(গত পর্বের পর)
সেবার ঈদের সময় ঢাকা থেকে বাড়িতে যাবো, একাই যাবো। কিন্তু ডায়রেক্ট বাসের একটা টিকেটও ম্যানেজ করতে পারছিলাম না। ঈদের আর বাকি মাত্র দুই দিন, ইতোমধ্যে সব কোম্পানির সব টিকেট অগ্রিম বিক্রয় হয়ে গেছে। আমি পড়লাম মহা বিপদে, টিকেট না পেলে বাড়ি যাবো কিভাবে? শেষমেশ সিদ্ধান্ত নিলাম ভেঙে ভেঙে কাটা লাইনেই বাড়ি যাবো, যেহেতু সাথে কেউ নাই, তাছাড়া একটা পিঠব্যাগ ছাড়া আর কোন মালামালও সাথে নাই।
যেই ভাবা সেই কাজ, সকালে ডিসিশন নিয়ে বিকালেই অর্থাৎ সন্ধ্যার আগে আগে আল্লাহর নাম নিয়ে রওনা দিয়ে দিলাম। প্রথমে গুলিস্তান থেকে মাওয়ার বাসে চড়ে বসলাম। মাওয়া পৌঁছাতে ঘন্টা খানেক লেগেছিল। মাওয়ায় যাওয়ার পরে সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলো। মাওয়ায় গিয়ে নদী পার হওয়ার জন্য আপনার হাতে ৩ টা অপশন থাকবে। এক. ফেরি পারাপার, যাতে সময় লাগে সাধারণত দেড় ঘন্টা। দুই. লঞ্চ পারাপার, যাতে সময় লাগে এক ঘন্টার মতো। আর তিন. স্পীডবোটে পারাপার, যাতে সময় লাগে ম্যাক্সিমাম ২০ মিনিট। সুতরাং অন্যান্য বারের মতো স্পীডবোটেই পদ্মা পাড়ি দেয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম।
ঈদের সিজন হওয়াতে সবগুলো ঘাটে প্রচুর মানুষের ভীড়। যে যেভাবে পারছে সেভাবেই নদী পার হওয়ার চেষ্টা করছে। কাকে ফেলে কে আগে নদী পার হতে পারে সেই প্রতিযোগিতা চলছে। আমিও ঠ্যালা-ধাক্কা সামলিয়ে ঘাটের পাশে কাউন্টারের সামনে লাইন ধরে টিকেট কেটে (টিকেট সম্ভবত ২৫০ টাকা নিয়েছিল, অন্যান্য সময় নেয় ১০০ টাকা) সোজা স্পীডবোট ঘাটের দিকে এগিয়ে গেলাম। সেখানেও আরেক কর্মযজ্ঞ, একের পর এক স্পীডবোট আসছে আর নিমিষেই লোক ভর্তি করে ওপারের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাচ্ছে। ওপাশে যাত্রীদের নামিয়ে দিয়ে দ্রুত আবার খালি বোট নিয়ে চলে আসছে। কেননা ঈদের সময় বলে যাত্রীর চাপটা ঢাকা থেকে অপারের দিকেই বেশি ছিল।
ঘাটে কোন ডিসিপ্লিনের বালাই নেই, কে আরেকজনকে পেছনে ফেলে আগে উঠতে পারবে, কে সামনে বসতে পারবে সেই প্রতিযোগিতায় সবাই লিপ্ত। অতঃপর কোনরকমে বোটের মাঝামাঝি একটা সিটে উঠে বসতে পারলাম। কিন্তু সেকি, কাউকে ওরা লাইফ জ্যাকেট দিলোনা। যদিও বি. আই. ডব্লিউ. টি. সি. অর্থাৎ বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্পোরেশন কর্তৃক স্পস্ট করে বলা আছে, নদী পারাপারের সময় প্রত্যেক যাত্রীকে একটা করে লাইফ জ্যাকেট পরিয়ে দিতে হবে। কিন্তু সেসবের কোন ব্যবহার চোখে পড়লোনা। বলে রাখা ভালো, এ ধরনের স্পীডবোটগুলো হয় মাঝারি সাইজের, যাতে অনায়াসেই ১৬-১৮ জন বসতে পারে। তবে অধিক লাভের আশায় তারা সেসময় ২০ জন পর্যন্ত উঠায়।
আজকের বর্ণনার এখানেই ইতি টানছি। আগামী পর্বে আমরা জানতে পারবো কিভাবে আমাদের স্পীডবোটটি ডুবে গিয়েছিল, এবং আমাদের কি অবস্থা হয়েছিল।
সেই পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।
সবাইকে অনেক ধন্যবাদ।
অপেক্ষায় আছি অন্তিম পর্বের
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
হুম, খুব শীঘ্রই আসবে ধারাবাহিকভাবেই ইনশাআল্লাহ।
অনেক ধন্যবাদ পড়া এবং অপেক্ষায় থাকার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
পদ্মা মানে একটা বিপদজনক নদী অনেক মানুষের প্রান নিয়েছে এই পদ্মা অনেক মানুষকে ভিটা বাড়ী হীন করেছে এই পদ্মা তাই এই নদীতে স্পীটবোর্ড এরিয়ে যাওয়া উত্তম বলে আমি মনে করি। পরের পর্বের অপেক্ষার রইলাম ভাইয়া।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
বর্তমানে পদ্মা পাড়ি দিতে স্পীডবোট, লঞ্চ, ফেরী কোনটারই আর প্রয়োজন পড়েনা, কেননা পদ্মা ব্রিজ চালু হয়ে গেছে! 😁
পরের পর্ব খুব তাড়াতাড়ি আসবে।
ধন্যবাদ, পুরোটা পড়ার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
হা ভাইয়া আমি ঐটার উপর দিয়ে গেছি সুন্দরবন
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
হ্যাঁ, এখন অনেক সুবিধা হয়েছে।
অনেক সময় সাশ্রয় হবে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
এখন তো পদ্মা নদীর ওপর সেতু তৈরি হয়ে গেছে ।
আমি শুধু ভাবছি ঐসকল লোক জন দের কথা যারা পদ্মা নদীর ওপর স্পীডবোট চালিয়ে নিজেদের জীবিকা নির্বাহ করতো তারা এখন কি অবস্থায় আছে ।
আর আপনার স্টোরিতে লাইফ জ্যাকেট এর কথা যেটা বললেন আমার মনে হয় সেই সময় তাদের সব যাত্রীদের জন্য লাইফ জ্যাকেট এর ব্যাবস্থা করা উচিৎ ছিল যেহেতু তখন ভির অন্য সময় এর থাকে বেশি ছিল।
পরের পর্বের জন্য অপেক্ষায় থাকলাম ভাইয়া ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
হ্যাঁ দাদা, সরকারি নিয়ম-কানুন থাকলেও স্পীডবোট মালিক-চালক সিন্ডিকেট এসব মানেনা।
পরের পর্ব খুব তাড়াতাড়ি আসবে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
অপেক্ষায় থাকলাম ভাইয়া ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
👍
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit