ফিচার | ঢাকাবাসীর স্বপ্নের মেট্রোরেল (১ম পর্ব) | ১০% @btm-school

in hive-185999 •  2 years ago 

train-7395365_960_720.jpg
Source

ঢাকায় ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা ও যানবাহন বৃদ্ধির ফলে সৃষ্ঠ তীব্র যানজট থেকে শহরবাসীকে মুক্তি দিতে বাংলাদেশ সরকার প্রথমবারের মতো ঢাকা শহরে মেট্রোরেল চালু করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে ২০১৩ সালের শুরুর দিকে। এই রেল চলবে ঢাকা শহরের উপর দিয়ে অর্থাৎ ফ্লাইওভারের উপরে থাকবে তার পুরো লাইন। এই রেললাইনের আনুষ্ঠানিক নাম দেয়া হয়েছে 'ম্যাস র‍্যাপিড ট্রানজিট বা সংক্ষেপে (MRT) লাইন। ২০১৬ সালে এসে সংশোধিত পরিকল্পনা অনুযায়ী দুই বা ততোধিক মেট্রোরেল লাইন স্থাপনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে সরকার। প্রাথমিক ভাবে নির্মাণকাজ শুরু করার জন্য 'এমআরটি লাইন-৬' অর্থাৎ ঢাকার উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত প্রায় ২০.১০ কিলোমিটার পথকে বেঁছে নেয়া হয়, পরবর্তীতে সেটা বাড়িয়ে কমলাপুর পর্যন্ত করা হয়। ২০১৬ সালের জুন মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই 'এমআরটি লাইন-৬' এর উদ্বোধন করেন এবং এর নিমার্ণকাজ শুরু হয়।

20201002_155022.jpg

প্রাথমিকভাবে এই এমআরটি লাইন-৬ প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছিল ২১ হাজার ৯৮৫ কোটি ৫৯ লাখ টাকা, যার মধ্যে জাপান সরকারের আন্তার্জাতিক সহযোগীতা সংস্থা জাইকা প্রকল্প সহায়তা হিসাবে অনুদান দিবে ১৬ হাজার ৫৯৪ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। এই প্রকল্পের সঠিক বাস্তবায়ন হলে উত্তরা থেকে কমলাপুর উভয়দিক থেকে ঘন্টায় প্রায় ৬০ হাজার যাত্রী এবং প্রতিদিন ৯,৬০,০০০ জন যাত্রী যাতায়াত করতে পারবেন বলে আশা করা হচ্ছে। এই এমআরটি লাইন-৬ রুটে মোট ১৬ টি স্টেশন থাকবে। অবশ্য পরবর্তীতে মতিঝিল থেকে কমলাপুর পর্যন্ত লাইন বাড়ানোতে আরও ১ টি স্টেশন বেড়েছে, সবমিলিয়ে ১৭ টি স্টেশন হবে। স্টেশনগুলো যথাক্রমে: উত্তরা উত্তরে তথা দিয়াবাড়ি থেকে শুরু হয়ে, উত্তরা সেন্টারে একটা, উত্তরা দক্ষিণে একটা, মিরপুরের পল্লবীতে একটা, মিরপুর-১১ নম্বরে একটা, মিরপুর-১০ নম্বরে একটা, মিরপুরের কাজীপাড়ায় একটা, মিরপুরের শেওড়াপায়ায় একটা, আগারগাঁও মোড়ে একটা, বিজয় স্মরণীতে একটা, ফার্মগেটে একটা, কাওরান বাজারে একটা, শাহবাগে একটা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির কাছে একটা, সচিবালয়ের কাছে একটা, মতিঝিলে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে একটা এবং সর্বশেষ কমলাপুরে একটা।

20220418_163837~2.jpg

মেট্রোরেল চলবে বিদ্যুতের মাধ্যমে এবং প্ল্যানিং অনুযায়ী এমআরটি লাইন-৬ দিয়ে রেল চালানোর জন্য প্রতি ঘন্টায় প্রায় ১৩.৪৭ মেগাওয়াট বিদ্যুতের প্রয়োজন হবে যা জাতীয় গ্রীড থেকেই নেয়া হবে। মেট্রোরেলে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য ৫ টি বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র নির্মাণ করা হবে, সেগুলো থাকবে যথাক্রমে: উত্তরার দিয়াবাড়িতে একটা, মিরপুরের পল্লবীতে একটা, আগারগাঁয়ের তালতলায় একটা, সোনারগাঁও হোটেলের কাছে একটা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা একাডেমী এলাকায় একটা। মেট্রোরেল পরিচালনার জন্য একটা বিশেষায়িত কোম্পানী গঠন করা হয়েছে যার নাম 'ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানী লিমিটেড (DMTCL)' যা ম্যাস র‍্যাপিড ট্রানজিট নামে পরিচিত।

20220828_181445.jpg

আজ এই পর্যন্তই, পরের এবং শেষ পর্বে মেট্রোরেলের টিকেটিং ব্যবস্থাসহ বাকিতথ্য গুলো জানতে পারবেন। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।
অনেক ধন্যবাদ।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

ঢাকার মত ব্যস্ত শহরের যানজট কিছুটা মানুষকে স্বস্তি দিবে এই মেট্রো রেল

এখন শুধু অপেক্ষার পালা, দেখাযাক ঢাকাবাসীর সেই স্বপ্ন পূরণ হয় কিনা!

হবে ভাইয়া হবে

অনেক রেভলিউশনারী একটা প্রজেক্ট। যেটা বাংলাদেশের পরিবহন ব্যবস্থা কে আরো সহজ সরল করে তুলবে। মেট্রো রেল চালু হলে এটি দেশের অর্থনীতিকে আরো মজবুত করবে।আশা করাযায় এটার ফলে পরোক্ষ প্রত্যক্ষ ভাবে অনেক নতুন জব জেনারেট হবে এবং যার ফলে বেকারত্বের হার অনেকটাই কমবে।

জী দাদা, একদম ঠিক বলেছেন।

বাংলাদেশের অনেক বড় স্বপ্নের একটা প্রজেক্ট এটি। একদিকে এই মেট্রোরেল যেমন ঢাকা শহরের যানজট কমাবে তেমনি অন্যদিকে হাজারো মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবে এবং দেশের জিডিপির গ্রোথ বাড়াবে।

এখন দেখা যাক সেই স্বপ্নের কতটুকু বাস্তবায়ন হয়।