এলিয়ান বা ভিনগ্রহের প্রাণী সম্পর্কে আগ্রহ নেই, এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া মুশকিল। অন্য গ্রহে আদৌ প্রাণের অস্তিত্ব আছে কিনা, থাকলেও কী রকম দেখতে তাদের— কিছু নিয়েই প্রশ্ন রয়েছে অনেক। এলিয়ান নিয়ে সিনেমাও হয়েছে অনেক। ফিল্মে বারবার পৃথিবীর বুকে নেমেছে তারা। অনেকে বলেন, এখনও পৃথিবীর বুকে রয়েছে ভিনগ্রহীরা। কোথায় রয়েছে? অনেকেরই দাবি, সেই জায়গা ‘এরিয়া ৫১’।
এরিয়া ৫১ হল পশ্চিম আমেরিকার নেভাদা মরুভূমির একটি অংশ। লাস ভেগাস থেকে ৮৩ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই জায়গার বিশেষত্ব হল, এখানকার ভিনগ্রহের প্রাণের অস্তিত্বের কাহিনি। কাহিনিগুলি কতটা সত্যি, কতটা মিথ্যে তা জানা না গেলেও আমেরিকার সেনাবাহিনী যে সব সময় এই জায়গাটিকে লোকচক্ষুর আড়ালে রাখতে চায়, তা স্পষ্ট হয়েছে বহু বার
এরিয়া ৫১ নিয়ে প্রথম জল্পনা শুরু হয় ১৯৪৭ সালে রোসোয়েল বিমান দুর্ঘটনার পর। শোনা যায় এই প্লেনের চালক ছিল ভীনগ্রহীরা। অনেকের মতে আবার, সে দিন প্লেন নয়, উড়েছিল স্পেসশিপ। ভিতরে ছিল নাজিদের গবেষণাগারে তৈরি অদ্ভুত চেহারার ‘মানুষের মতো’ এক প্রাণী।
এলিয়ান বা চাঁদে পৌছানোর মিথ্যা দাবি, কোনও যুক্তির পক্ষেই সঠিক তথ্য প্রমাণ না মিললেও এরিয়া ৫১ যে এখনও সক্রিয়, সেই বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। আমেরিকা প্রথমে এই জায়গা সম্পর্কে কিছু বলতে না চাইলেও তথ্য স্বাধীনতার অধিকার আইন অনুযায়ী বেশ কিছু তথ্য জানাতে বাধ্য হয়।
নেভাদার গ্রুম লেক কিন্তু কোনও হ্রদ নয়। এটি আসলে মরুভুমির মাঝে এক সমতল ভূমি, যেখানে প্রচুর পরিমাণে নুন ও অন্যান্য খনিজ পাওয়া যায়। সম্পূর্ণ সমতল হওয়ায় এরিয়া ৫১-এর গ্রুম লেককেই বিমানের রানওয়ে হিসাবে ব্যবহার করা শুরু হয়। তৈরি হয় ওয়ার্কশপ, বিমানের শেল্টারও। তিন মাসের মধ্যেই তৈরি হয়ে যায় বাঁধানো রানওয়ে, কন্ট্রোল টাওয়ার।
১৯৫০ সালের শেষ ভাগেই 'ইউ-২’ প্রোজেক্ট বন্ধ হয়ে গেলেও এরিয়া৫১-কে কিন্তু কঠোর নিরাপত্তায় মুড়ে রাখা হয়েছে আজও। নির্দিষ্ট একটি সীমা অবধিই সাধারণ মানুষ যেতে পারেন। কাঁটাতারের ওই পাড়ে কী রয়েছে তা অগোচরেই থেকে গিয়েছে আজও।
দিন কয়েক আগে ফেসবুকে এরিয়া ৫১ যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে একেবারেই মজাচ্ছলে একটি পেজ তৈরি করা হয়। বিষয়টি নিয়ে উৎসাহ থাকলেও আমেরিকার সেনা বাহিনীর মুখপাত্র লরা ম্যাকঅ্যান্ড্রুজ কিন্তু বেশ কঠিন স্বরেই জানিয়েছেন, লক্ষাধিক মানুষও যদি এরিয়া ৫১- এ প্রবেশ করার জন্য গেটে উপস্থিত হয়, তা হলেও কাউকে ঢুকতে দেওয়া হবে না। সেই পেজটিও এখন ক্লোজড গ্রুপ করে দেওয়া হয়েছে।