সত্য ঘটনা | পদ্মা নদীতে আমার স্পীডবোট ডুবি (১ম পর্ব) | ১০% @btm-school

in hive-185999 •  2 years ago 

water-4490018_1920.jpg
Source

বছর চারেক আগের ঘটনা হবে। তখনও পদ্মা নদীতে পদ্মা ব্রিজ তৈরির কাজ শেষ হয়নি, তবে কাজ চলমান ছিল। সেসময় সাধারণত ফেরী, লঞ্চে বা স্পীডবোটেই নদী পার হতে হতো। আমার আবার বাড়ি পদ্মার ওপারে তথা বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সর্বশেষ জেলা সাতক্ষীরায়। সুতরাং, বাড়ি থেকে ঢাকা আবার ঢাকা থেকে বাড়ি যাতায়াতের সময় যেভাবেই যাওয়া-আসা করি না কেন উক্ত তিনটা উপায়ের যেকোনো একটা উপায়ে আমাদের প্রমত্তা পদ্মা পাড়ি দিতেই হতো।

আমাদের এই রুটে যেসব বাস চলাচল করতো সেগুলো ছিল সরাসরি ফেরী পারাপার। সুতরাং একবার বাসে উঠে বসতে পারলেই হলো আর কোন টেনশন নেই। ৮ ঘন্টা, ১০ ঘন্টা, ১৫ ঘন্টা এমনকি ২০ ঘন্টা সময় লাগলেও এক সময় না এক সময় ঢাকা বা সাতক্ষীরা পৌঁছে যাবো, এমন আশাবাদ থাকতো মনের মধ্যে। এই বাসগুলো চলাচল করতো সাধারণত ঢাকা থেকে যদি বলি, শ্যামলী > গাবতলী > সাভার > নবীনগর > ধামরাই > মানিকগঞ্জ > পাটুরিয়া (ফেরী ঘাট) > রাজবাড়ী > ফরিদপুর > মাগুরা > যশোর হয়ে তারপর সাতক্ষীরা। এই পথ যেতে বাসে সাধারণত ৮-১০ ঘন্টা লাগতো, আর ফেরী ঘাটে যদি জ্যাম থাকতো বা আবহাওয়া খারাপ থাকতো, তাহলে ১৫-২০ ঘন্টাও লেগে যেত বাড়ি যেতে, বিশেষ করে দুই ঈদের সময় এমন ভোগান্তি পোহাতে হতো আমাদের।

যখন আমার সাথে সফরসঙ্গী হিসাবে পরিবার-পরিজন, আত্মীয়-স্বজন কিংবা বন্ধু-বান্ধব সেই সাথে অনেক মালামাল, বাক্স-পেটরা থাকতো তখন সাধারণত সরাসরি ফেরী পারাপার গাড়িতেই যাতায়াত করতাম। কেননা ঐ অবস্থায় ওটাই সুবিধাজনক। সব মালামাল বাসের নিচের বক্সে দিয়ে সিটে বসে পড়তাম এবং দেরিতে হলেও কোন প্রকার ঝামেলা ছাড়াই একসময় ঠিকই গন্তব্যে পৌঁছে যেতাম। আর যদি আমি সম্পূর্ণ একা হতাম এবং সাথে হালকা মালামাল থাকতো, তাহলে আর এই এত সময় ব্যয় করে ডাইরেক্ট রাস্তায় আসতাম না, ভেঙে ভেঙে অল্প সময়ের মধ্যে (৫-৬ ঘন্টা) আরেক রাস্তায় ঢাকা চলে আসতাম।

ভেঙে ভেঙে বা কাটা লাইনের বাসগুলো যাতায়াত করতো ঢাকা থেকে সায়দাবাদ > মাওয়া (স্পীডবোট বা লঞ্চে পদ্মা পারাপার) > শরিয়তপুর > ফরিদপুর > গোপালগঞ্জ > বাগেরহাট > খুলনা হয়ে তারপর সাতক্ষীরা। সুতরাং দেখা যেত একা থাকলে এই কাটা লাইনের পথে যাতায়াত করতাম বেশি। কাটা লাইন বলতে অনেক ভালো মানের বাসই কিন্তু তারা ডায়রেক্ট না যেয়ে ঢাকা থেকে ছেড়ে মাওয়ায় গিয়ে নামিয়ে দিতো, এরপর নদী পার হয়ে ওপারে গিয়ে আবার ওদের কোম্পানিরই অন্য আরেকটা বাসে বাকি পথ যেতে হতো। এভাবে বহুবার যাওয়া-আসা করেছি।

আজকের পর্ব এই পর্যন্ত। ঘটনার বাকি অংশ আপনারা আগামী পর্বে জানতে পারবেন। সেই পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন, সাবধানে থাকুন।
সবাইকে অনেক ধন্যবাদ।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

সব বিপদের ঘটনা
ভাইয়া আপনি সাবধানে থাকবেন

হ্যাঁ, আমার জীবনে অনেক বড় বড় বিপদের ঘটনা ঘটেছে।
তবে আল্লাহর রহমতে সবগুলো বিপদ থেকে রক্ষা পেয়েছি।

তবে জীবনের এই পর্যায়ে এসে এমন একটা বিপদে পড়েছি, যেটা থেকে আর শেষ রক্ষা হলোনা। সেসব কাহিনীও আসবে একে একে! সাথেই থাকুন।

ভাইয়া আপনি জীবনে অনেক কিছুর এক্সপিরিয়েন্স করেছেন।
আমার খুব অবাক লাগে একজন মানুষের জীবনে এত এত ঘটনা কি ভাবে ঘটতে পারে। আর তাও আবার এত এত বিপদের ঘটনা।

হ্যাঁ দাদা, আমার এইটুকু জীবনে অনেক বড় বড় ঘটনা/ দূর্ঘটনার শিকার আমি হয়েছি, তবে আল্লাহর রহমতে সবগুলো থেকেই রক্ষা পেয়েছি, নিজের তেমন কোন ক্ষতি কখনোই হয়নি।