"হাতের কাজ"

in hive-196725 •  4 years ago 

IMG20201225095418.jpg

প্রিয়,
পাঠকগণ,
আশাকরি ক্রিসমাস আপনাদের সবার খুব ভালো কেটেছে।

আজকে আমি কথা বলবো আমার শাশুড়ির হাতের কাজ নিয়ে। আসলে আমাদের প্রত্যেকের মধ্যেই কিছু না কিছু প্রতিভা লুকিয়ে থাকে, অনেকে সেটা বুঝতে পারিনা, আবার অনেকে সেই প্রতিভা বিকাশের সুযোগ পাইনা, আবার অনেকেই ইচ্ছাকৃত ভাবেই সেগুলো নষ্ট করে ফেলি।

আমার শাশুড়ির বর্তমান বয়েস ৫৮ বছর। তিনি বরাবরই গৃহবধু। তথচ সংসারের কাজের বাইরেও তিনি অনেক কাজ করে থাকেন। আগের দিনের পিঠের ব্লগে যে উনুন আপনারা দেখেছেন সেটাও আমার শাশুড়ি মায়ের নিজের হাতে তৈরী করা।

আজকে আপনাদেরকে দেখাবো,তিনি কিভাবে ফেলে দেওয়া জিনিস দিয়ে সুন্দর মালা তৈরী করে ঠাকুর ঘর, ঠাকুরের ফটো সাজিয়েছেন।

এই মালা তৈরী করতে তিনি ব্যবহার করেছেন, প্লাস্টিক, আর কাপড়ের ব্যাগ (জামাকাপড় কেনার সময় যেগুলো দোকান থেকে দিয়ে থাকে সেগুলো), শোলা, সূঁচ আর মালা গাঁথার সুতো।

প্রথমেই তিনি ব্যাগ গুলোকে সাইজ মতো কেটেছেন, এরপর সেগুলোকে ভাঁজ করে সুতো দিয়ে সেলাই করেছেন, এবং ফুলের মত তৈরী করেছেন।শোলা গুলো ভেঙে টুকরো টুকরো করেছেন।এই শোলা গুলো প্রত্যেকটা ফুলের মাঝে দিয়ে দেবেন। যাতে ফুলগুলোর মধ্যে একটু ফাঁক থাকে।

ফুল গুলো তৈরী করে নিয়ে এবং শোলা গুলো টুকরো করে নিয়ে তারপর সূঁচ আর সুতো নিয়েছে মালা গাঁথার জন্য। এরপর এক এক করে ফুল গুলো আর শোলা গুলো পরপর গেঁথেছেন। এখানে তিনি বিভিন্ন কালারের প্লাস্টিক ব্যবহার করেছেন, তাই ফুলগুলোও বিভিন্ন কালারের হয়েছে, যার জন্যে মালা টা দেখতে আর ও ভালো লাগছিল।

আমরা হয়তো অনেক সময় এই প্লাস্টিক গুলো ফেলে দেই, বা কখনো কোনো কিছু আনার জন্য ব্যবহার করি। বর্তমানে অনেক জায়গায় প্লাস্টিক নিষিদ্ধ,তার বদলে যে কাপড়ের ব্যাগ ব্যবহার হয় সেগুলো ও আমরা একই ভাবে ব্যবহার করি। এই ব্যাগগুলো ব্যবহার করায় আমাদের পরিবেশ দূষণের হাত থেকেও কিছুটা রক্ষা পায়।

তবে এইগুলো যে এত সুন্দর কাজেও ব্যবহার করা যেতে পারে,এটা আমার মাথায় কখনই আসেনি, জানিনা আমার শাশুড়ির মাথায় কিভাবে এলো,তবে দেখে আমার খুব ভালো লাগলো তাই ভাবলাম আপনাদের সাথেও এটা শেয়ার করি। আসলে প্লাস্টিকের ফুলের মালা কিনতেও পাওয়া যায় তবে নিজের হাতে বানিয়ে সেটা পড়ানোর আনন্দই অন্য রকম।

যদিও ফুলের মালার সাথে অন্য মালার কোনো তুলনা হয়না, কিন্তু ফুলের মালা কিছুদিন বাদেই নষ্ট হয়ে যায়, অথচ প্লাস্টিকের মালা হলে কয়েক দিন বাদে বাদে ধুয়ে দিলে আবার পরিষ্কার হয়ে যায়। তাই এগুলো দেখতে ও বেশ ভালো লাগে।

আমার নিজের ভীষণ ভালো লেগেছে আমার
শাশুড়ির হাতের এই কাজ। একজন মানুষ যে বেশিদূর লেখাপড়া করেনি, যে বর্তমান যুগের টেকনোলজি জানেন না, যার কাছে ইউ-টিউব ও অজানা,তার কাছ থেকেও কতো কিছু শেখা যেতে পারে।

আপনাদের সাথে ফোটো গুলো শেয়ার করলাম, আশাকরি আপনাদেরও এইগুলো দেখে ভালো লাগবে।

সবাই খুব ভালো থাকবেন।

ব্যাগ গুলো কেটে ফুল বানাচ্ছেন-
IMG20201220000551.jpg

ফুল তৈরী করেছেন -
IMG20201220000721.jpg

সমস্ত ফুল তৈরী করে নিয়েছেন-
IMG20201219232943.jpg

এই শোলা ব্যবহার করবেন এবং সেই কারনেই
শোলা গুলো এইভাবে টুকরো করেছেন-
IMG20201224185847.jpg
IMG20201224185919.jpg

মালা গাঁথা শুরু করেছেন-
IMG20201224191524.jpg

মালা গাঁথা হয়ে গেছে, এবং ঠাকুরের ফটোতে পড়িয়ে দিয়েছেন-
IMG20201224200742.jpg
IMG20201224200757.jpg

ঠাকুরের আসনও সাজানো হয়েছে-
IMG20201225095357.jpg

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!