ছবিঃ আমারই ব্যবহার করা নানা সময়ের নানা ফোন।
আমার জীবনে নানা সময়ে নানা মোবাইল ফোনের আবির্ভাব হয়েছে, সেগুলোর সাথে হয়েছে আবার নানান ঘটন-অঘটন, সেসব গল্পই আজ আপনাদেরকে শোনাবো। আমি সর্বপ্রথম নিজের একটা স্বাধীন মোবাইল ফোন হাতে পাই ২০০৪ সালে। এসএসসিতে ভাল রেজাল্ট করেছিলাম বলে এক আন্টির থেকে গিফট পেয়েছিলাম ফোনটা। সেটা ছিল 'নোকিয়া-১১০০' মডেলের ফোন। তখন আমি কলেজে পড়ি। সেই ফোন নিয়ে কত উন্মাদনা। তাতে মানুষের সাথে কথা বলা যেত আর কয়েকটি গেম খেলা যেত। তখন ৩০০ টাকা দিয়ে কলিং কার্ড কিনতে হতো, যার মেয়াদ থাকতো ২১ দিন, একেক মিনিট কথা বলতে খরচ হতো প্রায় ৬-৭ টাকা। এরপর কলেজে শেষের দিকে এসে বাবা একটা ফোন কিনে দিয়েছিলেন, সেটা ছিল 'নোকিয়া-১২১০' মডেলের। স্পষ্ট মনে আছে সেটা দিয়ে ইউনিভার্সিটির প্রথম দুটো ইয়ার পার করেছিলাম।
জাহাঙ্গীরনগরে যখন আমি অনার্স থার্ড ইয়ারে পড়ি সেসময় টিউশনির টাকা জমিয়ে প্রথমবার নিজের পছন্দে নিজের টাকায় একটা মোবাইল ফোন কিনেছিলাম, সেটা ছিল 'নোকিয়া সুপারনোভা-৭২১০' মডেলের। এর আগে পর্যন্ত যতগুলো ফোন ব্যবহার করেছি সেগুলো ছিল বাটন ওয়ালা, সাদা-কালো ও ছোট ডিসপ্লের ফোন। এই প্রথমবার কালার ডিসপ্লের ফোন হাতে পেলাম, যদিও এটাও বাটন ফোন ছিল কিন্তু বাটনগুলো ছিল নিচের দিকে অল্প জায়গায়, ডিসপ্লেটা ছিল বেশ অনেক বড় (আগের ফোনের তুলনায় দ্বিগুন), পেছনে ২ মেগা পিক্সেলের ক্যামেরা ছিল, খুবই হালকা-পাতলা হ্যান্ডি একটা সেট ছিল সেটা। সেই সাথে এই প্রথম কোন ক্যামেরা ওয়ালা ফোনও হাতে এলো। আরও সুবিধা ছিল এটাতে ইন্টারনেট ব্যবহার করা যেত। এত এত সুবিধা সম্বলিত মোবাইল সেট আমি প্রথমবার হাতে পেলাম ২০০৯ সালের মাঝামাঝিতে এসে।
এই ফোনটা আমি মাস্টার্স পর্যন্ত অর্থাৎ ২০১২ সাল পর্যন্ত চালিয়েছিলাম, সেসময় ফোনটা নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। এরমধ্যে অনার্স শেষ করে ২০১১ সালে একটা জবে জয়েন করেছিলাম। হাতে টাকা আসতে লাগলো, মার্কেটেও ততদিনে নতুন নতুন কোম্পানী ও মডেলের ফোন আসতে লাগলো। সেসময় হালের ক্রেজ বাটন ছাড়া টাচ স্ক্রিনের ফোনে মার্কেট ছেয়ে যেতে লাগলো। নিজেরও একটা তেমন টাচ ফোন কিনতে ইচ্ছে হলো। ২০১৩ সালের শুরুর দিকে আমি ঢাকার বসুন্ধরা সিটি শপিং মল থেকে নিজের চাকরির টাকা থেকে ১৩,০০০/- টাকা দিয়ে জীবনের প্রথমবারের মতো সিম্ফোনি কোম্পানীর (মডেলটা মনে নাই) একটা টাচ-স্ক্রিন মোবাইল ফোন কিনেছিলাম। ফোনটা অনেক শখ করেই কিনেছিলাম। সাড়ে ৫ ইঞ্চির বড় টাচ ডিসপ্লে, ২ জিবি র্যাম, ১৬ জিবি রম, পেছনে ৫ মেগা পিক্সেল ক্যামেরা, সামনে ২ মেগা পিক্সেল সেলফি ক্যামেরা ছিল (সেসময় এটা অনেক ভাল কনফিগারেশন ছিল)। কয়েকদিন ধরে ইন্টারনেট ঘাঁটাঘাটি করে, ফিচারগুলো ভালভাবে জেনে তারপর কিনেছিলাম। সেমময় আমি সাভারেই থাকতাম। ক্যাম্পাসের পাশেই বন্ধুরা মিলে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতাম। তো সেদিন অফিস শেষ করে নতুন ফোন নিয়ে সাভারের বাসায় চলে গেছি।
আজ এই পর্যন্তই। পরের পর্বে আপনারা জানতে পারবেন কিভাবে আমার সদ্য গতকাল কেনা ফোনটা এক দিনেই হারিয়ে ফেলেছিলাম এবং তারপর কি করেছিলাম। সেই পর্যন্ত সবাই ভাল থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। সবাইকে অনেক ধন্যবাদ।
প্রথম মোবাইল পাওয়ার পার্ট টা বেশি ভালো লাগলো ২০০৪ সালের তাও । তখন কার দিনে মোবাইল কারো কাছে আছে মানে সে অনেক কিছু ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
তা ঠিক, সেসময় কারো কাছে মোবাইল থাকা মানে বিরাট একটা ভাবের বিষয়। তাও আবার প্রত্যন্ত গ্রামে। হাতেগোনা কিছু মানুষের কাছে মোবাইল থাকতো, হয়তো ৫০ জনের মধ্যে ১ জন এমন হবে। নিজেকে সেই হাতে গোনা কয়েকজনের মধ্যে রাখতে পেরে খুবই ভাল লাগতো।
বাইরে বের হলে মোবাইলটা পকেটে না রেখে সবসময় হাতে করে রাখতাম, যাতে মানুষ দেখে বোঝে যে আমার কাছে একটা মোবাইল ফোন আছে! 😁
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
হা হা হা
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
😁
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
এক সময়ের সেরা মোবাইল ছিল এটা নকিয়া ১১০০।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
হুম, আমার ঐ ফোনটা এখনো সচল আছে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit