![]() |
---|
নমস্কার বন্ধুরা!
আশা করি সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও বেশ ভালো আছি। কমিউনিটির সকল সদস্যের প্রতি ভালোবাসা জ্ঞাপন করে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে চলেছি। তবে তার পূর্বে আমি @sduttaskitchen ম্যাম, কে ধন্যবাদ জানাই, আমাকে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য।
আমি আমার কয়েকজন বন্ধুকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি তাদের বক্তব্য তুলে ধরার জন্য,
@muktaseo
@rubina203
@karobiamin71
বর্তমান যুগ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির যুগ। যত দিন যাচ্ছে আমরা প্রযুক্তি নির্ভর হয়ে পড়ছি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর কারনে জনজীবনে এত আমূল পরিবর্তন এসেছে যে, ৮ থেকে ৮০ সকলের মধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়া সম্পর্কে অবগত রয়েছে।
বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়ার কারনে বিভিন্ন রকম সামাজিক উন্নয়নমূলক কাজ সংঘটিত করা সহজ হয়ে গিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর মাধ্যমে আমরা সহজেই সারা বিশ্বের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করতে পারি। শুধু তাই নয়,
সোশ্যাল মিডিয়ার কারনে এখন ঘরে বসেই শিক্ষার্থীরা অনলাইনে প্রয়োজনীয় ক্লাস করতে পারি। শুধু নির্দিষ্ট শিক্ষকের কাছে না বরং হাজারো শিক্ষকের কাছ থেকে শিক্ষা নিতে পারি এতে করে সমাজের অনেক ছাত্র ছাত্রীর প্রয়োজনীয় বিষয় যেকোনো সময় শিখতে পারে।
আমাদের সমাজে এমন অনেকেই রয়েছে যারা বিভিন্ন রোগে অসুস্থ কিন্তু হয়ত অর্থের অভাবে উপযুক্ত চিকিৎসা নিতে পারছে না তবে বর্তমানে অনেক ডাক্তার রয়েছে যারা সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে বিনামূল্যে রোগীর সেবার দিয়ে থাকে। এরূপ ডাক্তারের কাছ থেকে সহজেই আমরা আমাদের সমস্যার সমাধান পেতে পারি।
তাছাড়া আমাদের আশেপাশে অনেক অনৈতিক বা অসামাজিক কর্মকাণ্ড সংঘটিত হয়। আমরা সেগুলো সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে সারা দেশের মানুষের সামনে তুলে ধরতে পারি এবং অপরাধ সংঘটিতকারীকে উপযুক্ত শাস্তির মুখোমুখি করাতে পারি। উপরোক্ত বিষয়গুলো হয়ত সোশ্যাল মিডিয়া না থাকলে এত সহজে করা সম্ভব হত না।
সোশ্যাল মিডিয়া আমাদের সমাজে অনেক সুফল বয়ে এনেছে এটা ঠিক তবে এই প্রযুক্তিগুলোর কারনে অনেক নেতিবাচক প্রভাবও পড়ছে। আমার সব থেকে খারাপ লাগার বিষয় হলো, বর্তমানে ছোট বাচ্চাদের কাছে মোবাইল ধরিয়ে দিয়ে কার্টুন কিংবা বিনোদনমূলক ভিডিও দেখানো।
ছোট বাচ্চারা সহজেই যেকোনো বিষয়ের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ে। আমি এমনও দেখেছি, কার্টুন না দেখালে বাচ্চারা খেতে চায় না এমনকি ঘুমাতেও চায় না। এত অল্প বয়সে প্রযুক্তির এত কাছাকাছি চলে আসলে সেটা তাদের মানসিক বিকাশ ঘটাতে ব্যাঘাত ঘটায়।
আমি যখন ছোট ছিলাম তখন সকালে ঘুম থেকে উঠে বই নিয়ে পড়তে বসা তারপর সময় হলে স্নান করে স্কুলে যাওয়া। স্কুল ছুটি হতো বিকাল ৪ টায়, তখন একটাই লক্ষ্য থাকতো বাড়িতে গিয়ে বন্ধুদের সাথে মাঠে খেলতে যেতে হবে। তবে এখন সকলে নিজের মতো করে মোবাইল ফোনে সোশ্যাল মিডিয়া স্ক্রোল করতে থাকে। সোশ্যাল মিডিয়ার বন্ধুদের সময় দিতে গিয়ে আমরা আমাদের বাস্তব জীবনের সত্যিকার বন্ধুদের হারিয়ে ফেলছি।
