খাগড়াছড়ি ভ্রমন (ভ্রমন-০৪)। ''বাংলায় তারার মেলা''।। ১০%@btm-school

in hive-185999 •  2 years ago 

আসসালামুয়ালিকুম,
গত পর্বে আপনাদের সাথে আমি আমার চট্রগ্রাম এর কিছু দর্শনীয় স্থান ভ্রমনের গল্প শেয়ার করেছি। আজকে আমি আপনাদের সাথে আমার খাগড়াছড়ি ভ্রমনের গল্প শেয়ার করবো।
আমাদের কলেজ থেকে এই বনভোজনের আয়োজন করা হয়েছিলো। দিনটি ছিলো ২৫/০১/২০২১ । সব বান্ধবীরা এবং স্যার ম্যামরা মিলে আমরা সকাল ৬ টার সময় কলেজ থেকে রওনা দেই। কলেজ বাসেই আমরা ভ্রমনে গিয়েছিলাম মোট ৪ টি বাস। আমি আমার দুই বান্ধবী পাশাপাশি সিট এ বসি। জানালার পাসের সীটে কে বসবে এই নিয়ে একটু মন খারাপ হলেও আমি জানালার পাসের সিট পেয়ে যাই। কেননা আমার দুই বান্ধবী ছিল জমজ দুই বোন। অবশেষ এ তারা বলল যে আমরা দুই বোন পাশাপাশি সীটে বসবো আর আমি জানালার পাশে। বাস ছাড়ার পর আমরা তো মহাখুশি। গল্প -হইহুল্লর, গানবাজনা শুরু করল সবাই। মাঝ রাস্তায় আমাদের হালকা নাস্তার ব্যবস্থা করা হয়। সবাইকে স্যার ম্যামরা একটি করে কলা, পাউরুটি এবং ডিম দেন। খাওয়া শেষ এ আমরা বাইরের দৃশ্য দেখছিলাম আর সেটা নিয়ে আবার গল্প করছিলাম।
আমদের বাস যখন খাগড়াছড়িতে প্রবেশ করল পাহাড়ি আঁকাবাঁকা রাস্তার মধ্য দিয়ে কি যে ভয় লাগছিলো। কিন্তু পাহাড়ি রাস্তার অপরূপ সৌন্দর্যে যেন সব ভয় আস্তে আস্তে বিলীন হয়ে যাচ্ছিলো। প্রকৃতির অপার সৌন্দর্যে যেন হারিয়ে যাচ্ছিলাম।

সর্বপ্রথম আমরা খাগড়াছড়ি আলুটিলায় যাই। স্যাররা আমাদের কয়টা গ্রুপ এ ভাগ করে দেন আর গাইড করেন। আমরা আমাদের বাংলা স্যারের গ্রুপে ছিলাম। স্যার আমাদেরকে যায়গা সম্পর্কে সব তথ্য দিতে থাকেন আর ঘুরাতে থাকেন। আলুটিলা মূলত একটি গুহা। স্থানীয়রা এই গুহাকে বলে 'মাতাই হাকড়' বা 'দেবতার গুহা'। আলুটিলা গুহাটির দৈর্ঘ্য ৩৫০ ফুট। গুহার ভেতরে সবসময় অন্ধকার থাকে তাই গুহায় প্রবেশের সময় মশাল নিয়ে ঢুকতে হয়। মশালের বিপরীতে টর্চ লাইট নিয়ে যাওয়া যায়। গুহার ভিতরের পাথর খুবই পিচ্ছিল তাই ভালো গ্রিপের জুতা পড়ে যাওয়া উচিত। আলুটিলায় প্রবেশের আগে মূল গেটের কাছ থেকে ৪০ টাকা দিয়ে টিকেট কিনতে হয়। গুহার এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে যেতে ১০/১৫ মিনিট সময় লাগে। আর আলুটিলা গুহার কাছেই আছে রিসাং ঝরনা । যেহেতু আমরা ভয় পাই তাই স্যার আমাদেরকে গুহার ভিতরে নিয়ে যাননি।

301065067_1078662779683956_2057176779963649130_n.jpg

301378827_1473040499824251_2310103119445304383_n.jpg
আলুটিলা

আলুটিলা ভ্রমন শেষ এ স্যাররা আমাদের একটি রেস্তরায় নিয়ে যান দুপুরের খাওয়ার জন্য। খাওয়া শেষে আবার আমরা রওনা দেই আরও একটি সুন্দর জায়গায়। জায়গাটি হলো খাগড়াছড়ি জেলায় অবস্থিত হর্টিকালচার হ্যারিটেজ পার্ক। এটি খুবই জনপ্রিয় একটি পার্ক। এই পার্ক এ রয়েছে অসাধারন একটি ঝুলন্ত ব্রিজ এবং বড় একটি সুইমিং পুল। পার্কের ভিতরের পরিবেশ খুবই মনোরম। বন্ধুবান্ধব ও পরিবার পরিজন নিয়ে ঘুরার জন্য এটি একটি আদর্শ জায়গা।

301750671_480482270271142_6378897486217725739_n.jpg

301300753_489134192601336_7969574696663523779_n.jpg

301291680_1152006165354962_4342646381989340248_n.jpg

301610092_763432194728784_7834719825851972232_n.jpg
ঝুলন্ত ব্রিজ

যেহেতু সেখানে অনেক স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যায় তাই নিজেদের ছাত্রীদের চেনার জন্য স্যাররা আমাদের একটি করে মাথায় পরার জন্য ক্যাপ দিয়েছিলেন। পার্কে স্যাররা বিনোদন দেওয়ার জন্য গান বাজনা এবং কিছু মজাদার খেলার আয়োজন করেন।
সবশেষে এ সন্ধার আগেই আমরা বাসে উঠে যাই । সারাদিনের জার্নিতে আমারা সবাই ক্লান্ত হয়ে পড়ি। রাত ১১ টার সময় আমরা গন্তব্যে পোঁছাই। তারপর যে যার ফ্যামিলি মেম্বারদের সাথে বাসায় চলে যাই।

তবে খাগড়াছড়ি ভ্রমনটি অসাধারন ছিলো। আমি খুবই মজা করেছি এবং আনন্দ পেয়েছি। আশাকরি আমার এই খাগড়াছড়ি ভ্রমনের গল্পটি আপনাদের অনেক ভালো লাগবে।
ধন্যবাদ।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

ভাল হয়েছে লেখাটি।
আপনার লেখার ইমপ্রুভমেন্ট হয়েছে।
লেখার মধ্যে অনেক দরকারি তথ্য ছিল।
তবে খাগড়াছড়ির স্থানীয় বা পাহাড়ী জনগোষ্ঠী সম্পর্কে কিছু তথ্য থাকলে আরও ভাল হতো।

এভাবেই লেখা চালিয়ে যান।
আশকরি একদিন অনেক দূর এগিয়ে যেতে পারবেন।

দারুন জায়গা , দেখেই যেতে ইচ্ছা করছে।

আপনার ভ্রমণ কাহিনী খুব ভালো হয়েছে। লেখাটির মধ্যে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ইনফরমেশন ছিল খাগড়াছড়ি নিয়ে।
কিন্তু আমার একটা প্রশ্ন ছিল আপনি যে বাস এর উইন্ডোস সিট্ নিয়ে এত হাঙ্গামা করলেন আপনার ২ বান্ধবীর সাথে আর উইন্ডোস সিট্ এ বসলেন, ধরেন সারা রাস্তায় আপনার মুখের ওপর সূর্যের আলো লাগতো তখন কি করতেন?

যেহেতু সকাল সকাল গিয়েছি রোদের আলো তেমন গায়ে লাগেনি। তবুও যদি দুপুরের রোদে জার্নিটা করতাম তাহলে জানালার পর্দা টেনে দিতাম সামান্য একটু ফাঁকা রাখতাম রোদ সরে গেলে আবার সরিয়ে দিতাম পর্দা