবার কাছ থেকে শিক্ষা অর্জনকরা যায়। তাতে কোন লজ্জার কিছু নেই।

একদম সঠিক কথা বলেছেন, কিন্তু যারা সর্বজ্ঞানী তাদের এটা বোঝানো খুব মুশকিল এবং যাঁরা কোনো কাজ করার আগে বিশ্বাস এর থেকেও বিবরণ এ বিশ্বাসী।@piudey

Motanikya kono kaaj ke aro bhlobhave korte sahajya kore... sob kichutey moter mil thakbe eta thik noy boley amar money hoy. jodi keu kichu niye prosno kore tate bhul ki/

সব কিছুর সাথে আস্থা এবং বিশ্বাস থাকাটা সবচাইতে বেশি প্রয়োজন। ধন্যবাদ@lother68