সোশ্যাল মিডিয়ায় সঠিক তথ্যের পাশাপাশি অনেক মিথ্যা তথ্যও ঘুরে বেড়ায়। এই তথ্যগুলো শোনার পর সমাজের মানুষের মধ্যে একটা আতঙ্ক কাজ করে। কঠোর পরিশ্রম করে পড়াশোনা করে কেউ জীবনের লক্ষ্য পৌঁছালে, সমাজের অনেকেই তাকে অনুসরণ করনে। তবে সোশ্যাল মিডিয়ার অতিরিক্ত ব্যবহারের কারনে সমাজের অনেক ছাত্র ছাত্রী অকালে ঝরে যাচ্ছে। তারা পড়াশোনার থেকেও সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশি সময় অতিবাহিত করছে আর এটা সমাজের জন্যেও ক্ষতি সাধন করছে বলে আমার মনে হয়।
আগেই বলেছি, সোশ্যাল মিডিয়া আমাদের জন্য অনেক ক্ষেত্রে সুফল বয়ে এনেছে। পৃথিবীর এক প্রান্তে অবস্থিত মানুষ অন্য প্রান্তে অবস্থিত ব্যক্তির সাথে অনায়াসে যোগাযোগ করতে পারে। অনেকেই রয়েছে যারা নিজের পরিবার থেকে অনেক দুরে অবস্থান করে কর্ম সূত্রে।
সন্তানের কাছ থেকে দুরে অবস্থিত বাবা - মা তার সন্তানের সাথে কথা বলার জন্য বা তাকে এক মুহুর্ত দেখার জন্য হাহাকার করতে থাকে। তবে বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়ার আশীর্বাদে খুব সহজে নিজের পরিবার ও কাছের মানুষের যোগাযোগ করা সম্ভব হয়।
সোশ্যাল মিডিয়া শুধুমাত্র সাধারণ মানুষদের জন্যেই নয় বরং যেকোনো কোম্পানির অনেক কাজও সহজ করে দিয়েছে। প্রতিটা কোম্পানি সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজেদের পন্যে বা সেবার প্রচার করার মাধ্যমে সাধারণ মানুষের কাছে নিজেদের পরিচিতি বাড়াতে পারে। তাই আমি মনে করি, সোশ্যাল মিডিয়া সাধারণ মানুষ ও যেকোনো প্রতিষ্ঠানের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
বর্তমান বিশ্বের খুব কম মানুষই রয়েছে যারা সোশ্যাল মিডিয়ার সাথে যুক্ত নয় বা অবগত নয়। আমি নিজেও সোশ্যাল মিডিয়ার সাথে যুক্ত। যদিও আমি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোয় খুব কম সক্রিয়। তবে বিভিন্ন প্রয়োজন মেটানোর জন্য অবশ্যই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ব্যবহার করে থাকি।
প্রতিটা জিনিসেরই ভালো ও খারাপ দুটো দিক রয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোও তার বিকল্প নয়। এর যেমন উপকারীতা রয়েছে ঠিক তেমনই এর কিছু নেতিবাচক প্রভাবও আমাদের উপর পড়ে। পৃথিবীতে যত প্রকার ক্ষতিকর পদার্থ রয়েছে, সেগুলো কোনো না কোনো উন্নয়নমূলক বা পরিক্ষা মূলক কাজে ব্যবহার করা হয়।
একটা বস্তু আমাদের জন্য আশীর্বাদ নাকি অভিশাপ সেটা উপর নির্ভর করে আমাদের মতো সাধারণ মানুষ সেটাকে কিভাবে ব্যবহার করবে তার উপর। আমরা সোশ্যাল মিডিয়া ভালো কাজেও ব্যবহার করতে পারি আবার ব্যবহারের ভিন্নতার কারনে এটাই আমাদের ক্ষতির কারন হতে পারে। তাই আমি বলবো, উন্নত প্রযুক্তি তথা সোশ্যাল মিডিয়া আমাদের আশীর্বাদ মনে করে এটার সঠিক ব্যবহার করার মাধ্যমে সমাজ ও দেশের উন্নয়ন করার চেষ্টা করতে হবে। তাহলেই এর আবিষ্কার সার্থক হবে। সকলে ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।